ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রোজার অন্তর্নিহিত শক্তি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৮:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মে ২০১৯
  • / ২৯২ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক:
১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস হিসেবে পরিচিত। দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজানে রাসুলুল্লাহ (সা.) ৩১৩ জন সাহাবিকে সঙ্গে নিয়ে মদিনা থেকে ৮০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বদর নামক স্থানে কাফিরদের সঙ্গে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মিলিত হন। পবিত্র কোরআন দিনটিকে ‘ইয়াওমুল ফুরকান’ বা সত্য-মিথ্যা প্রভেদের দিন এবং ‘ইয়াওমু ইলতাকাল জামআন’ বা দুই সেনাদলের মুখোমুখি হওয়ার দিন নামে আখ্যা দিয়েছে। (আল কোরআন, ৮:৪১) সুরা আনফালে বদরের মাঠ, সৈন্যদের অবস্থান, মুলিমদের প্রস্তুতি, আত্মিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য, সংখ্যাগত দৈন্যতা ও আল্লাহর সাহায্য ইত্যাদি শৈল্পিক বর্ণনায় তুলে ধরেছে। এ যুদ্ধ বিজয়ের মাধ্যমে মুসলিমদের আত্মিক ও শারীরিক সেই অন্তর্নিহিত শক্তির বিজয় হয়েছে, যা রাসুল (সা.) ও তাঁর সাহাবিরা সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জন করেছেন। বিষয়বস্তুর যে দিকটি মনোযোগের দাবি রাখে, তা হলো, আল্লাহ তাআলা বদর যুদ্ধের অব্যবহিত আগে রমজানের রোজা আবিশ্যিক করেন। এটি ভবিষ্যৎ সংগ্রামের জন্য আত্মিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত হতে সাহায্য করে। রোজা রাখার গুরুত্ব এ ক্ষেত্রে যুক্তিগ্রাহ্যভাবে দৃশ্যমান, যা নবী মুসা (আ.)-কেও প্রত্যাদেশ লাভের উপযোগী করেছে। তিনি তুর পর্বতে অবস্থান করে ৪০ দিন রোজা রেখেছিলেন। (আল-কুরআন, ৭:১৪২) নবুয়ত দেওয়ার পরও আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীকে নতুন নির্দেশনা দেওয়ার আগে তা গ্রহণের উপযোগী করে নিয়েছেন। মুসলিমদের আত্মিক ও বাহ্যিক শক্তি অর্জনের নিমিত্তে আল্লাহ রমজানের রোজা ফরজ করেছেন। এ শক্তি সম্পদ ও অস্ত্রের শক্তির চেয়েও শক্তিশালী। কোরআনে বর্ণিত রোজা আবিশ্যিক হওয়ার মূল উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জন, যা মূল্যবোধ ও নৈতিক শক্তির ভিত্তি। তাকওয়া অন্তরকে আধ্যাত্মিকভাবে পরিশুদ্ধ (তাজকিয়া) করে এবং কর্মের ক্ষেত্রে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে স্বর্গীয় অনুভূতি প্রদান করে। সিয়াম পালনের মাধ্যমে সে উপযোগিতা তৈরি হয়। মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত এবং বদর যুদ্ধে বিজয় লাভের পর আল্লাহ তাআলা সেই আয়াত নাজিল করেন, যেখানে রাসুল (সা.)-এর অতীত অবস্থা ও আল্লাহর অনুগ্রহকে স্মরণ করানো হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর স্মরণ করো, যখন তোমরা ছিলে অল্প, পরাজিত অবস্থায় পড়েছিলে দেশে; ভীত-সন্ত্রস্ত্র ছিলে যে তোমাদের না অন্যরা ছোঁ মেরে নিয়ে যায়। অতঃপর তিনি তোমাদের আশ্রয়ের ঠিকানা দিয়েছেন, স্বীয় সাহায্যের দ্বারা তোমাদের শক্তি দান করেছেন এবং পরিচ্ছন্ন জীবিকা দিয়েছেন, যাতে তোমরা শুকরিয়া আদায় করো।’ (সুরা আনফাল ৮:২৬) এ আয়াতে আল্লাহ যে শক্তির কথা বলছেন তা ছিল অন্তরের শক্তি, যার প্রভাব বদরের যুদ্ধে দৃশ্যমান ছিল। আর তা সিয়ামের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছিল।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

রোজার অন্তর্নিহিত শক্তি

আপলোড টাইম : ১০:১৮:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মে ২০১৯

ধর্ম ডেস্ক:
১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস হিসেবে পরিচিত। দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজানে রাসুলুল্লাহ (সা.) ৩১৩ জন সাহাবিকে সঙ্গে নিয়ে মদিনা থেকে ৮০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বদর নামক স্থানে কাফিরদের সঙ্গে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মিলিত হন। পবিত্র কোরআন দিনটিকে ‘ইয়াওমুল ফুরকান’ বা সত্য-মিথ্যা প্রভেদের দিন এবং ‘ইয়াওমু ইলতাকাল জামআন’ বা দুই সেনাদলের মুখোমুখি হওয়ার দিন নামে আখ্যা দিয়েছে। (আল কোরআন, ৮:৪১) সুরা আনফালে বদরের মাঠ, সৈন্যদের অবস্থান, মুলিমদের প্রস্তুতি, আত্মিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য, সংখ্যাগত দৈন্যতা ও আল্লাহর সাহায্য ইত্যাদি শৈল্পিক বর্ণনায় তুলে ধরেছে। এ যুদ্ধ বিজয়ের মাধ্যমে মুসলিমদের আত্মিক ও শারীরিক সেই অন্তর্নিহিত শক্তির বিজয় হয়েছে, যা রাসুল (সা.) ও তাঁর সাহাবিরা সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জন করেছেন। বিষয়বস্তুর যে দিকটি মনোযোগের দাবি রাখে, তা হলো, আল্লাহ তাআলা বদর যুদ্ধের অব্যবহিত আগে রমজানের রোজা আবিশ্যিক করেন। এটি ভবিষ্যৎ সংগ্রামের জন্য আত্মিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত হতে সাহায্য করে। রোজা রাখার গুরুত্ব এ ক্ষেত্রে যুক্তিগ্রাহ্যভাবে দৃশ্যমান, যা নবী মুসা (আ.)-কেও প্রত্যাদেশ লাভের উপযোগী করেছে। তিনি তুর পর্বতে অবস্থান করে ৪০ দিন রোজা রেখেছিলেন। (আল-কুরআন, ৭:১৪২) নবুয়ত দেওয়ার পরও আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীকে নতুন নির্দেশনা দেওয়ার আগে তা গ্রহণের উপযোগী করে নিয়েছেন। মুসলিমদের আত্মিক ও বাহ্যিক শক্তি অর্জনের নিমিত্তে আল্লাহ রমজানের রোজা ফরজ করেছেন। এ শক্তি সম্পদ ও অস্ত্রের শক্তির চেয়েও শক্তিশালী। কোরআনে বর্ণিত রোজা আবিশ্যিক হওয়ার মূল উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জন, যা মূল্যবোধ ও নৈতিক শক্তির ভিত্তি। তাকওয়া অন্তরকে আধ্যাত্মিকভাবে পরিশুদ্ধ (তাজকিয়া) করে এবং কর্মের ক্ষেত্রে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে স্বর্গীয় অনুভূতি প্রদান করে। সিয়াম পালনের মাধ্যমে সে উপযোগিতা তৈরি হয়। মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত এবং বদর যুদ্ধে বিজয় লাভের পর আল্লাহ তাআলা সেই আয়াত নাজিল করেন, যেখানে রাসুল (সা.)-এর অতীত অবস্থা ও আল্লাহর অনুগ্রহকে স্মরণ করানো হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর স্মরণ করো, যখন তোমরা ছিলে অল্প, পরাজিত অবস্থায় পড়েছিলে দেশে; ভীত-সন্ত্রস্ত্র ছিলে যে তোমাদের না অন্যরা ছোঁ মেরে নিয়ে যায়। অতঃপর তিনি তোমাদের আশ্রয়ের ঠিকানা দিয়েছেন, স্বীয় সাহায্যের দ্বারা তোমাদের শক্তি দান করেছেন এবং পরিচ্ছন্ন জীবিকা দিয়েছেন, যাতে তোমরা শুকরিয়া আদায় করো।’ (সুরা আনফাল ৮:২৬) এ আয়াতে আল্লাহ যে শক্তির কথা বলছেন তা ছিল অন্তরের শক্তি, যার প্রভাব বদরের যুদ্ধে দৃশ্যমান ছিল। আর তা সিয়ামের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছিল।