ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রেলের যাত্রীসেবার পরিধি আরো বিস্তৃত হোক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুলাই ২০১৮
  • / ৩৮১ বার পড়া হয়েছে

অত্যন্ত কম সময়ে ট্রেন পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। দ্রুত যাত্রীসেবা প্রদানের লক্ষ্যে রেলওয়ের বহরে প্রথমবারের মতো যুক্ত হচ্ছে অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্ল্যান্ট। এসব ওয়াশিং প্ল্যান্টে সম্পূর্ণ অটোমেটিক মেশিনে কোনো প্রকার হাতের ছোঁয়া ছাড়াই মাত্র ২০ মিনিটেই একটি ট্রেন পরিষ্কার করা সম্ভব হবে। মিটারগেজ এবং ব্রডগেজের দু’টি ইউনিটের মধ্যে প্রথম ইউনিট বসছে অক্টোবরে। আমাদের জাতীয় সম্পদ রেল। ভ্রমণ বা যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে রেলপথ অনেকটাই নিরাপদ ও আরামদায়ক হিসেবে বিবেচিত। পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের জন্য এমন সাশ্রয়ী বাহনের বিকল্প নেই। দুনিয়ার সব দেশে রেল হচ্ছে জনপ্রিয় গণপরিবহন। তাই দেশে দেশে এ গণপরিবহনকে আধুনিক এবং জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশগুলোতে সময়ের সাথে সাথে রেলের আধুনিকায়ন করে সাধারণ নাগরিকদের সেবা বাড়ানো হয়। অনেক উন্নত দেশে দ্রুতগতির বুলেট ট্রেন চলাচল করছে। কিন্তু জনবল সংকট, অব্যবস্থাপনা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনিয়ম আর অদূরদর্শিতায় বাংলাদেশ রেলওয়ের বিবর্ণ চিত্র প্রকট হয়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সিডিউল মেনে না চলা, যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে যথাযথ দৃষ্টি না দেওয়া, কোচ অর্থাৎ বগিগুলোর দুরবস্থা, সিংহভাগ ইঞ্জিনের আয়ু ক্ষয়ে যাওয়া, সংশ্নিষ্ট একটি দুষ্টচক্রের দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতা, অপরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি কারণে রেলের অবস্থা ক্রমেই শোচনীয় হয়ে পড়েছে। গত ২৮শে জুন জাতীয় সংসদের অধিবেশনেও এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। দেশের প্রতিটি রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কালোবাজারি, সময় মতো ট্রেন না আসা, ট্রেনের টয়লেট ও ওয়েটিং রুম নোংরা, রেলের জমি দখল হয়ে যাওয়াসহ নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এমপিরা। তাঁরা এসব বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। এক সংসদ সদস্য বলেছেন, ট্রেনের প্রথম শ্রেণিতে ওঠার পর দেখলাম ফ্যান চলে না। চারদিকে দুর্গন্ধ। এটা যদি প্রথম শ্রেণি হয় তাহলে সাধারণ মানুষ যেখানে বসছে সেটার কী অবস্থা! আসলে রেলওয়ের উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে রেলের ভাড়া বাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণও করা হয়েছে। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ হলো, রেলের সেবার মান সেভাবে বাড়ছে না। অথচ রেলের প্রতি সাধারণ মানুষের নতুন করে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য রেলপথ অনেক দেশেই এখন অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে আমাদের দেশে রেলের ব্যাপক উন্নয়ন ও রেলওয়ের সেবার পরিধি বৃদ্ধি করা একান্ত প্রয়োজন। উত্তম সেবা দিতে হলে সর্বাগ্রে রেল ভ্রমণ ঝুঁকিমুক্ত করে সর্বপ্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রেলের বগি ও রেলস্টেশনগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। স্টেশনে অবাঞ্ছিত লোকের আনাগোনা ও অবস্থান বন্ধ করতে হবে। রেল সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব যেমন সরকারের, তেমনি নাগরিকেরও। মানুষ যেমন এর থেকে উপকার ভোগ করছে তেমনি এই সেবা যেন অব্যাহত থাকে সে ব্যাপারেও সচেতন। জনবান্ধব এই পরিবহনটি নানা সেবামূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে যাত্রীদের আস্থা আবার ফিরিয়ে আনুক সেটাই আমরা কামনা করি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

রেলের যাত্রীসেবার পরিধি আরো বিস্তৃত হোক

আপলোড টাইম : ০৯:০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুলাই ২০১৮

অত্যন্ত কম সময়ে ট্রেন পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। দ্রুত যাত্রীসেবা প্রদানের লক্ষ্যে রেলওয়ের বহরে প্রথমবারের মতো যুক্ত হচ্ছে অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্ল্যান্ট। এসব ওয়াশিং প্ল্যান্টে সম্পূর্ণ অটোমেটিক মেশিনে কোনো প্রকার হাতের ছোঁয়া ছাড়াই মাত্র ২০ মিনিটেই একটি ট্রেন পরিষ্কার করা সম্ভব হবে। মিটারগেজ এবং ব্রডগেজের দু’টি ইউনিটের মধ্যে প্রথম ইউনিট বসছে অক্টোবরে। আমাদের জাতীয় সম্পদ রেল। ভ্রমণ বা যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে রেলপথ অনেকটাই নিরাপদ ও আরামদায়ক হিসেবে বিবেচিত। পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের জন্য এমন সাশ্রয়ী বাহনের বিকল্প নেই। দুনিয়ার সব দেশে রেল হচ্ছে জনপ্রিয় গণপরিবহন। তাই দেশে দেশে এ গণপরিবহনকে আধুনিক এবং জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশগুলোতে সময়ের সাথে সাথে রেলের আধুনিকায়ন করে সাধারণ নাগরিকদের সেবা বাড়ানো হয়। অনেক উন্নত দেশে দ্রুতগতির বুলেট ট্রেন চলাচল করছে। কিন্তু জনবল সংকট, অব্যবস্থাপনা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনিয়ম আর অদূরদর্শিতায় বাংলাদেশ রেলওয়ের বিবর্ণ চিত্র প্রকট হয়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সিডিউল মেনে না চলা, যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে যথাযথ দৃষ্টি না দেওয়া, কোচ অর্থাৎ বগিগুলোর দুরবস্থা, সিংহভাগ ইঞ্জিনের আয়ু ক্ষয়ে যাওয়া, সংশ্নিষ্ট একটি দুষ্টচক্রের দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতা, অপরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি কারণে রেলের অবস্থা ক্রমেই শোচনীয় হয়ে পড়েছে। গত ২৮শে জুন জাতীয় সংসদের অধিবেশনেও এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। দেশের প্রতিটি রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কালোবাজারি, সময় মতো ট্রেন না আসা, ট্রেনের টয়লেট ও ওয়েটিং রুম নোংরা, রেলের জমি দখল হয়ে যাওয়াসহ নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এমপিরা। তাঁরা এসব বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। এক সংসদ সদস্য বলেছেন, ট্রেনের প্রথম শ্রেণিতে ওঠার পর দেখলাম ফ্যান চলে না। চারদিকে দুর্গন্ধ। এটা যদি প্রথম শ্রেণি হয় তাহলে সাধারণ মানুষ যেখানে বসছে সেটার কী অবস্থা! আসলে রেলওয়ের উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে রেলের ভাড়া বাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণও করা হয়েছে। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ হলো, রেলের সেবার মান সেভাবে বাড়ছে না। অথচ রেলের প্রতি সাধারণ মানুষের নতুন করে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য রেলপথ অনেক দেশেই এখন অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে আমাদের দেশে রেলের ব্যাপক উন্নয়ন ও রেলওয়ের সেবার পরিধি বৃদ্ধি করা একান্ত প্রয়োজন। উত্তম সেবা দিতে হলে সর্বাগ্রে রেল ভ্রমণ ঝুঁকিমুক্ত করে সর্বপ্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রেলের বগি ও রেলস্টেশনগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। স্টেশনে অবাঞ্ছিত লোকের আনাগোনা ও অবস্থান বন্ধ করতে হবে। রেল সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব যেমন সরকারের, তেমনি নাগরিকেরও। মানুষ যেমন এর থেকে উপকার ভোগ করছে তেমনি এই সেবা যেন অব্যাহত থাকে সে ব্যাপারেও সচেতন। জনবান্ধব এই পরিবহনটি নানা সেবামূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে যাত্রীদের আস্থা আবার ফিরিয়ে আনুক সেটাই আমরা কামনা করি।