ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রাত পোহালেই ঈদ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৪২:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • / ১৮০৮ বার পড়া হয়েছে

EID MUBARAKসমীকরণ ডেস্ক: ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ/রাহেলিল্লাহ, কে আপনাকে বিলিয়ে দিল, কে হ’ল শহীদ।/ যে কোরবানী আজ দিল খোদায় দৌলৎ ও হাশ্মত,/যা’র নিজের ব’লে রইলো শুধু আল্লা ও হযরত,/যে রিক্ত হয়ে পেল আজি অমৃত-তৌহিদ।/ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ। সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার পক্তির মতো করে কাল ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর মুসলিম উম্মাহর অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ইসলামের পরিভাষায় কোরবানি বলা হয় নির্দিষ্ট জন্তুকে একমাত্র আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে আল্লাহর নামে জবেহ করা। কোরবানির ঈদ নামে পরিচিত ঈদুল আজহার অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে, মনের পশু কুপ্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। পবিত্র হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, প্রতিবছর জিলহজ মাসের দশ তারিখে বিশ্ব মুসলিম যার যা সাধ্য ও পছন্দ অনুযায়ী পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন এবং নামাজ আদায় করেন। আরবি আজহা এবং কোরবান উভয় শব্দের অর্থ হচ্ছে উৎসর্গ। কোরবানি শব্দের উৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে আত্মত্যাগ, আত্মোৎসর্গ, নিজেকে বিসর্জন, নৈকট্য লাভের চেষ্টা ও অতিশয় নিকটবর্তী হওয়া ইত্যাদি। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের আদি পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.) প্রায় চার হাজার বছর আগে আল্লাহর নির্দেশে তার প্রিয় শিশুপুত্র হজরত ইসমাঈলকে (আ.) মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে কোরবানি দেয়ার উদ্যোগ নিয়ে ত্যাগের মহিমায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। সেই ত্যাগের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত অনুসরণ করেই সমগ্র বিশ্ব মুসলিম অনন্য ত্যাগের মহিমা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহপাকের অনুগ্রহ কামনায় পশু কোরবানি করে থাকে। আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য আল্লাহ কোরবানি ফরজ করে দিয়েছেন। তাই কোরবানি করাই এই দিনের উত্তম ইবাদত বলে ধর্মীয়ভাবে বলা হয়েছে। মনের পশুকে দমন করতেই প্রতীকী এই পশু কোরবানির বিধান। ১০ জিলহজ থেকে তিন দিন কোরবানি করা যায়। সচ্ছলদের জন্য কোরবানি ফরজ হলেও ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে না দরিদ্ররাও। কোরবানি দেয়া পশুর মাংসের তিন ভাগের এক ভাগ তাদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া ইসলামের বিধান। আর ঈদ মানেই তো সম্প্রীতির বন্ধন। তাই আপনজনের মধ্যেও বিলি-বণ্টন করবেন আরও এক ভাগ। আর নিজের জন্য এক ভাগ।
পবিত্র কোরআন শরিফের সুরা হজে আল্লাহপাক বলেন, ‘আমার কাছে পশুর রক্ত, মাংস, হাড় পৌঁছে না, পৌঁছে তোমাদের অন্তরের তাকওয়া অর্থাৎ খোদাভীতি।’ আল্লাহর বান্দারা কে কতটুকু আত্মত্যাগ ও খোদাভীতির পরিচয় দেন এবং আল্লাহপাকের নির্দেশ পালন করেন তিনি তা-ই প্রত্যক্ষ করে থাকেন। পবিত্র কোরআনে সামর্থ্যবানের জন্য কোরবানি করাকে ওয়াজিব বা অবশ্য পালনীয় বলা হয়েছে। সুরা কাউসারে বলা হয়েছে, ‘সৃষ্টিকর্তার নামে নামাজ আদায় করো এবং কোরবানি করো।’ আর হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘ঈদুল আজহার দিনে কোরবানির চেয়ে আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দের কিছু নেই।’ তাই যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি দেয় না, সে যেন ঈদগাহে না যায়। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি)। সকাল ৮টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে ছয়টি ঈদ জামাত। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এখানে প্রায় এক লাখ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। এছাড়া এখানে পাঁচ হাজার নারীর নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

রাত পোহালেই ঈদ

আপলোড টাইম : ১১:৪২:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

EID MUBARAKসমীকরণ ডেস্ক: ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ/রাহেলিল্লাহ, কে আপনাকে বিলিয়ে দিল, কে হ’ল শহীদ।/ যে কোরবানী আজ দিল খোদায় দৌলৎ ও হাশ্মত,/যা’র নিজের ব’লে রইলো শুধু আল্লা ও হযরত,/যে রিক্ত হয়ে পেল আজি অমৃত-তৌহিদ।/ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক ঈদ। সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার পক্তির মতো করে কাল ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর মুসলিম উম্মাহর অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ইসলামের পরিভাষায় কোরবানি বলা হয় নির্দিষ্ট জন্তুকে একমাত্র আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে আল্লাহর নামে জবেহ করা। কোরবানির ঈদ নামে পরিচিত ঈদুল আজহার অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে, মনের পশু কুপ্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। পবিত্র হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, প্রতিবছর জিলহজ মাসের দশ তারিখে বিশ্ব মুসলিম যার যা সাধ্য ও পছন্দ অনুযায়ী পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন এবং নামাজ আদায় করেন। আরবি আজহা এবং কোরবান উভয় শব্দের অর্থ হচ্ছে উৎসর্গ। কোরবানি শব্দের উৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে আত্মত্যাগ, আত্মোৎসর্গ, নিজেকে বিসর্জন, নৈকট্য লাভের চেষ্টা ও অতিশয় নিকটবর্তী হওয়া ইত্যাদি। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের আদি পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.) প্রায় চার হাজার বছর আগে আল্লাহর নির্দেশে তার প্রিয় শিশুপুত্র হজরত ইসমাঈলকে (আ.) মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে কোরবানি দেয়ার উদ্যোগ নিয়ে ত্যাগের মহিমায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। সেই ত্যাগের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত অনুসরণ করেই সমগ্র বিশ্ব মুসলিম অনন্য ত্যাগের মহিমা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহপাকের অনুগ্রহ কামনায় পশু কোরবানি করে থাকে। আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য আল্লাহ কোরবানি ফরজ করে দিয়েছেন। তাই কোরবানি করাই এই দিনের উত্তম ইবাদত বলে ধর্মীয়ভাবে বলা হয়েছে। মনের পশুকে দমন করতেই প্রতীকী এই পশু কোরবানির বিধান। ১০ জিলহজ থেকে তিন দিন কোরবানি করা যায়। সচ্ছলদের জন্য কোরবানি ফরজ হলেও ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে না দরিদ্ররাও। কোরবানি দেয়া পশুর মাংসের তিন ভাগের এক ভাগ তাদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া ইসলামের বিধান। আর ঈদ মানেই তো সম্প্রীতির বন্ধন। তাই আপনজনের মধ্যেও বিলি-বণ্টন করবেন আরও এক ভাগ। আর নিজের জন্য এক ভাগ।
পবিত্র কোরআন শরিফের সুরা হজে আল্লাহপাক বলেন, ‘আমার কাছে পশুর রক্ত, মাংস, হাড় পৌঁছে না, পৌঁছে তোমাদের অন্তরের তাকওয়া অর্থাৎ খোদাভীতি।’ আল্লাহর বান্দারা কে কতটুকু আত্মত্যাগ ও খোদাভীতির পরিচয় দেন এবং আল্লাহপাকের নির্দেশ পালন করেন তিনি তা-ই প্রত্যক্ষ করে থাকেন। পবিত্র কোরআনে সামর্থ্যবানের জন্য কোরবানি করাকে ওয়াজিব বা অবশ্য পালনীয় বলা হয়েছে। সুরা কাউসারে বলা হয়েছে, ‘সৃষ্টিকর্তার নামে নামাজ আদায় করো এবং কোরবানি করো।’ আর হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘ঈদুল আজহার দিনে কোরবানির চেয়ে আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দের কিছু নেই।’ তাই যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি দেয় না, সে যেন ঈদগাহে না যায়। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি)। সকাল ৮টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে ছয়টি ঈদ জামাত। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এখানে প্রায় এক লাখ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। এছাড়া এখানে পাঁচ হাজার নারীর নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে।