ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মৎস্য খাবারের দাম বৃদ্ধি, লোকসানে চাষি!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪২:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ২৮ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে লোকসানের ঝুঁকিতে পড়েছে ঝিনাইদহের মৎস্যচাষিরা। জেলায় মাছের চাহিদা বিবেচনায় লাভ বেশি হওয়াই দিন দিন মাছের চাষ বৃদ্ধি পায়। গ্রামের মানুষ আবাদী জমিতে পুকুর কেটে মাছ চাষ করছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এই চাষের সাথে জড়িতরা। ঝিনাইদহ জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, মহেশপুর উপজেলায় প্রতি বছর মাছের উৎপাদন হয় ১০ হাজার ২ শ মেট্রিক টন। এতে ১১ হাজার ৪ শ মেট্রিক টন খাবারের প্রয়োজন হয়। তবে জেলার ৬ উপজেলায় প্রতি বছর মাছের উৎপাদন হয় ৪৫ হাজার ২৪৭ মেট্রিক টন। এই মাছ উৎপাদনে খাবার প্রয়োজন হয় প্রায় ৫০ হাজার ৬ শ মে.টন। জেলায় মোট মাছ চাষির সংখ্যা ১৪ হাজার ৭৪৫ জন।
মাছ চাষি রেজাউর ইসলাম জানান, মাছ চাষে বেশি লাভ পাওয়া যায়। কিন্তু সমস্যায় ফেলে দিয়েছে খাবারের দাম। ২০ কেজির বস্তায় তিন দফায় কেজিতে ৩ টাকা করে বেড়েছে। অন্যদিকে মাছের দামও কমেছে প্রতি মণে গড়ে ২ হাজার টাকা। এই অবস্থায় খাবারের দাম না কমলে আমরা শেষ হয়ে যাবো। অপর এক মাছ চাষি রিয়াজ জানান, তেলাপিয়া মাছের খাবার ২৫ কেজি বস্তা, গত বছর কিনেছি ১১ শ টাকা করে। কিন্তু চলতি বছর কিনতে হচ্ছে ১২২৫ টাকা করে বস্তা। এভাবে খাবারের দাম বৃদ্ধি পেলে মাছ চাষ করবো কীভাবে।
মাছের খামারি আহসানুজ্জামান রুমেল জানান, শুকনো মৌসুমে পুকুরগুলোতে সেচ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। মাছ চাষ কৃষির অন্তর্ভুক্ত হলেও পুকুর সেচ কাজে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিল দিতে হয় বাণিজ্যিক হারে। একই সঙ্গে মাছের খাবার, ওষুধ, লবণ, চুনসহ মাছ চাষের প্রয়োজনীয় সব উপকরণের দাম বাড়লেও বাড়েনি মাছের বিক্রয়মূল্য। এতে মাছ বিক্রিতে লাভবান হওয়া তো দূরের থাক, উল্টো লোকসান গুণতে হচ্ছে আমাদের।
স্থানীয় খাবার ব্যবসায়ীরা মানিক ও মোসারফ হোসেন বলেন, কোম্পানির কাছে জানতে চাইলেই বলে কাঁচামালের দাম বেড়েছে, তাই খাবারের দামও বৃদ্ধি। কিন্তু সরকার যদি সঠিকভাবে মনিটরিং করতো, তাহলে হয়তো এমনটি হত না।
ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, খাবারের দাম যাতে কমানো যায়, সে ব্যাপারে বারবারই ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করছি। কিন্তু তারা আমাদের বলছে করোনার কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এ পরিস্থিতি কেটে গেলে হয়তো কমে যাবে খাবারের দাম, মাছের দামও বৃদ্ধি পাবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মৎস্য খাবারের দাম বৃদ্ধি, লোকসানে চাষি!

আপলোড টাইম : ০৮:৪২:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১

ঝিনাইদহ অফিস:
খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে লোকসানের ঝুঁকিতে পড়েছে ঝিনাইদহের মৎস্যচাষিরা। জেলায় মাছের চাহিদা বিবেচনায় লাভ বেশি হওয়াই দিন দিন মাছের চাষ বৃদ্ধি পায়। গ্রামের মানুষ আবাদী জমিতে পুকুর কেটে মাছ চাষ করছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এই চাষের সাথে জড়িতরা। ঝিনাইদহ জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, মহেশপুর উপজেলায় প্রতি বছর মাছের উৎপাদন হয় ১০ হাজার ২ শ মেট্রিক টন। এতে ১১ হাজার ৪ শ মেট্রিক টন খাবারের প্রয়োজন হয়। তবে জেলার ৬ উপজেলায় প্রতি বছর মাছের উৎপাদন হয় ৪৫ হাজার ২৪৭ মেট্রিক টন। এই মাছ উৎপাদনে খাবার প্রয়োজন হয় প্রায় ৫০ হাজার ৬ শ মে.টন। জেলায় মোট মাছ চাষির সংখ্যা ১৪ হাজার ৭৪৫ জন।
মাছ চাষি রেজাউর ইসলাম জানান, মাছ চাষে বেশি লাভ পাওয়া যায়। কিন্তু সমস্যায় ফেলে দিয়েছে খাবারের দাম। ২০ কেজির বস্তায় তিন দফায় কেজিতে ৩ টাকা করে বেড়েছে। অন্যদিকে মাছের দামও কমেছে প্রতি মণে গড়ে ২ হাজার টাকা। এই অবস্থায় খাবারের দাম না কমলে আমরা শেষ হয়ে যাবো। অপর এক মাছ চাষি রিয়াজ জানান, তেলাপিয়া মাছের খাবার ২৫ কেজি বস্তা, গত বছর কিনেছি ১১ শ টাকা করে। কিন্তু চলতি বছর কিনতে হচ্ছে ১২২৫ টাকা করে বস্তা। এভাবে খাবারের দাম বৃদ্ধি পেলে মাছ চাষ করবো কীভাবে।
মাছের খামারি আহসানুজ্জামান রুমেল জানান, শুকনো মৌসুমে পুকুরগুলোতে সেচ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। মাছ চাষ কৃষির অন্তর্ভুক্ত হলেও পুকুর সেচ কাজে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিল দিতে হয় বাণিজ্যিক হারে। একই সঙ্গে মাছের খাবার, ওষুধ, লবণ, চুনসহ মাছ চাষের প্রয়োজনীয় সব উপকরণের দাম বাড়লেও বাড়েনি মাছের বিক্রয়মূল্য। এতে মাছ বিক্রিতে লাভবান হওয়া তো দূরের থাক, উল্টো লোকসান গুণতে হচ্ছে আমাদের।
স্থানীয় খাবার ব্যবসায়ীরা মানিক ও মোসারফ হোসেন বলেন, কোম্পানির কাছে জানতে চাইলেই বলে কাঁচামালের দাম বেড়েছে, তাই খাবারের দামও বৃদ্ধি। কিন্তু সরকার যদি সঠিকভাবে মনিটরিং করতো, তাহলে হয়তো এমনটি হত না।
ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, খাবারের দাম যাতে কমানো যায়, সে ব্যাপারে বারবারই ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করছি। কিন্তু তারা আমাদের বলছে করোনার কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এ পরিস্থিতি কেটে গেলে হয়তো কমে যাবে খাবারের দাম, মাছের দামও বৃদ্ধি পাবে।