ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মোচিকে ৪২ কোটি টাকার চিনি ও চিটাগুড় অবিক্রিত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩০:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ এপ্রিল ২০২০
  • / ১৯৫ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
করোনা প্রভাবে বেতন ও আখের টাকা না পেয়ে ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিদের মানবেতর দিন কাটছে। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবির পরও মিলছে না টাকা। মিল কর্তৃপক্ষ বলছে বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও চিনি বিক্রি না হলে কর্র্মচারীদের বেতন ও আখচাষিদের বকেয় টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত মৌসুমে মিলটিতে ১ লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৭ হাজার ৫৯ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করা হয়। গুদামে ৩০ কোটি টাকা মূল্যের ৫ হাজার ১২৫ মেট্রিক টন চিনি এবং ১২ কোটি টাকার চিটাগুড় অবিক্রিত রয়েছে। করোনার প্রভাবে পার্টি না আসায় চিনি বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে চিনি বিক্রি হচ্ছে স্বল্প পরিসরে। এক হাজার ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর জানুয়ারি-মার্চ মাসের বেতন ৪ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। দেড় মাসের বেশি সময় বন্ধ রয়েছে আখচাষিদের বকেয়া পরিশোধ। এ চাষের সঙ্গে জড়িত ৮ হাজার চাষির পাওনা পড়ে আছে প্রায় ১৯ কোটি টাকা। চিনিকলের কর্মচারীরা জানান, ‘দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে খুবই কষ্টে দিন পার করছি। করোনার কারণে কেউ ধারও দিচ্ছে না। এ অবস্থায় সরকার আমাদের বকেয়া টাকা দিলে খুবই উপকার হত।’ চিনিকলের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরও একই অবস্থা। ঘরে চাল নেই, পকেটে টাকা নেই, করোনার কারণে বাইরের কাজেও যেতে পারছে না বলে জানান চিনিকলের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এদিকে, মিলে বিক্রিত আখের পাওনা টাকা না পেয়ে কষ্টে আছেন চাষিরা।
আখচাষি আলাউদ্দিনসহ কয়েকজন জানান, অনেক আগে আখ বিক্রি করেছি কিন্তু মিল টাকা দিচ্ছে না। এতে সংসার চালাতে যেমন কষ্ট হচ্ছে, তেমনি জমির পরিচর্যাও করতে পারছি না। মোবারকগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুল বলেন, বেতন তো নেইই, ত্রাণের আওতায়ও পড়ছি না। এ অবস্থায় সরকার বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা না করলে পেটের জ্বালায় রাস্তায় বের হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। সরকারের সুগার কর্পোরেশনকে দেওয়া ৫ শ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ১ শ কোটি টাকা ছাড় হয়েছে, বাকিটা অর্থ মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। এই টাকা ছাড় হলেও কিছু পাওনা পরিশোধ হত। মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার কবির জানান, করোনার প্রভাবে পার্টি না আসায় চিনি বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মচারীদের জানুয়ারি মাসের কিছু টাকা পরিশোধ হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চিনি বিক্রি করে সবার পাওনা পরিশোধ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মোচিকে ৪২ কোটি টাকার চিনি ও চিটাগুড় অবিক্রিত

আপলোড টাইম : ০৯:৩০:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ এপ্রিল ২০২০

ঝিনাইদহ অফিস:
করোনা প্রভাবে বেতন ও আখের টাকা না পেয়ে ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিদের মানবেতর দিন কাটছে। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবির পরও মিলছে না টাকা। মিল কর্তৃপক্ষ বলছে বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও চিনি বিক্রি না হলে কর্র্মচারীদের বেতন ও আখচাষিদের বকেয় টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত মৌসুমে মিলটিতে ১ লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৭ হাজার ৫৯ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করা হয়। গুদামে ৩০ কোটি টাকা মূল্যের ৫ হাজার ১২৫ মেট্রিক টন চিনি এবং ১২ কোটি টাকার চিটাগুড় অবিক্রিত রয়েছে। করোনার প্রভাবে পার্টি না আসায় চিনি বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে চিনি বিক্রি হচ্ছে স্বল্প পরিসরে। এক হাজার ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর জানুয়ারি-মার্চ মাসের বেতন ৪ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। দেড় মাসের বেশি সময় বন্ধ রয়েছে আখচাষিদের বকেয়া পরিশোধ। এ চাষের সঙ্গে জড়িত ৮ হাজার চাষির পাওনা পড়ে আছে প্রায় ১৯ কোটি টাকা। চিনিকলের কর্মচারীরা জানান, ‘দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে খুবই কষ্টে দিন পার করছি। করোনার কারণে কেউ ধারও দিচ্ছে না। এ অবস্থায় সরকার আমাদের বকেয়া টাকা দিলে খুবই উপকার হত।’ চিনিকলের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরও একই অবস্থা। ঘরে চাল নেই, পকেটে টাকা নেই, করোনার কারণে বাইরের কাজেও যেতে পারছে না বলে জানান চিনিকলের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এদিকে, মিলে বিক্রিত আখের পাওনা টাকা না পেয়ে কষ্টে আছেন চাষিরা।
আখচাষি আলাউদ্দিনসহ কয়েকজন জানান, অনেক আগে আখ বিক্রি করেছি কিন্তু মিল টাকা দিচ্ছে না। এতে সংসার চালাতে যেমন কষ্ট হচ্ছে, তেমনি জমির পরিচর্যাও করতে পারছি না। মোবারকগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুল বলেন, বেতন তো নেইই, ত্রাণের আওতায়ও পড়ছি না। এ অবস্থায় সরকার বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা না করলে পেটের জ্বালায় রাস্তায় বের হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। সরকারের সুগার কর্পোরেশনকে দেওয়া ৫ শ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ১ শ কোটি টাকা ছাড় হয়েছে, বাকিটা অর্থ মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। এই টাকা ছাড় হলেও কিছু পাওনা পরিশোধ হত। মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার কবির জানান, করোনার প্রভাবে পার্টি না আসায় চিনি বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মচারীদের জানুয়ারি মাসের কিছু টাকা পরিশোধ হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চিনি বিক্রি করে সবার পাওনা পরিশোধ করা হবে।