ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুর শহরে চাঞ্চল্যকর পৌরসভার প্যানেল মেয়র রিপন হত্যা মামলার রায়

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫০:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • / ৪৯৯ বার পড়া হয়েছে

২ আসামি পলাতক : ৪ জনের যাবজ্জীবন জেল!
মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর শহরে চাঞ্চল্যকর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিজানুর রহমান রিপন হত্যা মামলায় চারজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে মেহেরপুরের অতিরিক্ত দায়রা ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের ২য় আদালতের বিচারক নুরুল ইসলাম ওই আদেশ দেন। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই বছর করে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। দÐপ্রাপ্তরা হলেন- গাংনী উপজেলার গাংনী থানাপাড়ার সেকেন্দার আলীর ছেলে মাসুদ রানা, গাংনী উপজেলার ওলিনগর গ্রামের আরশেদ আলীর ছেলে লাল্টু, মেহেরপুর শহরের গোরস্থানপাড়ার আমজাদ হোসেনের ছেলে রাশিদুল ইসলাম ওরফে আকালি এবং হোটেল বাজারপাড়ার ইসাহাক আলীর ছেলে আব্দুল হালিম। আদালতে আদেশ ঘোষণার সময় রাশিদুল ইসলাম আকালি ও আব্দুল হালিম উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুই আসামি পলাতক রয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১১ সালের ১ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে মেহেরপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিজানুর রহমান রিপন তার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হোটেল বাজারে অবস্থিত রাজধানী শপিং সেন্টারে বসেছিলেন। ওই সময় অজ্ঞাতনামা কিছু সন্ত্রাসী মিজানুর রহমানকে হত্যার চেষ্টার উদ্দেশ্যে একটি বোমা নিক্ষেপ করে। এতে বোমাটি বিকট শব্দে বিষ্ফোরিত হয়ে মিজানুর রহমান রিপনের শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। এ সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে থাকা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কামরুজ্জামানসহ দোকানের দুই-তিনজন কর্মচারী আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত প্যানেল মেয়র রিপনের অবস্থার অবনতি হলে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে ওই রাতেই রাজধানীর একটি হাসপাতালে রিপনকে স্থানান্তর করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৮ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাÐের ঘটনায় মিজানুর রহমান রিপনের পিতা আব্দুল হালিম বাদি হয়ে মেহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু ও সাবেক প্রয়াত কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন বিপুলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে আসামি করে হত্যা ও বিষ্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার কয়েক দফা তদন্ত শেষ করে পুলিশের এসআই সবুজ হোসেন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে আসামি পক্ষ থেকে অভিযোগপত্রের আপত্তি আবেদন করলে সিআইডিকে তদন্তভার দেয়া হয়। মামলায় ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কাজী শহিদুল হক এবং আসামি পক্ষে মনিরুজ্জামান আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন। এদিকে, মামলার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মিজানুর রহমান রিপনের ছোট ভাই মেহেরপুর পৌরসভার মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন জানান, মামলার মূল আসামি সাবেক মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতুকে ফাইনাল চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এটা আশা করেছিলামনা এর পাশাপাশি আসামিদের ফাঁসি কামনা করেছিলাম। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মেহেরপুর শহরে চাঞ্চল্যকর পৌরসভার প্যানেল মেয়র রিপন হত্যা মামলার রায়

আপলোড টাইম : ১০:৫০:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

২ আসামি পলাতক : ৪ জনের যাবজ্জীবন জেল!
মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর শহরে চাঞ্চল্যকর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিজানুর রহমান রিপন হত্যা মামলায় চারজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে মেহেরপুরের অতিরিক্ত দায়রা ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের ২য় আদালতের বিচারক নুরুল ইসলাম ওই আদেশ দেন। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই বছর করে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। দÐপ্রাপ্তরা হলেন- গাংনী উপজেলার গাংনী থানাপাড়ার সেকেন্দার আলীর ছেলে মাসুদ রানা, গাংনী উপজেলার ওলিনগর গ্রামের আরশেদ আলীর ছেলে লাল্টু, মেহেরপুর শহরের গোরস্থানপাড়ার আমজাদ হোসেনের ছেলে রাশিদুল ইসলাম ওরফে আকালি এবং হোটেল বাজারপাড়ার ইসাহাক আলীর ছেলে আব্দুল হালিম। আদালতে আদেশ ঘোষণার সময় রাশিদুল ইসলাম আকালি ও আব্দুল হালিম উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুই আসামি পলাতক রয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১১ সালের ১ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে মেহেরপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিজানুর রহমান রিপন তার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হোটেল বাজারে অবস্থিত রাজধানী শপিং সেন্টারে বসেছিলেন। ওই সময় অজ্ঞাতনামা কিছু সন্ত্রাসী মিজানুর রহমানকে হত্যার চেষ্টার উদ্দেশ্যে একটি বোমা নিক্ষেপ করে। এতে বোমাটি বিকট শব্দে বিষ্ফোরিত হয়ে মিজানুর রহমান রিপনের শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। এ সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে থাকা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কামরুজ্জামানসহ দোকানের দুই-তিনজন কর্মচারী আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত প্যানেল মেয়র রিপনের অবস্থার অবনতি হলে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে ওই রাতেই রাজধানীর একটি হাসপাতালে রিপনকে স্থানান্তর করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৮ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাÐের ঘটনায় মিজানুর রহমান রিপনের পিতা আব্দুল হালিম বাদি হয়ে মেহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু ও সাবেক প্রয়াত কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন বিপুলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে আসামি করে হত্যা ও বিষ্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার কয়েক দফা তদন্ত শেষ করে পুলিশের এসআই সবুজ হোসেন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে আসামি পক্ষ থেকে অভিযোগপত্রের আপত্তি আবেদন করলে সিআইডিকে তদন্তভার দেয়া হয়। মামলায় ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কাজী শহিদুল হক এবং আসামি পক্ষে মনিরুজ্জামান আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন। এদিকে, মামলার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মিজানুর রহমান রিপনের ছোট ভাই মেহেরপুর পৌরসভার মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন জানান, মামলার মূল আসামি সাবেক মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতুকে ফাইনাল চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এটা আশা করেছিলামনা এর পাশাপাশি আসামিদের ফাঁসি কামনা করেছিলাম। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।