ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে স্বামী-স্ত্রীর ফাঁসি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৯০ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, মেহেরপুর:
মেহেরপুরে স্ত্রী জরিনা খাতুনকে হত্যার দায়ে স্বামী সাইদুল ইসলাম ও তাঁর প্রথম স্ত্রী জমেলা খাতুনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় প্রদান করেন।
সাজাপ্রাপ্ত সাইদুল ইসলাম মেহেরপুর সদর উপজেলার ইছাখালী গ্রামের নবীর উদ্দিনের ছেলে এবং জমেলা খাতুন সাইদুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী। নিহত জরিনা খাতুন ছিলেন সাইদুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী। ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত সাইদুল ইসলাম এবং তাঁর স্ত্রী জমেলা খাতুন পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মেহেরপুর সদর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের সুরনিশা ভিটার মাঠে আলামিনের মসুরির খেতে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় জরিনা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে একই বছরের ৩১ জানুয়ারি জরিনা খাতুন নিখোঁজ হন। লাশ উদ্ধারের পর নিহত জরিনা খাতুনের বোন ফেরদৌসী খাতুন জরিনার লাশ শনাক্ত করেন। পরে ফেরদৌসী খাতুন বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ৭৪/২০১০। জি আর কেস নম্বর ৪৫/২০১০। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন মেহেরপুর সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান ইমাম মামলার প্রাথমিক তদন্ত কাজ শেষ করেন এবং নিহত জরিনার স্বামী সাইদুল ইসলাম ও তাঁর প্রথম স্ত্রী জমেলা খাতুনকে আসামি করে মামলার চার্জশিট দাখিল করেন।
আটক দুজন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষী তাঁদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে সাইদুল ইসলাম ও তাঁর প্রথম স্ত্রী জমেলা খাতুন দোষী প্রমাণিত হওয়ায় সাইদুল ইসলাম ও তাঁর প্রথম স্ত্রী জমেলা খাতুনকে ফাঁসি এবং একই সাথে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। ফ্লাশব্যাক ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে যাদবপুর গ্রামের গোরস্থানের ঠিক বিপরীত দিকে সার্কাস এবং আনন্দ মেলা চলছিল। সেই সময় হঠাৎ করেই তার বিপরীত দিকে সুরনিশা ভিটার মাঠে মসুরির খেতে মাটিতে পুঁতে রাখা লাশ দেখে একটি কুকুর অস্বাভাবিক ডাকাডাকি শুরু করে। ওই কুকুরটির অস্বাভাবিক ডাকাডাকি শুনে মাঠে কাজ করা কিছু লোক সেখানে ছুটে যায়। ওই সময় মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় শাড়ি কিম্বা অন্য আরেকটি অংশ দেখে তাদের সন্দেহ হয়। মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় জানাজানি হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে। পরে মাটি খুঁড়ে এক মহিলার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে লাশ উদ্ধারের পর ফেরদৌসী খাতুন নামের এক মহিলা কান্নাকাটি শুরু করেন এবং নিহত ব্যক্তির মরদেহ তাঁর বোন জরিনার বলে তিনি দাবি করেন। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
ওই সময় ফেরদৌসী বলেছিলেন, তার ছোট বোন জরিনাকে কয়দিন যাবত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার ভগ্নিপতি সাইদুল এবং সাইদুলের প্রথম স্ত্রী জমেলার সাথে ঝগড়া হয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেছিলেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মেহেরপুরে স্বামী-স্ত্রীর ফাঁসি

আপলোড টাইম : ১০:২৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী ২০২১

প্রতিবেদক, মেহেরপুর:
মেহেরপুরে স্ত্রী জরিনা খাতুনকে হত্যার দায়ে স্বামী সাইদুল ইসলাম ও তাঁর প্রথম স্ত্রী জমেলা খাতুনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় প্রদান করেন।
সাজাপ্রাপ্ত সাইদুল ইসলাম মেহেরপুর সদর উপজেলার ইছাখালী গ্রামের নবীর উদ্দিনের ছেলে এবং জমেলা খাতুন সাইদুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী। নিহত জরিনা খাতুন ছিলেন সাইদুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী। ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত সাইদুল ইসলাম এবং তাঁর স্ত্রী জমেলা খাতুন পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মেহেরপুর সদর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের সুরনিশা ভিটার মাঠে আলামিনের মসুরির খেতে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় জরিনা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে একই বছরের ৩১ জানুয়ারি জরিনা খাতুন নিখোঁজ হন। লাশ উদ্ধারের পর নিহত জরিনা খাতুনের বোন ফেরদৌসী খাতুন জরিনার লাশ শনাক্ত করেন। পরে ফেরদৌসী খাতুন বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ৭৪/২০১০। জি আর কেস নম্বর ৪৫/২০১০। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন মেহেরপুর সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান ইমাম মামলার প্রাথমিক তদন্ত কাজ শেষ করেন এবং নিহত জরিনার স্বামী সাইদুল ইসলাম ও তাঁর প্রথম স্ত্রী জমেলা খাতুনকে আসামি করে মামলার চার্জশিট দাখিল করেন।
আটক দুজন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষী তাঁদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে সাইদুল ইসলাম ও তাঁর প্রথম স্ত্রী জমেলা খাতুন দোষী প্রমাণিত হওয়ায় সাইদুল ইসলাম ও তাঁর প্রথম স্ত্রী জমেলা খাতুনকে ফাঁসি এবং একই সাথে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। ফ্লাশব্যাক ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে যাদবপুর গ্রামের গোরস্থানের ঠিক বিপরীত দিকে সার্কাস এবং আনন্দ মেলা চলছিল। সেই সময় হঠাৎ করেই তার বিপরীত দিকে সুরনিশা ভিটার মাঠে মসুরির খেতে মাটিতে পুঁতে রাখা লাশ দেখে একটি কুকুর অস্বাভাবিক ডাকাডাকি শুরু করে। ওই কুকুরটির অস্বাভাবিক ডাকাডাকি শুনে মাঠে কাজ করা কিছু লোক সেখানে ছুটে যায়। ওই সময় মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় শাড়ি কিম্বা অন্য আরেকটি অংশ দেখে তাদের সন্দেহ হয়। মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় জানাজানি হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে। পরে মাটি খুঁড়ে এক মহিলার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে লাশ উদ্ধারের পর ফেরদৌসী খাতুন নামের এক মহিলা কান্নাকাটি শুরু করেন এবং নিহত ব্যক্তির মরদেহ তাঁর বোন জরিনার বলে তিনি দাবি করেন। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
ওই সময় ফেরদৌসী বলেছিলেন, তার ছোট বোন জরিনাকে কয়দিন যাবত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার ভগ্নিপতি সাইদুল এবং সাইদুলের প্রথম স্ত্রী জমেলার সাথে ঝগড়া হয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেছিলেন।