ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে মৎস্য অধিদপ্তরের ‘পুকুর চুরি’

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ অগাস্ট ২০২২
  • / ৯ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক: মেহেরপুরে মৎস্য অধিদপ্তর জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পে (দ্বিতীয় সংশোধিত) পুকুর খননে ‘পুকুর চুরির’ অভিযোগ উঠেছে। এতে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটির সুফল ভেস্তে যেতে বসেছে। এ বছরের ৩১ মার্চ কাজ শুরু হয়ে ৩০ এপ্রিল শেষ হয়েছে। তবে সুফলভোগী মৎস্যজীবীরা জানান, এ ধরণের প্রকল্পের বিষয়ে কোনো কিছু জানানো হয়নি তাঁদের।

জানা গেছে, কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে মেহেরপুর সদরে ৪টি, গাংনী ৩টি ও মুজিবনগরে ২টি পুকুর ও জলাশয় খনন করার কথা। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী সুফলভোগীদের মধ্যে থেকে এলসিএস (লোকাল কনট্রাক্টিং সোসাইটি) কমিটি গঠন  করা হয়। পরে কমিটির একজনকে প্রকল্প সভাপতি নির্বাচন করে সেই সভাপতির মাধ্যমে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করার কথা। কিন্তু কমিটি গঠন করা হলেও প্রতিটি প্রকল্পের সব কাজই করেন মৎস্য কর্মকর্তারা। প্রকল্পের সভাপতিরা এসবের কিছুই জানেন না। মুজিবনগর উপজেলার দাদপুর বিল পুকুর বাদে কোনো পুকুর খনন করা হয়নি। পাটাপুকুর ও মরাগাং নদীতে বিলের নিজস্ব পুকুর থাকলেও মৎস্যজীবী ও এলাকাবাসী জানান, গত কয়েক বছরে এ পুকুর খনন বা সংস্কার হয়নি। গাংনী উপজেলার চরগোয়াল গ্রামে মরা নদীতে  এ ধরনের ২টি পুকুর কাটার কথা থাকলেও একটিরও অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সরেজমিন ঘুরে জেলার প্রতিটি প্রকল্পে এমন চিত্র দেখা গেছে।

খনন কাজের জন্য মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জমি ও এনওসি নেওয়ার কথা। কিন্তু অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) হুমায়ন কবির বলেন, তাঁর জানা মতে খাস জমির জলাশয় খননের জন্য কোনো জমি বরাদ্দ বা এনওসি দেওয়া হয়নি। মেহেরপুর সদর উপজেলার তেরঘরিয়া বিলের সভাপতি ও প্রকল্পের দলনেতা মকলেছুর রহমান বলেন, পোনা নার্সারির জন্য ১ কেজি মাছ ও ২ বস্তা খোল দিয়ে প্রকল্পের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছে। এ প্রকল্পে আর কিছু আছে কি না আমার জানা নেই।

মেহেরপুর মৎস্য অধিদপ্ততের মৎস্য জরিপ ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ৯টি পুকুরের জমি নিয়ে খনন করা হয়েছে। ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে এগুলো খনন করা হয়েছে। এক কেজি মাছের পোনা ও খাবার, চুন ইত্যাদি দেওয়া হয়েছে। মেহেরপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, ‘এ প্রকল্পগুলোর সাথে মেহেরপুর জেলা অফিসের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এগুলো দেখভাল করে উপজেলা অফিস। তবে আমার জানা মতে, পুকুর খননের কথা নেই। আমরা শুধু মাছের পোনা ও খাবার দিয়ের থাকি।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মেহেরপুরে মৎস্য অধিদপ্তরের ‘পুকুর চুরি’

আপলোড টাইম : ১০:০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ অগাস্ট ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদক: মেহেরপুরে মৎস্য অধিদপ্তর জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পে (দ্বিতীয় সংশোধিত) পুকুর খননে ‘পুকুর চুরির’ অভিযোগ উঠেছে। এতে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটির সুফল ভেস্তে যেতে বসেছে। এ বছরের ৩১ মার্চ কাজ শুরু হয়ে ৩০ এপ্রিল শেষ হয়েছে। তবে সুফলভোগী মৎস্যজীবীরা জানান, এ ধরণের প্রকল্পের বিষয়ে কোনো কিছু জানানো হয়নি তাঁদের।

জানা গেছে, কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে মেহেরপুর সদরে ৪টি, গাংনী ৩টি ও মুজিবনগরে ২টি পুকুর ও জলাশয় খনন করার কথা। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী সুফলভোগীদের মধ্যে থেকে এলসিএস (লোকাল কনট্রাক্টিং সোসাইটি) কমিটি গঠন  করা হয়। পরে কমিটির একজনকে প্রকল্প সভাপতি নির্বাচন করে সেই সভাপতির মাধ্যমে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করার কথা। কিন্তু কমিটি গঠন করা হলেও প্রতিটি প্রকল্পের সব কাজই করেন মৎস্য কর্মকর্তারা। প্রকল্পের সভাপতিরা এসবের কিছুই জানেন না। মুজিবনগর উপজেলার দাদপুর বিল পুকুর বাদে কোনো পুকুর খনন করা হয়নি। পাটাপুকুর ও মরাগাং নদীতে বিলের নিজস্ব পুকুর থাকলেও মৎস্যজীবী ও এলাকাবাসী জানান, গত কয়েক বছরে এ পুকুর খনন বা সংস্কার হয়নি। গাংনী উপজেলার চরগোয়াল গ্রামে মরা নদীতে  এ ধরনের ২টি পুকুর কাটার কথা থাকলেও একটিরও অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সরেজমিন ঘুরে জেলার প্রতিটি প্রকল্পে এমন চিত্র দেখা গেছে।

খনন কাজের জন্য মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জমি ও এনওসি নেওয়ার কথা। কিন্তু অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) হুমায়ন কবির বলেন, তাঁর জানা মতে খাস জমির জলাশয় খননের জন্য কোনো জমি বরাদ্দ বা এনওসি দেওয়া হয়নি। মেহেরপুর সদর উপজেলার তেরঘরিয়া বিলের সভাপতি ও প্রকল্পের দলনেতা মকলেছুর রহমান বলেন, পোনা নার্সারির জন্য ১ কেজি মাছ ও ২ বস্তা খোল দিয়ে প্রকল্পের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছে। এ প্রকল্পে আর কিছু আছে কি না আমার জানা নেই।

মেহেরপুর মৎস্য অধিদপ্ততের মৎস্য জরিপ ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ৯টি পুকুরের জমি নিয়ে খনন করা হয়েছে। ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে এগুলো খনন করা হয়েছে। এক কেজি মাছের পোনা ও খাবার, চুন ইত্যাদি দেওয়া হয়েছে। মেহেরপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, ‘এ প্রকল্পগুলোর সাথে মেহেরপুর জেলা অফিসের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এগুলো দেখভাল করে উপজেলা অফিস। তবে আমার জানা মতে, পুকুর খননের কথা নেই। আমরা শুধু মাছের পোনা ও খাবার দিয়ের থাকি।’