ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে প্রস্তুত ১ লাখ কোরবানীর পশু : ভারতীয় গরু আমদানিতে শঙ্কায় খামারীরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৩৬:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অগাস্ট ২০১৭
  • / ৯২৪ বার পড়া হয়েছে

মাসুদ রানা: মেহেরপুর জেলার গবাদিপশু পালনকারীরা কোরবানী উপলক্ষে এখন শেষ মুর্হূতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সারা বছর কষ্টে লালিত গরু-ছাগল কোরবানির পশু হাটের বিক্রি করবেন তাঁরা। ধারদেনা পরিশোধ করে আবারো কিনবেন নতুন পশু। পশু পালন করে ইতোমধ্যে জেলার অনেকই স্বাবলম্বী হয়েছেন। তবে ভারতীয় গরু আমদানির ফলে প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন খামারী ও ব্যক্তি পর্যায়ের পশু পালনকারীরা। তাই নানা দুঃশ্চিন্তা নিয়েই কোরবানির পশু হাটের দিকে চেয়ে রয়েছেন পশু পালনকারীরা। ক্ষতিকর কোন ওষুধ ছাড়াই দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা হয়। কিন্তু মোটা গরু নিয়ে অপপ্রচার থাকায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন খামারীরা।
খামার মালিকরা বলছেন, দেশে কোরবানির পশুর চাহিদা ও এর প্রাপ্তি সংখ্যার হিসেব নিয়ে গরমিল রয়েছে। দেশে যে পরিমাণ পশু পালন হয় তা কোরবানির জন্য যথেষ্ট। কিন্তু ভারত থেকে দেশের বিভিন্ন জেলাতে দেদারসে গরু আনার ফলে পথে বসে যাচ্ছেন দেশের গরু পালনকারীরা। খামার মালিকরা আরো বলেন এই গরু পালন করে আমরা মোটা অংকের টাকা লাভবান করি। সেই লাভের টাকা দিয়ে আমরা সংসার খরচ চালায়, ধান,পাটসহ যাবতীয় ফসল করি। সামনে কোরবানি এখন কি হবে না হবে বলা যাচ্ছে না তবে যদি ভারতীয় গরু বাজারে আসলে লাভবান হবনা বলে আমরা মনে করছি।
প্রতি বছরই বাড়ছে গো-খাদ্যের দাম। এতে পশু পালন খরচ তুলতেই নাভিস্বাস উঠেছে খামারী ও কৃষকদের। তারপরে যদি নায্য মূল্য না মেলে তাহলে উদীয়মান এই পশু পালন খাত ধ্বংস হতে পারে বলে আশংকার কথা জানালেন প্রান্তিক পশু পালনকারীরা।
মেহেরপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রানিসম্পদ অফিসার এসএম শরিফুল ইসলাম জানান, জেলা প্রানি সম্পদ অফিসের হিসেব মতে, এবারে মেহেরপুর জেলায় প্রায় ১ লক্ষ গবাদি পশু কোরবানি উপযুক্ত। এর মধ্যে গরুর সংখ্যা ৩০ হাজারের উপরে, ছাগল ৬০ হাজার প্রায় বাকি অনান্য পশু। স্থানীয় গো-খাদ্য ও প্রয়োজনীয় পরিচর্যায় হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে স্বপ্নের গরুগুলো। এখন চলছে শেষ মুর্হূতের পরিচর্যা। নিয়মিত গোসল, গরুর বাসস্থান পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়েই সময় পার করছেন গরু পালনকারীরা। ক্ষুদ্র খামারগুলোতে কাজের মধ্য দিয়ে অনেকের বেকার সমস্যার সমাধান হয়েছে। স্থানীয় পশু হাটসহ ঢাকা এবং চট্রগ্রামের কোরবানির পশু হাটে বিক্রির জন্য তোলা হবে। বেশিরভাগ খামারী ও কৃষকরা ধারদেনা করেই পশু পালন করেন। কোরবানির পশু হাটে ভাল দরে বিক্রি করতে পারলেই হবে স্বপ্ন পূরুণ। ধারদেনা পরিশোধ করেই নতুন বছরের জন্য আবারো পশু পালন শুরু হবে।
জেলার কোরাবানির চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত পশু যাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তাই কোরবানির বাজারে সুস্থ-সবল পশু তোলার জন্য খামারী ও পশু পালনকারীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে জেলা প্রানি সম্পদ বিভাগ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মেহেরপুরে প্রস্তুত ১ লাখ কোরবানীর পশু : ভারতীয় গরু আমদানিতে শঙ্কায় খামারীরা

আপলোড টাইম : ০৫:৩৬:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ অগাস্ট ২০১৭

মাসুদ রানা: মেহেরপুর জেলার গবাদিপশু পালনকারীরা কোরবানী উপলক্ষে এখন শেষ মুর্হূতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সারা বছর কষ্টে লালিত গরু-ছাগল কোরবানির পশু হাটের বিক্রি করবেন তাঁরা। ধারদেনা পরিশোধ করে আবারো কিনবেন নতুন পশু। পশু পালন করে ইতোমধ্যে জেলার অনেকই স্বাবলম্বী হয়েছেন। তবে ভারতীয় গরু আমদানির ফলে প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন খামারী ও ব্যক্তি পর্যায়ের পশু পালনকারীরা। তাই নানা দুঃশ্চিন্তা নিয়েই কোরবানির পশু হাটের দিকে চেয়ে রয়েছেন পশু পালনকারীরা। ক্ষতিকর কোন ওষুধ ছাড়াই দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা হয়। কিন্তু মোটা গরু নিয়ে অপপ্রচার থাকায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন খামারীরা।
খামার মালিকরা বলছেন, দেশে কোরবানির পশুর চাহিদা ও এর প্রাপ্তি সংখ্যার হিসেব নিয়ে গরমিল রয়েছে। দেশে যে পরিমাণ পশু পালন হয় তা কোরবানির জন্য যথেষ্ট। কিন্তু ভারত থেকে দেশের বিভিন্ন জেলাতে দেদারসে গরু আনার ফলে পথে বসে যাচ্ছেন দেশের গরু পালনকারীরা। খামার মালিকরা আরো বলেন এই গরু পালন করে আমরা মোটা অংকের টাকা লাভবান করি। সেই লাভের টাকা দিয়ে আমরা সংসার খরচ চালায়, ধান,পাটসহ যাবতীয় ফসল করি। সামনে কোরবানি এখন কি হবে না হবে বলা যাচ্ছে না তবে যদি ভারতীয় গরু বাজারে আসলে লাভবান হবনা বলে আমরা মনে করছি।
প্রতি বছরই বাড়ছে গো-খাদ্যের দাম। এতে পশু পালন খরচ তুলতেই নাভিস্বাস উঠেছে খামারী ও কৃষকদের। তারপরে যদি নায্য মূল্য না মেলে তাহলে উদীয়মান এই পশু পালন খাত ধ্বংস হতে পারে বলে আশংকার কথা জানালেন প্রান্তিক পশু পালনকারীরা।
মেহেরপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রানিসম্পদ অফিসার এসএম শরিফুল ইসলাম জানান, জেলা প্রানি সম্পদ অফিসের হিসেব মতে, এবারে মেহেরপুর জেলায় প্রায় ১ লক্ষ গবাদি পশু কোরবানি উপযুক্ত। এর মধ্যে গরুর সংখ্যা ৩০ হাজারের উপরে, ছাগল ৬০ হাজার প্রায় বাকি অনান্য পশু। স্থানীয় গো-খাদ্য ও প্রয়োজনীয় পরিচর্যায় হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে স্বপ্নের গরুগুলো। এখন চলছে শেষ মুর্হূতের পরিচর্যা। নিয়মিত গোসল, গরুর বাসস্থান পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়েই সময় পার করছেন গরু পালনকারীরা। ক্ষুদ্র খামারগুলোতে কাজের মধ্য দিয়ে অনেকের বেকার সমস্যার সমাধান হয়েছে। স্থানীয় পশু হাটসহ ঢাকা এবং চট্রগ্রামের কোরবানির পশু হাটে বিক্রির জন্য তোলা হবে। বেশিরভাগ খামারী ও কৃষকরা ধারদেনা করেই পশু পালন করেন। কোরবানির পশু হাটে ভাল দরে বিক্রি করতে পারলেই হবে স্বপ্ন পূরুণ। ধারদেনা পরিশোধ করেই নতুন বছরের জন্য আবারো পশু পালন শুরু হবে।
জেলার কোরাবানির চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত পশু যাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তাই কোরবানির বাজারে সুস্থ-সবল পশু তোলার জন্য খামারী ও পশু পালনকারীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে জেলা প্রানি সম্পদ বিভাগ।