মেহেরপুরে টাকার জন্য লাশ আটক!
- আপলোড টাইম : ১০:১৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০
- / ১২৯ বার পড়া হয়েছে
প্রতিবেদক, মেহেরপুর:
পুত্রের কাছে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য মৃত সিরাজ উদ্দিনের লাশ আটকে রেখেছেন গ্রামের প্রভাবশালী মো. শহিদুল ইসলাম মাস্টার। তবে পিরোজপুর ক্যাম্প পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যেয়ে মৃতের লাশ উদ্ধার না করে প্রভাবশালীর পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ করেছে গ্রামবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মেহেরপুর সদরের পিরোজপুর গ্রামের পূর্বপাড়ায়।
এলাকাবাসী ও মৃত সিরাজ উদ্দিনের পরিবার জানায়, শাহাবুল ২ বছর পূর্বে বিদেশে যাওয়ার জন্য ইয়ারুল ইসলামের কাছে ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা নেন। করোনার কারণে ইয়ারুলকে বিদেশে পাঠাতে ব্যর্থ হন শাহাবুল। সম্প্রতি ইয়ারুল টাকা ফেরত চান। ওই টাকা ফেরত দিতে না পারার কারণে শাহাবুলের পিতা সিরাজ উদ্দিন একটি জমি এগ্রিমেন্ট করে দেন ইয়ারুলের নামে। ইয়ারুলের নামে এগ্রিমেন্ট করে দেওয়ার পর সিরাজ উদ্দিন তাঁর এক নাতির নামে ওই জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরের দিকে সিরাজ উদ্দিন আকস্মিক মারা যান। আসরের নামাজের পর সিরাজ উদ্দিনের লাশ দাফনের প্রস্তুতি গ্রহণ করার পরপরই শহিদুল মাস্টার, আদম ও ইয়ারুলের নেতৃত্বে তাঁদের লোকজন সিরাজ উদ্দিনের লাশ আটকে দেয়। এ ঘটনার পর রাত ৮টার দিকে সিরাজ উদ্দিনের ছেলে-মেয়ের কাছে লিখিত নিয়ে লাশ দাফন করতে দেন।
গ্রামবাসী আরও জানান, ঘটনার সময় পিরোজপুর ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে থাকলেও অজ্ঞাতকারণে নীরব ভূমিকা পালন করেছে। লাশের ওয়ারিশদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্ট্যাম্প লিখে নিতে একটি পক্ষকে সহযোগিতা করেছে। পুলিশের এ নীরব ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে দাবি করেন মরহুমের ছেলে শাহাবুল।
অভিযুক্ত আদম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলেরা এ টাকার জন্য জমি স্ট্যাম্প করে দেবে তারপর লাশ আমাদের লোকজন ছেড়ে দেবে।’ পিরোজপুর ইউনিয়ন ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি মেহেরপুর থানার ইনচার্জ স্যারকে জানিয়েছি। তিনি বলেছেন ওয়ারিশদের সঙ্গে বসে মীমাংসা করতে।’ তিনি আরও বলেন, ‘উভয় পক্ষের দোষ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মীমাংসার জন্য ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দায়িত্ব নিয়েছেন। কাল (আজ) সকালে ইউনিয়ন পরিষদে বসে মীমাংসা হবে। আপাতত মৃতের ওয়ারিশদের কাছ থেকে একটি লিখিত নিয়ে লাশ দাফন করা হয়েছে।’
মেহেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ্ দারা খান বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। মৃতের ওয়ারিশদের সঙ্গে কথা বলে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করতে স্থানীয় ক্যাম্প ইনচার্জকে বলা হয়েছে।’