ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে গাছে গাছে আমের মুকুল, পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক-বাগান মালিকরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:২৩:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ১৮ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
আমবাগান এলাকায় এখন মৌ মৌ গন্ধ। এতে যে কারো প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। মুকুল থেকে গাছে গুটি আসা শুরু না করলেও বাগান পরিচর্যায় এখন থেকেই ব্যস্ত সময় পার করছেন মেহেরপুরের বিভিন্ন এলাকার কৃষক, বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও আমের ভালো ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ। সুস্বাদু আর বাহারী জাতের আমের কথা উঠলেই চলে আসে মেহেরপুরের নাম। রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে আমের জন্য বিখ্যাত বলা হলেও ইতঃমধ্যেই আম প্রধান অঞ্চল হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে মেহেরপুর জেলা। গত কয়েক বছরে দেশ ও বিদেশে বেশ সুনাম অর্জন করেছে এ জেলার আম।
মেহেরপুরের কৃষকরা জানান, বিগত বছরের তুলনায় এবার আমের মুকুল খুব বেশি ভালো না হলেও মোটামুটি হয়েছে। গত কয়েকদিনে সরেজমিনে জেলার মুজিবনগর আম্রকানন, আনন্দবাস, কেদারগঞ্জ, ভবেরপাড়া, শ্যামপুর, রামনগর, পশ্চিম মালশাদহ, চৌগাছা, মটমুড়া, ভবানীপুর, হোগলবাড়িয়া, মহাম্মদপুর, জুগিন্দাসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এসব চিত্র উঠে আসে। কথা হয় বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। তাঁরা জানান, মাঘের শুরুতে আম গাছের ডালে ডালে মুকুল ফুটতে শুরু করে। তখন থেকেই আমরা মুকুলের পরিচর্যা শুরু করি। আঞ্চলিকভাবে প্রবাদ রয়েছে, ‘আমের আনা মাছের পাই, টিকলে পরে কে কত খাই।’ তাঁদের মতে, গাছে গাছে যে পরিমাণ মুকুল এসেছে, তাতে ৫০ শতাংশ টিকে গেলেও আমের বাম্পার ফলন হবে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার আমগাছে তুলনামূলকভাবে মুকুল কম এসেছে। গড়ে একটি গাছে মুকুল এসেছে, চারটি গাছে আসেনি। মৌসুম শুরুর আগে থেকেই কিছুটা চিন্তিত রয়েছেন আম চাষীরা। তারপরও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশানুরূপ ফলন হবে বলে আশা করছেন তাঁরা।
মটমুড়া গ্রামের আমচাষী আকবর আলী জানান, গাছে মুকুল আসার পর থেকে আম পাড়া পর্যন্ত ৫ থেকে ৬ বার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। তাতে হেক্টরে ৩৮ থেকে ৫০ হাজার টাকার বালাইনাশক লাগে। এবার যে গাছে মুকুল এসেছে, সে গাছ ভরে গেছে। মাইলমারী গ্রামের মোহাদ্দেস আলম জানান, দাদার আমলে ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ আম দেখলেও এখন হিমসাগর, আম রুপালি, মল্লিকা, বিশ্বনাথ, সখিনা, বারি-৪, কাটিমন জাতের আমসহ হাইব্রিড জাতের বিভিন্ন নামে আমের চাষ হচ্ছে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার জানান, জেলায় প্রায় ২ হাজার ৫ শ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আমচাষ করলে এর উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং পরিবহন, রপ্তানিসহ বাজারজাত করলে কৃষকরা ব্যাপক হারে লাভবান হবেন। তিনি আরও জানান, উন্নত পদ্ধতিতে আম চাষ ও রক্ষণাবেক্ষনের জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাগণ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মেহেরপুরে গাছে গাছে আমের মুকুল, পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক-বাগান মালিকরা

আপলোড টাইম : ০৫:২৩:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:
আমবাগান এলাকায় এখন মৌ মৌ গন্ধ। এতে যে কারো প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। মুকুল থেকে গাছে গুটি আসা শুরু না করলেও বাগান পরিচর্যায় এখন থেকেই ব্যস্ত সময় পার করছেন মেহেরপুরের বিভিন্ন এলাকার কৃষক, বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও আমের ভালো ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ। সুস্বাদু আর বাহারী জাতের আমের কথা উঠলেই চলে আসে মেহেরপুরের নাম। রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে আমের জন্য বিখ্যাত বলা হলেও ইতঃমধ্যেই আম প্রধান অঞ্চল হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে মেহেরপুর জেলা। গত কয়েক বছরে দেশ ও বিদেশে বেশ সুনাম অর্জন করেছে এ জেলার আম।
মেহেরপুরের কৃষকরা জানান, বিগত বছরের তুলনায় এবার আমের মুকুল খুব বেশি ভালো না হলেও মোটামুটি হয়েছে। গত কয়েকদিনে সরেজমিনে জেলার মুজিবনগর আম্রকানন, আনন্দবাস, কেদারগঞ্জ, ভবেরপাড়া, শ্যামপুর, রামনগর, পশ্চিম মালশাদহ, চৌগাছা, মটমুড়া, ভবানীপুর, হোগলবাড়িয়া, মহাম্মদপুর, জুগিন্দাসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এসব চিত্র উঠে আসে। কথা হয় বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। তাঁরা জানান, মাঘের শুরুতে আম গাছের ডালে ডালে মুকুল ফুটতে শুরু করে। তখন থেকেই আমরা মুকুলের পরিচর্যা শুরু করি। আঞ্চলিকভাবে প্রবাদ রয়েছে, ‘আমের আনা মাছের পাই, টিকলে পরে কে কত খাই।’ তাঁদের মতে, গাছে গাছে যে পরিমাণ মুকুল এসেছে, তাতে ৫০ শতাংশ টিকে গেলেও আমের বাম্পার ফলন হবে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার আমগাছে তুলনামূলকভাবে মুকুল কম এসেছে। গড়ে একটি গাছে মুকুল এসেছে, চারটি গাছে আসেনি। মৌসুম শুরুর আগে থেকেই কিছুটা চিন্তিত রয়েছেন আম চাষীরা। তারপরও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশানুরূপ ফলন হবে বলে আশা করছেন তাঁরা।
মটমুড়া গ্রামের আমচাষী আকবর আলী জানান, গাছে মুকুল আসার পর থেকে আম পাড়া পর্যন্ত ৫ থেকে ৬ বার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। তাতে হেক্টরে ৩৮ থেকে ৫০ হাজার টাকার বালাইনাশক লাগে। এবার যে গাছে মুকুল এসেছে, সে গাছ ভরে গেছে। মাইলমারী গ্রামের মোহাদ্দেস আলম জানান, দাদার আমলে ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ আম দেখলেও এখন হিমসাগর, আম রুপালি, মল্লিকা, বিশ্বনাথ, সখিনা, বারি-৪, কাটিমন জাতের আমসহ হাইব্রিড জাতের বিভিন্ন নামে আমের চাষ হচ্ছে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার জানান, জেলায় প্রায় ২ হাজার ৫ শ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আমচাষ করলে এর উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং পরিবহন, রপ্তানিসহ বাজারজাত করলে কৃষকরা ব্যাপক হারে লাভবান হবেন। তিনি আরও জানান, উন্নত পদ্ধতিতে আম চাষ ও রক্ষণাবেক্ষনের জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাগণ।