ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মৃত সন্তান পেটে নিয়ে তিন মাস ধরে ঘুরছেন অসহায় সালমা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:০৯:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জুলাই ২০২২
  • / ৩ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক: মেহেরপুর শহরের ওষুধ দোকানির খপ্পরে পড়ে গত তিন মাস ধরে মৃত সন্তান পেটে নিয়ে ঘুরছেন সালমা খাতুন নামে এক নারী। অবশেষে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে নার্স সাবিনা ইয়াসমিনের রোষানলে পড়ে চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতালেরে বেডে কাতরাচ্ছেন। সালমা খাতুন মেহেরপুর সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের হাসিবুলের স্ত্রী।

সালমা খাতুনের ভাই রাসেদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, গত তিন মাসে আগে মেহেরপুর সনোল্যাবে আল্ট্রাসনো করলে ডাক্তার জে পি আগরওয়ালা বলে গর্ভের সন্তান মারা গেছে। ডিএনসিসি করে বাচ্চা পেটে থেকে বের করে ফেলতে হবে বলে প্রাথমিক ওষুধ লিখে দেন। তখন মেহেরপুর কাথুলি বাসস্ট্যান্ডের কাছে ওষুধ কিনতে যান। এসময় ওষুধের দোকানদার  মহিবুল বলে ডাক্তারের রিপোর্ট ভুল আপনার সন্তান জীবিত আছে। আমার ওষুধ খেলে পেটের সন্তান জীবিত থাকবে। এরপর থেকে সালমা খাতুনের পেটে যখন ব্যথা ওঠে, তখন দোকানদার মহিবুল তাকে ওষুধ দেয়। এভাবে তিন মাস ধরে প্রায় ৪০ হাজার টাকার ওষুধ খেয়েছেন সালমা খাতুন। গত রোববার বিকেলে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগে সালমাকে আনা হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি করে নেন। কিন্তু মহিলা ওয়ার্ডের কর্ত্যবরত নার্স সাবিনা ইয়াসমিন ভর্তি নিতে অস্বীকৃতি জানান।

এসময় সালমা খাতুনের মাকে হাসপাতাল গেটে কাঁদতে দেখে স্থানীয় কয়েকজন যুবক বিষয়টা শুনে মহিলা ওয়ার্ডে সালমাকে ভর্তির জন্য নিয়ে যায়। কর্ত্যবরত নার্স সাবিনা ইয়াসমিন তাদের সাথেও রুঢ় আচরণ করে ভর্তি করা যাবে না বলে জানান। পরে ওই যুবকরা বিষয়টি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তারকে ফোনে অভিযোগ দিলে নার্স সাবিনা ইয়াসমিন তাকে ভর্তি করে নেন। কিন্তু ভর্তির পর থেকে সালমাকে কোনো চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতালের বেডে ফেলে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও বলেন, কোনো রোগীকে ভর্তি না নেওয়ার ক্ষমতা কোনো নার্সের নেই। যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মৃত সন্তান পেটে নিয়ে তিন মাস ধরে ঘুরছেন অসহায় সালমা

আপলোড টাইম : ০৭:০৯:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জুলাই ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদক: মেহেরপুর শহরের ওষুধ দোকানির খপ্পরে পড়ে গত তিন মাস ধরে মৃত সন্তান পেটে নিয়ে ঘুরছেন সালমা খাতুন নামে এক নারী। অবশেষে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে নার্স সাবিনা ইয়াসমিনের রোষানলে পড়ে চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতালেরে বেডে কাতরাচ্ছেন। সালমা খাতুন মেহেরপুর সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের হাসিবুলের স্ত্রী।

সালমা খাতুনের ভাই রাসেদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, গত তিন মাসে আগে মেহেরপুর সনোল্যাবে আল্ট্রাসনো করলে ডাক্তার জে পি আগরওয়ালা বলে গর্ভের সন্তান মারা গেছে। ডিএনসিসি করে বাচ্চা পেটে থেকে বের করে ফেলতে হবে বলে প্রাথমিক ওষুধ লিখে দেন। তখন মেহেরপুর কাথুলি বাসস্ট্যান্ডের কাছে ওষুধ কিনতে যান। এসময় ওষুধের দোকানদার  মহিবুল বলে ডাক্তারের রিপোর্ট ভুল আপনার সন্তান জীবিত আছে। আমার ওষুধ খেলে পেটের সন্তান জীবিত থাকবে। এরপর থেকে সালমা খাতুনের পেটে যখন ব্যথা ওঠে, তখন দোকানদার মহিবুল তাকে ওষুধ দেয়। এভাবে তিন মাস ধরে প্রায় ৪০ হাজার টাকার ওষুধ খেয়েছেন সালমা খাতুন। গত রোববার বিকেলে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগে সালমাকে আনা হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি করে নেন। কিন্তু মহিলা ওয়ার্ডের কর্ত্যবরত নার্স সাবিনা ইয়াসমিন ভর্তি নিতে অস্বীকৃতি জানান।

এসময় সালমা খাতুনের মাকে হাসপাতাল গেটে কাঁদতে দেখে স্থানীয় কয়েকজন যুবক বিষয়টা শুনে মহিলা ওয়ার্ডে সালমাকে ভর্তির জন্য নিয়ে যায়। কর্ত্যবরত নার্স সাবিনা ইয়াসমিন তাদের সাথেও রুঢ় আচরণ করে ভর্তি করা যাবে না বলে জানান। পরে ওই যুবকরা বিষয়টি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তারকে ফোনে অভিযোগ দিলে নার্স সাবিনা ইয়াসমিন তাকে ভর্তি করে নেন। কিন্তু ভর্তির পর থেকে সালমাকে কোনো চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতালের বেডে ফেলে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও বলেন, কোনো রোগীকে ভর্তি না নেওয়ার ক্ষমতা কোনো নার্সের নেই। যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।