ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মুভমেন্ট পাস নেয়ার হিড়িক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৩:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল ২০২১
  • / ৬১ বার পড়া হয়েছে

২ দিনে ইস্যু ৩ লাখ ১৬ হাজারের বেশি
সমীকরণ প্রতিবেদন:
কঠোর লকডাউনের মধ্যেও রাস্তায় চলাচলের জন্য পুলিশের মুভমেন্ট পাস নেয়ার হিড়িক পড়েছে। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে মানুষ প্রতিদিনই হিট করছে মুভমেন্ট পাসের জন্য। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত মুভমেন্ট পাসের জন্য অ্যাপসে ১৬ কোটি বার হিট অথবা নক হয়েছে। এর মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে পেরেছেন চার লাখ ৯৭৭ জন। আর পুলিশ পাস দিয়েছে তিন লাখ ১৬ হাজার ৮০০টি। প্রশ্ন উঠেছে এতগুলো মুভমেন্ট পাস নিলো কারা। কেননা কঠোর লকডাউনের মধ্যে গত দুই দিনে অসংখ্য মানুষ রাস্তায় বের হয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েছেন। গুনতে হয়েছে জরিমানা। পুলিশের মুখোমুখি বা বাধারমুখে পড়ে এসব লোকজনের অধিকাংশই মুভমেন্ট পাস দেখাতে পারেননি। মুভমেন্ট পাস পাওয়া যাচ্ছে না বেশির ভাগ মানুষের কাছেই। তাই প্রশ্ন উঠেছে, তিন লাখেরও বেশি মুভমেন্ট পাস নিলো কারা?
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন। লোকজনকে সব সময় ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। তবে জরুরি প্রয়োজনে মানুষ যেন চলাচল করতে পারে, সেজন্য মুভমেন্ট পাসের বথ্যবস্থা করেছে পুলিশ। প্রথম দিন থেকেই প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে এ পাস নেয়ার হিড়িক পড়ে। গতকাল বিকেল পর্যন্ত মুভমেন্ট পাস অ্যাপে ১৬ কোটি মানুষ নক করেছে। পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা জানান, যারা যথাযথ নিয়মে আবেদন করছেন, যাচাই-বাছাই শেষে তাদের পাস দেয়া হচ্ছে। মুভমেন্ট পাস নিয়ে কোনো ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নেয়া হচ্ছে কি না, তাও যাচাই করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, গত ১৪ এপ্রিল অ্যাপটি উদ্বোধনের পর থেকে ওয়েবসাইটে ঢুকে মুভমেন্ট পাসের জন্য নিবন্ধন করেছেন চার লাখ ৯৭৭ জন। পুলিশ পাস দিয়েছে তিন লাখ ১৬ হাজার ৮০০টি। ১৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১১টায় মুভমেন্ট পাস অ্যাপের উদ্বোধন করেন পুলিশের আইজি ড. বেনজীর আহমেদ। গতকাল বিকেল পর্যন্ত অ্যাপটিতে ১৫ কোটি ৯৯ লাখ ২২ হাজারের বেশি নক বা হিট হয়েছে। পুলিশ জানায়, একটি নির্দিষ্ট সময় ও গন্তব্যের জন্য মুভমেন্ট পাস ইস্যু করা হয়। ওই সময় অতিবাহিত হলে কিংবা নির্ধারিত গন্তব্য থেকে অন্য কোথাও যেতে হলে পুনরায় মুভমেন্ট পাস ইস্যু করতে হবে। এই পাস কেবল জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারযোগ্য। নিত্যপণথ্য ও ওষুধপত্র কেনা, চিকিৎসা, কৃষি পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ, ত্রাণ বিতরণ, লাশের সৎকারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করা যাবে।
মুভমেন্ট পাস লাগবে না যাদের : লকডাউনে জরুরি প্রয়োজনে চলাচলের জন্য মুভমেন্ট পাস কাদের জন্য প্রযোজ্য আর কাদের জন্য প্রযোজ্য নয়, তা জানানো হয়েছে পুলিশ সদর দফতর থেকে। বলা হয়েছে, বিধিনিষেধের আওতামুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, তাদের চলাচলে মুভমেন্ট পাস প্রয়োজন নেই। শুধু পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে কর্মস্থলে আসা-যাওয়া করতে পারবেন। লকডাউনে বিধিনিষেধের আওতামুক্ত যারা, তারা হলেন- চিকিৎসক, নার্স, মেডিক্যাল স্টাফ, কোভিড-১৯ টিকা /চিকিৎসার সাথে জড়িত ব্যক্তি/ স্টাফ, ব্যাংকার, ব্যাংকের অন্যান্য স্টাফ, সাংবাদিক, গণমাধ্যমের ক্যামেরাম্যান, টেলিফোন/ ইন্টারনেট সেবাকর্মী, বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, জরুরি সেবার সাথে জড়িত কর্মকর্তা/ কর্মচারী, অফিসগামী সরকারি কর্মকর্তা, শিল্পকারখানা/ গার্মেন্ট উৎপাদনে জড়িত কর্মী/ কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ফায়ার সার্ভিস, ডাকসেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও জ্বালানির সাথে জড়িত ব্যক্তি/ কর্মকর্তা ও বন্দর-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/ কর্মকর্তা। লকডাউন বাস্তবায়নে স্থাপিত চেকপোস্টে যেসব পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্রিফিং করার জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মুভমেন্ট পাস নেয়ার হিড়িক

আপলোড টাইম : ১০:০৩:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল ২০২১

২ দিনে ইস্যু ৩ লাখ ১৬ হাজারের বেশি
সমীকরণ প্রতিবেদন:
কঠোর লকডাউনের মধ্যেও রাস্তায় চলাচলের জন্য পুলিশের মুভমেন্ট পাস নেয়ার হিড়িক পড়েছে। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে মানুষ প্রতিদিনই হিট করছে মুভমেন্ট পাসের জন্য। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত মুভমেন্ট পাসের জন্য অ্যাপসে ১৬ কোটি বার হিট অথবা নক হয়েছে। এর মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে পেরেছেন চার লাখ ৯৭৭ জন। আর পুলিশ পাস দিয়েছে তিন লাখ ১৬ হাজার ৮০০টি। প্রশ্ন উঠেছে এতগুলো মুভমেন্ট পাস নিলো কারা। কেননা কঠোর লকডাউনের মধ্যে গত দুই দিনে অসংখ্য মানুষ রাস্তায় বের হয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েছেন। গুনতে হয়েছে জরিমানা। পুলিশের মুখোমুখি বা বাধারমুখে পড়ে এসব লোকজনের অধিকাংশই মুভমেন্ট পাস দেখাতে পারেননি। মুভমেন্ট পাস পাওয়া যাচ্ছে না বেশির ভাগ মানুষের কাছেই। তাই প্রশ্ন উঠেছে, তিন লাখেরও বেশি মুভমেন্ট পাস নিলো কারা?
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন। লোকজনকে সব সময় ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। তবে জরুরি প্রয়োজনে মানুষ যেন চলাচল করতে পারে, সেজন্য মুভমেন্ট পাসের বথ্যবস্থা করেছে পুলিশ। প্রথম দিন থেকেই প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে এ পাস নেয়ার হিড়িক পড়ে। গতকাল বিকেল পর্যন্ত মুভমেন্ট পাস অ্যাপে ১৬ কোটি মানুষ নক করেছে। পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা জানান, যারা যথাযথ নিয়মে আবেদন করছেন, যাচাই-বাছাই শেষে তাদের পাস দেয়া হচ্ছে। মুভমেন্ট পাস নিয়ে কোনো ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নেয়া হচ্ছে কি না, তাও যাচাই করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, গত ১৪ এপ্রিল অ্যাপটি উদ্বোধনের পর থেকে ওয়েবসাইটে ঢুকে মুভমেন্ট পাসের জন্য নিবন্ধন করেছেন চার লাখ ৯৭৭ জন। পুলিশ পাস দিয়েছে তিন লাখ ১৬ হাজার ৮০০টি। ১৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১১টায় মুভমেন্ট পাস অ্যাপের উদ্বোধন করেন পুলিশের আইজি ড. বেনজীর আহমেদ। গতকাল বিকেল পর্যন্ত অ্যাপটিতে ১৫ কোটি ৯৯ লাখ ২২ হাজারের বেশি নক বা হিট হয়েছে। পুলিশ জানায়, একটি নির্দিষ্ট সময় ও গন্তব্যের জন্য মুভমেন্ট পাস ইস্যু করা হয়। ওই সময় অতিবাহিত হলে কিংবা নির্ধারিত গন্তব্য থেকে অন্য কোথাও যেতে হলে পুনরায় মুভমেন্ট পাস ইস্যু করতে হবে। এই পাস কেবল জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারযোগ্য। নিত্যপণথ্য ও ওষুধপত্র কেনা, চিকিৎসা, কৃষি পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ, ত্রাণ বিতরণ, লাশের সৎকারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করা যাবে।
মুভমেন্ট পাস লাগবে না যাদের : লকডাউনে জরুরি প্রয়োজনে চলাচলের জন্য মুভমেন্ট পাস কাদের জন্য প্রযোজ্য আর কাদের জন্য প্রযোজ্য নয়, তা জানানো হয়েছে পুলিশ সদর দফতর থেকে। বলা হয়েছে, বিধিনিষেধের আওতামুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, তাদের চলাচলে মুভমেন্ট পাস প্রয়োজন নেই। শুধু পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে কর্মস্থলে আসা-যাওয়া করতে পারবেন। লকডাউনে বিধিনিষেধের আওতামুক্ত যারা, তারা হলেন- চিকিৎসক, নার্স, মেডিক্যাল স্টাফ, কোভিড-১৯ টিকা /চিকিৎসার সাথে জড়িত ব্যক্তি/ স্টাফ, ব্যাংকার, ব্যাংকের অন্যান্য স্টাফ, সাংবাদিক, গণমাধ্যমের ক্যামেরাম্যান, টেলিফোন/ ইন্টারনেট সেবাকর্মী, বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, জরুরি সেবার সাথে জড়িত কর্মকর্তা/ কর্মচারী, অফিসগামী সরকারি কর্মকর্তা, শিল্পকারখানা/ গার্মেন্ট উৎপাদনে জড়িত কর্মী/ কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ফায়ার সার্ভিস, ডাকসেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও জ্বালানির সাথে জড়িত ব্যক্তি/ কর্মকর্তা ও বন্দর-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/ কর্মকর্তা। লকডাউন বাস্তবায়নে স্থাপিত চেকপোস্টে যেসব পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্রিফিং করার জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।