ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মুজিবনগরে প্রবীণ আ.লীগ নেতা আব্দুল মোমিন চৌধুরী আর নেই

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫২:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর ২০২২
  • / ৯ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, মুজিবনগর: মুজিবনগরের ভবরপাড়া গ্রামের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মোমিন চৌধুরী আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। বার্ধক্যজনিত অসুস্থায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। গতকাল বুধবার বাদ আছর ভবরপাড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে মরহুমের জানাযা শেষে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়। এসময় মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগসহ সকল দলের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা জানাযায় অংশ নেন। এদিকে, পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের বিদেহ আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া কামনা করা হয়েছে।

জানা গেছে, আব্দুল মোমিন চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি। বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার/মুজিবনগর সরকার/প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজন এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে অসামান্য অবদান রয়েছে এই বীরের। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ এ বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজনে যার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তার নাম আব্দুর মোমিন চৌধুরী। শপথের আগের কয়েকদিন থেকে মঞ্চের জন্য বিভিন্ন মালামাল নিয়ে আসা, এলাকার মানুষ জড়ো করা এবং তৎকালীন এসডিও তৌফিক-এ-ইলাহি চৌধুরীরর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে যারা নেতৃত্বে ছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন আব্দুল মোমিন চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধ বেগবান করা এবং ভারত থেকে ত্রাণ সংগ্রহ ও এসডিও’র কাছে পৌঁছে দেওয়ার গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তৎকালীন ভবরপাড়া সংগ্রাম কমিটি। যে কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে সততা, নিষ্ঠা ও নিরলস শ্রম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সার্বিক সহযোগিতা করেন আব্দুল মোমিন চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এই কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করতে গিয়ে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করা হয়নি। ফলে মেলেনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি। তবে বৈদ্যনাথতলা তথা মুজিবনগরের ইতিহাসের সাথে আজীবন মিশে থাকবেন আব্দুল মোমিন চৌধুরীর নাম।

জানা গেছে, আব্দুল মোমিন চৌধুরী প্রায় ৩০ বছর ধরে বাগোয়ান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন বলিষ্ঠ হাতে। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়েছেন দূর থেকে বহুদূর। সম্মানস্বরুপ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপদেষ্টা পদে আসিন হন তিনি। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও আব্দুল মোমিন চৌধুরী ছিলেন নিরাহংকার ও সাদাসিদে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোনো মোহ তাকে আকৃষ্ট করেনি। আমৃত্যু তিনি স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ আর বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মুজিবনগরে প্রবীণ আ.লীগ নেতা আব্দুল মোমিন চৌধুরী আর নেই

আপলোড টাইম : ০৮:৫২:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর ২০২২

প্রতিবেদক, মুজিবনগর: মুজিবনগরের ভবরপাড়া গ্রামের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মোমিন চৌধুরী আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। বার্ধক্যজনিত অসুস্থায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। গতকাল বুধবার বাদ আছর ভবরপাড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে মরহুমের জানাযা শেষে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়। এসময় মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগসহ সকল দলের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা জানাযায় অংশ নেন। এদিকে, পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের বিদেহ আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া কামনা করা হয়েছে।

জানা গেছে, আব্দুল মোমিন চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি। বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার/মুজিবনগর সরকার/প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজন এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে অসামান্য অবদান রয়েছে এই বীরের। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ এ বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজনে যার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তার নাম আব্দুর মোমিন চৌধুরী। শপথের আগের কয়েকদিন থেকে মঞ্চের জন্য বিভিন্ন মালামাল নিয়ে আসা, এলাকার মানুষ জড়ো করা এবং তৎকালীন এসডিও তৌফিক-এ-ইলাহি চৌধুরীরর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে যারা নেতৃত্বে ছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন আব্দুল মোমিন চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধ বেগবান করা এবং ভারত থেকে ত্রাণ সংগ্রহ ও এসডিও’র কাছে পৌঁছে দেওয়ার গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তৎকালীন ভবরপাড়া সংগ্রাম কমিটি। যে কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে সততা, নিষ্ঠা ও নিরলস শ্রম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সার্বিক সহযোগিতা করেন আব্দুল মোমিন চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এই কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করতে গিয়ে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করা হয়নি। ফলে মেলেনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি। তবে বৈদ্যনাথতলা তথা মুজিবনগরের ইতিহাসের সাথে আজীবন মিশে থাকবেন আব্দুল মোমিন চৌধুরীর নাম।

জানা গেছে, আব্দুল মোমিন চৌধুরী প্রায় ৩০ বছর ধরে বাগোয়ান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন বলিষ্ঠ হাতে। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়েছেন দূর থেকে বহুদূর। সম্মানস্বরুপ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপদেষ্টা পদে আসিন হন তিনি। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও আব্দুল মোমিন চৌধুরী ছিলেন নিরাহংকার ও সাদাসিদে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোনো মোহ তাকে আকৃষ্ট করেনি। আমৃত্যু তিনি স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ আর বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করেছেন।