ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:০০:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / ২৩১ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন
নারীসত্তা পূর্ণতা পায় মাতৃত্ব সত্তার মাধ্যমে। নারীরা জননীর জাতি, এটিই তাদের বড় পরিচয়। ইসলাম নারীর সম্মানকে নিরঙ্কুশ করেছে। বিশেষত ইসলামী চেতনায় মায়ের মর্যাদা মহিমান্বিত। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘মায়ের পায়ের তলে সন্তানের বেহেশত।’ ইবনে মাজাহ, নাসায়ি। এ হাদিসের মাধ্যমে স্পষ্ট বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, সন্তান জান্নাতে ঠাঁই পাবে কিনা তা বহুলাংশে মায়ের সন্তুষ্টির ওপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক মোমিনকে যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টিবিধানে সচেষ্ট থাকতে হবে তেমন জনক-জননীর প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধের প্রকাশ ঘটাতে হবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিহাদে যাওয়ার চেয়েও মায়ের সেবাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। বুখারি ও মুসলিমের হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘এক লোক রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে বললেন, হে আল্লাহর রসুল! কোন ব্যক্তি আমার সদাচরণ ও আনুগত্য পাওয়ার সবচেয়ে বেশি অধিকারী? রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার মা। তিনি আরজ করলেন, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। ওই লোক আবারও জানতে চাইলেন, তারপর কে? জবাব এলোÑ তোমার মা। পুনরায় তিনি নিবেদন করলেন, তারপর কে? রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন, তোমার পিতা। তারপর পর্যায়ক্রমে যারা তোমার আপনজন।’ এ হাদিসে মায়ের সঙ্গে সদাচরণ ও আনুগত্যের জন্য তিনবার আর পিতার জন্য একবার উৎসাহিত করার কারণ হচ্ছে, সন্তানের জন্য মা-ই তুলনামূলক বেশি ত্যাগ স্বীকার করেন। গর্ভধারণ, দুধপান, রাত জেগে সন্তানের তত্ত্বাবধানসহ নানাবিধ কষ্ট একমাত্র মা-ই সহ্য করেন। তা ছাড়া সন্তানের প্রতি মা-ই সবচেয়ে বেশি যত্নবান এবং বেশি আদর-সোহাগ করেন।
একবার হজরত ইবনে ওমর (রা.) দেখতে পেলেন, এক লোক তার মাকে পিঠে নিয়ে আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করছেন। একপর্যায়ে সেই লোকটি জিজ্ঞাসা করলেন, হে ইবনে ওমর! আপনি কি মনে করেন আমি মাকে নিয়ে এভাবে তাওয়াফ করায় তাঁর কিছু ঋণ পরিশোধ করতে পারলাম? ইবনে ওমর (রা.) বললেন, তোমাকে গর্ভে ধারণ করাকালে নানাবিধ যাতনার একটির ঋণও শোধ করতে পারোনি। তবে তুমি ভালো কাজ করছ, তোমার এ অল্প কাজেই আল্লাহ তোমাকে বহু পুণ্য দেবেন। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘চার শ্রেণির লোককে আল্লাহ কখনই বেহেশতে প্রবেশ করতে দেবেন না, আর জান্নাতের নিয়ামতরাজির স্বাদ নেওয়ারও সুযোগ দেবেন না। ১. মাদকাসক্ত ২. সুদখোর ৩. এতিমের মাল আত্মসাৎকারী ৪. পিতা-মাতার অবাধ্যচারী। তবে তারা তওবা করলে ভিন্ন কথা।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল

আপলোড টাইম : ১১:০০:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০

ধর্ম প্রতিবেদন
নারীসত্তা পূর্ণতা পায় মাতৃত্ব সত্তার মাধ্যমে। নারীরা জননীর জাতি, এটিই তাদের বড় পরিচয়। ইসলাম নারীর সম্মানকে নিরঙ্কুশ করেছে। বিশেষত ইসলামী চেতনায় মায়ের মর্যাদা মহিমান্বিত। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘মায়ের পায়ের তলে সন্তানের বেহেশত।’ ইবনে মাজাহ, নাসায়ি। এ হাদিসের মাধ্যমে স্পষ্ট বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, সন্তান জান্নাতে ঠাঁই পাবে কিনা তা বহুলাংশে মায়ের সন্তুষ্টির ওপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক মোমিনকে যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টিবিধানে সচেষ্ট থাকতে হবে তেমন জনক-জননীর প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধের প্রকাশ ঘটাতে হবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিহাদে যাওয়ার চেয়েও মায়ের সেবাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। বুখারি ও মুসলিমের হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘এক লোক রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে বললেন, হে আল্লাহর রসুল! কোন ব্যক্তি আমার সদাচরণ ও আনুগত্য পাওয়ার সবচেয়ে বেশি অধিকারী? রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার মা। তিনি আরজ করলেন, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। ওই লোক আবারও জানতে চাইলেন, তারপর কে? জবাব এলোÑ তোমার মা। পুনরায় তিনি নিবেদন করলেন, তারপর কে? রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন, তোমার পিতা। তারপর পর্যায়ক্রমে যারা তোমার আপনজন।’ এ হাদিসে মায়ের সঙ্গে সদাচরণ ও আনুগত্যের জন্য তিনবার আর পিতার জন্য একবার উৎসাহিত করার কারণ হচ্ছে, সন্তানের জন্য মা-ই তুলনামূলক বেশি ত্যাগ স্বীকার করেন। গর্ভধারণ, দুধপান, রাত জেগে সন্তানের তত্ত্বাবধানসহ নানাবিধ কষ্ট একমাত্র মা-ই সহ্য করেন। তা ছাড়া সন্তানের প্রতি মা-ই সবচেয়ে বেশি যত্নবান এবং বেশি আদর-সোহাগ করেন।
একবার হজরত ইবনে ওমর (রা.) দেখতে পেলেন, এক লোক তার মাকে পিঠে নিয়ে আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করছেন। একপর্যায়ে সেই লোকটি জিজ্ঞাসা করলেন, হে ইবনে ওমর! আপনি কি মনে করেন আমি মাকে নিয়ে এভাবে তাওয়াফ করায় তাঁর কিছু ঋণ পরিশোধ করতে পারলাম? ইবনে ওমর (রা.) বললেন, তোমাকে গর্ভে ধারণ করাকালে নানাবিধ যাতনার একটির ঋণও শোধ করতে পারোনি। তবে তুমি ভালো কাজ করছ, তোমার এ অল্প কাজেই আল্লাহ তোমাকে বহু পুণ্য দেবেন। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘চার শ্রেণির লোককে আল্লাহ কখনই বেহেশতে প্রবেশ করতে দেবেন না, আর জান্নাতের নিয়ামতরাজির স্বাদ নেওয়ারও সুযোগ দেবেন না। ১. মাদকাসক্ত ২. সুদখোর ৩. এতিমের মাল আত্মসাৎকারী ৪. পিতা-মাতার অবাধ্যচারী। তবে তারা তওবা করলে ভিন্ন কথা।’