ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে চিকিৎসক ও রোগী!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪৫:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুলাই ২০২১
  • / ৩৬ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদায় ৫০ শয্যার হাসপাতালের ১৭ শয্যায়ই করোনা আক্রান্তদের দখলে
সমীকরণ প্রতিবেদন:
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যার হলেও করোনা রোগী আছেন ১৭টিতেই। কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল না হলেও করোনা ওয়ার্ডে চলছে চিকিৎসা। ফলে চিকিৎসাসেবা কতটুকু মিলবে তা নিয়েই সৃষ্টি হয়েছে সংশয়। পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স, অন্যান্য জনবল ও ব্যবস্থাপনার সংকটে করোনা রোগীর চিকিৎসা পাওয়াটা কতটা সম্ভব তার উত্তর পাওয়াটাও বেশ দুষ্কর।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৭ জন করোনা রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলার একমাত্র কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জায়গা না হওয়ায় এখানে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন করোনায় আক্রান্ত এসব রোগী। ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১৭টি শয্যাই বর্তমানে করোনা রোগীদের দখলে। তবে হাসপাতালটি নামমাত্র ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত হলেও পর্যাপ্ত জনবল ও খাবার বরাদ্দ না পাওয়ায় এখনো এটি ৩১ শয্যার হাসপাতাল হিসেবেই পরিচালিত হচ্ছে। সমস্ত কার্যক্রম চালু থাকলেও জনবলের অভাবে যেহেতু এটি এখনো ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু করতে পারেনি, সেহেতু কিভাবে ১৭ জন করোনা রোগীকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব; তা আসলেই ভাববার বিষয়।
গত বছর করোনার সংক্রমণ শুরুর প্রাক্কালে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেসরকারি সহায়তায় ১০টি বেড ও দুটি ভিআইপি কেবিনের জন্য হাইফ্লো অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন করা হয়। তখন থেকে হাসপাতালটিতে করোনার রোগীদের চাপ বাড়তে থাকে। বর্তমানেও হাসপাতালটিতে একই ব্যবস্থাপনায় ১৭ জন করোনা রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য জনবলের অভাবে যেখানে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিতেই হিমশিম খায়, সেখানে একই ব্যবস্থাপনায় করোনার মতো এমন মহামারী রোগের চিকিৎসা দেয়াটা কিভাবে সম্ভব হয়?
বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য হাসপাতালটিতে গিয়ে চোখে পড়ল আসল চিত্র। হাসপাতালটির পুরাতন ভবনে ৩১ শয্যার কার্যক্রমের সাথে নতুন ভবনে করোনা রোগীদের জন্য ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। তবে সরকারিভাবে কোনো লোকবল না থাকায় সেখানে আলাদাভাবে কোনো চিকিৎসক দেয়া হয়নি। যে চিকিৎসক সাধারণ ওয়ার্ডে ডিউটি করেন তাকে করোনা ওয়ার্ডেও ডিউটি করতে হয়। ফলে একইসাথে করোনা ইউনিট ও সাধারণ ইউনিটে সেবা দেয়ার কারণে চিকিৎসক ও সাধারণ রোগী উভয়ের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। নতুন সৃষ্ট করোনা ইউনিটে জনবল না থাকার কারণে রোগীর সাথে তার বাড়ির লোকজন সেখানে অবস্থান করছেন এবং তারাই বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরে বের হলেও তা দেখা বা নিয়ন্ত্রণ করার মতো কেউ নেই। এতে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকছেন। তবে এখানে ভর্তি হওয়া রোগীর স্বজনরা বলছেন, চুয়াডাঙ্গায় অনেক রোগীর চাপ থাকায় এখানে তাদের রোগীকে ভর্তি করেছেন। যেহেতু হাসপাতালটিতে অক্সিজেন প্লান্ট রয়েছে ফলে তাদের রোগীরা শ্বাসকষ্টে ভুগবে না এ আশায় তারা এখানে এসেছেন। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা কিন্তু মোটেও এমন নয়। কাকে কিভাবে অক্সিজেন দিতে হবে এবং কী পরিমাণে দিতে হবে এজন্য প্রয়োজন দক্ষ জনবলের। যেহেতু এখানে সে ধরনের দক্ষ জনবল নেই তাই যে উদ্দেশ্য নিয়ে এসব রোগী ভর্তি হচ্ছেন তাদের সেই উদ্দেশ্য কতটুকু বাস্তবায়ন হবে তা শুধু তার নিয়তিই বলতে পারবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। তথ্যসূত্র- সকালের সময়

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে চিকিৎসক ও রোগী!

আপলোড টাইম : ০৯:৪৫:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুলাই ২০২১

দামুড়হুদায় ৫০ শয্যার হাসপাতালের ১৭ শয্যায়ই করোনা আক্রান্তদের দখলে
সমীকরণ প্রতিবেদন:
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যার হলেও করোনা রোগী আছেন ১৭টিতেই। কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল না হলেও করোনা ওয়ার্ডে চলছে চিকিৎসা। ফলে চিকিৎসাসেবা কতটুকু মিলবে তা নিয়েই সৃষ্টি হয়েছে সংশয়। পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স, অন্যান্য জনবল ও ব্যবস্থাপনার সংকটে করোনা রোগীর চিকিৎসা পাওয়াটা কতটা সম্ভব তার উত্তর পাওয়াটাও বেশ দুষ্কর।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৭ জন করোনা রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলার একমাত্র কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জায়গা না হওয়ায় এখানে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন করোনায় আক্রান্ত এসব রোগী। ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১৭টি শয্যাই বর্তমানে করোনা রোগীদের দখলে। তবে হাসপাতালটি নামমাত্র ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত হলেও পর্যাপ্ত জনবল ও খাবার বরাদ্দ না পাওয়ায় এখনো এটি ৩১ শয্যার হাসপাতাল হিসেবেই পরিচালিত হচ্ছে। সমস্ত কার্যক্রম চালু থাকলেও জনবলের অভাবে যেহেতু এটি এখনো ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু করতে পারেনি, সেহেতু কিভাবে ১৭ জন করোনা রোগীকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব; তা আসলেই ভাববার বিষয়।
গত বছর করোনার সংক্রমণ শুরুর প্রাক্কালে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেসরকারি সহায়তায় ১০টি বেড ও দুটি ভিআইপি কেবিনের জন্য হাইফ্লো অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন করা হয়। তখন থেকে হাসপাতালটিতে করোনার রোগীদের চাপ বাড়তে থাকে। বর্তমানেও হাসপাতালটিতে একই ব্যবস্থাপনায় ১৭ জন করোনা রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য জনবলের অভাবে যেখানে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিতেই হিমশিম খায়, সেখানে একই ব্যবস্থাপনায় করোনার মতো এমন মহামারী রোগের চিকিৎসা দেয়াটা কিভাবে সম্ভব হয়?
বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য হাসপাতালটিতে গিয়ে চোখে পড়ল আসল চিত্র। হাসপাতালটির পুরাতন ভবনে ৩১ শয্যার কার্যক্রমের সাথে নতুন ভবনে করোনা রোগীদের জন্য ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। তবে সরকারিভাবে কোনো লোকবল না থাকায় সেখানে আলাদাভাবে কোনো চিকিৎসক দেয়া হয়নি। যে চিকিৎসক সাধারণ ওয়ার্ডে ডিউটি করেন তাকে করোনা ওয়ার্ডেও ডিউটি করতে হয়। ফলে একইসাথে করোনা ইউনিট ও সাধারণ ইউনিটে সেবা দেয়ার কারণে চিকিৎসক ও সাধারণ রোগী উভয়ের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। নতুন সৃষ্ট করোনা ইউনিটে জনবল না থাকার কারণে রোগীর সাথে তার বাড়ির লোকজন সেখানে অবস্থান করছেন এবং তারাই বিভিন্ন প্রয়োজনে বাইরে বের হলেও তা দেখা বা নিয়ন্ত্রণ করার মতো কেউ নেই। এতে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকছেন। তবে এখানে ভর্তি হওয়া রোগীর স্বজনরা বলছেন, চুয়াডাঙ্গায় অনেক রোগীর চাপ থাকায় এখানে তাদের রোগীকে ভর্তি করেছেন। যেহেতু হাসপাতালটিতে অক্সিজেন প্লান্ট রয়েছে ফলে তাদের রোগীরা শ্বাসকষ্টে ভুগবে না এ আশায় তারা এখানে এসেছেন। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা কিন্তু মোটেও এমন নয়। কাকে কিভাবে অক্সিজেন দিতে হবে এবং কী পরিমাণে দিতে হবে এজন্য প্রয়োজন দক্ষ জনবলের। যেহেতু এখানে সে ধরনের দক্ষ জনবল নেই তাই যে উদ্দেশ্য নিয়ে এসব রোগী ভর্তি হচ্ছেন তাদের সেই উদ্দেশ্য কতটুকু বাস্তবায়ন হবে তা শুধু তার নিয়তিই বলতে পারবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। তথ্যসূত্র- সকালের সময়