ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মানুষের ভয় ম্যাজিস্ট্রেটে, করোনায় নয়!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২১:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুন ২০২১
  • / ৫৯ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় মোবাইল কোর্টে ৪১ জনকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মানুষের ভয় ম্যাজিস্ট্রেটে, করোনার নয়। এমনই অবস্থা চুয়াডাঙ্গা শহরের। দিনব্যাপী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ আর আনসারের সাথে লুকোচুরি খেলা করছে এক শ্রেণির অসচেতন মানুষ এবং কিছু হাতে গোনা ব্যবসায়ী। যে দিকে সাদা গাড়ি, সেদিকে সব বন্ধ। গাড়ি চলে যাওয়া মানে আবার অর্ধেক শার্টার নামিয়ে সব কিছু খোলা।
চুয়াডাঙ্গায় করোনা সংক্রমণ রোধে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম সরকার গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কয়েকদিন আগেই। ওই নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকেই শহরজুড়ে কঠোর অবস্থানে আছে প্রশাসন। চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা, জীবননগর, দামুড়হুদা ও দর্শনায় প্রতিদিনই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। স্বাস্থ্যবিধি না মানাসহ সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালন না করার অপরাধে এসব মোবাইল কোর্টে জরিমানা করা হচ্ছে। সচেতন করা হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী জেলাজুড়ে ৬টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। দিনব্যাপী এসব মোবাইল কোর্টে ২৮টি মামলায় ৪১ জনকে ৪৯ হাজার ৮৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ওই নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকেই কঠোর অবস্থানে আছে প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু সেই কঠোর অবস্থানকেও হার মানাচ্ছে কিছু অসচেতন মানুষ ও ব্যবসায়ী। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জারি থাকা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও শহরে চলাফেরা করছেন তাঁরা। স্বাস্থ্যবিধি মানতে একেবারে অনীহা প্রকাশ। মাস্ক না পরেই বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন অনেকেই।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, যে এলাকায় মোবাইল কোর্টের সাদা গাড়ি যাচ্ছে, সেই এলাকায় নিমিশেই চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎতই ক্রেতা-বিক্রেতা শূন্য হয়ে যাচ্ছে সেই এলাকা। কয়েকজনকে ধরে পেলে মোবাইল কোর্টে ম্যাজিস্ট্রেট শাস্তি দিচ্ছেন কিংবা জরিমানা করছেন। আবার কিছুক্ষণ পরে ওই এলাকা থেকে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি বের হয়ে গেলেই প্রায় স্বাভাবিক সময়ে ফিরে আসছে ওই এলাকার চিত্র।
সকাল ৮টায় চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পরিস্থিতি একেবারেই স্বাস্থ্যবিধি মানার অনুকূলে নেই। বাজার করতে আসা বেশিভাগ মানুষেরই মাস্ক ছিল না। অনেকেই আবার গাদাগাদি করে বাজারে ঢুকছেন। এছাড়া, দিনব্যাপী শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মোবাইল কোর্ট দেখা গেলেও, মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব কম। শাস্তি, জরিমানা কোনোটাতেই থামানো যাচ্ছে না অসচেতন মানুষকে। কেউ কেউ যাচ্ছেন এই দুঃসময়েও আত্মীয় বাড়িতে। মোবাইল কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, এ ধরনের বেশ কয়েকজনকে জরিমানা করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, পরিস্থিতি এখন মোটেও স্বাভাবিক বা ভালো নয়। আক্রান্ত এবং মৃত্যু কোনোটাই কম নয়। আমাদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে হবে। একজন সুনাগরিকের দায়িত্ব রাষ্ট্রের এবং রাষ্ট্রের মানুষ তথা নিজেদের কল্যাণে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা। কিন্তু অনেকেই তা মানছেন না। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে আছে প্রশাসন। আর কাজহীন মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মানুষের ভয় ম্যাজিস্ট্রেটে, করোনায় নয়!

আপলোড টাইম : ১০:২১:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুন ২০২১

চুয়াডাঙ্গায় মোবাইল কোর্টে ৪১ জনকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মানুষের ভয় ম্যাজিস্ট্রেটে, করোনার নয়। এমনই অবস্থা চুয়াডাঙ্গা শহরের। দিনব্যাপী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ আর আনসারের সাথে লুকোচুরি খেলা করছে এক শ্রেণির অসচেতন মানুষ এবং কিছু হাতে গোনা ব্যবসায়ী। যে দিকে সাদা গাড়ি, সেদিকে সব বন্ধ। গাড়ি চলে যাওয়া মানে আবার অর্ধেক শার্টার নামিয়ে সব কিছু খোলা।
চুয়াডাঙ্গায় করোনা সংক্রমণ রোধে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম সরকার গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কয়েকদিন আগেই। ওই নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকেই শহরজুড়ে কঠোর অবস্থানে আছে প্রশাসন। চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা, জীবননগর, দামুড়হুদা ও দর্শনায় প্রতিদিনই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। স্বাস্থ্যবিধি না মানাসহ সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালন না করার অপরাধে এসব মোবাইল কোর্টে জরিমানা করা হচ্ছে। সচেতন করা হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী জেলাজুড়ে ৬টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। দিনব্যাপী এসব মোবাইল কোর্টে ২৮টি মামলায় ৪১ জনকে ৪৯ হাজার ৮৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ওই নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকেই কঠোর অবস্থানে আছে প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু সেই কঠোর অবস্থানকেও হার মানাচ্ছে কিছু অসচেতন মানুষ ও ব্যবসায়ী। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জারি থাকা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও শহরে চলাফেরা করছেন তাঁরা। স্বাস্থ্যবিধি মানতে একেবারে অনীহা প্রকাশ। মাস্ক না পরেই বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন অনেকেই।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, যে এলাকায় মোবাইল কোর্টের সাদা গাড়ি যাচ্ছে, সেই এলাকায় নিমিশেই চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎতই ক্রেতা-বিক্রেতা শূন্য হয়ে যাচ্ছে সেই এলাকা। কয়েকজনকে ধরে পেলে মোবাইল কোর্টে ম্যাজিস্ট্রেট শাস্তি দিচ্ছেন কিংবা জরিমানা করছেন। আবার কিছুক্ষণ পরে ওই এলাকা থেকে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি বের হয়ে গেলেই প্রায় স্বাভাবিক সময়ে ফিরে আসছে ওই এলাকার চিত্র।
সকাল ৮টায় চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পরিস্থিতি একেবারেই স্বাস্থ্যবিধি মানার অনুকূলে নেই। বাজার করতে আসা বেশিভাগ মানুষেরই মাস্ক ছিল না। অনেকেই আবার গাদাগাদি করে বাজারে ঢুকছেন। এছাড়া, দিনব্যাপী শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মোবাইল কোর্ট দেখা গেলেও, মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব কম। শাস্তি, জরিমানা কোনোটাতেই থামানো যাচ্ছে না অসচেতন মানুষকে। কেউ কেউ যাচ্ছেন এই দুঃসময়েও আত্মীয় বাড়িতে। মোবাইল কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, এ ধরনের বেশ কয়েকজনকে জরিমানা করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, পরিস্থিতি এখন মোটেও স্বাভাবিক বা ভালো নয়। আক্রান্ত এবং মৃত্যু কোনোটাই কম নয়। আমাদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে হবে। একজন সুনাগরিকের দায়িত্ব রাষ্ট্রের এবং রাষ্ট্রের মানুষ তথা নিজেদের কল্যাণে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা। কিন্তু অনেকেই তা মানছেন না। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে আছে প্রশাসন। আর কাজহীন মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।