ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪০:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
করোনাকালে সংক্রমণ আতঙ্ক, মৃত্যু ভয়, অর্থনৈতিক সংকট, কর্মহীনতা ও পরিবর্তিত সামাজিক আচরণের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে না পারা এবং রোগ নিয়ে নেতিবাচক ধারণার কারণে অনেকের মধ্যে মানসিক চাপ বাড়ছে। একই সঙ্গে ভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন গুজব, অতি তথ্যের প্রকোপ এবং চিকিৎসা নিয়ে অনিশ্চয়তা- ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করছে। ফলে করোনাকালে কম-বেশি সবাই এক ধরনের অস্বস্তির মধ্যে দিয়ে জীবনযাপন করছে। আর আকস্মিক ছন্দ পতনে সাধারণ মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি চরমে পৌঁছেছে। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা করোনা মহামারির সঙ্গে সাধারণ মানুষকে অনভ্যস্ত জীবনযাপন করতে হচ্ছে। অনেকে এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে পরিবর্তিত লাইফ স্টাইলের সঙ্গে বিভিন্ন কারণে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছে না। যার প্রভাব পড়ছে ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যে। করোনা রোগের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের এই নিবিড় সম্পর্কের জটিলতায় কয়েকজন আত্মহননের পথ পর্যন্ত বেছে নিচ্ছেন। যার সর্বশেষ উদাহরণ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিভাগের একজন চিকিৎসক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবার কলেবর বাড়াতে গত ৪ ও ৫ জুলাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসকদের গণবদলির নির্দেশ দিয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের প্রজ্ঞাপন জারি করে। যে সব চিকিৎসক করোনা সেবার সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয় তাদেরকেও বদলি আদেশ দেওয়া হয়। এদেরই একজন বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের (শজিমেক) মনোরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আব্দুস সালাম সেলিম (৫৫)। তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে বগুড়ার শজিমেকে বদলি করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে বিপর্যন্ত অধ্যাপক সেলিম নতুন কর্মস্থলে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পেরে ১৪ আগস্ট গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ডা. সেলিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বলেন, সম্প্রতি তার স্বামীকে যশোর থেকে বগুড়ায় বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি সেখানে যেতে চাননি। মাস তিনেক ধরে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। এসব কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে মনে হচ্ছে।
জানতে চাইলে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ডা. সেলিম নয়, করোনাকালে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের জনগোষ্ঠীর মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের বিপর্যয় ঘটেছে। এর আগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে করোনা আক্রান্ত বলে অপবাদ দেওয়ায় ৩৬ বছর বয়সি এক যুবক আত্মহত্যা করেন। করোনা আক্রান্ত রোগী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে হাসপাতাল ভবন থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে। চলতি মহামারিতে মানসিক স্বাস্থ্য বিপর্যয়ে দেশে এ রকম অনেক উদাহরণ তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি করোনাপরবর্তী বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্য তথা মনোসামাজিক সমস্যা আরও বাড়বে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই সমস্যা আরও জটিলভাবে দেখা দেবে।
চলমান বৈশ্বিক মহামারিতে দেশে মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি কতটা প্রকট হয়েছে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত কয়েকটা জরিপে বিষয়টা স্পষ্ট হয়েছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর এ বছরের এপ্রিল মাসে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়া ৫০৫ জন শিক্ষার্থীর ওপর অনলাইনে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায় ৩৩ শংতাশের মধ্যে উদ্বিগ্নতা এবং প্রায় ২৯ শতাংশের মধ্যে তীব্র মানসিক চাপজনিত উপসর্গ রয়েছে। যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।
একইভাবে তরুণদের ওপর পরিচালিত আরেক গবেষণায় প্রায় ৪১ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর মধ্যে পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেসের লক্ষণ ও ৫৩ শতাংশের বিষণ্নতার লক্ষণ পাওয়া গেছে। গবেষণায় দেখা যায়, করোনা মহামারির আগের তুলনায় স্ট্রেস (মানসিক চাপ) উদ্বিগ্নতা ও বিষণ্নতার হার বহুগুণ বেড়ে গেছে। নারীদের মধ্যে এ হার পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি।
অন্যদিকে করোনা আক্রান্তদের সেবায় সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে নিয়োজিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওপর পরিচালতি এক গবেষণায় দেখা গেছে ৫০ শতাংশ চিকিৎসক বিষণ্নতা ও উদ্বিগ্নতা আর ৫৫ শতাংশের ঘুমের সমস্যা হয়েছে। এছাড়া যারা দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন করোনাকালে তাদের মধ্যে মানসিক সমস্যা বেশি দেখা গেছে। এরমধ্যে হাঁপানি, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের বিষণ্নতা, উদ্বিগ্নতা ও স্ট্রেস অন্যদের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল আহমেদ বলেন, করোনাকালে মানুষের মনোসামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশের ২৭টি জেলায় পরিচালিত জরিপ করে দেখা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসের লকডাউনে ৪ হাজার ২৪৯ জন নারী এবং ৪৫৬ শিশু পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এই জরিপে অংশ নেওয়া ১ হাজার ৬৭২ জন নারী এবং ৪২৪ জন শিশু জীবনে প্রথমবারের মতো এই করোনাকালেই পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ থেকে সহজেই প্রতীয়মান হয় করোনাকালে সাধারণ মনুষের মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা চরমে পৌঁছেছে।
আর এই সমস্যা থেকে উত্তরণে করোনা মোকাবিলার কর্মকৌশলে মানসিক স্বাস্থ্যকে আরও গুরুত্ব দিয়ে সংযুক্ত করতে হবে। বাড়িতে, কর্মস্থলে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ জন্য মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, নীতি নির্ধারক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম- সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, সরকারের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এজেন্ডার মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যসবায় উন্নতি সাধন অন্যতম একটি। দেশের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে একসঙ্গে মাল্টি সেক্টরাল পন্থায় কাজ করতে পারে। মানসিকভাবে সুস্থ জাতি, মানসিকভাবে সুস্থ বাংলাদেশ গড়তে একই লক্ষ্য সাধনে আমাদের হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে

আপলোড টাইম : ১০:৪০:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

সমীকরণ প্রতিবেদন:
করোনাকালে সংক্রমণ আতঙ্ক, মৃত্যু ভয়, অর্থনৈতিক সংকট, কর্মহীনতা ও পরিবর্তিত সামাজিক আচরণের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে না পারা এবং রোগ নিয়ে নেতিবাচক ধারণার কারণে অনেকের মধ্যে মানসিক চাপ বাড়ছে। একই সঙ্গে ভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন গুজব, অতি তথ্যের প্রকোপ এবং চিকিৎসা নিয়ে অনিশ্চয়তা- ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করছে। ফলে করোনাকালে কম-বেশি সবাই এক ধরনের অস্বস্তির মধ্যে দিয়ে জীবনযাপন করছে। আর আকস্মিক ছন্দ পতনে সাধারণ মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি চরমে পৌঁছেছে। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা করোনা মহামারির সঙ্গে সাধারণ মানুষকে অনভ্যস্ত জীবনযাপন করতে হচ্ছে। অনেকে এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে পরিবর্তিত লাইফ স্টাইলের সঙ্গে বিভিন্ন কারণে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছে না। যার প্রভাব পড়ছে ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যে। করোনা রোগের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের এই নিবিড় সম্পর্কের জটিলতায় কয়েকজন আত্মহননের পথ পর্যন্ত বেছে নিচ্ছেন। যার সর্বশেষ উদাহরণ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিভাগের একজন চিকিৎসক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবার কলেবর বাড়াতে গত ৪ ও ৫ জুলাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসকদের গণবদলির নির্দেশ দিয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের প্রজ্ঞাপন জারি করে। যে সব চিকিৎসক করোনা সেবার সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয় তাদেরকেও বদলি আদেশ দেওয়া হয়। এদেরই একজন বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের (শজিমেক) মনোরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আব্দুস সালাম সেলিম (৫৫)। তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে বগুড়ার শজিমেকে বদলি করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে বিপর্যন্ত অধ্যাপক সেলিম নতুন কর্মস্থলে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পেরে ১৪ আগস্ট গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ডা. সেলিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বলেন, সম্প্রতি তার স্বামীকে যশোর থেকে বগুড়ায় বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি সেখানে যেতে চাননি। মাস তিনেক ধরে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। এসব কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে মনে হচ্ছে।
জানতে চাইলে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ডা. সেলিম নয়, করোনাকালে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের জনগোষ্ঠীর মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের বিপর্যয় ঘটেছে। এর আগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে করোনা আক্রান্ত বলে অপবাদ দেওয়ায় ৩৬ বছর বয়সি এক যুবক আত্মহত্যা করেন। করোনা আক্রান্ত রোগী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে হাসপাতাল ভবন থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে। চলতি মহামারিতে মানসিক স্বাস্থ্য বিপর্যয়ে দেশে এ রকম অনেক উদাহরণ তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি করোনাপরবর্তী বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্য তথা মনোসামাজিক সমস্যা আরও বাড়বে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই সমস্যা আরও জটিলভাবে দেখা দেবে।
চলমান বৈশ্বিক মহামারিতে দেশে মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি কতটা প্রকট হয়েছে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত কয়েকটা জরিপে বিষয়টা স্পষ্ট হয়েছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর এ বছরের এপ্রিল মাসে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়া ৫০৫ জন শিক্ষার্থীর ওপর অনলাইনে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায় ৩৩ শংতাশের মধ্যে উদ্বিগ্নতা এবং প্রায় ২৯ শতাংশের মধ্যে তীব্র মানসিক চাপজনিত উপসর্গ রয়েছে। যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।
একইভাবে তরুণদের ওপর পরিচালিত আরেক গবেষণায় প্রায় ৪১ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর মধ্যে পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেসের লক্ষণ ও ৫৩ শতাংশের বিষণ্নতার লক্ষণ পাওয়া গেছে। গবেষণায় দেখা যায়, করোনা মহামারির আগের তুলনায় স্ট্রেস (মানসিক চাপ) উদ্বিগ্নতা ও বিষণ্নতার হার বহুগুণ বেড়ে গেছে। নারীদের মধ্যে এ হার পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি।
অন্যদিকে করোনা আক্রান্তদের সেবায় সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে নিয়োজিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওপর পরিচালতি এক গবেষণায় দেখা গেছে ৫০ শতাংশ চিকিৎসক বিষণ্নতা ও উদ্বিগ্নতা আর ৫৫ শতাংশের ঘুমের সমস্যা হয়েছে। এছাড়া যারা দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন করোনাকালে তাদের মধ্যে মানসিক সমস্যা বেশি দেখা গেছে। এরমধ্যে হাঁপানি, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের বিষণ্নতা, উদ্বিগ্নতা ও স্ট্রেস অন্যদের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল আহমেদ বলেন, করোনাকালে মানুষের মনোসামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশের ২৭টি জেলায় পরিচালিত জরিপ করে দেখা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসের লকডাউনে ৪ হাজার ২৪৯ জন নারী এবং ৪৫৬ শিশু পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এই জরিপে অংশ নেওয়া ১ হাজার ৬৭২ জন নারী এবং ৪২৪ জন শিশু জীবনে প্রথমবারের মতো এই করোনাকালেই পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। এ থেকে সহজেই প্রতীয়মান হয় করোনাকালে সাধারণ মনুষের মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা চরমে পৌঁছেছে।
আর এই সমস্যা থেকে উত্তরণে করোনা মোকাবিলার কর্মকৌশলে মানসিক স্বাস্থ্যকে আরও গুরুত্ব দিয়ে সংযুক্ত করতে হবে। বাড়িতে, কর্মস্থলে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ জন্য মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, নীতি নির্ধারক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম- সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, সরকারের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এজেন্ডার মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যসবায় উন্নতি সাধন অন্যতম একটি। দেশের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে একসঙ্গে মাল্টি সেক্টরাল পন্থায় কাজ করতে পারে। মানসিকভাবে সুস্থ জাতি, মানসিকভাবে সুস্থ বাংলাদেশ গড়তে একই লক্ষ্য সাধনে আমাদের হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে।