ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মানসিক চাপেই চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেয় এতিম বন্যা!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৪৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
  • / ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গার জেহালা বাজার মাঠে ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু : চিঠিতে মিললো কারণ
ভ্রাম্যমাণ/মুন্সিগঞ্জ প্রতিবেদক:
বাবা মারা যাওয়ার পর মায়ের সঙ্গে ১৫ বছর ধরে নানার বাড়িতে আশ্রয় হয় ৩ বোনের। ভরণ-পোষণের দায়িত্বটা এসে পড়ে মামাদের উপর। গত দুই বছর পূর্বে মায়েরও মৃত্যু হয়। এরপর নানার বাড়িতে পিতৃ-মাতৃহীন ৩ বোনের চাপে অনেকটা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে তারা। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে, বাকী দু’বোনের অবস্থান তখনও ওই বাড়িতেই। মামাদের শাসনবারণের চাপে তাদের স্বাধীনতার কমতি ছিল কিছুটা। এ নিয়ে পরিবারের মধ্যে গোলযোগ ও অভিমান লেগে থাকতো। বাবা-মা ছাড়া মামাদের সংসারে অসহায় জীবনযাপন বড্ড অসহ্য হয়ে উঠেছিল স্কুলছাত্রী বন্যা খাতুনের কাছে। শেষ সিদ্ধান্ত আত্মহত্যায় কী তার মুক্তির পথ?
গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে আলমডাঙ্গার জেহালা বাজার সংলগ্ন মাঠের মধ্যে রাজশাহীগামী রূপসা ট্রেনের সামনে ঝাপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে বন্যা খাতুন (১৫) নামের ওই স্কুল ছাত্রী। সে স্থানীয় মুন্সিগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। মৃত্যুর পূর্বে বন্যা তার মামার বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়ার নাম করে বের হয়। লাশ উদ্ধারের সময় তার পাশে পড়ে থাকা স্কুলব্যাগ থেকে ডায়েরি ও চিঠি উদ্ধার করা হয়। চিঠিতে পরিবারের অশান্তির কারণ উল্লেখ করে সে লিখে যায়, ‘আর কাউকে কখনো জ্বালাব না, কেউ আর আমাকে বকাও দিতে পারবে না। আমি এতিম, চলে গেলাম। এই চিঠিটি যখন পাবে তখন আমি এই পৃথিবীতে আর থাকব না।’ তার মৃত্যুতে কেউ দায়ি নয় বলেও সে চিঠিতে উল্লেখ করে।
পরিবার সূত্রে আরও জানাযায়, কুষ্টিয়া জেলার মীরপুর থানার নলখোলা গ্রামের মৃত জহুরুল ইসলামের স্কুল পড়–য়া মেয়ে বন্যা খাতুন। গত ১৫ বছর পূর্বে বাবা মারা যাওয়ায় মা আনজিরা খাতুনের সঙ্গে নানা মৃত এছের আলী মন্ডলের বাড়ি আলমডাঙ্গার মাদারহুদা গ্রামে বসবাস করতে থাকে। গত দু’বছর পূর্বে বন্যার মা আনজিরা খাতুনও মারা যায়। তারপরেই তাদের পরিবারের মধ্যে অশান্তি দেখা দেয়। এরই একপর্যায়ে গতকাল শুক্রবার বিকালে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে ট্রেনের সামনে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা জিআরপি ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে। আজ শনিবার সকাল ৯টায় গ্রাম্য কবরস্থানে নামাযে জানাযা শেষে দাফন করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মানসিক চাপেই চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেয় এতিম বন্যা!

আপলোড টাইম : ১১:৪৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

আলমডাঙ্গার জেহালা বাজার মাঠে ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু : চিঠিতে মিললো কারণ
ভ্রাম্যমাণ/মুন্সিগঞ্জ প্রতিবেদক:
বাবা মারা যাওয়ার পর মায়ের সঙ্গে ১৫ বছর ধরে নানার বাড়িতে আশ্রয় হয় ৩ বোনের। ভরণ-পোষণের দায়িত্বটা এসে পড়ে মামাদের উপর। গত দুই বছর পূর্বে মায়েরও মৃত্যু হয়। এরপর নানার বাড়িতে পিতৃ-মাতৃহীন ৩ বোনের চাপে অনেকটা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে তারা। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে, বাকী দু’বোনের অবস্থান তখনও ওই বাড়িতেই। মামাদের শাসনবারণের চাপে তাদের স্বাধীনতার কমতি ছিল কিছুটা। এ নিয়ে পরিবারের মধ্যে গোলযোগ ও অভিমান লেগে থাকতো। বাবা-মা ছাড়া মামাদের সংসারে অসহায় জীবনযাপন বড্ড অসহ্য হয়ে উঠেছিল স্কুলছাত্রী বন্যা খাতুনের কাছে। শেষ সিদ্ধান্ত আত্মহত্যায় কী তার মুক্তির পথ?
গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে আলমডাঙ্গার জেহালা বাজার সংলগ্ন মাঠের মধ্যে রাজশাহীগামী রূপসা ট্রেনের সামনে ঝাপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে বন্যা খাতুন (১৫) নামের ওই স্কুল ছাত্রী। সে স্থানীয় মুন্সিগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। মৃত্যুর পূর্বে বন্যা তার মামার বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়ার নাম করে বের হয়। লাশ উদ্ধারের সময় তার পাশে পড়ে থাকা স্কুলব্যাগ থেকে ডায়েরি ও চিঠি উদ্ধার করা হয়। চিঠিতে পরিবারের অশান্তির কারণ উল্লেখ করে সে লিখে যায়, ‘আর কাউকে কখনো জ্বালাব না, কেউ আর আমাকে বকাও দিতে পারবে না। আমি এতিম, চলে গেলাম। এই চিঠিটি যখন পাবে তখন আমি এই পৃথিবীতে আর থাকব না।’ তার মৃত্যুতে কেউ দায়ি নয় বলেও সে চিঠিতে উল্লেখ করে।
পরিবার সূত্রে আরও জানাযায়, কুষ্টিয়া জেলার মীরপুর থানার নলখোলা গ্রামের মৃত জহুরুল ইসলামের স্কুল পড়–য়া মেয়ে বন্যা খাতুন। গত ১৫ বছর পূর্বে বাবা মারা যাওয়ায় মা আনজিরা খাতুনের সঙ্গে নানা মৃত এছের আলী মন্ডলের বাড়ি আলমডাঙ্গার মাদারহুদা গ্রামে বসবাস করতে থাকে। গত দু’বছর পূর্বে বন্যার মা আনজিরা খাতুনও মারা যায়। তারপরেই তাদের পরিবারের মধ্যে অশান্তি দেখা দেয়। এরই একপর্যায়ে গতকাল শুক্রবার বিকালে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে ট্রেনের সামনে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা জিআরপি ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে। আজ শনিবার সকাল ৯টায় গ্রাম্য কবরস্থানে নামাযে জানাযা শেষে দাফন করা হবে।