ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মাখলুক তথা সৃষ্টিজীব

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৩৫:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / ১৩২ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই বিশ্ব চরাচরে অসংখ্য অগণিত মাখলুক তথা সৃষ্টিজীব তৈরি করেছেন। এর সঠিক পরিমাণ আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আর কারো জানা নেই, জানা সম্ভবও নয়। অনেকেই বলে থাকেন, ‘আল্লাহ তায়ালা আঠারো হাজার মাখলুক সৃষ্টি করেছেন।’ এ কথাটি সঠিক নয় বরং বলা উচিত, আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য অগণিত মাখলুক সৃষ্টি করেছেন। ‘আল্লাহ তায়ালা আঠারো হাজার মাখলুক সৃষ্টি করেছেন’-এ কথাটি লোকমুখে এতই প্রসিদ্ধ হয়ে গেছে যে, অনেকের কাছে তা কোরান-হাদিসের বাণীর মতো মনে হয়। কিন্তু মাখলুকাতের এই নির্দিষ্ট সংখ্যা না কোরানে আছে, না কোনো সহি হাদিসে। বাস্তবতা হলো, আল্লাহ তায়ালা অগণিত মাখলুক সৃষ্টি করেছেন। জলে ও স্থলে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাখলুক আল্লাহর অসীম কুদরত ও ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ, তিনি যে আলিমুল গায়েব-অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত এর প্রমাণ। মানুষের জানার বাইরেও রয়েছে অসংখ্য মাখলুক। সেসবের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ তায়ালার রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা কত ধরনের মাখলুক সৃষ্টি করেছেন তার নির্দিষ্ট সংখ্যা হাদিসে বলা হয়নি। একটি ‘মুনকার’ বর্ণনায় এর সংখ্যা ‘এক হাজার’ বলা হয়েছে। কিন্তু অনেক মুহাদ্দিস বর্ণনাটিকে মাওযু বা জাল বলে আখ্যা দিয়েছেন। (আল মাওযুআত, ইবনুল জাওযী ২/২১৬; আল ফাওয়াইদুল মাজমুআ পৃষ্ঠা ৪৫৮-৪৫৯)। এছাড়া এই সংখ্যা সম্পর্কে কিছু মনীষীর উক্তিও রয়েছে। যেমন মারওয়ান ইবনে হাকামের কথামতে সতেরো হাজার জগৎ রয়েছে। আর আবুল আলিয়ার অনুমান অনুযায়ী চৌদ্দ হাজার কিংবা আঠারো হাজার মাখলুক আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। এই বিভিন্ন সংখ্যা কিছু মনীষীর উক্তিমাত্র, হাদিস নয়। দ্বিতীয়ত তাদের বক্তব্য থেকেও বোঝা যায়, নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা বোঝাতে নয়; বরং আধিক্য বোঝাতেই তারা এসব কথা বলেছেন। তাও আবার অনুমান করে। এই কারণে এর কোনোটিকেই প্রমাণিত সত্য মনে করার কোনো কারণ নেই; বরং এ বিষয়ে ইবনে কাসির (রহ.)-এর কথাটিই মূল কথা, যা তিনি আবুল আলিয়ার পূর্বোক্ত কথাটি পূর্ণভাবে উদ্ধৃত করার পর বলেছেন। তা হলো, ‘এটি এমন একটি অবাক করা কথা, যার জন্য বিশুদ্ধ প্রমাণের প্রয়োজন রয়েছে। (তাফসিরে ইবনে কাসির ১/২৬)। অতএব শুধু আঠারো হাজার নয়; আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য অগণিত মাখলুক সৃষ্টি করেছেন, যা আমরা গুনে ও হিসাব করে শেষ করতে পারব না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মাখলুক তথা সৃষ্টিজীব

আপলোড টাইম : ০৮:৩৫:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

ধর্ম প্রতিবেদন
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই বিশ্ব চরাচরে অসংখ্য অগণিত মাখলুক তথা সৃষ্টিজীব তৈরি করেছেন। এর সঠিক পরিমাণ আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আর কারো জানা নেই, জানা সম্ভবও নয়। অনেকেই বলে থাকেন, ‘আল্লাহ তায়ালা আঠারো হাজার মাখলুক সৃষ্টি করেছেন।’ এ কথাটি সঠিক নয় বরং বলা উচিত, আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য অগণিত মাখলুক সৃষ্টি করেছেন। ‘আল্লাহ তায়ালা আঠারো হাজার মাখলুক সৃষ্টি করেছেন’-এ কথাটি লোকমুখে এতই প্রসিদ্ধ হয়ে গেছে যে, অনেকের কাছে তা কোরান-হাদিসের বাণীর মতো মনে হয়। কিন্তু মাখলুকাতের এই নির্দিষ্ট সংখ্যা না কোরানে আছে, না কোনো সহি হাদিসে। বাস্তবতা হলো, আল্লাহ তায়ালা অগণিত মাখলুক সৃষ্টি করেছেন। জলে ও স্থলে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাখলুক আল্লাহর অসীম কুদরত ও ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ, তিনি যে আলিমুল গায়েব-অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত এর প্রমাণ। মানুষের জানার বাইরেও রয়েছে অসংখ্য মাখলুক। সেসবের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ তায়ালার রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা কত ধরনের মাখলুক সৃষ্টি করেছেন তার নির্দিষ্ট সংখ্যা হাদিসে বলা হয়নি। একটি ‘মুনকার’ বর্ণনায় এর সংখ্যা ‘এক হাজার’ বলা হয়েছে। কিন্তু অনেক মুহাদ্দিস বর্ণনাটিকে মাওযু বা জাল বলে আখ্যা দিয়েছেন। (আল মাওযুআত, ইবনুল জাওযী ২/২১৬; আল ফাওয়াইদুল মাজমুআ পৃষ্ঠা ৪৫৮-৪৫৯)। এছাড়া এই সংখ্যা সম্পর্কে কিছু মনীষীর উক্তিও রয়েছে। যেমন মারওয়ান ইবনে হাকামের কথামতে সতেরো হাজার জগৎ রয়েছে। আর আবুল আলিয়ার অনুমান অনুযায়ী চৌদ্দ হাজার কিংবা আঠারো হাজার মাখলুক আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। এই বিভিন্ন সংখ্যা কিছু মনীষীর উক্তিমাত্র, হাদিস নয়। দ্বিতীয়ত তাদের বক্তব্য থেকেও বোঝা যায়, নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা বোঝাতে নয়; বরং আধিক্য বোঝাতেই তারা এসব কথা বলেছেন। তাও আবার অনুমান করে। এই কারণে এর কোনোটিকেই প্রমাণিত সত্য মনে করার কোনো কারণ নেই; বরং এ বিষয়ে ইবনে কাসির (রহ.)-এর কথাটিই মূল কথা, যা তিনি আবুল আলিয়ার পূর্বোক্ত কথাটি পূর্ণভাবে উদ্ধৃত করার পর বলেছেন। তা হলো, ‘এটি এমন একটি অবাক করা কথা, যার জন্য বিশুদ্ধ প্রমাণের প্রয়োজন রয়েছে। (তাফসিরে ইবনে কাসির ১/২৬)। অতএব শুধু আঠারো হাজার নয়; আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য অগণিত মাখলুক সৃষ্টি করেছেন, যা আমরা গুনে ও হিসাব করে শেষ করতে পারব না।