ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মহেশপুরে বন্ধ ঘোষণার পরও চলছে তিন ক্লিনিকের কার্যক্রম

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫৩:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ অগাস্ট ২০২০
  • / ১৭৪ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
সিজারিয়ান অপারেশনের পর প্রসূতি মৃত্যুর দায়ে বন্ধ মহেশপুরের তিনটি ক্লিনিক চলছেই। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের নির্দেশ অমান্য করে ক্লিনিক মালিকেরা আগের মতোই অপারেশনসহ নানা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে ক্লিনিক চালু রাখার সত্যতা মিলেছে। ক্লিনিক মালিকেরা বলছেন, তাঁরা সিভিল সার্জনের চিঠি পাননি। ফলে অসহায় রোগীদের চিকিৎসার জন্য ক্লিনিক চালু রাখতে হচ্ছে।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জানান, ‘প্রসূতি মৃত্যু ও অনিয়মের করণে আমি কালীগঞ্জের দুটি, মহেশপুরের তিনটি, হরিণাকুণ্ডু উপজেলার একটিসহ মোট ছয়টি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছি।’
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তাহে হরিণাকুণ্ডু শহরের আসমত আলীর মালিকানাধীন ভাই ভাই ক্লিনিক, মহেশপুরের নেপার মোড়ে অবস্থিত মোহন লালের মালিকানাধীন একতা ক্লিনিক, একই বাজারের নাজমুল হাসান মনুর মালিকানাধীন মা ও শিশু ক্লিনিক, মহেশপুর শহরের সুবাশ চন্দ্র দাসের মহেশপুর প্রাইভেট হাসপাতালে সিজারের পর যথাক্রমে রোজিনা খাতুন, লাবনী আক্তার, মরিয়ম খাতুন ও রিনা খাতুন নামে তিন প্রসুতির মৃত্যু ঘটে। মহেশপুরের তিন ক্লিনিকে অপারেশন করেন বাগেরহাট শহরের পিসি কলেজ রোডের বাসিন্দা আকতার হোসেনের ছেলে ডা. সোহলে রানা। তিনি এখনো ওই সব ক্লিনিকে গোপনে গোপনে সিজার করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। অন্যদিকে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা শহরের ভাই ভাই ক্লিনিকটি প্রসূতি মৃত্যুর পর থেকেই বন্ধ রয়েছে।
সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম আরও জানান, চার প্রসূতি মৃত্যুর পর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তা ছাড়া তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্লিনিকগুলো বন্ধ রাখার জন্য গত ২০ আগস্ট সিএসঝি/১৬২৫ নম্বর স্মারকে চিঠি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কথিত চিকিৎসক ডা. সোহেল রানাকে তাঁর ডাক্তারি সনদ নিয়ে তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হতে বলা হয়েছিল, কিন্তু তিনি হাজির না হয়ে সত্যায়িত ছাড়াই কাগজপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। এটাসটেড ব্যতীত কাগজ আমি গ্রহণ করিনি। সিভিল সার্জন বলেন, বন্ধ রাখার জন্য চিঠি দেওয়ার পরও যদি ক্লিনিক চলে সেটা আমি খতিয়ে দেখব।
মহেশপুরের নেপার মোড়ে অবস্থিত একতা ক্লিনিকের মালিক মোহন লাল জানান, ‘সিভিল সার্জন দপ্তরের কোনো চিঠি আমি পায়নি। তা ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আনজুমান আরা বেগম ক্লিনিক বন্ধের বিষয়ে কিছুই বলেনি। তাই অসহায় রোগীদের স্বার্থে ক্লিনিক চালু রেখেছি।’
এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাশ্বত শীল জানান, ‘তিন ক্লিনিকে রোগী মারা গেছে এবং এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে এটা আমি জানি। তবে ক্লিনিক তিনটি বন্ধের ব্যাপারে আমাকে কিছুই বলা হয়নি। চিঠি পেলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আনজুমান আরা বেগমের কাছে এ বিষয়ে ফোন করা হলে তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মহেশপুরে বন্ধ ঘোষণার পরও চলছে তিন ক্লিনিকের কার্যক্রম

আপলোড টাইম : ০৮:৫৩:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ অগাস্ট ২০২০

ঝিনাইদহ অফিস:
সিজারিয়ান অপারেশনের পর প্রসূতি মৃত্যুর দায়ে বন্ধ মহেশপুরের তিনটি ক্লিনিক চলছেই। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের নির্দেশ অমান্য করে ক্লিনিক মালিকেরা আগের মতোই অপারেশনসহ নানা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে ক্লিনিক চালু রাখার সত্যতা মিলেছে। ক্লিনিক মালিকেরা বলছেন, তাঁরা সিভিল সার্জনের চিঠি পাননি। ফলে অসহায় রোগীদের চিকিৎসার জন্য ক্লিনিক চালু রাখতে হচ্ছে।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জানান, ‘প্রসূতি মৃত্যু ও অনিয়মের করণে আমি কালীগঞ্জের দুটি, মহেশপুরের তিনটি, হরিণাকুণ্ডু উপজেলার একটিসহ মোট ছয়টি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছি।’
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তাহে হরিণাকুণ্ডু শহরের আসমত আলীর মালিকানাধীন ভাই ভাই ক্লিনিক, মহেশপুরের নেপার মোড়ে অবস্থিত মোহন লালের মালিকানাধীন একতা ক্লিনিক, একই বাজারের নাজমুল হাসান মনুর মালিকানাধীন মা ও শিশু ক্লিনিক, মহেশপুর শহরের সুবাশ চন্দ্র দাসের মহেশপুর প্রাইভেট হাসপাতালে সিজারের পর যথাক্রমে রোজিনা খাতুন, লাবনী আক্তার, মরিয়ম খাতুন ও রিনা খাতুন নামে তিন প্রসুতির মৃত্যু ঘটে। মহেশপুরের তিন ক্লিনিকে অপারেশন করেন বাগেরহাট শহরের পিসি কলেজ রোডের বাসিন্দা আকতার হোসেনের ছেলে ডা. সোহলে রানা। তিনি এখনো ওই সব ক্লিনিকে গোপনে গোপনে সিজার করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। অন্যদিকে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা শহরের ভাই ভাই ক্লিনিকটি প্রসূতি মৃত্যুর পর থেকেই বন্ধ রয়েছে।
সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম আরও জানান, চার প্রসূতি মৃত্যুর পর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তা ছাড়া তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্লিনিকগুলো বন্ধ রাখার জন্য গত ২০ আগস্ট সিএসঝি/১৬২৫ নম্বর স্মারকে চিঠি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কথিত চিকিৎসক ডা. সোহেল রানাকে তাঁর ডাক্তারি সনদ নিয়ে তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হতে বলা হয়েছিল, কিন্তু তিনি হাজির না হয়ে সত্যায়িত ছাড়াই কাগজপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। এটাসটেড ব্যতীত কাগজ আমি গ্রহণ করিনি। সিভিল সার্জন বলেন, বন্ধ রাখার জন্য চিঠি দেওয়ার পরও যদি ক্লিনিক চলে সেটা আমি খতিয়ে দেখব।
মহেশপুরের নেপার মোড়ে অবস্থিত একতা ক্লিনিকের মালিক মোহন লাল জানান, ‘সিভিল সার্জন দপ্তরের কোনো চিঠি আমি পায়নি। তা ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আনজুমান আরা বেগম ক্লিনিক বন্ধের বিষয়ে কিছুই বলেনি। তাই অসহায় রোগীদের স্বার্থে ক্লিনিক চালু রেখেছি।’
এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাশ্বত শীল জানান, ‘তিন ক্লিনিকে রোগী মারা গেছে এবং এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে এটা আমি জানি। তবে ক্লিনিক তিনটি বন্ধের ব্যাপারে আমাকে কিছুই বলা হয়নি। চিঠি পেলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আনজুমান আরা বেগমের কাছে এ বিষয়ে ফোন করা হলে তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।