ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মসজিদে উঠে শপথ, অবশেষে দুজনের মুক্তি!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১
  • / ৪১ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় মাদক সেবনকালে দুই মোটরশ্রমিক পুলিশের হাতে আটক
লকডাউনে হতাশাগ্রস্থ, শপথ ও মুচলেকা নিয়ে ছেড়েছি -ওসি জিহাদ খান
সোহেল রানা ডালিম:
চুয়াডাঙ্গায় মাদক সেবন না করার শর্তে লিখিত মুচলেকা ও মসজিদে উঠে শপথ করায় দুই ট্রাকচালক মাদকসেবিকে মুক্তি দিয়েছে সদর থানা-পুলিশ। এসময় ওই দুজন মোটরশ্রমিক সদর থানার মসজিদে উঠে ইমামের সামনে শপথ নেন যে, তারা জীবনে আর কোনোদিন মাদক সেবন করবেন না। এমনকী মাদক সেবনকারী লোকজনের সাথে কোনো সম্পর্কও রাখবেন না। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের আগে এ ঘটনা ঘটে। তবে এই দুই মোটরশ্রমিকের সার্বিক কার্যক্রম চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ তাদের নজরে রাখবে বলে জানিয়েছেন ওসি আবু জিহাদ খান।
পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ জানতে পারে রেলবাজার এলাকার মাছপট্টির পিছনে কিছু লোক একত্রে বসে মাদক সেবন করছে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসানুজ্জামানসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বেশ কয়েকজন পালিয়ে গেলেও দুজন মোটরশ্রমিককে মাদক সেবনরত অবস্থায় আটক করা হয়। পরে তারা থানা-হাজতে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে, চলমান লকডাউনে পরিবহন সেক্টরের কাজ প্রায় বন্ধের পথে। এই অবস্থায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে খারাপ মানুষের সঙ্গে মিশে তারা মাদক সেবন করেছে। এ ধরণের কাজ জীবনে আর কোনোদিন তারা করবেন না। আটকের পর থেকেই তারা নিজের দোষ স্বীকার করে ভালো হওয়ার শর্তে মুক্তি প্রার্থনা করতে থাকে। এরপর চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ আটক দুজনের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তাদের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানতে পারে, এই দুজন মোটরশ্রমিক পূর্বে কোনো অপরাধমূলক কর্মকান্ড ও মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলো না। তারা যে বলেছে সেটা সত্য। পরে অপরাধমূলক কর্মকান্ডসহ মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হওয়ার শর্তে মুচলেকা নিয়ে এবং সদর থানার মসজিদের ইমামের সামনে শপথ করিয়ে পরিবারের জিম্মায় এ দুজনকে মুক্তি দেন ওসি আবু জিহাদ খান। আটকের পর মুক্তি পাওয়া ওই দুই মোটরশ্রমিকের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ফার্মপাড়া ও আরামপাড়ায়। যেহেতু তারা ভালো হওয়ার শপথ করেছেন, তাই তাদের সামজিক অবস্থার কথা চিন্তা করে এই প্রতিবেদনে পূর্ণাঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা হলো না।
এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ খান জানান, ‘বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় এরা মাদকাসক্ত না। চলমান লকডাউনের কারণে কাজকর্ম বন্ধ থাকায় অনেকটা হতাশাগ্রস্থ হয়ে খারাপসঙ্গে মিশে গাঁজা সেবন করেছিল। জীবনে আর কোনোদিন মাদক সেবন করবে মর্মে মসজিদে উঠে তারা শপথ নিলে আমি বিষয়টি আমাদের মানবিক পুলিশ সুপার জাহিদ স্যারকে জানিয়ে মুচলেকা নিয়ে তাদেরকে এবারের মতো ছেড়ে দিই। তবে এদের গতিবিধি ওপর নজর রাখা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মসজিদে উঠে শপথ, অবশেষে দুজনের মুক্তি!

আপলোড টাইম : ০৮:৫৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১

চুয়াডাঙ্গায় মাদক সেবনকালে দুই মোটরশ্রমিক পুলিশের হাতে আটক
লকডাউনে হতাশাগ্রস্থ, শপথ ও মুচলেকা নিয়ে ছেড়েছি -ওসি জিহাদ খান
সোহেল রানা ডালিম:
চুয়াডাঙ্গায় মাদক সেবন না করার শর্তে লিখিত মুচলেকা ও মসজিদে উঠে শপথ করায় দুই ট্রাকচালক মাদকসেবিকে মুক্তি দিয়েছে সদর থানা-পুলিশ। এসময় ওই দুজন মোটরশ্রমিক সদর থানার মসজিদে উঠে ইমামের সামনে শপথ নেন যে, তারা জীবনে আর কোনোদিন মাদক সেবন করবেন না। এমনকী মাদক সেবনকারী লোকজনের সাথে কোনো সম্পর্কও রাখবেন না। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের আগে এ ঘটনা ঘটে। তবে এই দুই মোটরশ্রমিকের সার্বিক কার্যক্রম চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ তাদের নজরে রাখবে বলে জানিয়েছেন ওসি আবু জিহাদ খান।
পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ জানতে পারে রেলবাজার এলাকার মাছপট্টির পিছনে কিছু লোক একত্রে বসে মাদক সেবন করছে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসানুজ্জামানসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বেশ কয়েকজন পালিয়ে গেলেও দুজন মোটরশ্রমিককে মাদক সেবনরত অবস্থায় আটক করা হয়। পরে তারা থানা-হাজতে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে, চলমান লকডাউনে পরিবহন সেক্টরের কাজ প্রায় বন্ধের পথে। এই অবস্থায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে খারাপ মানুষের সঙ্গে মিশে তারা মাদক সেবন করেছে। এ ধরণের কাজ জীবনে আর কোনোদিন তারা করবেন না। আটকের পর থেকেই তারা নিজের দোষ স্বীকার করে ভালো হওয়ার শর্তে মুক্তি প্রার্থনা করতে থাকে। এরপর চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ আটক দুজনের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তাদের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানতে পারে, এই দুজন মোটরশ্রমিক পূর্বে কোনো অপরাধমূলক কর্মকান্ড ও মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলো না। তারা যে বলেছে সেটা সত্য। পরে অপরাধমূলক কর্মকান্ডসহ মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হওয়ার শর্তে মুচলেকা নিয়ে এবং সদর থানার মসজিদের ইমামের সামনে শপথ করিয়ে পরিবারের জিম্মায় এ দুজনকে মুক্তি দেন ওসি আবু জিহাদ খান। আটকের পর মুক্তি পাওয়া ওই দুই মোটরশ্রমিকের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ফার্মপাড়া ও আরামপাড়ায়। যেহেতু তারা ভালো হওয়ার শপথ করেছেন, তাই তাদের সামজিক অবস্থার কথা চিন্তা করে এই প্রতিবেদনে পূর্ণাঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা হলো না।
এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ খান জানান, ‘বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় এরা মাদকাসক্ত না। চলমান লকডাউনের কারণে কাজকর্ম বন্ধ থাকায় অনেকটা হতাশাগ্রস্থ হয়ে খারাপসঙ্গে মিশে গাঁজা সেবন করেছিল। জীবনে আর কোনোদিন মাদক সেবন করবে মর্মে মসজিদে উঠে তারা শপথ নিলে আমি বিষয়টি আমাদের মানবিক পুলিশ সুপার জাহিদ স্যারকে জানিয়ে মুচলেকা নিয়ে তাদেরকে এবারের মতো ছেড়ে দিই। তবে এদের গতিবিধি ওপর নজর রাখা হবে।