ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মরুর বুকে ফুটবল যুদ্ধ শুরু আজ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:২২:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২
  • / ১১ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন: ১২ বছর অপেক্ষার পর কাতারের রাজধানী দোহা প্রস্তুত। ইতিহাসে এই প্রথম মধ্যপ্রাচ্যের কোনো একটি দেশে বিশ্বকাপের এই মেগা আয়োজন। বিস্তর সমালোচনা ছিল মরুভূমিতে ফুটবল হয় কিনা। শুধু ফুটবল কেন, কাতার দেখিয়ে দিয়েছে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন করে। এটা এখন সত্য, বাস্তব। আজ রোববার এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ফুটবল জ্বর পৌঁছে যাবে তামাম দুনিয়ায়। দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ২৯ লাখ ৯৬ হাজার। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তারা স্বাগত জানাবে প্রায় ১৫ লাখ ফুটবল ভক্তকে। দেশটির রয়েছে দুটি বিমানবন্দর। হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতি ঘণ্টায় দশ হাজার যাত্রী নামছেন। আর দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘণ্টায় নামছে ১৩টি ফ্লাইট। ভাষা কোনো সমস্যা নয়। ইংরেজি চলে সর্বত্র। এর আয়তন এতটাই ছোট যে, এক দেড় ঘণ্টার মধ্যেই পুরো দেশটি ভ্রমণ করা যায়। কোভিড আর বিশ্বমন্দার ঢেউ লাগেনি। বাড়েনি জিনিসপত্রের দাম। অর্থনীতিও চাঙ্গা। বিশ্বকাপ আরও চাঙ্গা করে দেবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা চমৎকার। মেট্রো ও বাস নেটওয়ার্ক এমনভাবে সাজানো হয়েছে যা কল্পনাতীত। প্রায় ১২ হাজার সাংবাদিক কভার করতে এসেছেন দোহায়। এটা এক অনন্য রেকর্ড। অন্য বিশ্বকাপে এমনটা দেখিনি। প্রায় সাড়ে তিন লাখ বাংলাদেশি দোহায় কর্মরত রয়েছেন বিভিন্ন পেশায়। ফুটবলের অবকাঠামো তৈরিতেও রয়েছে তাদের অবদান।
নানা সূত্রের খবর, পঞ্চাশ থেকে এক লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি খেলা দেখার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য আল বায়াত স্টেডিয়াম রেডি। ৬০ হাজার দর্শক মাঠে হাজির থাকবেন স্বাগতিক কাতার ও ইকুয়েডরের মধ্যকার খেলা দেখার জন্য। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছে দেশি-বিদেশি শিল্পীদের নিয়ে। বিশ্বকাপের সাক্ষী হতে যারা কাতারে এসেছেন তাদের জন্য মেগা বিনোদনের আয়োজন করা হয়েছে। রয়েছে একের পর এক পার্টি। কাতার আর ইকুয়েডরের মধ্যকার ম্যাচ সামনে রেখে কাতারজুড়েই এক ধরনের উন্মাদনা। আল বিদ্যা পার্কে ফিফা ফ্যান ফেস্টিভ্যালে চোখ ধাঁধানো আয়োজন রয়েছে। দোহা কর্নিচে রয়েছে স্ট্রিট ফেস্টিভ্যাল। ওয়েলকাম টু কাতার সম্প্রচারের মাধ্যমে দরজা খুলবে। লেবানিজ গায়ক মারিয়াম ফারেস আর কলোম্বিয়ার তারকা মালুমার পারফরম্যান্স নিয়ে আগেভাগে কিছুই বলার নেই। অংশ নেবে কোরিয়ার বিখ্যাত পপ ব্যান্ড ‘বিটিএস’। আন্তর্জাতিক পুরস্কার বিজয়ী সংগীতজ্ঞ ডিপলো, কিজ ড্যানিয়েল, নোরা ফাতেহি, ত্রিনিদাদ কারডোনা ও কেলভিন হ্যারিসকে দেখা যাবে উদ্বোধনী আয়োজনে। স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় শুরু হবে ফ্যান ফেস্টিভ্যাল। ফেস্টিভ্যালে অংশ নিতে হায়া কার্ড বাধ্যতামূলক।
মিডিয়া সেন্টারে কথা হচ্ছিল আর্জেন্টাইন সাংবাদিক ফ্রাঙ্কোর সঙ্গে। ২০১০ বিশ্বকাপেও তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। নেইমারের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে তাকে জিজ্ঞেস করলাম এর জবাব কেন দিচ্ছেন না মেসি। আমি ঠিক জানি না। তবে আমার কেন যেন মনে হয়, খেলার আগেভাগে তিনি সম্ভবত মুখ খুলতে চাচ্ছেন না। নেইমার দ্য টেলিগ্রাফকে মেসিকে উদ্দেশ্য করে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘তুমি আমার বন্ধু। একসঙ্গে পিএসজিতে খেলি। অনেক সুখ- দুঃখের কথা শেয়ার করি। কিন্তু বিশ্বকাপ নিয়ে তোমার সঙ্গে কথা বলি না। তুমিও বলতে চাও না। নেইমার আরও বলেন, এটা দুই বন্ধুর লড়াই নয়। এটা হচ্ছে দুই দেশের লড়াই। তুমি আমাকে শত্রু ভেবো না। কিন্তু আমার দেশের জন্য খেলতে হবে। তোমাকে জানিয়ে রাখি- আমি জিতবোই। কাপ নিয়ে কাতার থেকে বাড়ি ফিরবো।’ ৩০ বছর বয়সী এই ফুটবলার কাতারে এসেছেন দুর্দান্ত এক ফর্ম নিয়ে। পিএসজির হয়ে ১৩ গোল করেছেন। সহায়তা করেছেন ১১টি গোলের। নেইমার বলেন, ‘তার ফুটবল ক্যারিয়ারে অনেক কিছু পেয়েছেন। যা তিনি কখনো ভাবেননি। আমার ক্যারিয়ার যদি আজই শেষ হয়ে যায় তাতে কোনো আফসোস নেই। বরং আমি খুশিই হবো। তবে বলতেই হয় বিশ্বকাপ আমার স্বপ্ন।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

মরুর বুকে ফুটবল যুদ্ধ শুরু আজ

আপলোড টাইম : ০৪:২২:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন: ১২ বছর অপেক্ষার পর কাতারের রাজধানী দোহা প্রস্তুত। ইতিহাসে এই প্রথম মধ্যপ্রাচ্যের কোনো একটি দেশে বিশ্বকাপের এই মেগা আয়োজন। বিস্তর সমালোচনা ছিল মরুভূমিতে ফুটবল হয় কিনা। শুধু ফুটবল কেন, কাতার দেখিয়ে দিয়েছে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন করে। এটা এখন সত্য, বাস্তব। আজ রোববার এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ফুটবল জ্বর পৌঁছে যাবে তামাম দুনিয়ায়। দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ২৯ লাখ ৯৬ হাজার। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তারা স্বাগত জানাবে প্রায় ১৫ লাখ ফুটবল ভক্তকে। দেশটির রয়েছে দুটি বিমানবন্দর। হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতি ঘণ্টায় দশ হাজার যাত্রী নামছেন। আর দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘণ্টায় নামছে ১৩টি ফ্লাইট। ভাষা কোনো সমস্যা নয়। ইংরেজি চলে সর্বত্র। এর আয়তন এতটাই ছোট যে, এক দেড় ঘণ্টার মধ্যেই পুরো দেশটি ভ্রমণ করা যায়। কোভিড আর বিশ্বমন্দার ঢেউ লাগেনি। বাড়েনি জিনিসপত্রের দাম। অর্থনীতিও চাঙ্গা। বিশ্বকাপ আরও চাঙ্গা করে দেবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা চমৎকার। মেট্রো ও বাস নেটওয়ার্ক এমনভাবে সাজানো হয়েছে যা কল্পনাতীত। প্রায় ১২ হাজার সাংবাদিক কভার করতে এসেছেন দোহায়। এটা এক অনন্য রেকর্ড। অন্য বিশ্বকাপে এমনটা দেখিনি। প্রায় সাড়ে তিন লাখ বাংলাদেশি দোহায় কর্মরত রয়েছেন বিভিন্ন পেশায়। ফুটবলের অবকাঠামো তৈরিতেও রয়েছে তাদের অবদান।
নানা সূত্রের খবর, পঞ্চাশ থেকে এক লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি খেলা দেখার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য আল বায়াত স্টেডিয়াম রেডি। ৬০ হাজার দর্শক মাঠে হাজির থাকবেন স্বাগতিক কাতার ও ইকুয়েডরের মধ্যকার খেলা দেখার জন্য। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছে দেশি-বিদেশি শিল্পীদের নিয়ে। বিশ্বকাপের সাক্ষী হতে যারা কাতারে এসেছেন তাদের জন্য মেগা বিনোদনের আয়োজন করা হয়েছে। রয়েছে একের পর এক পার্টি। কাতার আর ইকুয়েডরের মধ্যকার ম্যাচ সামনে রেখে কাতারজুড়েই এক ধরনের উন্মাদনা। আল বিদ্যা পার্কে ফিফা ফ্যান ফেস্টিভ্যালে চোখ ধাঁধানো আয়োজন রয়েছে। দোহা কর্নিচে রয়েছে স্ট্রিট ফেস্টিভ্যাল। ওয়েলকাম টু কাতার সম্প্রচারের মাধ্যমে দরজা খুলবে। লেবানিজ গায়ক মারিয়াম ফারেস আর কলোম্বিয়ার তারকা মালুমার পারফরম্যান্স নিয়ে আগেভাগে কিছুই বলার নেই। অংশ নেবে কোরিয়ার বিখ্যাত পপ ব্যান্ড ‘বিটিএস’। আন্তর্জাতিক পুরস্কার বিজয়ী সংগীতজ্ঞ ডিপলো, কিজ ড্যানিয়েল, নোরা ফাতেহি, ত্রিনিদাদ কারডোনা ও কেলভিন হ্যারিসকে দেখা যাবে উদ্বোধনী আয়োজনে। স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় শুরু হবে ফ্যান ফেস্টিভ্যাল। ফেস্টিভ্যালে অংশ নিতে হায়া কার্ড বাধ্যতামূলক।
মিডিয়া সেন্টারে কথা হচ্ছিল আর্জেন্টাইন সাংবাদিক ফ্রাঙ্কোর সঙ্গে। ২০১০ বিশ্বকাপেও তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। নেইমারের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে তাকে জিজ্ঞেস করলাম এর জবাব কেন দিচ্ছেন না মেসি। আমি ঠিক জানি না। তবে আমার কেন যেন মনে হয়, খেলার আগেভাগে তিনি সম্ভবত মুখ খুলতে চাচ্ছেন না। নেইমার দ্য টেলিগ্রাফকে মেসিকে উদ্দেশ্য করে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘তুমি আমার বন্ধু। একসঙ্গে পিএসজিতে খেলি। অনেক সুখ- দুঃখের কথা শেয়ার করি। কিন্তু বিশ্বকাপ নিয়ে তোমার সঙ্গে কথা বলি না। তুমিও বলতে চাও না। নেইমার আরও বলেন, এটা দুই বন্ধুর লড়াই নয়। এটা হচ্ছে দুই দেশের লড়াই। তুমি আমাকে শত্রু ভেবো না। কিন্তু আমার দেশের জন্য খেলতে হবে। তোমাকে জানিয়ে রাখি- আমি জিতবোই। কাপ নিয়ে কাতার থেকে বাড়ি ফিরবো।’ ৩০ বছর বয়সী এই ফুটবলার কাতারে এসেছেন দুর্দান্ত এক ফর্ম নিয়ে। পিএসজির হয়ে ১৩ গোল করেছেন। সহায়তা করেছেন ১১টি গোলের। নেইমার বলেন, ‘তার ফুটবল ক্যারিয়ারে অনেক কিছু পেয়েছেন। যা তিনি কখনো ভাবেননি। আমার ক্যারিয়ার যদি আজই শেষ হয়ে যায় তাতে কোনো আফসোস নেই। বরং আমি খুশিই হবো। তবে বলতেই হয় বিশ্বকাপ আমার স্বপ্ন।’