ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ভালো নেই ৭০টি সাঁওতাল পরিবার!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০১৯
  • / ৪৫১ বার পড়া হয়েছে

দর্শনার কেরু এ্যান্ড কোম্পানির বাণিজ্যিক খামারগুলোতে ৮১ বছর ধরে বসবাস
আরিফ হাসান:
ভারতের বিহার-উড়িষ্যার অরণ্য অঞ্চল সাঁওতালদের আদি বাসস্থান হলেও বাংলাদেশের রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়া জেলায় এদের বসবাস সুদীর্ঘ সময় ধরে। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ বনিক স্যার রবার্ট রাসেল কেরু বর্তমান চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনাতে চিনিকল প্রতিষ্ঠার পর চিনিকলের প্রধান উপাদান আখ চাষের জন্য হাজার হাজার একর জমি ক্রয় করেন। এসব জমিতে রোপিত আখের পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শ্রমিক-সংকট মোকাবিলায় অত্যন্ত পরিশ্রমী ও সাহসী জাতি সাঁওতালদের রাজশাহী অঞ্চল থেকে নিয়ে এনে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির বিভিন্ন কৃষি খামারে বসতি গড়ে দেওয়া হয়। পূর্বে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ১০টি কৃষি খামারের শ্রমিক হিসেবে সাধারণত সাঁওতালেরা কাজ করলেও পরবর্তীতে স্থানীয়দের এই কাজে অংশগ্রহণের ফলে সাঁওতালেরা বিপাকে পড়ে যায়। অভাব-অনটনের কারণে অনেকেই পূর্বের ঠিকানায় ফিরে গেলেও বেশ কয়েকটি পরিবার থেকে যায় এখানে। এখানে থেকে যাওয়া সাঁওতালেরা জীবিকানির্বাহের জন্য আদি পেশা কৃষিকাজ শুরু করলেও বর্তমানে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অধিকাংশ পরিবারের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নে অবস্থিত দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির আটটি বাণিজ্যিক খামারের মধ্যে হিজলগাড়ী, বেগমপুর, ঝাঁঝরী, ফুলবাড়ি, ডিহি কৃষি খামারে বেশ কয়েকটি পরিবার বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করছে দীর্ঘ বছর ধরে। অস্ট্রিক ভাষাভাষী আদি অস্ট্রোলীয় (প্রোটা-অস্টালয়েড) জনগোষ্ঠীর বংশধর স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে সাঁওতালদের পরিচিতি হলেও এরা পরবর্তীতে হিন্দু ধর্মের অনুসারী হয়। এদের প্রধান দেবতার নাম সিং বোঙ্গা, যার অর্থ সূর্য দেবতা। হিন্দুধর্ম অনুসারী হওয়ার পর এরা দুর্গা, শিব, মনসা ও কালী পূঁজা করতে থাকে। কেরু অ্যান্ড কোম্পানির হিজলগাড়ী ফার্মে বসবাসরত সাঁওতাল পরিবারের সদস্য খুদুয়া বর্ম সময়ের সমীকরণকে বলেন, অতীতে যারা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির কাজ করার জন্য রাজশাহী, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া এলাকা থেকে এখানে এসে বসতি গড়ে তুলেছিল, তাদের অধিকাংশই আবার ফিরে গেছে পূর্বের ঠিকানায়। তবে সব মিলিয়ে প্রায় ৭০টি পরিবার এখানো বিভিন্ন ফার্মে বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করছে। যার মধ্যে ডিহি ফার্মে সবচেয়ে বেশি বসবাস করা সাঁওতালেরা এখন খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষা নিয়েছে। খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারী হওয়ায় খ্রিষ্টান মিশোনারি থেকে দেওয়া আলাদা জমিতে ২০ থেকে ২৫ পরিবার বসবাস করছে। যারা এখনো আদি ধর্ম আঁকড়ে ধরে আছে, তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে কেরুজ ফার্মের মাটি আর টিনের ছাপড়া ঘর।
হাম্বেল ওরফে বিষ্ণু নামের একজন বলেন, তারা কেরু অ্যান্ড কোম্পানিতে দিন হাজিরা আর কেরুর কাজ না থাকলে স্থানীয় কৃষকদের জমিতে কাজ করে কোনোমতে সংসার চালায়। সাঁওতাল জনগোষ্ঠী কৃষি-সংস্কৃতির জনক ও ধারক হিসেবে স্বীকৃত। ১৮৮১ সালের আদম শুমারিতে দেখা যায়, পাবনা, যশোর, খুলনা ও চট্টগ্রাম জেলায় অল্প সংখ্যায় সাঁওতালদের বসতি ছিল। ১৯৪১ সালের জরিপ অনুযায়ী দেশে সাঁওতালদের সংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষ হলেও ১৯৯১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী সাঁওতালদের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২ লক্ষতে। তবে ২০০১ সালের জরিপে এদের সংখ্যা জানা যায়নি।
সুজন কুমার নামের আরেকজন ব্যক্তি সময়ের সমীকরণকে জানান, সাঁওতাল সমাজ পুরুষ প্রধান হলেও নারী-পুরুষ একত্রে সব কাজ করে থাকে। পুরুষের মতো নারীরাও মাঠে কাজ করে। তিনি আরও বলেন, সাঁওতালেরা মূলত ১২টি গোত্রে বিভক্ত। প্রতিটি গোত্রের আলাদা আলাদা রীতিনীতি আছে। অতীতে তাদের নিজস্ব ভাষা থাকলেও বর্তমানে তারা বাংলা ভাষায় কথা বলে। সাঁওতালেরা খুবই উৎসবপ্রিয় জাতি। বাঙালিদের মতো তাদেরও আছে বারো মাসে তেরো পার্বণ। সাঁওতালেরা শিকার করতে খুবই পছন্দ করে। হাতে তৈরি তির-ধকুন দিয়ে পাখি শিকার, জাল দিয়ে মাছ, খরগোস শিকার এদের কাছে খুবই প্রিয় হলেও বর্তমানে এরা পাখি শিকার করে না বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আশাবুল হক মাসুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জনগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত নৃ-জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ মানুষ জানে না যে তারা বাংলাদেশের নাগরিক। নাগরিক হিসেবে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে তারা যেন নিজেদের আত্মপ্রকাশ করে দেশ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, সেই প্রয়াসে আমি নিজ উদ্যোগে বেগমপুর ইউনিয়নে বসবাসরত নৃ-জনগোষ্ঠীর স্কুলগামী শিশুদের নিয়ে গত স্বাধীনতার মাসে ‘আমাদের বাংলাদেশ’ শিরোনামে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের পরিচিতি, শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ে আলোচনা করি।’
শেকড়ের সভাপতি শামীম হোসেন মিজি বলেন, ‘ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন বিশেষ করে সাঁওতাল বিদ্রোহ, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ দেশবিরোধী যেকোনো আন্দোলন মোকাবিলায় সাঁওতালেরা গৌরময় ভূমিকা রেখেছে। ১৮৫৫ সালে তাদের বিট্রিশবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বে দেয় সিধু, কানু, চাঁদ দৈব প্রমুখ নেতারা। তাদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের এগিয়ে আসা উচিত।’
বৃহত্তর বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নে সাঁওতালদের আগমন প্রায় আট শতক আগে। কেরু অ্যান্ড কোম্পানির বিভিন্ন ফার্মে এরা আগে দলবন্ধভাবে বসবাস করলেও এখন বেগমপুর, ঝাঁঝরী, হিজলগাড়ী, ডিহি ও ফুলবাড়ী ফার্মে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার বসবাস করছে। আধুনিক শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে পারলে এদের জীবনমান উন্নত করা সম্ভব। কেরুজ বিভিন্ন ফার্মে বসবাসরত সাঁওতাল জনগোষ্ঠীকে সার্বিকভাবে এগিয়ে নিতে এবং আমাদের ইতিহাস ও ঐহিত্যের অংশ হিসেবে তাদের জীবন-মান উন্নয়নে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সমাজের সচেতন ও সুধীজনেরা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ভালো নেই ৭০টি সাঁওতাল পরিবার!

আপলোড টাইম : ১১:৩৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০১৯

দর্শনার কেরু এ্যান্ড কোম্পানির বাণিজ্যিক খামারগুলোতে ৮১ বছর ধরে বসবাস
আরিফ হাসান:
ভারতের বিহার-উড়িষ্যার অরণ্য অঞ্চল সাঁওতালদের আদি বাসস্থান হলেও বাংলাদেশের রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়া জেলায় এদের বসবাস সুদীর্ঘ সময় ধরে। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ বনিক স্যার রবার্ট রাসেল কেরু বর্তমান চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনাতে চিনিকল প্রতিষ্ঠার পর চিনিকলের প্রধান উপাদান আখ চাষের জন্য হাজার হাজার একর জমি ক্রয় করেন। এসব জমিতে রোপিত আখের পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শ্রমিক-সংকট মোকাবিলায় অত্যন্ত পরিশ্রমী ও সাহসী জাতি সাঁওতালদের রাজশাহী অঞ্চল থেকে নিয়ে এনে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির বিভিন্ন কৃষি খামারে বসতি গড়ে দেওয়া হয়। পূর্বে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ১০টি কৃষি খামারের শ্রমিক হিসেবে সাধারণত সাঁওতালেরা কাজ করলেও পরবর্তীতে স্থানীয়দের এই কাজে অংশগ্রহণের ফলে সাঁওতালেরা বিপাকে পড়ে যায়। অভাব-অনটনের কারণে অনেকেই পূর্বের ঠিকানায় ফিরে গেলেও বেশ কয়েকটি পরিবার থেকে যায় এখানে। এখানে থেকে যাওয়া সাঁওতালেরা জীবিকানির্বাহের জন্য আদি পেশা কৃষিকাজ শুরু করলেও বর্তমানে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অধিকাংশ পরিবারের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নে অবস্থিত দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির আটটি বাণিজ্যিক খামারের মধ্যে হিজলগাড়ী, বেগমপুর, ঝাঁঝরী, ফুলবাড়ি, ডিহি কৃষি খামারে বেশ কয়েকটি পরিবার বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করছে দীর্ঘ বছর ধরে। অস্ট্রিক ভাষাভাষী আদি অস্ট্রোলীয় (প্রোটা-অস্টালয়েড) জনগোষ্ঠীর বংশধর স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে সাঁওতালদের পরিচিতি হলেও এরা পরবর্তীতে হিন্দু ধর্মের অনুসারী হয়। এদের প্রধান দেবতার নাম সিং বোঙ্গা, যার অর্থ সূর্য দেবতা। হিন্দুধর্ম অনুসারী হওয়ার পর এরা দুর্গা, শিব, মনসা ও কালী পূঁজা করতে থাকে। কেরু অ্যান্ড কোম্পানির হিজলগাড়ী ফার্মে বসবাসরত সাঁওতাল পরিবারের সদস্য খুদুয়া বর্ম সময়ের সমীকরণকে বলেন, অতীতে যারা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির কাজ করার জন্য রাজশাহী, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া এলাকা থেকে এখানে এসে বসতি গড়ে তুলেছিল, তাদের অধিকাংশই আবার ফিরে গেছে পূর্বের ঠিকানায়। তবে সব মিলিয়ে প্রায় ৭০টি পরিবার এখানো বিভিন্ন ফার্মে বিচ্ছিন্নভাবে বসবাস করছে। যার মধ্যে ডিহি ফার্মে সবচেয়ে বেশি বসবাস করা সাঁওতালেরা এখন খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষা নিয়েছে। খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারী হওয়ায় খ্রিষ্টান মিশোনারি থেকে দেওয়া আলাদা জমিতে ২০ থেকে ২৫ পরিবার বসবাস করছে। যারা এখনো আদি ধর্ম আঁকড়ে ধরে আছে, তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে কেরুজ ফার্মের মাটি আর টিনের ছাপড়া ঘর।
হাম্বেল ওরফে বিষ্ণু নামের একজন বলেন, তারা কেরু অ্যান্ড কোম্পানিতে দিন হাজিরা আর কেরুর কাজ না থাকলে স্থানীয় কৃষকদের জমিতে কাজ করে কোনোমতে সংসার চালায়। সাঁওতাল জনগোষ্ঠী কৃষি-সংস্কৃতির জনক ও ধারক হিসেবে স্বীকৃত। ১৮৮১ সালের আদম শুমারিতে দেখা যায়, পাবনা, যশোর, খুলনা ও চট্টগ্রাম জেলায় অল্প সংখ্যায় সাঁওতালদের বসতি ছিল। ১৯৪১ সালের জরিপ অনুযায়ী দেশে সাঁওতালদের সংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষ হলেও ১৯৯১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী সাঁওতালদের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২ লক্ষতে। তবে ২০০১ সালের জরিপে এদের সংখ্যা জানা যায়নি।
সুজন কুমার নামের আরেকজন ব্যক্তি সময়ের সমীকরণকে জানান, সাঁওতাল সমাজ পুরুষ প্রধান হলেও নারী-পুরুষ একত্রে সব কাজ করে থাকে। পুরুষের মতো নারীরাও মাঠে কাজ করে। তিনি আরও বলেন, সাঁওতালেরা মূলত ১২টি গোত্রে বিভক্ত। প্রতিটি গোত্রের আলাদা আলাদা রীতিনীতি আছে। অতীতে তাদের নিজস্ব ভাষা থাকলেও বর্তমানে তারা বাংলা ভাষায় কথা বলে। সাঁওতালেরা খুবই উৎসবপ্রিয় জাতি। বাঙালিদের মতো তাদেরও আছে বারো মাসে তেরো পার্বণ। সাঁওতালেরা শিকার করতে খুবই পছন্দ করে। হাতে তৈরি তির-ধকুন দিয়ে পাখি শিকার, জাল দিয়ে মাছ, খরগোস শিকার এদের কাছে খুবই প্রিয় হলেও বর্তমানে এরা পাখি শিকার করে না বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আশাবুল হক মাসুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জনগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত নৃ-জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ মানুষ জানে না যে তারা বাংলাদেশের নাগরিক। নাগরিক হিসেবে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে তারা যেন নিজেদের আত্মপ্রকাশ করে দেশ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, সেই প্রয়াসে আমি নিজ উদ্যোগে বেগমপুর ইউনিয়নে বসবাসরত নৃ-জনগোষ্ঠীর স্কুলগামী শিশুদের নিয়ে গত স্বাধীনতার মাসে ‘আমাদের বাংলাদেশ’ শিরোনামে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের পরিচিতি, শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ে আলোচনা করি।’
শেকড়ের সভাপতি শামীম হোসেন মিজি বলেন, ‘ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন বিশেষ করে সাঁওতাল বিদ্রোহ, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ দেশবিরোধী যেকোনো আন্দোলন মোকাবিলায় সাঁওতালেরা গৌরময় ভূমিকা রেখেছে। ১৮৫৫ সালে তাদের বিট্রিশবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বে দেয় সিধু, কানু, চাঁদ দৈব প্রমুখ নেতারা। তাদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের এগিয়ে আসা উচিত।’
বৃহত্তর বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নে সাঁওতালদের আগমন প্রায় আট শতক আগে। কেরু অ্যান্ড কোম্পানির বিভিন্ন ফার্মে এরা আগে দলবন্ধভাবে বসবাস করলেও এখন বেগমপুর, ঝাঁঝরী, হিজলগাড়ী, ডিহি ও ফুলবাড়ী ফার্মে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার বসবাস করছে। আধুনিক শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে পারলে এদের জীবনমান উন্নত করা সম্ভব। কেরুজ বিভিন্ন ফার্মে বসবাসরত সাঁওতাল জনগোষ্ঠীকে সার্বিকভাবে এগিয়ে নিতে এবং আমাদের ইতিহাস ও ঐহিত্যের অংশ হিসেবে তাদের জীবন-মান উন্নয়নে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সমাজের সচেতন ও সুধীজনেরা।