ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ভারতফেরত কিশোরসহ করোনায় দুজনের মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ মে ২০২১
  • / ৪৬ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন আরও ১০ জন আক্রান্ত, সুস্থ এক
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভারতফেরত এক কিশোরসহ করোনা আক্রান্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে সাকিব উদ্দীন (১৭) নামে ভারতফেরত ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এর তিন ঘণ্টা পর রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে আবুল হোসেন (৭৫) নামের অন্য এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। নিহত ভারতফেরত কিশোর চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কলেজপাড়ার মিজানুর রহমানের ছেলে ও বৃদ্ধ আবুল হোসেন দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা গ্রামের মৃত ফয়তুল্লার ছেলে।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গায় নতুন করে আরও ১০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৯২০ জন। গতকাল নতুন শনাক্ত ১০ জনের মধ্যে আলমডাঙ্গার একজন, দামুড়হুদায় সাতজন ও জীবননগরের দুজন রয়েছেন। জেলায় মোট শনাক্তের মধ্যে সদর উপজেলার ১ হাজার ১৪ জন, আলমডাঙ্গায় ৩৬১ জন, দামুড়হুদায় ৩৩৭ জন ও জীবননগরে ২০৮ জন। গতকাল জেলায় নতুন একজন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৯৪ জন।
জানা যায়, ভারতে চিকিৎসা নিচ্ছিল ক্যানসার আক্রান্ত কিশোর সাকিব উদ্দীন। ভারতে চিকিৎসাথীন অবস্থায় ক্যানসার আক্রান্ত সাকিবের শরীর থেকে একটি পা কেটে বাদ দেওয়া হয়। গত ৯ মে সাকিবের পরিবারের সদস্যরা সাকিবকে নিয়ে ভারত থেকে যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বেনাপোল চেকপোস্টে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলে সাকিব উদ্দীনের শরীরে করোনা হয়। গত ১১ মে পরিবারের সদস্যরা কিশোর সাকিবকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশেনে ভর্তি করেন। গত ১২ মে সদর হাসপাতাল কর্তপক্ষ করোনা পরীক্ষার জন্য তার শরীর থেকে নমুনায় সংগ্রহ করে। তার সংগৃহীত নমুনায় পুনরায় করোনা ফলাফল পজিটিভ আসায় তাকে হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সাকিবের মৃত্যু হয়।
অপর দিকে, গত ১৫ মে জ্বর, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্টজনিত কারণে হাসপাতালে (ইয়োলো জোন) ভর্তি হন আবুল হোসেন। ১৬ মে তাঁর শরীর থেকে সংগৃহীত নমুনায় পরদিন ১৭ মে করোনা ফলাফল পজিটিভ আসে। ওইদিন রাতেই তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশনে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার পরে তাঁর মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এ এস এম ফাতেহ্ আকরাম জানান, ‘ভারতে চিকিৎসাধীন ক্যানসার আক্রান্ত সাকিব উদ্দীন নামের এক কিশোর ৯ মে করোনা নিয়ে দেশে প্রবেশ করেন। গত ১১ মে পরিবারের সদস্যরা তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আইসোলেশনে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ২০মিনিটে তার মৃত্যু হয়। একই রাত ৩টা ২০ মিনিটে হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন থাকা করোনা আক্রান্ত রোগী আবুল হোসেন (৭৫) নামের এক বৃদ্ধর মৃত্যু হয়। তিনি ১৫ মে ইয়োলো জোনে ভর্তি হন। ১৭ তারিখ তার নমুনায় করোনা শনাক্ত হলে ওইদিন রাতেই তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে নেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার করোনা প্রটোকলে নিহত দুজনের নিজ গ্রামে তাদের দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৯ হাজার ৫৭৩টি, প্রাপ্ত ফলাফল ৯ হাজার ৩৬৮টি, পজিটিভ ১ হাজার ৯২০টি। শেষখবর পাওয়া পর্যন্ত চুয়াডায় ৬৪ জন করোনাক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিল। এর মধ্যে সদর উপজেলায় অবস্থানকালে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ জন, আলমডাঙ্গায় ৪ জন, দামুড়হুদায় ১৭ জন ও জীবননগরে ২০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে বর্তমানে ৫১ জন হোম আইসোলেশনে আছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২০ জন, আলমডাঙ্গায় ৩ জন, দামুড়হুদায় ৮ জন ও জীবননগরে ২০ জন। প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে আছেন সদর উপজেলার ২ জন ও আলমডাঙ্গায় ১ জন ও দামুড়হুদায় ৯ জনসহ ১২ জন। এছাড়াও উন্নত চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গার বাইরে রয়েছেন আরও ১ জন। চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৬২ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলার ২৩ জন, আলমডাঙ্গায় ১৭ জন, দামুড়হুদায় ১২ জন ও জীবননগরে ৪ জন। চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত অন্য ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলার বাইরে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ভারতফেরত কিশোরসহ করোনায় দুজনের মৃত্যু

আপলোড টাইম : ১০:৩৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ মে ২০২১

চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন আরও ১০ জন আক্রান্ত, সুস্থ এক
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভারতফেরত এক কিশোরসহ করোনা আক্রান্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে সাকিব উদ্দীন (১৭) নামে ভারতফেরত ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এর তিন ঘণ্টা পর রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে আবুল হোসেন (৭৫) নামের অন্য এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। নিহত ভারতফেরত কিশোর চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কলেজপাড়ার মিজানুর রহমানের ছেলে ও বৃদ্ধ আবুল হোসেন দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা গ্রামের মৃত ফয়তুল্লার ছেলে।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গায় নতুন করে আরও ১০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৯২০ জন। গতকাল নতুন শনাক্ত ১০ জনের মধ্যে আলমডাঙ্গার একজন, দামুড়হুদায় সাতজন ও জীবননগরের দুজন রয়েছেন। জেলায় মোট শনাক্তের মধ্যে সদর উপজেলার ১ হাজার ১৪ জন, আলমডাঙ্গায় ৩৬১ জন, দামুড়হুদায় ৩৩৭ জন ও জীবননগরে ২০৮ জন। গতকাল জেলায় নতুন একজন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৯৪ জন।
জানা যায়, ভারতে চিকিৎসা নিচ্ছিল ক্যানসার আক্রান্ত কিশোর সাকিব উদ্দীন। ভারতে চিকিৎসাথীন অবস্থায় ক্যানসার আক্রান্ত সাকিবের শরীর থেকে একটি পা কেটে বাদ দেওয়া হয়। গত ৯ মে সাকিবের পরিবারের সদস্যরা সাকিবকে নিয়ে ভারত থেকে যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বেনাপোল চেকপোস্টে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলে সাকিব উদ্দীনের শরীরে করোনা হয়। গত ১১ মে পরিবারের সদস্যরা কিশোর সাকিবকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশেনে ভর্তি করেন। গত ১২ মে সদর হাসপাতাল কর্তপক্ষ করোনা পরীক্ষার জন্য তার শরীর থেকে নমুনায় সংগ্রহ করে। তার সংগৃহীত নমুনায় পুনরায় করোনা ফলাফল পজিটিভ আসায় তাকে হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সাকিবের মৃত্যু হয়।
অপর দিকে, গত ১৫ মে জ্বর, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্টজনিত কারণে হাসপাতালে (ইয়োলো জোন) ভর্তি হন আবুল হোসেন। ১৬ মে তাঁর শরীর থেকে সংগৃহীত নমুনায় পরদিন ১৭ মে করোনা ফলাফল পজিটিভ আসে। ওইদিন রাতেই তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশনে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার পরে তাঁর মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এ এস এম ফাতেহ্ আকরাম জানান, ‘ভারতে চিকিৎসাধীন ক্যানসার আক্রান্ত সাকিব উদ্দীন নামের এক কিশোর ৯ মে করোনা নিয়ে দেশে প্রবেশ করেন। গত ১১ মে পরিবারের সদস্যরা তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আইসোলেশনে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ২০মিনিটে তার মৃত্যু হয়। একই রাত ৩টা ২০ মিনিটে হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন থাকা করোনা আক্রান্ত রোগী আবুল হোসেন (৭৫) নামের এক বৃদ্ধর মৃত্যু হয়। তিনি ১৫ মে ইয়োলো জোনে ভর্তি হন। ১৭ তারিখ তার নমুনায় করোনা শনাক্ত হলে ওইদিন রাতেই তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে নেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার করোনা প্রটোকলে নিহত দুজনের নিজ গ্রামে তাদের দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৯ হাজার ৫৭৩টি, প্রাপ্ত ফলাফল ৯ হাজার ৩৬৮টি, পজিটিভ ১ হাজার ৯২০টি। শেষখবর পাওয়া পর্যন্ত চুয়াডায় ৬৪ জন করোনাক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিল। এর মধ্যে সদর উপজেলায় অবস্থানকালে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ জন, আলমডাঙ্গায় ৪ জন, দামুড়হুদায় ১৭ জন ও জীবননগরে ২০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে বর্তমানে ৫১ জন হোম আইসোলেশনে আছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২০ জন, আলমডাঙ্গায় ৩ জন, দামুড়হুদায় ৮ জন ও জীবননগরে ২০ জন। প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে আছেন সদর উপজেলার ২ জন ও আলমডাঙ্গায় ১ জন ও দামুড়হুদায় ৯ জনসহ ১২ জন। এছাড়াও উন্নত চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গার বাইরে রয়েছেন আরও ১ জন। চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৬২ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলার ২৩ জন, আলমডাঙ্গায় ১৭ জন, দামুড়হুদায় ১২ জন ও জীবননগরে ৪ জন। চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত অন্য ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলার বাইরে।