ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ভাজাভুজির সাথে মৌসুমি ফলমুলে রকমারি স্বাদের ইফতার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:২৮:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ মে ২০১৮
  • / ৫৩৯ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা শহরে জমজমাট ইফতারি উৎসব
এস এম শাফায়েত/ ফেরদৌস ওয়াহিদ: গতকাল শনিবার ছিলো মাহে রমজানের দ্বিতীয় দিন। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে রাতে সেহরি খেয়ে রোজা রেখেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সারাদিন অনহারে থেকে ইফতারিতে রসালো ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করেন রোজাদাররা। তাই বাড়িতে যেমন ইফতার তৈরিতে গৃহিনীরা নানা আয়োজনে ব্যস্ত থাকেন তেমনি হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোও ব্যস্ত হয় পড়ে ইফতার বিক্রিতে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের বিভিন্ন খোলা জায়গা, ফুটপাত, ছোটখাটো ও বড়-সড় হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বাজার সবখানেই হরেকরকমের ইফতারের পসরায় বলে দিচ্ছে রমজানের নান্দনিকতা। সারাদিন রোজা শেষে বিকাল থেকেই ইফতার কেনার জন্য দোকানে রোজাদের ভিড় বাড়তে থাকে। যদিও নিত্যপণ্যের আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে ইফতার সামগ্রীর দামও আকাশচুম্বি। ইফতার সামগ্রী কিনতে এসে ক্ষুব্ধ হলেও পছন্দের আইটেম কিনেই ফিরছেন সবাই। হরেকরকমের জিলাপি, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, ছোলা, মুড়ি, চিড়া ইত্যাদি একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হয় রকমারি স্বাদের ইফতার। সামর্থ্যমত কেউ কেউ খাসি, গরু ও মুরগির কাবাব, কাটি কাবাব, ডিম, আম, কাঁঠাল, আনারস ইত্যাদি মিশিয়ে ইফতারের স্বাদ আরেকটু বাড়িয়ে নেন। বিভিন্ন আইটেমের ইফতারি সাজিয়ে ক্রেতাদের ডাকছিলেন চুয়াডাঙ্গার দাকানিরা। ইফতারিতে আরেক আইটেম বিরিয়ানি। দোকানিদের নামে নামে এসব বিরিয়ানি চাহিদাও ব্যাপক। সঙ্গে রয়েছে নানা নাম-বেনামের হালিম। মামা হালিম, চাচা হালিম, মিনু হালিম, আমানিয়া হালিম নামভেদে এসব হালিমের দাম ৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। তাছাড়া ছোলা, বড়া, পেয়াজু, বেগুনিসহ নানা তেলেভাজি আইটেম দেখলেই রোজাদারের জিহ্বায় রস আসে। চুয়াডাঙ্গা শহরের ফুটপাত থেকে শুরু অভিজাত হোটেল পর্যন্ত ইফতারির উৎসবে মাতওয়ারা থাকে। শহরের বিভিন্ন অভিজাত হোটেলগুলোতে ইফতারির সামগ্রীতে থাকে ঐতিহ্য ও বৈচিত্রতার প্রতিফলন। বিভিন্ন নাম দিয়ে প্যাকেজ আইটেম ইফতারি প্যাকেটের ব্যবস্থা করেছে অভিজাত হোটেলগুলো। অন্য যেকোনো রমজানের মতো এবার সবকিছুর দাম আকাশছোঁয়া। নিত্যপণ্যের বাজার রমজান আসার আগেই লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। অব্যাহত রয়েছে বেশ পণ্যের দাম বৃদ্ধি। দামের প্রতিযোগিতায় মোটেই পিছিয়ে নেই ইফতার সামগ্রী। প্রায় সব পদের ইফতারির দামই গত বছরের রমজানের তুলনায় দ্বিগণ হয়েছে। ইফতার সামগ্রীর দাম একেক স্থানে একেক রকম। বাজার তদারকির ব্যবস্থা না থাকায় রমজানের ইফতার সামগ্রীর দাম ইচ্ছামত বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা। এমনকি ইফতারের ঠিক আগমুহূর্তে বড় ও মাঝারি হোটেলগুলো দোকানের সামনে পানির বোতল ও বিভিন্ন ধরনের পানীয় বিক্রি করেন প্রকৃত দামের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দরে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের পয়েন্টে পয়েন্টে ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় ব্যবসায়ীদের ইফতার সাজানোর কাজ। দুপুর যত বিকেলের দিকে গড়াতে থাকে ততই বাড়তে থাকে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সমাবেশ। বাড়তে থাকে কোলাহল। জমে ওঠে থরে থরে সাজানো রকমারি ইফতার বিক্রির ধুম। ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসতেই বাড়তে থাকে বিক্রেতাদের হাঁক ডাক। নানা বয়সী ক্রেতাকে ঠোঙা ভর্তি করে নিয়ে যেতে দেখা যায় এসব খাবার। ছোলা, পেয়াজু, আলুর চপ, বেগুনী, মুড়ি, কাবাব, জিলাপি, হালিম, বুরিন্ধাসহ নানা স্বাদের ইফতার কিনতে আশপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অফিসের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন ক্রেতারা এসে ভিড় করেন ইফতারের দোকানগুলোতে। ক্রেতারও খুশি, হাতের নাগালে ক্ষণিকের মধ্যে টাকার বিনিময়ে পেয়ে যাচ্ছেন অনেক রকমের ইফতার। এদিকে প্রায় প্রতিটি রেস্তোরাঁয় পার্সেলের পাশাপাশি ছিল ইফতার করারও সুব্যবস্থা। ঐতিহ্য আর আভিজাত্যের সঙ্গে সঙ্গে খাবারের দামেও দাকানভেদে ভিন্নতা দেখা গেছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ভাজাভুজির সাথে মৌসুমি ফলমুলে রকমারি স্বাদের ইফতার

আপলোড টাইম : ০৫:২৮:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ মে ২০১৮

চুয়াডাঙ্গা শহরে জমজমাট ইফতারি উৎসব
এস এম শাফায়েত/ ফেরদৌস ওয়াহিদ: গতকাল শনিবার ছিলো মাহে রমজানের দ্বিতীয় দিন। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে রাতে সেহরি খেয়ে রোজা রেখেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সারাদিন অনহারে থেকে ইফতারিতে রসালো ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করেন রোজাদাররা। তাই বাড়িতে যেমন ইফতার তৈরিতে গৃহিনীরা নানা আয়োজনে ব্যস্ত থাকেন তেমনি হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোও ব্যস্ত হয় পড়ে ইফতার বিক্রিতে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের বিভিন্ন খোলা জায়গা, ফুটপাত, ছোটখাটো ও বড়-সড় হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বাজার সবখানেই হরেকরকমের ইফতারের পসরায় বলে দিচ্ছে রমজানের নান্দনিকতা। সারাদিন রোজা শেষে বিকাল থেকেই ইফতার কেনার জন্য দোকানে রোজাদের ভিড় বাড়তে থাকে। যদিও নিত্যপণ্যের আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে ইফতার সামগ্রীর দামও আকাশচুম্বি। ইফতার সামগ্রী কিনতে এসে ক্ষুব্ধ হলেও পছন্দের আইটেম কিনেই ফিরছেন সবাই। হরেকরকমের জিলাপি, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, ছোলা, মুড়ি, চিড়া ইত্যাদি একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হয় রকমারি স্বাদের ইফতার। সামর্থ্যমত কেউ কেউ খাসি, গরু ও মুরগির কাবাব, কাটি কাবাব, ডিম, আম, কাঁঠাল, আনারস ইত্যাদি মিশিয়ে ইফতারের স্বাদ আরেকটু বাড়িয়ে নেন। বিভিন্ন আইটেমের ইফতারি সাজিয়ে ক্রেতাদের ডাকছিলেন চুয়াডাঙ্গার দাকানিরা। ইফতারিতে আরেক আইটেম বিরিয়ানি। দোকানিদের নামে নামে এসব বিরিয়ানি চাহিদাও ব্যাপক। সঙ্গে রয়েছে নানা নাম-বেনামের হালিম। মামা হালিম, চাচা হালিম, মিনু হালিম, আমানিয়া হালিম নামভেদে এসব হালিমের দাম ৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। তাছাড়া ছোলা, বড়া, পেয়াজু, বেগুনিসহ নানা তেলেভাজি আইটেম দেখলেই রোজাদারের জিহ্বায় রস আসে। চুয়াডাঙ্গা শহরের ফুটপাত থেকে শুরু অভিজাত হোটেল পর্যন্ত ইফতারির উৎসবে মাতওয়ারা থাকে। শহরের বিভিন্ন অভিজাত হোটেলগুলোতে ইফতারির সামগ্রীতে থাকে ঐতিহ্য ও বৈচিত্রতার প্রতিফলন। বিভিন্ন নাম দিয়ে প্যাকেজ আইটেম ইফতারি প্যাকেটের ব্যবস্থা করেছে অভিজাত হোটেলগুলো। অন্য যেকোনো রমজানের মতো এবার সবকিছুর দাম আকাশছোঁয়া। নিত্যপণ্যের বাজার রমজান আসার আগেই লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। অব্যাহত রয়েছে বেশ পণ্যের দাম বৃদ্ধি। দামের প্রতিযোগিতায় মোটেই পিছিয়ে নেই ইফতার সামগ্রী। প্রায় সব পদের ইফতারির দামই গত বছরের রমজানের তুলনায় দ্বিগণ হয়েছে। ইফতার সামগ্রীর দাম একেক স্থানে একেক রকম। বাজার তদারকির ব্যবস্থা না থাকায় রমজানের ইফতার সামগ্রীর দাম ইচ্ছামত বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা। এমনকি ইফতারের ঠিক আগমুহূর্তে বড় ও মাঝারি হোটেলগুলো দোকানের সামনে পানির বোতল ও বিভিন্ন ধরনের পানীয় বিক্রি করেন প্রকৃত দামের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দরে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের পয়েন্টে পয়েন্টে ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় ব্যবসায়ীদের ইফতার সাজানোর কাজ। দুপুর যত বিকেলের দিকে গড়াতে থাকে ততই বাড়তে থাকে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সমাবেশ। বাড়তে থাকে কোলাহল। জমে ওঠে থরে থরে সাজানো রকমারি ইফতার বিক্রির ধুম। ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসতেই বাড়তে থাকে বিক্রেতাদের হাঁক ডাক। নানা বয়সী ক্রেতাকে ঠোঙা ভর্তি করে নিয়ে যেতে দেখা যায় এসব খাবার। ছোলা, পেয়াজু, আলুর চপ, বেগুনী, মুড়ি, কাবাব, জিলাপি, হালিম, বুরিন্ধাসহ নানা স্বাদের ইফতার কিনতে আশপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অফিসের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন ক্রেতারা এসে ভিড় করেন ইফতারের দোকানগুলোতে। ক্রেতারও খুশি, হাতের নাগালে ক্ষণিকের মধ্যে টাকার বিনিময়ে পেয়ে যাচ্ছেন অনেক রকমের ইফতার। এদিকে প্রায় প্রতিটি রেস্তোরাঁয় পার্সেলের পাশাপাশি ছিল ইফতার করারও সুব্যবস্থা। ঐতিহ্য আর আভিজাত্যের সঙ্গে সঙ্গে খাবারের দামেও দাকানভেদে ভিন্নতা দেখা গেছে।