ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ভদ্রতা ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩৯:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০২০
  • / ১৪৯ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন:
ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো আদব বা শিষ্টাচার। দুনিয়াজুড়ে মানুষের হৃদয় জয় করার অন্যতম মাধ্যম এটি। আর এর মাধ্যমেই সারা পৃথিবীতে ইসলাম বিজয় লাভ করেছে। এ আদব বা শিষ্টাচারকে সহজভাবে বলতে পারি ভদ্রতা। ইসলামে ভদ্রতার মর্যাদা ও গুরুত্ব অত্যাধিক। প্রকৃত মুমিন মুসলমানের অন্যতম গুণ হলো আদব বা শিষ্টাচার। মুমিন নিজে যেমন ভদ্রভাবে উপস্থাপন করে, ঠিক অন্যকেও ভদ্র হতে বিনয়ের সঙ্গে কাজ করে। মুমিন ব্যক্তির এ ভদ্রতা শুধু মানুষের সঙ্গেই নয়, বরং সে মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের হক আদায়েও ভদ্র ও বিনম্র হয়।
আল্লাহ পরস্পরের সঙ্গে ভদ্রতা বা শিষ্টাচার প্রকাশে সালামের বিধান দিয়েছেন। এ কারণেই মুমিন মুসলমান পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাত হলেই প্রথমে অভিবাদন প্রদান ও দোয়া স্বরূপ সালাম প্রদান করেন। আর এ সালামের উত্তর আরও উত্তমভাবে দেয়ার নির্দেশ দেন এভাবে- ‘যখন তোমরা সালাম ও অভিবাদনপ্রাপ্ত হও, তখন তোমরা তার চেয়ে শ্রেষ্ঠতর সম্ভাষণ কর অথবা একইভাবে অভিবাদন কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব বিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৮৬) আদর্শ সমাজ গঠনে এ আদব-কায়দা বা ভদ্রতার প্রয়োজন অত্যাধিক। ইসলামি জীবন ব্যবস্থায় মানুষের সঙ্গে মানুষের ভদ্রতা, শিষ্টাচার, ভালো ব্যবহার, ভাব বিনিময়, সালাম আদান-প্রদান, আনন্দ-বেদনা প্রকাশসহ উত্তম চরিত্র সম্পর্কে রয়েছে অনেক উপদেশ। তাহলো- হজরত আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘তুমি আদব বা শিষ্টাচার অনুসন্ধান কর। কারণ, আদব হলো বুদ্ধির পরিপুরক, ব্যক্তিত্বের দলিল, নিঃসঙ্গতার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, প্রবাস জীবনের সঙ্গী এবং অভাবের সময়ে সম্পদ।’ হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘তোমরা আগে সুসভ্য হও, তারপর জ্ঞান অর্জন কর।’ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই উত্তম চরিত্র, ভালো ব্যবহার ও পরিমিত ব্যয় বা মধ্যপন্থা অবলম্বন করা নবুয়তের ২৫ ভাগের ১ ভাগ সমতুল্য।’ (আবু দাউদ) ইসলামিক স্কলার ও গবেষকদের মতে, ‘আকল (বুদ্ধি) ছাড়া আদব হয় না, আবার আদব ছাড়া আকলও হয় না।’ অর্থাৎ একটি অপরটি পরিপূরক। সে কারণেই এক ব্যক্তি তার সন্তানকে এভাবে উপদেশ দেন যে-
‘তুমি তোমার আমলকে মনে করবে লবণ, আর তোমার আদবকে মনে করবে ময়দা।’ অর্থাৎ যেভাবে লবণ ও ময়দার স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রিত মিশ্রণে সঠিক ও উত্তম খাবার বা খামির তৈরি হয়।‘ সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, দুনিয়ার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আদব বা ভদ্রতা মেনে নিজেকে পরিচালনা করা। সুন্দর সমাজ গঠনে সবার সঙ্গে উত্তম আচরণের মাধ্যমে শিষ্টাচার বজায় রাখা। সবার সঙ্গে পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলা। কেননা উত্তম আদব বা শিষ্টাচার বজায় রাখায় রয়েছে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের অনুকরণীয় আদর্শ। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিজেদের জীবনে শিষ্টাচার বা ভদ্রতা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। ভদ্রতা ও নম্রতার আলোকে জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ভদ্রতা ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য

আপলোড টাইম : ০৯:৩৯:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০২০

ধর্ম প্রতিবেদন:
ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো আদব বা শিষ্টাচার। দুনিয়াজুড়ে মানুষের হৃদয় জয় করার অন্যতম মাধ্যম এটি। আর এর মাধ্যমেই সারা পৃথিবীতে ইসলাম বিজয় লাভ করেছে। এ আদব বা শিষ্টাচারকে সহজভাবে বলতে পারি ভদ্রতা। ইসলামে ভদ্রতার মর্যাদা ও গুরুত্ব অত্যাধিক। প্রকৃত মুমিন মুসলমানের অন্যতম গুণ হলো আদব বা শিষ্টাচার। মুমিন নিজে যেমন ভদ্রভাবে উপস্থাপন করে, ঠিক অন্যকেও ভদ্র হতে বিনয়ের সঙ্গে কাজ করে। মুমিন ব্যক্তির এ ভদ্রতা শুধু মানুষের সঙ্গেই নয়, বরং সে মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের হক আদায়েও ভদ্র ও বিনম্র হয়।
আল্লাহ পরস্পরের সঙ্গে ভদ্রতা বা শিষ্টাচার প্রকাশে সালামের বিধান দিয়েছেন। এ কারণেই মুমিন মুসলমান পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাত হলেই প্রথমে অভিবাদন প্রদান ও দোয়া স্বরূপ সালাম প্রদান করেন। আর এ সালামের উত্তর আরও উত্তমভাবে দেয়ার নির্দেশ দেন এভাবে- ‘যখন তোমরা সালাম ও অভিবাদনপ্রাপ্ত হও, তখন তোমরা তার চেয়ে শ্রেষ্ঠতর সম্ভাষণ কর অথবা একইভাবে অভিবাদন কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব বিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৮৬) আদর্শ সমাজ গঠনে এ আদব-কায়দা বা ভদ্রতার প্রয়োজন অত্যাধিক। ইসলামি জীবন ব্যবস্থায় মানুষের সঙ্গে মানুষের ভদ্রতা, শিষ্টাচার, ভালো ব্যবহার, ভাব বিনিময়, সালাম আদান-প্রদান, আনন্দ-বেদনা প্রকাশসহ উত্তম চরিত্র সম্পর্কে রয়েছে অনেক উপদেশ। তাহলো- হজরত আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘তুমি আদব বা শিষ্টাচার অনুসন্ধান কর। কারণ, আদব হলো বুদ্ধির পরিপুরক, ব্যক্তিত্বের দলিল, নিঃসঙ্গতার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, প্রবাস জীবনের সঙ্গী এবং অভাবের সময়ে সম্পদ।’ হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘তোমরা আগে সুসভ্য হও, তারপর জ্ঞান অর্জন কর।’ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই উত্তম চরিত্র, ভালো ব্যবহার ও পরিমিত ব্যয় বা মধ্যপন্থা অবলম্বন করা নবুয়তের ২৫ ভাগের ১ ভাগ সমতুল্য।’ (আবু দাউদ) ইসলামিক স্কলার ও গবেষকদের মতে, ‘আকল (বুদ্ধি) ছাড়া আদব হয় না, আবার আদব ছাড়া আকলও হয় না।’ অর্থাৎ একটি অপরটি পরিপূরক। সে কারণেই এক ব্যক্তি তার সন্তানকে এভাবে উপদেশ দেন যে-
‘তুমি তোমার আমলকে মনে করবে লবণ, আর তোমার আদবকে মনে করবে ময়দা।’ অর্থাৎ যেভাবে লবণ ও ময়দার স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রিত মিশ্রণে সঠিক ও উত্তম খাবার বা খামির তৈরি হয়।‘ সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, দুনিয়ার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আদব বা ভদ্রতা মেনে নিজেকে পরিচালনা করা। সুন্দর সমাজ গঠনে সবার সঙ্গে উত্তম আচরণের মাধ্যমে শিষ্টাচার বজায় রাখা। সবার সঙ্গে পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলা। কেননা উত্তম আদব বা শিষ্টাচার বজায় রাখায় রয়েছে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের অনুকরণীয় আদর্শ। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিজেদের জীবনে শিষ্টাচার বা ভদ্রতা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। ভদ্রতা ও নম্রতার আলোকে জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন। আমিন।