ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট, নিত্যপণ্যে অস্থিরতা: ৩৬ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৫৬:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৫ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন: বেশ কিছুদিন ধরে দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে স্বল্প আয়ের মানুষ। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে এমন অভিযোগ ক্রেতাদের। এমন পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্যে সিন্ডিকেট ভাঙতে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা, এস আলম, স্কয়ার, প্রাণ, এসিআই, সিটি, আকিজ, মেঘনাসহ ৩৬ কোম্পানি ও ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। এই কোম্পানি ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কমিশনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ, তারা বাজারে চাল, আটা, ময়দা, ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও টয়লেট্রিজ পণ্যের ‘অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও কৃত্রিম সঙ্কটের মাধ্যমে অস্থিরতা’ তৈরি করেছে। প্রতিযোগিতা কমিশন তাদের নিজস্ব আইনে গত বৃহস্পতিবার এ মামলা করে। সে দিন ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেছিল কমিশন। গতকাল সোমবার বাকিদের নাম প্রকাশ করা হয়। সব মিলিয়ে ৪৪ মামলায় ৩৬ ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে।

কমিশনের দেয়া তথ্যানুযায়ী, চালের বাজারে ‘অস্থিরতার জন্য’ স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চেয়ারম্যান, এসিআইয়ের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), ব্র্যাক সিড অ্যান্ড অ্যাগ্রো এন্টারপ্রাইজের চেয়ারম্যান অথবা এমডি, প্রাণ ফুডসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অথবা এমডি, সিটি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের এমডির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে কুষ্টিয়ার রশিদ অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্টের স্বত্বাধিকারী মো: আবদুর রশিদ, দিনাজপুরের জহুরা অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী মো: আবদুল হান্নান, নওগাঁর বেলকন গ্রুপের স্বত্বাধিকারী মো: বেলাল হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের এরফান গ্রুপের স্বত্বাধিকারী মো: এরফান আলী, বগুড়ার কিবরিয়া অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মো: গোলাম কিবরিয়া, নওগাঁর মফিজ উদ্দীন অটোমেটিক রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী তৌফিকুল ইসলাম, বগুড়ার আলাল অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্টের আলাল আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নুরজাহান অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী মো: জহিরুল ইসলাম, বগুড়ার খান অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী পুটু মিয়া, কুষ্টিয়ার মেসার্স দাদা রাইস মিলের মো: আরশাদ আলী, নওগাঁর মজুমদার অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী ব্রজেন মজুমদার, নারায়ণগঞ্জের সিটি অটো রাইস অ্যান্ড ডাল মিলস এবং নওগাঁর ম্যাবকো হাইটেক রাইস ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান অথবা এমডির বিরুদ্ধে মামলা করেছে প্রতিযোগিতা কমিশন।

এ ছাড়া আটা-ময়দার বাজারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য মেঘনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আকিজ গ্রুপের চেয়ারম্যান, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি, এসিআই, টি কে গ্রুপের এমডি, নুরজাহান গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এমডি, এস আলম রিফাইন্ড ইন্ডাস্ট্রির এমডি এবং সিটি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের এমডির বিরুদ্ধে মামলা করেছে কমিশন। ডিমের বাজারে কারসাজির জন্য সিপি বাংলাদেশ কোম্পানির এমডি বা সিইও, প্যারাগন পোলট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডায়মন্ড এগ লিমিটেডের এমডি, পিপলস ফিডের স্বত্বাধিকারী, কাজী ফার্মস গ্রুপের এমডি কাজী জাহেদুল হাসান, ডিম ব্যবসায়ী আড়তদার বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ফার্মের মুরগির বাজারে অস্থিরতার জন্য কাজী ফার্মস গ্রুপের এমডি কাজী জাহেদুল হাসান, সাগুনা ফুড অ্যান্ড ফিডসের পরিচালক, আলাল পোলট্রি অ্যান্ড ফিশ ফিডের এমডি বা সিইও, নারিশ পোলট্রি ও হ্যাচারির পরিচালক, প্যারাগন পোলট্রির এমডি এবং সিপি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
টয়লেট্রিজের (সাবান, সুগন্ধী সাবান ও গুঁড়া সাবান) অস্বাভাবিক দাম বাড়ানোর জন্যও কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে এসিআইয়ের চেয়ারম্যান, ইউনিলিভার বাংলাদেশের এমডি, স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান বা এমডি, কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি (তিব্বত) ও কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান অথবা এমডি। এ দিকে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য কৃষি শিল্পপ্রতিষ্ঠান কাজী ফার্মস গ্রুপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের দায়ের করা দুই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার প্রতিযোগিতা কমিশনের এজলাসে উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে কাজী ফার্মসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাজী জাহেদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। শুনানিতে দু’টি মামলায় কমিশনের চাওয়া তথ্যাদি আগামী ৬ অক্টোবরের মধ্যে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আরো সাত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৯ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আজ মঙ্গলবার।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট, নিত্যপণ্যে অস্থিরতা: ৩৬ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা

আপলোড টাইম : ১১:৫৬:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন: বেশ কিছুদিন ধরে দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে স্বল্প আয়ের মানুষ। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে এমন অভিযোগ ক্রেতাদের। এমন পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্যে সিন্ডিকেট ভাঙতে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা, এস আলম, স্কয়ার, প্রাণ, এসিআই, সিটি, আকিজ, মেঘনাসহ ৩৬ কোম্পানি ও ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। এই কোম্পানি ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কমিশনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ, তারা বাজারে চাল, আটা, ময়দা, ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও টয়লেট্রিজ পণ্যের ‘অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও কৃত্রিম সঙ্কটের মাধ্যমে অস্থিরতা’ তৈরি করেছে। প্রতিযোগিতা কমিশন তাদের নিজস্ব আইনে গত বৃহস্পতিবার এ মামলা করে। সে দিন ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেছিল কমিশন। গতকাল সোমবার বাকিদের নাম প্রকাশ করা হয়। সব মিলিয়ে ৪৪ মামলায় ৩৬ ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে।

কমিশনের দেয়া তথ্যানুযায়ী, চালের বাজারে ‘অস্থিরতার জন্য’ স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চেয়ারম্যান, এসিআইয়ের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), ব্র্যাক সিড অ্যান্ড অ্যাগ্রো এন্টারপ্রাইজের চেয়ারম্যান অথবা এমডি, প্রাণ ফুডসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অথবা এমডি, সিটি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের এমডির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে কুষ্টিয়ার রশিদ অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্টের স্বত্বাধিকারী মো: আবদুর রশিদ, দিনাজপুরের জহুরা অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী মো: আবদুল হান্নান, নওগাঁর বেলকন গ্রুপের স্বত্বাধিকারী মো: বেলাল হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের এরফান গ্রুপের স্বত্বাধিকারী মো: এরফান আলী, বগুড়ার কিবরিয়া অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মো: গোলাম কিবরিয়া, নওগাঁর মফিজ উদ্দীন অটোমেটিক রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী তৌফিকুল ইসলাম, বগুড়ার আলাল অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্টের আলাল আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নুরজাহান অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী মো: জহিরুল ইসলাম, বগুড়ার খান অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী পুটু মিয়া, কুষ্টিয়ার মেসার্স দাদা রাইস মিলের মো: আরশাদ আলী, নওগাঁর মজুমদার অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী ব্রজেন মজুমদার, নারায়ণগঞ্জের সিটি অটো রাইস অ্যান্ড ডাল মিলস এবং নওগাঁর ম্যাবকো হাইটেক রাইস ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান অথবা এমডির বিরুদ্ধে মামলা করেছে প্রতিযোগিতা কমিশন।

এ ছাড়া আটা-ময়দার বাজারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য মেঘনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আকিজ গ্রুপের চেয়ারম্যান, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি, এসিআই, টি কে গ্রুপের এমডি, নুরজাহান গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এমডি, এস আলম রিফাইন্ড ইন্ডাস্ট্রির এমডি এবং সিটি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের এমডির বিরুদ্ধে মামলা করেছে কমিশন। ডিমের বাজারে কারসাজির জন্য সিপি বাংলাদেশ কোম্পানির এমডি বা সিইও, প্যারাগন পোলট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডায়মন্ড এগ লিমিটেডের এমডি, পিপলস ফিডের স্বত্বাধিকারী, কাজী ফার্মস গ্রুপের এমডি কাজী জাহেদুল হাসান, ডিম ব্যবসায়ী আড়তদার বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ফার্মের মুরগির বাজারে অস্থিরতার জন্য কাজী ফার্মস গ্রুপের এমডি কাজী জাহেদুল হাসান, সাগুনা ফুড অ্যান্ড ফিডসের পরিচালক, আলাল পোলট্রি অ্যান্ড ফিশ ফিডের এমডি বা সিইও, নারিশ পোলট্রি ও হ্যাচারির পরিচালক, প্যারাগন পোলট্রির এমডি এবং সিপি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
টয়লেট্রিজের (সাবান, সুগন্ধী সাবান ও গুঁড়া সাবান) অস্বাভাবিক দাম বাড়ানোর জন্যও কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে এসিআইয়ের চেয়ারম্যান, ইউনিলিভার বাংলাদেশের এমডি, স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান বা এমডি, কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি (তিব্বত) ও কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান অথবা এমডি। এ দিকে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য কৃষি শিল্পপ্রতিষ্ঠান কাজী ফার্মস গ্রুপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের দায়ের করা দুই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার প্রতিযোগিতা কমিশনের এজলাসে উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে কাজী ফার্মসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাজী জাহেদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। শুনানিতে দু’টি মামলায় কমিশনের চাওয়া তথ্যাদি আগামী ৬ অক্টোবরের মধ্যে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আরো সাত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৯ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আজ মঙ্গলবার।