ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা বাংলাওয়াশ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৩:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩
  • / ৮ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:

বাংলাদেশ এর আগে আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে-আরব আমিরাতকে বাংলাওয়াশ করেছে। আর অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি। যদিও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের চারটিতে বাংলাদেশে জিতেছিল। অপর ম্যাচ বৃষ্টি ভাসিয়ে নেয়। সেটাও এক অর্থে হোয়াইটওয়াশ। এবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে আক্ষেপ ঘোচানোর পাশাপাশি তৃপ্তির ঢেঁকুরও তুলেছে টাইগাররা। টি-২০তে বাংলাদেশের ভোগান্তির কথা ক্রিকেট দুনিয়ায় অজানা নয়। গত দুই বছরে অনুষ্ঠিত দু’টি বিশ্বকাপেও ব্যর্থ হয়েছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবার ওয়ানডেতে সিরিজ হারার পর টি-২০ সিরিজ জেতা, সেটাও আবার ৩-০ ব্যবধানে। তাই সিরিজটি যেমন স্মরণীয় হয়ে থাকবে, তেমনি এই ফলাফল থেকেই হয়তো শুরু হতে পারে টি-২০ সংস্করণে ওয়ানডের মতো সমীহ জাগানিয়া দল হওয়ার। গতকাল সিরিজের শেষ ম্যাচে শেষ দিকে কাক্সিক্ষত ঝড় তুলতে না পারলেও লিটন দাসের ফিফটিতে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেল বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়ায় ডেভিড মালান ও অধিনায়ক জস বাটলারের কাঁধে চড়ে কক্ষপথে ছিল ইংল্যান্ড। এরপর টি-২০ ক্যারিয়ারের শততম উইকেট নিয়ে মোস্তাফিজুর এনে দিলেন গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু। দারুণ ফিল্ডিংয়ের সাথে যুক্ত হলো বাকি বোলারদের নৈপুণ্য। ঘুরে দাঁড়িয়ে ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ করল সাকিব আল হাসানের দল। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে টাইগাররা করল দুই উইকেটে ১৫৮। জবাবে সফরকারীদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৪২। ফলে ইংল্যান্ডকে ১৬ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিলো চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। আগের দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৬ ও ৪ উইকেটের ব্যবধানে জিতে সিরিজ নিজের করে নিয়েছিল স্বাগতিকরা। জয়ের জন্য ১৫৯ রানের লক্ষ্য পায় ইংল্যান্ড। ১৩ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১ উইকেটে ১০০ রান। ক্রিজে ছিলেন দারুণ খেলতে থাকা মালান ও বাটলার। ব্যাটিংয়ে নামার অপেক্ষায় ছিলেন মঈন আলী, বেন ডাকেট, ক্রিস ওকসরা। ফলে জয়ের পাল্লা ভারী ছিল তাদের দিকেই। তবে মোস্তাফিজের এনে দেয়া ব্রেক থ্রু কাজে লাগিয়ে পরে দারুণ বল করেন তাসকিন আহমেদ আর সাকিবও। ফলে সব সমীকরণ পাল্টে দিয়ে জয়ের হাসি হাসে বাংলাদেশ। ব্যাটিংসহায়ক উইকেটে ইংল্যান্ডকে চেপে ধরতে শুরুতেই উইকেট দরকার ছিল। অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন। উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে লিটন দারুণ দক্ষতায় স্টাম্পড করেন ফিল সল্টকে (০)। পরের ওভারে বল হাতে পেয়েই উইকেটের উল্লাস করেন অভিজ্ঞ পেসার তাসকিন। কিন্তু সেটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। মাঠের আম্পায়ার মালানের বিপরীতে এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্ত দেয়ার পর রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। ৬ রানে বেঁচে যাওয়া মালান সঙ্গী হিসেবে পান অধিনায়ক বাটলারকে। তারা দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৭৬ বলে ৯৫ রানের জুটি। ১৪তম ওভারে আক্রমণে ফিরে ফিফটি করার মালানকে লিটনের ক্যাচ বানিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান মোস্তাফিজ। এই উইকেট দিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার ও প্রথম পেসার হিসেবে টি-২০তে শততম উইকেট পূরণ করেন তিনি। ৪৭ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ে ৫৩ রান করেন মালান। সঙ্গী হারিয়ে টেকেননি বাটলার। পরের বলেই মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত থ্রোতে রানআউট হন। ৪ চার ও ১ ছয়ে ৩১ বলে ৪০ রান করেন তিনি। দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে ইংলিশদের ভিত নড়ে যায়। তখনই জয়ের আত্মবিশ্বাস পায় সাকিব বাহিনী। মঈন ও ডাকেট ধাক্কা সামলে নেয়ার চেষ্টা করেন। ১৬তম ওভারে হাসান মাহমুদকে চার-ছয় মেরে করেন ১১ রান। ফলে শেষ চার ওভারে ৪০ রান দরকার পড়ে। তবে ১৭তম ওভারে তাসকিন বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে ম্যাচ নিয়ে আসেন। একই ওভারে মঈন (৯) ও ডাকেটকে (১১) ছাটেন তিনি। মঈন ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন মিরাজের হাতে। ডাকেটের স্ট্যাম্প উপড়ে যায়। ১৮তম ওভারে মোস্তাফিজ খরচ করেন মোটে ৫ রান। এরপর ১৯তম ওভারে ৪ রান দিয়ে সাকিব সাজঘরে পাঠান স্যাম কারানকে। শেষ ওভারে ২৭ রানের কঠিন সমীকরণ মেলানো হয়নি ওকস ও জর্ডানের। প্রথম দুই বলেই চার হজমের পর তরুণ পেসার হাসান নিজেকে সামলে নেন। পরের চার বলে মাত্র ২ রান দিয়ে উল্লাসে মাতান বাংলাদেশকে। এর আগে তিন ওয়ানডে ও দুই টি-২০র পর প্রথমবারের মতো টসে জয় পান ইংল্যান্ড অধিনায়ক জশ বাটলার। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নেন বাটলার। নাসুম আহমেদের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ হয়েছে স্পিনার তানভীর ইসলামের। এই ম্যাচ দিয়েই অভিষেক হয়েছে বাঁ-হাতি স্পিনার তানভীরের। আফিফ হোসেনের পরিবর্তে একাদশে ফিরেছেন শামীম হোসেন। ব্যাট হাতে নেমে বাংলাদেশকে দারুণ সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার। পাওয়ার প্লেতে ৪৬ রান তুলেন তারা। অবশ্য ষষ্ঠ ওভারে পেসার জোফরা আর্চারের বলে রেহান আহমেদকে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান ব্যক্তিগত ১৭ রানে থাকা রনি। সপ্তম ওভারে বাংলাদেশের রান ৫০ পার করে। অষ্টম ওভারে দলীয় ৫৫ রানে রনিকে (৩ চারে ২২ বলে ২৪) ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন স্পিনার আদিল রশিদ। এরপর ক্রিজে লিটনের সঙ্গী হন শান্ত। মারমুখী মেজাজেই দলের রানের চাকা সচল রাখেন লিটন। ১৩তম ওভারে ৪১ বল খেলে টি-২০ ক্যারিয়ারের নবম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। একই ওভারে বাংলাদেশের রান ১০০তে পৌঁছায়। হাফ সেঞ্চুরির পরই থামতে পারতেন লিটন। ১৪তম ওভারের প্রথম বলে আর্চারের বলে বেন ডাকেটের হাতে জীবন পান ৫১ রানে থাকা লিটন। ওভারের শেষ দুই বলে চার-ছয় আসে তার ব্যাট থেকে। ১৭তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ১৩৯ রানে লিটনকে বিদায় করেন ক্রিস জর্ডান। স্লোয়ার ডেলিভারিতে ডিপ মিড উইকেটে ফিল সল্টকে ক্যাচ দেন ১০টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৭ বলে ৭৩ রান করা লিটন। টি২০তে এটিই ক্যারিয়ার সেরা স্কোর তার। শান্তর সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৮ বলে ৮৪ রান যোগ করেন তিনি। লিটন ফেরার পর শেষ ১৮ বলে একটি চারে মাত্র ১৯ রান যোগ করতে পারেন শান্ত ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এতে ২০ ওভারে ২ উইকেটে ১৫৮ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৬ বলে অপরাজিত ৪৭ রান করেন শান্ত। ৬ বলে ৪ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন সাকিব। ইংল্যান্ডের রশিদ ও জর্ডান একটি করে উইকেট নেন। সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ : ১৫৮/২ (লিটন ৭৩, রনি ২৪, শান্ত ৪৭*, সাকিব ৪*, রশিদ ১/২৩)। ইংল্যান্ড: ১৪২/৬ (মালান ৫৩, সল্ট ০, বাটলার ৪০, ডাকেট ১১, মইন ৯, কারান ৪, ওকস ১৩*, জর্ডান ২*, তানভির ১/১৭, তাসকিন ২/২৬, সাকিব ১/৩০, হাসান ০/২৯, মোস্তাফিজ ১/১৪, মিরাজ ০/১৮)। ফল : বাংলাদেশ ১৬ রানে জয়ী। সিরিজ : তিন ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে জয়ী। ম্যাচ সেরা : লিটন কুমার দাস। সিরিজ সেরা : নাজমুল হোসেন শান্ত।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা বাংলাওয়াশ

আপলোড টাইম : ০৮:৪৩:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:

বাংলাদেশ এর আগে আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে-আরব আমিরাতকে বাংলাওয়াশ করেছে। আর অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি। যদিও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের চারটিতে বাংলাদেশে জিতেছিল। অপর ম্যাচ বৃষ্টি ভাসিয়ে নেয়। সেটাও এক অর্থে হোয়াইটওয়াশ। এবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে আক্ষেপ ঘোচানোর পাশাপাশি তৃপ্তির ঢেঁকুরও তুলেছে টাইগাররা। টি-২০তে বাংলাদেশের ভোগান্তির কথা ক্রিকেট দুনিয়ায় অজানা নয়। গত দুই বছরে অনুষ্ঠিত দু’টি বিশ্বকাপেও ব্যর্থ হয়েছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবার ওয়ানডেতে সিরিজ হারার পর টি-২০ সিরিজ জেতা, সেটাও আবার ৩-০ ব্যবধানে। তাই সিরিজটি যেমন স্মরণীয় হয়ে থাকবে, তেমনি এই ফলাফল থেকেই হয়তো শুরু হতে পারে টি-২০ সংস্করণে ওয়ানডের মতো সমীহ জাগানিয়া দল হওয়ার। গতকাল সিরিজের শেষ ম্যাচে শেষ দিকে কাক্সিক্ষত ঝড় তুলতে না পারলেও লিটন দাসের ফিফটিতে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেল বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়ায় ডেভিড মালান ও অধিনায়ক জস বাটলারের কাঁধে চড়ে কক্ষপথে ছিল ইংল্যান্ড। এরপর টি-২০ ক্যারিয়ারের শততম উইকেট নিয়ে মোস্তাফিজুর এনে দিলেন গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু। দারুণ ফিল্ডিংয়ের সাথে যুক্ত হলো বাকি বোলারদের নৈপুণ্য। ঘুরে দাঁড়িয়ে ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ করল সাকিব আল হাসানের দল। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে টাইগাররা করল দুই উইকেটে ১৫৮। জবাবে সফরকারীদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৪২। ফলে ইংল্যান্ডকে ১৬ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিলো চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। আগের দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৬ ও ৪ উইকেটের ব্যবধানে জিতে সিরিজ নিজের করে নিয়েছিল স্বাগতিকরা। জয়ের জন্য ১৫৯ রানের লক্ষ্য পায় ইংল্যান্ড। ১৩ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১ উইকেটে ১০০ রান। ক্রিজে ছিলেন দারুণ খেলতে থাকা মালান ও বাটলার। ব্যাটিংয়ে নামার অপেক্ষায় ছিলেন মঈন আলী, বেন ডাকেট, ক্রিস ওকসরা। ফলে জয়ের পাল্লা ভারী ছিল তাদের দিকেই। তবে মোস্তাফিজের এনে দেয়া ব্রেক থ্রু কাজে লাগিয়ে পরে দারুণ বল করেন তাসকিন আহমেদ আর সাকিবও। ফলে সব সমীকরণ পাল্টে দিয়ে জয়ের হাসি হাসে বাংলাদেশ। ব্যাটিংসহায়ক উইকেটে ইংল্যান্ডকে চেপে ধরতে শুরুতেই উইকেট দরকার ছিল। অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন। উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে লিটন দারুণ দক্ষতায় স্টাম্পড করেন ফিল সল্টকে (০)। পরের ওভারে বল হাতে পেয়েই উইকেটের উল্লাস করেন অভিজ্ঞ পেসার তাসকিন। কিন্তু সেটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। মাঠের আম্পায়ার মালানের বিপরীতে এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্ত দেয়ার পর রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। ৬ রানে বেঁচে যাওয়া মালান সঙ্গী হিসেবে পান অধিনায়ক বাটলারকে। তারা দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৭৬ বলে ৯৫ রানের জুটি। ১৪তম ওভারে আক্রমণে ফিরে ফিফটি করার মালানকে লিটনের ক্যাচ বানিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান মোস্তাফিজ। এই উইকেট দিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার ও প্রথম পেসার হিসেবে টি-২০তে শততম উইকেট পূরণ করেন তিনি। ৪৭ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ে ৫৩ রান করেন মালান। সঙ্গী হারিয়ে টেকেননি বাটলার। পরের বলেই মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত থ্রোতে রানআউট হন। ৪ চার ও ১ ছয়ে ৩১ বলে ৪০ রান করেন তিনি। দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে ইংলিশদের ভিত নড়ে যায়। তখনই জয়ের আত্মবিশ্বাস পায় সাকিব বাহিনী। মঈন ও ডাকেট ধাক্কা সামলে নেয়ার চেষ্টা করেন। ১৬তম ওভারে হাসান মাহমুদকে চার-ছয় মেরে করেন ১১ রান। ফলে শেষ চার ওভারে ৪০ রান দরকার পড়ে। তবে ১৭তম ওভারে তাসকিন বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে ম্যাচ নিয়ে আসেন। একই ওভারে মঈন (৯) ও ডাকেটকে (১১) ছাটেন তিনি। মঈন ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন মিরাজের হাতে। ডাকেটের স্ট্যাম্প উপড়ে যায়। ১৮তম ওভারে মোস্তাফিজ খরচ করেন মোটে ৫ রান। এরপর ১৯তম ওভারে ৪ রান দিয়ে সাকিব সাজঘরে পাঠান স্যাম কারানকে। শেষ ওভারে ২৭ রানের কঠিন সমীকরণ মেলানো হয়নি ওকস ও জর্ডানের। প্রথম দুই বলেই চার হজমের পর তরুণ পেসার হাসান নিজেকে সামলে নেন। পরের চার বলে মাত্র ২ রান দিয়ে উল্লাসে মাতান বাংলাদেশকে। এর আগে তিন ওয়ানডে ও দুই টি-২০র পর প্রথমবারের মতো টসে জয় পান ইংল্যান্ড অধিনায়ক জশ বাটলার। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নেন বাটলার। নাসুম আহমেদের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ হয়েছে স্পিনার তানভীর ইসলামের। এই ম্যাচ দিয়েই অভিষেক হয়েছে বাঁ-হাতি স্পিনার তানভীরের। আফিফ হোসেনের পরিবর্তে একাদশে ফিরেছেন শামীম হোসেন। ব্যাট হাতে নেমে বাংলাদেশকে দারুণ সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার। পাওয়ার প্লেতে ৪৬ রান তুলেন তারা। অবশ্য ষষ্ঠ ওভারে পেসার জোফরা আর্চারের বলে রেহান আহমেদকে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান ব্যক্তিগত ১৭ রানে থাকা রনি। সপ্তম ওভারে বাংলাদেশের রান ৫০ পার করে। অষ্টম ওভারে দলীয় ৫৫ রানে রনিকে (৩ চারে ২২ বলে ২৪) ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন স্পিনার আদিল রশিদ। এরপর ক্রিজে লিটনের সঙ্গী হন শান্ত। মারমুখী মেজাজেই দলের রানের চাকা সচল রাখেন লিটন। ১৩তম ওভারে ৪১ বল খেলে টি-২০ ক্যারিয়ারের নবম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। একই ওভারে বাংলাদেশের রান ১০০তে পৌঁছায়। হাফ সেঞ্চুরির পরই থামতে পারতেন লিটন। ১৪তম ওভারের প্রথম বলে আর্চারের বলে বেন ডাকেটের হাতে জীবন পান ৫১ রানে থাকা লিটন। ওভারের শেষ দুই বলে চার-ছয় আসে তার ব্যাট থেকে। ১৭তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ১৩৯ রানে লিটনকে বিদায় করেন ক্রিস জর্ডান। স্লোয়ার ডেলিভারিতে ডিপ মিড উইকেটে ফিল সল্টকে ক্যাচ দেন ১০টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৭ বলে ৭৩ রান করা লিটন। টি২০তে এটিই ক্যারিয়ার সেরা স্কোর তার। শান্তর সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৮ বলে ৮৪ রান যোগ করেন তিনি। লিটন ফেরার পর শেষ ১৮ বলে একটি চারে মাত্র ১৯ রান যোগ করতে পারেন শান্ত ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এতে ২০ ওভারে ২ উইকেটে ১৫৮ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৬ বলে অপরাজিত ৪৭ রান করেন শান্ত। ৬ বলে ৪ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন সাকিব। ইংল্যান্ডের রশিদ ও জর্ডান একটি করে উইকেট নেন। সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ : ১৫৮/২ (লিটন ৭৩, রনি ২৪, শান্ত ৪৭*, সাকিব ৪*, রশিদ ১/২৩)। ইংল্যান্ড: ১৪২/৬ (মালান ৫৩, সল্ট ০, বাটলার ৪০, ডাকেট ১১, মইন ৯, কারান ৪, ওকস ১৩*, জর্ডান ২*, তানভির ১/১৭, তাসকিন ২/২৬, সাকিব ১/৩০, হাসান ০/২৯, মোস্তাফিজ ১/১৪, মিরাজ ০/১৮)। ফল : বাংলাদেশ ১৬ রানে জয়ী। সিরিজ : তিন ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে জয়ী। ম্যাচ সেরা : লিটন কুমার দাস। সিরিজ সেরা : নাজমুল হোসেন শান্ত।