ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দাপুটে জয়

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:৩১:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩
  • / ১৪ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:

টি-২০ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারাতে দরকার ১৩ বলে মাত্র ৩ রান। চোখ বন্ধ করে একবার ভাবুন তো! বাংলাদেশের টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে কতটা স্বপ্নের ছবি এটি! জশ বাটলারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে স্বপ্নের জয় তুলে নিতে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এমন ছবিই আঁকা ছিল ক্যানভাসে! স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসের ক্যানভাসে সেই ছবিটা এঁকেছিলেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ইনিংসের ১৮ নম্বর ওভারের শেষ বলে ক্রিস জর্ডানের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলটিকে কাট শটে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে সীমানা ছাড়া করে ইতিহাস লেখেন টাইগার অধিনায়ক। সাকিবের ওই বাউন্ডারিতেই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা জয় লেখা হয়। স্বপ্নের এই জয়ে ৩ ম্যাচ টি-২০ সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে ১-০ ব্যবধানে। সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচ ১২ ও ১৪ মার্চ মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। গতকালের জয়টি বাংলাদেশের ১৪৫তম টি-২০ ম্যাচে ৫০ নম্বর। জহুর আহমেদ স্টেডিয়াম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বধের নায়ক কে? হাসান মাহমুদ, না নাজমুল হোসেন শান্ত? নাকি সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে গোটা দল? ডেথ ওভারে চোখ ধাঁধানো বোলিং করেছেন হাসান মাহমুদ। টার্গেট তাড়ায় সুনামী গতিতে ব্যাটিং করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সব মিলিয়ে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং-তিন বিভাগে জশ বাটলারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’ ক্রিকেট খেলেছে সাকিব বাহিনী। দুরন্ত, অসাধারণ এবং নজরকাড়া ক্রিকেট খেলে ১২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০ ওভারের ম্যাচে উৎসব উচ্ছ্বাসে মেতেছে টাইগররা। কিন্তু বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে জয়টিতে নিঃসন্দেহেই দেশের টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা জয়গুলোর একটি বলাই যায়! দেশের পঞ্চ পাণ্ডবের একমাত্র সদস্য সাকিব গতকাল খেলেছেন। মাশরাফি বিন মর্তুজা খেলছেন না। টি-২০ ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন তামিম ইকবাল, মাহমুদ্ল্লুাহ রিয়াদ। সুযোগ পাননি মুশফিকুর রহিম। সিনিয়র ক্রিকেটারদের বাইরে রেখে একঝাঁক তরুণ নিয়ে খেলতে নামেন সাকিব। গতকাল অভিষেক হয় তৌহিদ হৃদয়ের। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাটলার বাহিনী ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৬ রান করে। অধিনায়ক বাটলার ও ওপেনার ফিল সল্ট ১০ ওভারে ৮০ রানের ভিত দেন। ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে রান ছিল ৫১। সল্ট ৩৫ বলে ৩৮ রান করলেও অধিনায়ক বাটলার ৬৭ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেন ৪২ বলে ৪ চার ও ৪ ছক্কায়। শুরুর এই রানের গতি পরে কাজে লাগাতে পারেননি ইংলিশ ব্যাটাররা। আসলে ডেথ ওভারের স্বপ্নের বোলিং করেন হাসান মাহমুদ। শেষ ২ ওভারে মাত্র ৫ রানের খরচে নেন ২ উইকেট। টার্গেট ১৫৭ রান। দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও লিটন কুমার দাস সাজঘরে ফেরেন ৪.৫ ওভারে দলীয় ৪৩ রানের মধ্যে। এরপরই জ্বলে উঠেন ম্যাচসেরা নাজমুল ও তৌহিদ। দুজনে ঝড়ো গতিতে ব্যাটিং করে ৩৯ বলে ৬৫ রান যোগ করে জয় সহজ করেন। অভিষিক্ত তৌহিদ ১৭ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ২৪ রান করেন। ৮ বছর পর সুযোগ পাওয়া রনি ১৪ বলে ২১ রান করেন ৪ চারে। ম্যাচসেরা নাজমুল ৫১ রান করেন মাত্র ৩০ বলে ৮ চারে। যার ৪টিই ছিল টানা উডের বলে। ১৮ টি-২০ ক্যারিয়ারে এটা তার টানা দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি। ৯ নভেম্বর অ্যাডিলেডে টি-২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছিলেন ৫৪ রান। দলের জয়সূচক রান তোলা সাকিব অপরাজিত থাকেন ২৪ বলে ৬ চারে ৩৪ রানে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দাপুটে জয়

আপলোড টাইম : ০৪:৩১:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:

টি-২০ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারাতে দরকার ১৩ বলে মাত্র ৩ রান। চোখ বন্ধ করে একবার ভাবুন তো! বাংলাদেশের টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে কতটা স্বপ্নের ছবি এটি! জশ বাটলারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে স্বপ্নের জয় তুলে নিতে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এমন ছবিই আঁকা ছিল ক্যানভাসে! স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসের ক্যানভাসে সেই ছবিটা এঁকেছিলেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ইনিংসের ১৮ নম্বর ওভারের শেষ বলে ক্রিস জর্ডানের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলটিকে কাট শটে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে সীমানা ছাড়া করে ইতিহাস লেখেন টাইগার অধিনায়ক। সাকিবের ওই বাউন্ডারিতেই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা জয় লেখা হয়। স্বপ্নের এই জয়ে ৩ ম্যাচ টি-২০ সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে ১-০ ব্যবধানে। সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচ ১২ ও ১৪ মার্চ মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। গতকালের জয়টি বাংলাদেশের ১৪৫তম টি-২০ ম্যাচে ৫০ নম্বর। জহুর আহমেদ স্টেডিয়াম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বধের নায়ক কে? হাসান মাহমুদ, না নাজমুল হোসেন শান্ত? নাকি সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে গোটা দল? ডেথ ওভারে চোখ ধাঁধানো বোলিং করেছেন হাসান মাহমুদ। টার্গেট তাড়ায় সুনামী গতিতে ব্যাটিং করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সব মিলিয়ে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং-তিন বিভাগে জশ বাটলারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’ ক্রিকেট খেলেছে সাকিব বাহিনী। দুরন্ত, অসাধারণ এবং নজরকাড়া ক্রিকেট খেলে ১২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০ ওভারের ম্যাচে উৎসব উচ্ছ্বাসে মেতেছে টাইগররা। কিন্তু বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে জয়টিতে নিঃসন্দেহেই দেশের টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা জয়গুলোর একটি বলাই যায়! দেশের পঞ্চ পাণ্ডবের একমাত্র সদস্য সাকিব গতকাল খেলেছেন। মাশরাফি বিন মর্তুজা খেলছেন না। টি-২০ ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন তামিম ইকবাল, মাহমুদ্ল্লুাহ রিয়াদ। সুযোগ পাননি মুশফিকুর রহিম। সিনিয়র ক্রিকেটারদের বাইরে রেখে একঝাঁক তরুণ নিয়ে খেলতে নামেন সাকিব। গতকাল অভিষেক হয় তৌহিদ হৃদয়ের। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাটলার বাহিনী ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৬ রান করে। অধিনায়ক বাটলার ও ওপেনার ফিল সল্ট ১০ ওভারে ৮০ রানের ভিত দেন। ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে রান ছিল ৫১। সল্ট ৩৫ বলে ৩৮ রান করলেও অধিনায়ক বাটলার ৬৭ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেন ৪২ বলে ৪ চার ও ৪ ছক্কায়। শুরুর এই রানের গতি পরে কাজে লাগাতে পারেননি ইংলিশ ব্যাটাররা। আসলে ডেথ ওভারের স্বপ্নের বোলিং করেন হাসান মাহমুদ। শেষ ২ ওভারে মাত্র ৫ রানের খরচে নেন ২ উইকেট। টার্গেট ১৫৭ রান। দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও লিটন কুমার দাস সাজঘরে ফেরেন ৪.৫ ওভারে দলীয় ৪৩ রানের মধ্যে। এরপরই জ্বলে উঠেন ম্যাচসেরা নাজমুল ও তৌহিদ। দুজনে ঝড়ো গতিতে ব্যাটিং করে ৩৯ বলে ৬৫ রান যোগ করে জয় সহজ করেন। অভিষিক্ত তৌহিদ ১৭ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ২৪ রান করেন। ৮ বছর পর সুযোগ পাওয়া রনি ১৪ বলে ২১ রান করেন ৪ চারে। ম্যাচসেরা নাজমুল ৫১ রান করেন মাত্র ৩০ বলে ৮ চারে। যার ৪টিই ছিল টানা উডের বলে। ১৮ টি-২০ ক্যারিয়ারে এটা তার টানা দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি। ৯ নভেম্বর অ্যাডিলেডে টি-২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছিলেন ৫৪ রান। দলের জয়সূচক রান তোলা সাকিব অপরাজিত থাকেন ২৪ বলে ৬ চারে ৩৪ রানে।