ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার ঢেঁকি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুন ২০২০
  • / ২১৪ বার পড়া হয়েছে

সাইফুল ইসলাম, ডাকবাংলা:
গ্রাম বাংলার এক সময়ের খাদ্যদ্রব্যদি মাড়াইয়ের অন্যতম মাধ্যম ঢেঁকি এখন শুধুই স্মৃতি। কালের বিবর্তন ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলা থেকে ঐতিহ্যবাহী টেঁকি। এক সময়ের কৃষাণ-কৃষাণীদের ভালোমানের চাল তৈরির প্রধান মাধ্যম ছিল ঢেঁকি। গ্রামেগঞ্জে এখন পুরোপুরি লেগেছে আধুনিকতার ঢেউ। কালের বিবর্তনে পুরোপুরি হারিয়ে গেল ঢেঁকির ছন্দময় শব্দ।
গ্রামেগঞ্জে পাড়ায় পাড়ায় এক সময় ঢেঁকি দিয়ে চাল তৈরি, চিড়া ভাঙা, আটা, পায়েসের চালের গুঁড়ো, খির তৈরির চাল বানানোর সেই ঢেঁকি-আজ হার মেনেছে ইঞ্জিনচালিত মেশিনের কাছে। ধান ভাঙা, চাল গুঁড়ো করা, বড়ি তৈরি করা, আটা তৈরি চালের গুঁড়াসহ ঢেঁকির যাবতীয় কাজ এখন করছে ইঞ্জিনচালিত মেশিনে। ঢেঁকি নিয়ে এক সময় জনপ্রিয় গান রচিত হয়েছিল।
‘ও বউ চাল ভাঙ্গেরে, ঢেঁকিতে পাড় দিয়া, নতুন চাল ভাঙে হেলিয়া দুলিয়া, ও বউ চাল ভাঙেরে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া’ এ রকম গান আর শোনা যায় না। ঐতিহ্যবাহী সেই ঢেঁকি যেমন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না, সাধুহাটি ও মধুহাটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে আর দেখা যায় না। তবে সারা দেশ খুঁজলে হয়তো কিছু বাড়িতে পাওয়া যাবে। তাও শুধু স্মৃতি সংরক্ষণের বস্তু হিসেবে। কালের বিবর্তনে ঢেঁকি এখন যেন শুধু ঐতিহ্যের স্মৃতি। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না। এক সময় ঢেঁকি ছিল এ উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের চাল ও চালের গুঁড়া তৈরির একমাত্র মাধ্যম। বধূঁরা ঢেঁকিতে চাল ভাঙতো গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামবাংলার ঢেঁকি হারিয়ে গেছে। এখন ঢেঁকির সেই ধুপধাপ শব্দ আর শোনা যায় না।
ঝিনাইদহের সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল-মামুন জানান, সচরাচর আমরা আর ঢেঁকি দেখি না। বেশ কিছু বছর পূর্বেও পরিবারের কৃষাণীরা সে সময় দৈনন্দিন ধান, গম ও জব ভাঙার কাজ এই ঢেঁকি ব্যবহার করতেন। পাশাপাশি চিড়া তৈরির মত কঠিন কাজও ওই ঢেঁকিতেই করা হতো। বিশেষ করে শবে-বরাত, ঈদ, পূজা, নবান্ন উৎসব, হিন্দুদের পূজা-পার্বন এবং পৌষ পার্বণসহ বিশেষ বিশেষ দিনে পিঠা-পুলি খাওয়ার জন্য অধিকাংশ বাড়িতেই ঢেঁকিতে চালের আটা তৈরি করা হতো। কিন্তু আধুনিকতা আর বিজ্ঞানের যুগে নতুন নতুন ধান-গম ভাঙা যন্ত্র আবিষ্কারের কারণে গ্রাম বাংলা থেকে এই ঢেঁকি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার ঢেঁকি

আপলোড টাইম : ০৯:৫৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুন ২০২০

সাইফুল ইসলাম, ডাকবাংলা:
গ্রাম বাংলার এক সময়ের খাদ্যদ্রব্যদি মাড়াইয়ের অন্যতম মাধ্যম ঢেঁকি এখন শুধুই স্মৃতি। কালের বিবর্তন ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলা থেকে ঐতিহ্যবাহী টেঁকি। এক সময়ের কৃষাণ-কৃষাণীদের ভালোমানের চাল তৈরির প্রধান মাধ্যম ছিল ঢেঁকি। গ্রামেগঞ্জে এখন পুরোপুরি লেগেছে আধুনিকতার ঢেউ। কালের বিবর্তনে পুরোপুরি হারিয়ে গেল ঢেঁকির ছন্দময় শব্দ।
গ্রামেগঞ্জে পাড়ায় পাড়ায় এক সময় ঢেঁকি দিয়ে চাল তৈরি, চিড়া ভাঙা, আটা, পায়েসের চালের গুঁড়ো, খির তৈরির চাল বানানোর সেই ঢেঁকি-আজ হার মেনেছে ইঞ্জিনচালিত মেশিনের কাছে। ধান ভাঙা, চাল গুঁড়ো করা, বড়ি তৈরি করা, আটা তৈরি চালের গুঁড়াসহ ঢেঁকির যাবতীয় কাজ এখন করছে ইঞ্জিনচালিত মেশিনে। ঢেঁকি নিয়ে এক সময় জনপ্রিয় গান রচিত হয়েছিল।
‘ও বউ চাল ভাঙ্গেরে, ঢেঁকিতে পাড় দিয়া, নতুন চাল ভাঙে হেলিয়া দুলিয়া, ও বউ চাল ভাঙেরে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া’ এ রকম গান আর শোনা যায় না। ঐতিহ্যবাহী সেই ঢেঁকি যেমন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না, সাধুহাটি ও মধুহাটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে আর দেখা যায় না। তবে সারা দেশ খুঁজলে হয়তো কিছু বাড়িতে পাওয়া যাবে। তাও শুধু স্মৃতি সংরক্ষণের বস্তু হিসেবে। কালের বিবর্তনে ঢেঁকি এখন যেন শুধু ঐতিহ্যের স্মৃতি। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না। এক সময় ঢেঁকি ছিল এ উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের চাল ও চালের গুঁড়া তৈরির একমাত্র মাধ্যম। বধূঁরা ঢেঁকিতে চাল ভাঙতো গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামবাংলার ঢেঁকি হারিয়ে গেছে। এখন ঢেঁকির সেই ধুপধাপ শব্দ আর শোনা যায় না।
ঝিনাইদহের সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল-মামুন জানান, সচরাচর আমরা আর ঢেঁকি দেখি না। বেশ কিছু বছর পূর্বেও পরিবারের কৃষাণীরা সে সময় দৈনন্দিন ধান, গম ও জব ভাঙার কাজ এই ঢেঁকি ব্যবহার করতেন। পাশাপাশি চিড়া তৈরির মত কঠিন কাজও ওই ঢেঁকিতেই করা হতো। বিশেষ করে শবে-বরাত, ঈদ, পূজা, নবান্ন উৎসব, হিন্দুদের পূজা-পার্বন এবং পৌষ পার্বণসহ বিশেষ বিশেষ দিনে পিঠা-পুলি খাওয়ার জন্য অধিকাংশ বাড়িতেই ঢেঁকিতে চালের আটা তৈরি করা হতো। কিন্তু আধুনিকতা আর বিজ্ঞানের যুগে নতুন নতুন ধান-গম ভাঙা যন্ত্র আবিষ্কারের কারণে গ্রাম বাংলা থেকে এই ঢেঁকি।