ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিলিনের পথে কার্পাসডাঙ্গা ও নাটুদহের মৃৎশিল্প

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:০৬:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / ২৪৬ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, কার্পাসডাঙ্গা:
দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ও নাটুদহ ইউনিয়নে হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্পগুলো। কাচা মাটি দিয়ে বিভিন্ন প্রকার জিনিষ তৈরির কারিগররা তাঁদের পূর্বপুরুষের পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ধরে রেখেছেন এ পেশাকে। স্থানীয় ভাষায় এদের কুমার বলা হয়। কুমাররাও এত দিন টিকে ছিল নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে। কিন্তু এটেল মাটি ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, মানুষের চাহিদা কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে তাঁরা পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছেন।
কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের আরামডাঙ্গা গ্রাম ও নাটুদহ ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামে অবস্থিত মৃৎশিল্পী কারিগররা বহুবছর ধরে তাঁদের মনের মাধুরী মিশিয়ে মাটির পুতুল, কলস, চাড়ি, হাড়ি, পাতিল, খুঁটি, মাটির ব্যাংক, বাটনাসহ নানা দরকারি জিনিষ তৈরি করে থাকেন। তাঁরা তাঁদের মাটির তৈরি বাসনপত্র পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে থাকেন। বর্তমানে মানুষ মাটির সামগ্রীর পরিবর্তে অ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক ও মেলামাইনের সামগ্রীর ব্যবহার করছে। ফলে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে এবং কালের বির্বতনে বিলীনের পথে।
আরামডাঙ্গা গ্রামের শ্রী রঘুনাথ পালের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমার দাদু ও বাবার পেশাটা আমি ধরে রেখেছি। এ পেশা থেকে ছেলেদের পড়াশোনাসহ সংসার চালিয়েছি। ঘরবাড়ি তৈরি করেছি। এখনো কাজ করে যাচ্ছি। আগে খরচ বাদে মাসে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেছি। অ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক ও মেলামাইনের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে মাটির জিনিসের ব্যবহার কম হয়ে গেছে। তবে আমি যতদিন বাঁচি, ততদিন এই কাজ করে যাব। আমার পরে এই কাজ আর কেউ করবে না, কারণ ছেলেরা অন্য পেশার সঙ্গে জড়িত।’
অপর দিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাটুদহ জগন্নাথপুর গ্রামের মৃৎশিল্প কারিগরদের সন্তানরা এই পেশায় নেই। তাঁদের সন্তানরা কেউ চাকরি, কেউ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে কার্পাসডাঙ্গা ও নাটুদহ থেকে মৃৎশিল্পগুলো।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বিলিনের পথে কার্পাসডাঙ্গা ও নাটুদহের মৃৎশিল্প

আপলোড টাইম : ১১:০৬:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০

প্রতিবেদক, কার্পাসডাঙ্গা:
দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ও নাটুদহ ইউনিয়নে হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্পগুলো। কাচা মাটি দিয়ে বিভিন্ন প্রকার জিনিষ তৈরির কারিগররা তাঁদের পূর্বপুরুষের পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ধরে রেখেছেন এ পেশাকে। স্থানীয় ভাষায় এদের কুমার বলা হয়। কুমাররাও এত দিন টিকে ছিল নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে। কিন্তু এটেল মাটি ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, মানুষের চাহিদা কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে তাঁরা পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছেন।
কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের আরামডাঙ্গা গ্রাম ও নাটুদহ ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামে অবস্থিত মৃৎশিল্পী কারিগররা বহুবছর ধরে তাঁদের মনের মাধুরী মিশিয়ে মাটির পুতুল, কলস, চাড়ি, হাড়ি, পাতিল, খুঁটি, মাটির ব্যাংক, বাটনাসহ নানা দরকারি জিনিষ তৈরি করে থাকেন। তাঁরা তাঁদের মাটির তৈরি বাসনপত্র পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে থাকেন। বর্তমানে মানুষ মাটির সামগ্রীর পরিবর্তে অ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক ও মেলামাইনের সামগ্রীর ব্যবহার করছে। ফলে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে এবং কালের বির্বতনে বিলীনের পথে।
আরামডাঙ্গা গ্রামের শ্রী রঘুনাথ পালের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমার দাদু ও বাবার পেশাটা আমি ধরে রেখেছি। এ পেশা থেকে ছেলেদের পড়াশোনাসহ সংসার চালিয়েছি। ঘরবাড়ি তৈরি করেছি। এখনো কাজ করে যাচ্ছি। আগে খরচ বাদে মাসে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেছি। অ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক ও মেলামাইনের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে মাটির জিনিসের ব্যবহার কম হয়ে গেছে। তবে আমি যতদিন বাঁচি, ততদিন এই কাজ করে যাব। আমার পরে এই কাজ আর কেউ করবে না, কারণ ছেলেরা অন্য পেশার সঙ্গে জড়িত।’
অপর দিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাটুদহ জগন্নাথপুর গ্রামের মৃৎশিল্প কারিগরদের সন্তানরা এই পেশায় নেই। তাঁদের সন্তানরা কেউ চাকরি, কেউ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে কার্পাসডাঙ্গা ও নাটুদহ থেকে মৃৎশিল্পগুলো।