ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিমান বিধ্বস্ত; নিহতদের স্মরণে আমাদের শোক প্রকাশ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫৬:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মার্চ ২০১৮
  • / ৩১৬ বার পড়া হয়েছে

গত সোমবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণের সময় বাংলাদেশের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়। বিমানের ৭১ আরোহীর মধ্যে ৫০ জন নিহত হন। নিহতদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশি। বিমানের প্রধান পাইলট আবিদ, পাইলট পৃথুলা রশিদসহ অন্তত ২৬ জন নিহত হন। এই সংবাদে সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে আসে। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাবার মাত্র কয়েকঘণ্টার মধ্যে তারা বিদেশের মাটিতে মারা গেলেন। দিনটি বাংলাদেশের জন্য শোকের এবং পরিতাপের। নিরাপদ আকাশ ভ্রমণের যে প্রত্যাশা আমরা লালন করি এই দুর্ঘটনা আমাদের সেই প্রত্যাশায় চরম আঘাত হেনেছে। কার ভুলে এতোগুলো জীবন বলি হলো সে প্রশ্ন এখন বড় হয়ে উঠেছে। জন্মিলে মৃত্যু হবে এটা সত্য হলেও কিছু কিছু মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। এই মৃত্যুগুলো তেমনি। যা মেনে নেবার মত নয়। এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে নেপাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে এই দুর্ঘটনা। আরো জানা গেছে এই ত্রিভূবন বিমানবন্দরে এ পর্যন্ত ৭০টির বেশি দুর্ঘটনায় ৬৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। গত সোমবারের নিহতের তালিকা তার পরিসংখ্যানকে আরো বাড়িয়ে দিলো। সংবাদে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত সোমবার দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে বেসরকারি কোম্পানি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের এই বিমানটি ৭১ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়। স্থানীয় সময় ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডু বিমান বন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে কাছের একটা ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সাংবাদিকরা জানান, তখনই এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ইউএস কোম্পানি অবশ্য এই দুর্ঘটনার জন্য পাইলটের কোনো গাফলতি ছিলো না বলে দাবি করেছে। তাদের দাবি নেপাল বিমান বন্দরের কন্ট্রোলরুম থেকে বিভ্রান্তকর তথ্য দেওয়ার ফলেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। নেপালি সংবাদমাধ্যম থেকেও দাবির সত্যতা মিলেছে। দুর্ঘটনার জন্য কল্ট্রোলরুমের বিভ্রান্তকর প্রচারণার কথা বেশ ফলাও করে উল্লেখ করা হয়েছে। এই বিভ্রান্তকর ঘোষণা থেকেই জীবনহানির ঘটনা যা মানব ইতিহাসের বিপর্যয় হিসাবে কালো অক্ষরে লেখা থাকবে। বাংলাদেশ বিমানের বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে ১৯৮৪ নালের ৫ আগস্ট। বাংলাদেশ বিমানের একটি ফকার বিরূপ আবহাওয়ায় পড়ে ঢাকা বিমান বন্দরের কাছে বিধ্বস্ত হয়। সে সময় ৪৯ জন যাত্রী নিহত হন। আমরা মনে করি, এই দুর্ঘটনা মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। যার বা যাদের কারণে এই বিপর্যয় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। ক্ষতিপূরণ আদায়ের পাশপাশি এই সব কা-জ্ঞানহীনদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। মানুষের জীবন নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলতে চান তাদেরকে সতর্ক করা মানেই আকাশপথকে নিরাপদ করা। জীবন বাঁচাতেই সে উদ্যোগ নিতে হবে। এমন মৃত্যু আমাদের কাম্য নয় বলে আমরা প্রতিবাদে সোচ্চার।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বিমান বিধ্বস্ত; নিহতদের স্মরণে আমাদের শোক প্রকাশ

আপলোড টাইম : ০৮:৫৬:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মার্চ ২০১৮

গত সোমবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণের সময় বাংলাদেশের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়। বিমানের ৭১ আরোহীর মধ্যে ৫০ জন নিহত হন। নিহতদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশি। বিমানের প্রধান পাইলট আবিদ, পাইলট পৃথুলা রশিদসহ অন্তত ২৬ জন নিহত হন। এই সংবাদে সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে আসে। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাবার মাত্র কয়েকঘণ্টার মধ্যে তারা বিদেশের মাটিতে মারা গেলেন। দিনটি বাংলাদেশের জন্য শোকের এবং পরিতাপের। নিরাপদ আকাশ ভ্রমণের যে প্রত্যাশা আমরা লালন করি এই দুর্ঘটনা আমাদের সেই প্রত্যাশায় চরম আঘাত হেনেছে। কার ভুলে এতোগুলো জীবন বলি হলো সে প্রশ্ন এখন বড় হয়ে উঠেছে। জন্মিলে মৃত্যু হবে এটা সত্য হলেও কিছু কিছু মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। এই মৃত্যুগুলো তেমনি। যা মেনে নেবার মত নয়। এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে নেপাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে এই দুর্ঘটনা। আরো জানা গেছে এই ত্রিভূবন বিমানবন্দরে এ পর্যন্ত ৭০টির বেশি দুর্ঘটনায় ৬৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। গত সোমবারের নিহতের তালিকা তার পরিসংখ্যানকে আরো বাড়িয়ে দিলো। সংবাদে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত সোমবার দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে বেসরকারি কোম্পানি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের এই বিমানটি ৭১ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়। স্থানীয় সময় ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডু বিমান বন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে কাছের একটা ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সাংবাদিকরা জানান, তখনই এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ইউএস কোম্পানি অবশ্য এই দুর্ঘটনার জন্য পাইলটের কোনো গাফলতি ছিলো না বলে দাবি করেছে। তাদের দাবি নেপাল বিমান বন্দরের কন্ট্রোলরুম থেকে বিভ্রান্তকর তথ্য দেওয়ার ফলেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। নেপালি সংবাদমাধ্যম থেকেও দাবির সত্যতা মিলেছে। দুর্ঘটনার জন্য কল্ট্রোলরুমের বিভ্রান্তকর প্রচারণার কথা বেশ ফলাও করে উল্লেখ করা হয়েছে। এই বিভ্রান্তকর ঘোষণা থেকেই জীবনহানির ঘটনা যা মানব ইতিহাসের বিপর্যয় হিসাবে কালো অক্ষরে লেখা থাকবে। বাংলাদেশ বিমানের বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে ১৯৮৪ নালের ৫ আগস্ট। বাংলাদেশ বিমানের একটি ফকার বিরূপ আবহাওয়ায় পড়ে ঢাকা বিমান বন্দরের কাছে বিধ্বস্ত হয়। সে সময় ৪৯ জন যাত্রী নিহত হন। আমরা মনে করি, এই দুর্ঘটনা মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। যার বা যাদের কারণে এই বিপর্যয় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। ক্ষতিপূরণ আদায়ের পাশপাশি এই সব কা-জ্ঞানহীনদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। মানুষের জীবন নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলতে চান তাদেরকে সতর্ক করা মানেই আকাশপথকে নিরাপদ করা। জীবন বাঁচাতেই সে উদ্যোগ নিতে হবে। এমন মৃত্যু আমাদের কাম্য নয় বলে আমরা প্রতিবাদে সোচ্চার।