ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বাসে আগুনের মামলায় আসামি ৪৬০ জন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪০:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২০
  • / ১৪২ বার পড়া হয়েছে

রাজধানীর ৫ থানায় ১৩ মামলা : গ্রেফতার ৩০, রিমান্ডে ২৮
সমীকরণ প্রতিবেদন:
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আচমকা ৯টি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে মোট ৪৬০ জনকে। গ্রেফতার হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। এর মধ্যে ২৮ জনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর পাঁচ থানায় এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়। প্রতিটি মামলায় বাদি হয়েছে পুলিশ। আর বেশির ভাগ আসামি হয়েছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। যার মধ্যে ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী ইশরাক হোসেনও রয়েছেন। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাগুলো করা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাত আসামিও রয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার ওয়ালিদ হোসেন গতকাল দুপুরে জানান, বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় প্রথমদিকে দায়ের করা ৯টি মামলার মধ্যে মতিঝিল থানায় দু’টি, শাহবাগে দু’টি, পল্টনে দু’টি এবং বংশাল, ভাটারা ও কলাবাগানে একটি করে মামলা হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত মতিঝিলে একজন, শাহবাগে ছয়জন, পল্টনে ৯ জন, বংশালে দুইজন ও কলাবাগানে দুইজনকে গ্রেফতারের কথা জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় একে একে ৯টি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পুড়ে যাওয়া বাসের মধ্যে তিনটি সরকারি। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, দুপুর ১২টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উত্তর পাশে পার্ক করে রাখা একটি সরকারি বাসে প্রথম আগুন দেয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৪টায় ভাটারা এলাকায় আরেকটি বাসে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়। রাতে আরো একটি বাসে আগুন দেয়া হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, যাত্রীবেশে দুর্বৃত্তরা বাসগুলোতে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়। তবে এতে কোনো হতাহত হয়নি। অগ্নিসংযোগ করা বাসগুলোতে তিন থেকে ১২ জন যাত্রী ছিলেন। পুলিশের ধারণা গত বৃহস্পতিবার ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটতে পারে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে পল্টন থানাধীন বিএনপি অফিসের উত্তর পাশে কর অঞ্চল ১৫-তে পার্কিং করা সরকারি একটি স্টাফ বাসে (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৪৭৪) অগ্নিসংযোগের সূচনা হয়। বেলা ১টার দিকে মতিঝিল থানাধীন মধুমিতা সিনেমা হলের সামনে অগ্রণী ব্যাংকের স্টাফ বাস (ঢাকা-মেট্রো-ব-১১-৭৫১৫), ১টা ২৫ মিনিটে রমনা হোটেলের সামনে চলন্ত অবস্থায় (ঢাকা-মেট্রো-গ-১৫-০৫৮৯) ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনে, শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে দেড়টার দিকে দেওয়ান পরিবহন (ঢাকা-মেট্রো-ঘ-১৩-১৫৭২), ২টা ১০ মিনিটে সচিবালয়ের উত্তর পাশে রজনীগন্ধা পরিবহন (ঢাকা-মেট্রো-ব-১২-০৬৪৪) এবং বংশাল থানাধীন নয়াবাজার এলাকায় বেলা ২টা ২৫ মিনিটে দিশারী পরিবহনে (ঢাকা-মেট্রো-ব-১১- ৯২৫৫) সহ মোট ৯টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এ দিকে বাস পোড়ানো এবং পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার ঘটনায় বিভিন্ন থানায় করা ১৩টি মামলায় ২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল শুক্রবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডল এই রিমান্ড আদেশ দেন। এর মধ্যে শাহবাগ থানার দুই মামলায় ৬ জনের তিন দিন করে, পল্টন থানার এক মামলায় ৭ জনের পাঁচদিন করে, আরেক মামলায় ২ জনের তিন দিন করে, মতিঝিল থানার এক মামলায় একজনের তিন দিন ও অপর আরেক মামলায় আরেক জনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। অন্যদের ব্যাপারে সন্ধ্যা পর্যন্ত তথ্য পাওয়া যায়নি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বাসে আগুনের মামলায় আসামি ৪৬০ জন

আপলোড টাইম : ১০:৪০:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২০

রাজধানীর ৫ থানায় ১৩ মামলা : গ্রেফতার ৩০, রিমান্ডে ২৮
সমীকরণ প্রতিবেদন:
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আচমকা ৯টি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে মোট ৪৬০ জনকে। গ্রেফতার হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। এর মধ্যে ২৮ জনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর পাঁচ থানায় এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়। প্রতিটি মামলায় বাদি হয়েছে পুলিশ। আর বেশির ভাগ আসামি হয়েছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। যার মধ্যে ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী ইশরাক হোসেনও রয়েছেন। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাগুলো করা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাত আসামিও রয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার ওয়ালিদ হোসেন গতকাল দুপুরে জানান, বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় প্রথমদিকে দায়ের করা ৯টি মামলার মধ্যে মতিঝিল থানায় দু’টি, শাহবাগে দু’টি, পল্টনে দু’টি এবং বংশাল, ভাটারা ও কলাবাগানে একটি করে মামলা হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত মতিঝিলে একজন, শাহবাগে ছয়জন, পল্টনে ৯ জন, বংশালে দুইজন ও কলাবাগানে দুইজনকে গ্রেফতারের কথা জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় একে একে ৯টি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পুড়ে যাওয়া বাসের মধ্যে তিনটি সরকারি। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, দুপুর ১২টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উত্তর পাশে পার্ক করে রাখা একটি সরকারি বাসে প্রথম আগুন দেয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৪টায় ভাটারা এলাকায় আরেকটি বাসে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়। রাতে আরো একটি বাসে আগুন দেয়া হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, যাত্রীবেশে দুর্বৃত্তরা বাসগুলোতে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়। তবে এতে কোনো হতাহত হয়নি। অগ্নিসংযোগ করা বাসগুলোতে তিন থেকে ১২ জন যাত্রী ছিলেন। পুলিশের ধারণা গত বৃহস্পতিবার ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটতে পারে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে পল্টন থানাধীন বিএনপি অফিসের উত্তর পাশে কর অঞ্চল ১৫-তে পার্কিং করা সরকারি একটি স্টাফ বাসে (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৪৭৪) অগ্নিসংযোগের সূচনা হয়। বেলা ১টার দিকে মতিঝিল থানাধীন মধুমিতা সিনেমা হলের সামনে অগ্রণী ব্যাংকের স্টাফ বাস (ঢাকা-মেট্রো-ব-১১-৭৫১৫), ১টা ২৫ মিনিটে রমনা হোটেলের সামনে চলন্ত অবস্থায় (ঢাকা-মেট্রো-গ-১৫-০৫৮৯) ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনে, শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে দেড়টার দিকে দেওয়ান পরিবহন (ঢাকা-মেট্রো-ঘ-১৩-১৫৭২), ২টা ১০ মিনিটে সচিবালয়ের উত্তর পাশে রজনীগন্ধা পরিবহন (ঢাকা-মেট্রো-ব-১২-০৬৪৪) এবং বংশাল থানাধীন নয়াবাজার এলাকায় বেলা ২টা ২৫ মিনিটে দিশারী পরিবহনে (ঢাকা-মেট্রো-ব-১১- ৯২৫৫) সহ মোট ৯টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এ দিকে বাস পোড়ানো এবং পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার ঘটনায় বিভিন্ন থানায় করা ১৩টি মামলায় ২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল শুক্রবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডল এই রিমান্ড আদেশ দেন। এর মধ্যে শাহবাগ থানার দুই মামলায় ৬ জনের তিন দিন করে, পল্টন থানার এক মামলায় ৭ জনের পাঁচদিন করে, আরেক মামলায় ২ জনের তিন দিন করে, মতিঝিল থানার এক মামলায় একজনের তিন দিন ও অপর আরেক মামলায় আরেক জনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। অন্যদের ব্যাপারে সন্ধ্যা পর্যন্ত তথ্য পাওয়া যায়নি।