ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বাশেঁর রেলিংয়ে আটকে আছে মেহেরপুরের ৭ পরিবার!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪৩:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুলাই ২০১৮
  • / ৪৮২ বার পড়া হয়েছে

গাংনী অফিস: প্রভাবশালীর বাঁেশর খাচায় বন্দি হয়েছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাওট গ্রামের রাজধানীপাড়ার ৭টি পরিবার। দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে পথ ব্যবহার করার পর তা বাঁেশর রেলিং দিয়ে আটকে দেওয়ায় ৭টি পরিবারের মানুষ বর্তমান বন্দি হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের বাওট গ্রামের প্রভাবশালী আজহার আলীর সাথে মতবিরোধ তৈরী হয় প্রতিবেশি প্রবাসী রফিকুলের পরিবারের সাথে। এসময় তিনি তার বাড়ির পিছনের দিকে রাস্তাটি বাঁেশর রেলিং দিয়ে তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তাটি আটকে দেয়। প্রতিবেশি প্রবাসী রফিকুল ইসলামের স্ত্রী শামীমা আক্তারকে নানাভাবে কুটক্তি করাকে কেন্দ্র প্রবাসীর স্ত্রী শামীমা ও আজহারের মধ্যে মতবিরোধ তৈরী হয়। যার ফলে তাদের জমির উপর দিয়ে সড়ক হওয়ায় তারা পথে বাঁেশর রেলিং দিয়ে ঘিরে দেয়। ফলে প্রবাসীর পরিবারসহ আরো ৬টি পরিবার বাশেঁর রেলিংয়ে আটকে যায়। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নিকট অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা মেলেনি। চেয়ারম্যান ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেলোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে গেলে কয়েক ঘন্টার জন্য রেলিং খুলে দিলেও পরে আবার তারা আরো ভালো করে ঘিরে রাখে। বর্তমানে সেখানে ইটের প্রাচীর দেওয়া প্রস্তুতি নিয়েছে আজহার ও তার পরিবার।
ভুক্তভোগী প্রবাসীর স্ত্রী শামীমা আক্তার জানান, আমার শ্বশুর পরিবার দীর্ঘ প্রায় ৭০ বছর ধরে এ পথটি ব্যবহার করে আসছে। জমির মালিক পরিবার আজহারদের সাথে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদে একটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তিতে আমরা আমাদের বাড়ির পাশের জমি ছেড়ে বাড়ি করব আর তার বিনিময়ে আমাদের সামনের দিক দিয়ে রাস্তা দেবে আজহার পরিবার। অন্যথায় তারা আমাদের বের হবার মত জমি বিক্রি করবে। কিন্তু তারা কোনটাই করছে না। কিছু হলেই আমাকে নানাভাবে গালিগালাজ করতে থাকে। এখনও নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমরা চরম হুমকির মুখে রয়েছি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনের লোকজন এসেও সমাধান দিতে পারছে না। আমরা এখন বন্দি হয়ে পড়েছি দ্রুত কোন ব্যবস্থা না নেওয়া হলে খুব খারাপ কিছু হতে চলেছে।
বাঁেশর রেলিং দিয়ে বন্দি করা আজহার আলী জানান, আমাদের এই রাস্তাটি দীর্ঘ বছর ধরে তারা ব্যবহার করে। আবার আমাদের সাথে বড় গলায় কথা বলে। তাই আমরা আটকে দিয়েছি। দেখি কিভাবে ওরা পুলিশ-প্রশাসন দিয়ে রাস্তা বের করতে পারে। রাস্তা বের করতে হলে আমাদের পায়ে ধরে রাস্তা নিতে হবে। আমরা পরিকল্পনা করছি সেখানে একটি প্রাচীর দেওয়ার। যাতে তারা আর কোন দিন এ রাস্তা ব্যবহার না করতে পারে।
ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল আহম্মেদ জানান, বাঁেশর খাচায় বন্দি হওয়ার বিষয়টি আমি জানি। আমি উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমিকে বিষয়টি জানিয়েছি তিনি সরেজমিনে গিয়ে রেলিং খুলে দেয় কিন্তু পরে আবার তারা সেটা বেধে দেয়।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষ্ণুপদ পাল বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও সহকারী কমিশনার ভূমির সাথে কথা বলে তাদের রেলিং ভেঙ্গে দেওয়া হবে। দেশের সকল মানুষ রাস্তা ব্যবহার করবে কাউকে বন্দি করা যাবে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বাশেঁর রেলিংয়ে আটকে আছে মেহেরপুরের ৭ পরিবার!

আপলোড টাইম : ০৯:৪৩:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুলাই ২০১৮

গাংনী অফিস: প্রভাবশালীর বাঁেশর খাচায় বন্দি হয়েছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাওট গ্রামের রাজধানীপাড়ার ৭টি পরিবার। দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে পথ ব্যবহার করার পর তা বাঁেশর রেলিং দিয়ে আটকে দেওয়ায় ৭টি পরিবারের মানুষ বর্তমান বন্দি হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের বাওট গ্রামের প্রভাবশালী আজহার আলীর সাথে মতবিরোধ তৈরী হয় প্রতিবেশি প্রবাসী রফিকুলের পরিবারের সাথে। এসময় তিনি তার বাড়ির পিছনের দিকে রাস্তাটি বাঁেশর রেলিং দিয়ে তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তাটি আটকে দেয়। প্রতিবেশি প্রবাসী রফিকুল ইসলামের স্ত্রী শামীমা আক্তারকে নানাভাবে কুটক্তি করাকে কেন্দ্র প্রবাসীর স্ত্রী শামীমা ও আজহারের মধ্যে মতবিরোধ তৈরী হয়। যার ফলে তাদের জমির উপর দিয়ে সড়ক হওয়ায় তারা পথে বাঁেশর রেলিং দিয়ে ঘিরে দেয়। ফলে প্রবাসীর পরিবারসহ আরো ৬টি পরিবার বাশেঁর রেলিংয়ে আটকে যায়। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নিকট অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা মেলেনি। চেয়ারম্যান ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেলোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে গেলে কয়েক ঘন্টার জন্য রেলিং খুলে দিলেও পরে আবার তারা আরো ভালো করে ঘিরে রাখে। বর্তমানে সেখানে ইটের প্রাচীর দেওয়া প্রস্তুতি নিয়েছে আজহার ও তার পরিবার।
ভুক্তভোগী প্রবাসীর স্ত্রী শামীমা আক্তার জানান, আমার শ্বশুর পরিবার দীর্ঘ প্রায় ৭০ বছর ধরে এ পথটি ব্যবহার করে আসছে। জমির মালিক পরিবার আজহারদের সাথে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদে একটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তিতে আমরা আমাদের বাড়ির পাশের জমি ছেড়ে বাড়ি করব আর তার বিনিময়ে আমাদের সামনের দিক দিয়ে রাস্তা দেবে আজহার পরিবার। অন্যথায় তারা আমাদের বের হবার মত জমি বিক্রি করবে। কিন্তু তারা কোনটাই করছে না। কিছু হলেই আমাকে নানাভাবে গালিগালাজ করতে থাকে। এখনও নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমরা চরম হুমকির মুখে রয়েছি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনের লোকজন এসেও সমাধান দিতে পারছে না। আমরা এখন বন্দি হয়ে পড়েছি দ্রুত কোন ব্যবস্থা না নেওয়া হলে খুব খারাপ কিছু হতে চলেছে।
বাঁেশর রেলিং দিয়ে বন্দি করা আজহার আলী জানান, আমাদের এই রাস্তাটি দীর্ঘ বছর ধরে তারা ব্যবহার করে। আবার আমাদের সাথে বড় গলায় কথা বলে। তাই আমরা আটকে দিয়েছি। দেখি কিভাবে ওরা পুলিশ-প্রশাসন দিয়ে রাস্তা বের করতে পারে। রাস্তা বের করতে হলে আমাদের পায়ে ধরে রাস্তা নিতে হবে। আমরা পরিকল্পনা করছি সেখানে একটি প্রাচীর দেওয়ার। যাতে তারা আর কোন দিন এ রাস্তা ব্যবহার না করতে পারে।
ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল আহম্মেদ জানান, বাঁেশর খাচায় বন্দি হওয়ার বিষয়টি আমি জানি। আমি উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমিকে বিষয়টি জানিয়েছি তিনি সরেজমিনে গিয়ে রেলিং খুলে দেয় কিন্তু পরে আবার তারা সেটা বেধে দেয়।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষ্ণুপদ পাল বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও সহকারী কমিশনার ভূমির সাথে কথা বলে তাদের রেলিং ভেঙ্গে দেওয়া হবে। দেশের সকল মানুষ রাস্তা ব্যবহার করবে কাউকে বন্দি করা যাবে না।