ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বাণিজ্য ঘাটতি কমান

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১২:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মার্চ ২০১৮
  • / ৩০৮ বার পড়া হয়েছে

আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ। আমদানি ব্যয়ের তুলনায় রফতানি আয় কম হওয়ায় এ ঘাটতি বাড়ছে। অর্থাৎ রফতানি আয় যে হারে বাড়ছে আমদানি ব্যয় বাড়ছে তার চেয়ে অনেক বেশি হারে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। স্বাধীনতার পর অর্থাৎ ৪৭ বছরে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বাণিজ্য ঘাটতি বলে জানা গেছে। এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২০১০-১১ অর্থবছরে। যার পরিমাণ ছিল ৯৯৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। একদিকে বাড়ছে আমদানি ব্যয় অন্যদিকে কমছে রফতানি। আমদানি বাড়ার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে অবকাঠামো উন্নয়নের প্রয়োজনে সরকারের আমদানি বাড়ছে, যা বেসরকারি বিনিয়োগকেও উদ্বুদ্ধ করছে। ফলে মূলধনী যন্ত্রপাতিসহ অন্য আমদানিও বাড়ছে। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায়ও আমদানি ব্যয় বাড়ছে। একইসঙ্গে চলতি অর্থবছরে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে সরকারকে প্রচুর চাল আমদানি করতে হয়েছে। আমদানি বাড়ার এই চিত্রের বিপরীতে দেশের রফতানি বাড়েনি। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। দেশের উন্নয়নযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে বিশ্ব পরিসরে বাণিজ্য বৃদ্ধি, রেমিট্যান্স প্রবাহে সামঞ্জস্য থাকা জরুরি। তা না হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার শঙ্কা যেমন বাড়ে তেমনি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নও ঝুঁকির মুখে পড়ে। আমদানির প্রভাব উৎপাদনশীল খাতের বিনিয়োগে পড়লে অর্থনীতির জন্য ভালো। তবে আমদানির নামে অর্থ যদি পাচার হয় তাহলে এর ফল হবে ভয়াবহ হবেÑ এমন শঙ্কাও রয়েছে। কেননা বাণিজ্য ঘাটতির পাশাপাশি আমাদের রেমিট্যান্স প্রবাহ খুব একটা বাড়ছে না। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকে পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকায় এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ না থাকলেও বর্তমানের এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে চাপের মুখে পড়বে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও। বর্তমানের বাণিজ্য ঘাটতির নেতিবাচক প্রভাব দেশীয় অর্থনীতির ওপর এখনো সরাসরি কোনো ঝুঁকি তৈরি না করলেও এ অবস্থা বেশিদিন চলতে দেয়া যাবে না। দায়িত্বশীলদের অচিরেই বিকল্প উপায় খুঁজে বের করতে হবে। যে সব নির্দিষ্ট কারণে রফতানি আয় কিংবা রেমিট্যান্স প্রবাহের গতি শ্লথ রয়েছে সেসব সমস্যা দূর করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণেই কেবল চলমান অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে পারে বলে আমরা মনে করি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর মাধ্যমে অর্থনীতির সক্ষমতা বাড়াতে উপযুক্ত পদক্ষেপই এখন কাম্য।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বাণিজ্য ঘাটতি কমান

আপলোড টাইম : ০৯:১২:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মার্চ ২০১৮

আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ। আমদানি ব্যয়ের তুলনায় রফতানি আয় কম হওয়ায় এ ঘাটতি বাড়ছে। অর্থাৎ রফতানি আয় যে হারে বাড়ছে আমদানি ব্যয় বাড়ছে তার চেয়ে অনেক বেশি হারে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। স্বাধীনতার পর অর্থাৎ ৪৭ বছরে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বাণিজ্য ঘাটতি বলে জানা গেছে। এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২০১০-১১ অর্থবছরে। যার পরিমাণ ছিল ৯৯৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। একদিকে বাড়ছে আমদানি ব্যয় অন্যদিকে কমছে রফতানি। আমদানি বাড়ার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে অবকাঠামো উন্নয়নের প্রয়োজনে সরকারের আমদানি বাড়ছে, যা বেসরকারি বিনিয়োগকেও উদ্বুদ্ধ করছে। ফলে মূলধনী যন্ত্রপাতিসহ অন্য আমদানিও বাড়ছে। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায়ও আমদানি ব্যয় বাড়ছে। একইসঙ্গে চলতি অর্থবছরে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে সরকারকে প্রচুর চাল আমদানি করতে হয়েছে। আমদানি বাড়ার এই চিত্রের বিপরীতে দেশের রফতানি বাড়েনি। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। দেশের উন্নয়নযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে বিশ্ব পরিসরে বাণিজ্য বৃদ্ধি, রেমিট্যান্স প্রবাহে সামঞ্জস্য থাকা জরুরি। তা না হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার শঙ্কা যেমন বাড়ে তেমনি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নও ঝুঁকির মুখে পড়ে। আমদানির প্রভাব উৎপাদনশীল খাতের বিনিয়োগে পড়লে অর্থনীতির জন্য ভালো। তবে আমদানির নামে অর্থ যদি পাচার হয় তাহলে এর ফল হবে ভয়াবহ হবেÑ এমন শঙ্কাও রয়েছে। কেননা বাণিজ্য ঘাটতির পাশাপাশি আমাদের রেমিট্যান্স প্রবাহ খুব একটা বাড়ছে না। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকে পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকায় এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ না থাকলেও বর্তমানের এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে চাপের মুখে পড়বে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও। বর্তমানের বাণিজ্য ঘাটতির নেতিবাচক প্রভাব দেশীয় অর্থনীতির ওপর এখনো সরাসরি কোনো ঝুঁকি তৈরি না করলেও এ অবস্থা বেশিদিন চলতে দেয়া যাবে না। দায়িত্বশীলদের অচিরেই বিকল্প উপায় খুঁজে বের করতে হবে। যে সব নির্দিষ্ট কারণে রফতানি আয় কিংবা রেমিট্যান্স প্রবাহের গতি শ্লথ রয়েছে সেসব সমস্যা দূর করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণেই কেবল চলমান অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে পারে বলে আমরা মনে করি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর মাধ্যমে অর্থনীতির সক্ষমতা বাড়াতে উপযুক্ত পদক্ষেপই এখন কাম্য।