ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বাজেট বাস্তবায়নে বড় সংকটে পড়বে সরকার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুন ২০১৭
  • / ৪২২ বার পড়া হয়েছে

indexসমীকরণ ডেস্ক: নতুন ভ্যাট আইন স্থগিত হওয়ার ফলে বাজেট বাস্তবায়নে বড় ধরনের আর্থিক সংকটে পড়বে সরকার। অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, রাজস্ব আদায় কমে যাওয়ার ফলে উন্নয়ন ব্যয় বিশাল আকারে কাটছাঁট করতে হবে। কারণ, অনুন্নয়ন ব্যয় কাটছাঁটের সুযোগ কম। নতুবা সরকারকে বড় আকারের ঋণ নিতে হবে ব্যাংক থেকে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত যে ভ্যাটের ওপর ভর করে চার লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের হিসাব সংসদে পেশ করেছিলেন তা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা বলছেন, পুরনো ভ্যাট আইনেই অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের সুযোগ আছে। রাজস্ব আদায় বাড়াতে এনবিআর অ্যাকশন প্ল্যান নিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বাজেটে নতুন ভ্যাট আইনে যেসব পণ্য ও সেবা খাতকে ভ্যাটমুক্ত ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, গতকাল এনবিআরের এক আদেশে সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে ওইসব পণ্য ও সেবা ফের ভ্যাটের আওতায় এলো। অর্থাৎ ওইসব পণ্য ও সেবাকে ভ্যাট অব্যাহতির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলো।
অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, নতুন ভ্যাট আইনের ওপর নির্ভর করে এবারের বাজেট সাজিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করেন তিনি। এখন আইনটি কার্যকর না হওয়ায় রাজস্ব আয় ব্যাপকভাবে কমবে। এই ধাক্কা সামলাতে হবে সরকারকে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, এখন আর নতুন করে বাজেটের আকার পরিবর্তনের সুযোগ নেই। বাজেট সংশোধনের সময় বড় ধরনের কাটছাঁট করতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, অনুন্নয়ন ব্যয় কমানোর সুযোগ নেই। কারণ, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা দিতেই হবে। সুদের টাকা পরিশোধ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ভর্তুকি ও পেনশনারদের জন্য অর্থ লাগবে। রাস্তা মেরামত ও সংরক্ষণে অর্থ দিতে হবে। প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় কমানোও মুশকিল। এসব খাতেই অনুন্নয়ন বাজেটে দেওয়া বরাদ্দের বেশিরভাগ টাকা খরচ হয়। কাজেই, অনুন্নয়ন বাজেট কমানোর সুযোগ নেই। শেষ পর্যন্ত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ কমাতে হবে। সূত্র বলছে, ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবারের বাজেটে সামগ্রিকভাবে রাজস্ব আয়ে মোট ঘাটতি হতে পারে প্রায় ৬৮ হাজার কোটি টাকা। এই ঘাটতি মোকাবেলা করতে হিমশিম খেতে হবে সরকারকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, কর আদায় আরও সহজ করে এর আওতা বাড়াতে হবে। করযোগ্য হয়েও যারা দিচ্ছেন না, তাদের করজালে আনতে হবে। তাহলে রাজস্ব আদায় বাড়বে।
চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব অপরিবর্তিত রেখেই গতকাল জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়। সেখানে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে ৯১ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা আসার কথা। অর্থাৎ অঙ্কের হিসাবে বাজেটের প্রায় এক-চতুর্থাংশ আসার কথা ভ্যাট থেকে। প্রশ্ন হলো, বড় অঙ্কের ভ্যাট আদায়ের পরিকল্পনা ভেস্তে গেলে সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণ হবে কীভাবে।
এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এবারের রাজস্ব আয়ের ওই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব নয়। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় বাড়তি ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। তবে এতে বিচলিত হওয়ার কারণ নেই। এ চাপ সামলানো যাবে বর্তমান ভ্যাট আইনের মাধ্যমে। এ জন্য কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে বছরের শুরুতে।
এবারের বাজেটে নতুন ভ্যাট আইনে এক হাজার ৪৩টি পণ্য ও সেবা খাতকে ভ্যাটমুক্ত হিসেবে যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক আদেশে সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। এর পরিবর্তে বর্তমান ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইন অনুযায়ী অব্যাহতি পাওয়া ৫৩৬ পণ্য ও সেবার তালিকা বহাল থাকবে। একই সঙ্গে পৃথক আদেশে শতাধিক পণ্যের সম্পূরক শুল্কহারে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এনবিআরের নতুন আদেশের (এসআরও) ফলে ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইনে যেসব পণ্য ও সেবা অব্যাহতি পেয়ে আসছে, সেটিই বহাল থাকল। অর্থাৎ ৫৩৬টি পণ্য ও সেবা ছাড়া উল্লেখিত সব পণ্য ও সেবা ভ্যাটের আওতায় থাকবে।
সূত্র জানায়, নতুন ভ্যাট আইনে এইচএস কোডভুক্ত শতাধিক পণ্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়। এসব পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব-সংক্রান্ত আদেশটি গতকাল বাতিল করা হয়। ফলে আগের মতো ১৯৯১ সালের আইন অনুযায়ী ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক আদায় করা হবে। নতুন আইন স্থগিতের পর এরকম আরও শতাধিক পণ্যের শুল্কহার পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
রাজস্ব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যবস্থা নেবে এনবিআর : নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন স্থগিত করায় রাজস্ব আয় কমবে। জানা গেছে, এই ক্ষতি পূরণে অ্যাকশন প্ল্যান নিচ্ছে এনবিআর। অর্থবছরের শুরুতেই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এ বিষয়ে বৈঠক করা হবে। ১৯৯১ সালের আইনে বিশেষ ছাড় দিয়ে পনেরোটি সেবা খাতে হ্রাসকৃত হারে ভ্যাট আদায় করা হয়। এসব খাতের মধ্যে রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা আছে, কিন্তু ফাঁকি বেশি হয় এমন খাত চিহ্নিত করা হবে। যেসব খাত বর্তমানে কম হারে ভ্যাট আদায় করা হয় সে খাতে হার বাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া আদায় বাড়াতে সরেজমিন পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার করা হবে। বর্তমানে ৮৫ পণ্যে ট্যারিফ মূল্যের ওপর ভ্যাট আদায় করা হয়। এর মধ্যে অন্তত দশ থেকে পনেরোটি পণ্যের ট্যারিফ মূল্য উঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। অথবা ট্যারিফ মূল্য বৃদ্ধি করে তার ওপর ভ্যাট আদায় করা হতে পারে। একই সঙ্গে আদায় বাড়াতে তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। সূত্র বলেছে, এসব পদক্ষেপ নেওয়া হলে ভ্যাট আদায় বাড়বে। কোন কোন খাত থেকে ভ্যাট আদায় বাড়ানো হবে, সে বিষয়ে নতুন করে পরিকল্পনা নেওয়া হবে। জুলাই মাসের শুরুতে মাঠ পর্যায়ের সব কর্মকর্তাকে নিয়ে বৈঠক করবে এনবিআর।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বাজেট বাস্তবায়নে বড় সংকটে পড়বে সরকার

আপলোড টাইম : ০৫:০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুন ২০১৭

indexসমীকরণ ডেস্ক: নতুন ভ্যাট আইন স্থগিত হওয়ার ফলে বাজেট বাস্তবায়নে বড় ধরনের আর্থিক সংকটে পড়বে সরকার। অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, রাজস্ব আদায় কমে যাওয়ার ফলে উন্নয়ন ব্যয় বিশাল আকারে কাটছাঁট করতে হবে। কারণ, অনুন্নয়ন ব্যয় কাটছাঁটের সুযোগ কম। নতুবা সরকারকে বড় আকারের ঋণ নিতে হবে ব্যাংক থেকে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত যে ভ্যাটের ওপর ভর করে চার লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের হিসাব সংসদে পেশ করেছিলেন তা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা বলছেন, পুরনো ভ্যাট আইনেই অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের সুযোগ আছে। রাজস্ব আদায় বাড়াতে এনবিআর অ্যাকশন প্ল্যান নিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বাজেটে নতুন ভ্যাট আইনে যেসব পণ্য ও সেবা খাতকে ভ্যাটমুক্ত ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, গতকাল এনবিআরের এক আদেশে সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে ওইসব পণ্য ও সেবা ফের ভ্যাটের আওতায় এলো। অর্থাৎ ওইসব পণ্য ও সেবাকে ভ্যাট অব্যাহতির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলো।
অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, নতুন ভ্যাট আইনের ওপর নির্ভর করে এবারের বাজেট সাজিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করেন তিনি। এখন আইনটি কার্যকর না হওয়ায় রাজস্ব আয় ব্যাপকভাবে কমবে। এই ধাক্কা সামলাতে হবে সরকারকে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, এখন আর নতুন করে বাজেটের আকার পরিবর্তনের সুযোগ নেই। বাজেট সংশোধনের সময় বড় ধরনের কাটছাঁট করতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, অনুন্নয়ন ব্যয় কমানোর সুযোগ নেই। কারণ, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা দিতেই হবে। সুদের টাকা পরিশোধ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ভর্তুকি ও পেনশনারদের জন্য অর্থ লাগবে। রাস্তা মেরামত ও সংরক্ষণে অর্থ দিতে হবে। প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় কমানোও মুশকিল। এসব খাতেই অনুন্নয়ন বাজেটে দেওয়া বরাদ্দের বেশিরভাগ টাকা খরচ হয়। কাজেই, অনুন্নয়ন বাজেট কমানোর সুযোগ নেই। শেষ পর্যন্ত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ কমাতে হবে। সূত্র বলছে, ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবারের বাজেটে সামগ্রিকভাবে রাজস্ব আয়ে মোট ঘাটতি হতে পারে প্রায় ৬৮ হাজার কোটি টাকা। এই ঘাটতি মোকাবেলা করতে হিমশিম খেতে হবে সরকারকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, কর আদায় আরও সহজ করে এর আওতা বাড়াতে হবে। করযোগ্য হয়েও যারা দিচ্ছেন না, তাদের করজালে আনতে হবে। তাহলে রাজস্ব আদায় বাড়বে।
চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব অপরিবর্তিত রেখেই গতকাল জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়। সেখানে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে ৯১ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা আসার কথা। অর্থাৎ অঙ্কের হিসাবে বাজেটের প্রায় এক-চতুর্থাংশ আসার কথা ভ্যাট থেকে। প্রশ্ন হলো, বড় অঙ্কের ভ্যাট আদায়ের পরিকল্পনা ভেস্তে গেলে সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণ হবে কীভাবে।
এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এবারের রাজস্ব আয়ের ওই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব নয়। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় বাড়তি ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। তবে এতে বিচলিত হওয়ার কারণ নেই। এ চাপ সামলানো যাবে বর্তমান ভ্যাট আইনের মাধ্যমে। এ জন্য কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে বছরের শুরুতে।
এবারের বাজেটে নতুন ভ্যাট আইনে এক হাজার ৪৩টি পণ্য ও সেবা খাতকে ভ্যাটমুক্ত হিসেবে যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক আদেশে সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। এর পরিবর্তে বর্তমান ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইন অনুযায়ী অব্যাহতি পাওয়া ৫৩৬ পণ্য ও সেবার তালিকা বহাল থাকবে। একই সঙ্গে পৃথক আদেশে শতাধিক পণ্যের সম্পূরক শুল্কহারে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এনবিআরের নতুন আদেশের (এসআরও) ফলে ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইনে যেসব পণ্য ও সেবা অব্যাহতি পেয়ে আসছে, সেটিই বহাল থাকল। অর্থাৎ ৫৩৬টি পণ্য ও সেবা ছাড়া উল্লেখিত সব পণ্য ও সেবা ভ্যাটের আওতায় থাকবে।
সূত্র জানায়, নতুন ভ্যাট আইনে এইচএস কোডভুক্ত শতাধিক পণ্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়। এসব পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব-সংক্রান্ত আদেশটি গতকাল বাতিল করা হয়। ফলে আগের মতো ১৯৯১ সালের আইন অনুযায়ী ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক আদায় করা হবে। নতুন আইন স্থগিতের পর এরকম আরও শতাধিক পণ্যের শুল্কহার পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
রাজস্ব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যবস্থা নেবে এনবিআর : নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন স্থগিত করায় রাজস্ব আয় কমবে। জানা গেছে, এই ক্ষতি পূরণে অ্যাকশন প্ল্যান নিচ্ছে এনবিআর। অর্থবছরের শুরুতেই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এ বিষয়ে বৈঠক করা হবে। ১৯৯১ সালের আইনে বিশেষ ছাড় দিয়ে পনেরোটি সেবা খাতে হ্রাসকৃত হারে ভ্যাট আদায় করা হয়। এসব খাতের মধ্যে রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা আছে, কিন্তু ফাঁকি বেশি হয় এমন খাত চিহ্নিত করা হবে। যেসব খাত বর্তমানে কম হারে ভ্যাট আদায় করা হয় সে খাতে হার বাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া আদায় বাড়াতে সরেজমিন পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার করা হবে। বর্তমানে ৮৫ পণ্যে ট্যারিফ মূল্যের ওপর ভ্যাট আদায় করা হয়। এর মধ্যে অন্তত দশ থেকে পনেরোটি পণ্যের ট্যারিফ মূল্য উঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। অথবা ট্যারিফ মূল্য বৃদ্ধি করে তার ওপর ভ্যাট আদায় করা হতে পারে। একই সঙ্গে আদায় বাড়াতে তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। সূত্র বলেছে, এসব পদক্ষেপ নেওয়া হলে ভ্যাট আদায় বাড়বে। কোন কোন খাত থেকে ভ্যাট আদায় বাড়ানো হবে, সে বিষয়ে নতুন করে পরিকল্পনা নেওয়া হবে। জুলাই মাসের শুরুতে মাঠ পর্যায়ের সব কর্মকর্তাকে নিয়ে বৈঠক করবে এনবিআর।