ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বাঁকা ইউপি চেয়ারম্যান কাদের প্রধানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৭:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / ১৯৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলায় দুর্যোগসহনীয় সরকারি ঘর দেওয়ার নামে অর্থ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ৪ নম্বর বাঁকা ইউনিয়নের সুটিয়া গ্রামে। সরকারিভাবে বিনা মূল্যে দরিদ্রদের মধ্যে ঘর দেওয়ার কথা থাকলেও ঘরের সুবিধাভোগীদের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে ঘর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধানের বিরুদ্ধে।
ঘরের সুবিধাভোগী দিনমজুর বাঁকা ইউনিয়নের সুটিয়া গ্রামের রিপন মণ্ডল অভিযোগ করে বলেন, ‘কাদের চেয়ারম্যানের নিকট ঘরের জন্য ৪৭ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। টাকা নিয়ে ঘর দিলেও ঘরের কাজে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করা হচ্ছে। যে ঘর নির্মাণ করছে, তা এক মাসের মধ্যে নষ্ট হয়ে পড়ে যাবে। নিয়মানুযায়ী ঘর নির্মাণ না করায় আমি জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’ অন্যদিকে, এ ঘটনায় ঘরের সুবিধাভোগী রিপন মণ্ডল ইউএনওর নিকট অভিযোগ করায় অভিযোগ তুলে নেওয়ার হুমকি প্রদান করছেন চেয়ারম্যানের লোকজনসহ স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার। এমনকি অভিযোগ না তুলে নিলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি প্রদান করা হয়েছে বলে জানান রিপন মণ্ডল। তিনি বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করছেন। শুধু বাঁকা ইউনিয়ন নয়, আন্দুলবাড়িয়া ও রায়পুর ইউনিয়নে ঘর দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ থাকলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। তা ছাড়া ঘর ভরাটের জন্য বিনা মূল্যে মাটি দেওয়ার কথা থাকলেও ঘরের সুবিধাভোগীদের নিকট মাটির টাকা ও বালুর টাকা নেওয়ারও অভিযোগ আছে। আর টাকা না দিলে ঘরের সামনে থেকে মাটি কেটে ঘর ভরাট করা হচ্ছে।
৪ নম্বর বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান বলেন, ‘আমি কারও ঘর দেওয়ার নাম করে টাকা গ্রহণ করিনি। আমার নামে যে অভিযোগ উঠেছে, তা মিথ্যা অভিযোগ। এ বিষয়ে আমি জানি না।’
জীবননগর উপজেলা পিআইও অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ ও ’২০ অর্থবছরে জীবননগর উপজেলায় ৫৩ জন অসহায় দরিদ্রদের মধ্যে টি-আর ঘর নির্মাণের বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। জীবননগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অফিসে গেলে তাঁকে অফিসে পাওয়া যায়নি। এমনকি অফিস সহকারী সাইফুল ইসলাম টগরকেও পাওয়া যায়নি। এরপর মুটোফোনে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ‘সব কিছু দেখা একার পক্ষে সম্ভব হয় না। তবে যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, আমি পরিদর্শন করব এবং কোনো অনিয়ম পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাঁকা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘর দেওয়ার নাম করে ৪৭ হাজার টাকা নেওয়ার একটি লিখিত অভিযোগ রয়েছে। এটা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা ছাড়া সরকারি নিয়মানুযায়ী এবং যে পরিমাণে অর্থ বরাদ্ধ আছে, সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে। তা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বাঁকা ইউপি চেয়ারম্যান কাদের প্রধানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ!

আপলোড টাইম : ১০:৫৭:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলায় দুর্যোগসহনীয় সরকারি ঘর দেওয়ার নামে অর্থ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ৪ নম্বর বাঁকা ইউনিয়নের সুটিয়া গ্রামে। সরকারিভাবে বিনা মূল্যে দরিদ্রদের মধ্যে ঘর দেওয়ার কথা থাকলেও ঘরের সুবিধাভোগীদের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে ঘর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধানের বিরুদ্ধে।
ঘরের সুবিধাভোগী দিনমজুর বাঁকা ইউনিয়নের সুটিয়া গ্রামের রিপন মণ্ডল অভিযোগ করে বলেন, ‘কাদের চেয়ারম্যানের নিকট ঘরের জন্য ৪৭ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। টাকা নিয়ে ঘর দিলেও ঘরের কাজে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করা হচ্ছে। যে ঘর নির্মাণ করছে, তা এক মাসের মধ্যে নষ্ট হয়ে পড়ে যাবে। নিয়মানুযায়ী ঘর নির্মাণ না করায় আমি জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’ অন্যদিকে, এ ঘটনায় ঘরের সুবিধাভোগী রিপন মণ্ডল ইউএনওর নিকট অভিযোগ করায় অভিযোগ তুলে নেওয়ার হুমকি প্রদান করছেন চেয়ারম্যানের লোকজনসহ স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার। এমনকি অভিযোগ না তুলে নিলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি প্রদান করা হয়েছে বলে জানান রিপন মণ্ডল। তিনি বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করছেন। শুধু বাঁকা ইউনিয়ন নয়, আন্দুলবাড়িয়া ও রায়পুর ইউনিয়নে ঘর দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ থাকলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। তা ছাড়া ঘর ভরাটের জন্য বিনা মূল্যে মাটি দেওয়ার কথা থাকলেও ঘরের সুবিধাভোগীদের নিকট মাটির টাকা ও বালুর টাকা নেওয়ারও অভিযোগ আছে। আর টাকা না দিলে ঘরের সামনে থেকে মাটি কেটে ঘর ভরাট করা হচ্ছে।
৪ নম্বর বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান বলেন, ‘আমি কারও ঘর দেওয়ার নাম করে টাকা গ্রহণ করিনি। আমার নামে যে অভিযোগ উঠেছে, তা মিথ্যা অভিযোগ। এ বিষয়ে আমি জানি না।’
জীবননগর উপজেলা পিআইও অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ ও ’২০ অর্থবছরে জীবননগর উপজেলায় ৫৩ জন অসহায় দরিদ্রদের মধ্যে টি-আর ঘর নির্মাণের বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। জীবননগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অফিসে গেলে তাঁকে অফিসে পাওয়া যায়নি। এমনকি অফিস সহকারী সাইফুল ইসলাম টগরকেও পাওয়া যায়নি। এরপর মুটোফোনে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ‘সব কিছু দেখা একার পক্ষে সম্ভব হয় না। তবে যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, আমি পরিদর্শন করব এবং কোনো অনিয়ম পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাঁকা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘর দেওয়ার নাম করে ৪৭ হাজার টাকা নেওয়ার একটি লিখিত অভিযোগ রয়েছে। এটা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা ছাড়া সরকারি নিয়মানুযায়ী এবং যে পরিমাণে অর্থ বরাদ্ধ আছে, সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে। তা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।