ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বজ্রপাতে মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০১৯
  • / ২৯৯ বার পড়া হয়েছে

যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে
বজ্রপাতে যেভাবে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, তাতে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এটি এক ধরনের দুর্যোগ হিসেবেই আবির্ভূত হয়েছে। যখন বজ্রপাতের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে, তখন এই বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, দেশে আট জেলায় বজ্রপাতে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে পাবনা বেড়া উপজেলায় একই পরিবারের তিনজনসহ মোট চারজন, ময়মনসিংহের তিন উপজেলায় চারজন, সুনামগঞ্জের তাহেরপুরে বাবা ও ছেলে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় তিনজন এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে, নেত্রকোনার কলমাকান্দায়, কিশোরগঞ্জের নিকলী ও শরীয়তপুরের নড়িয়ায় একজন করে নিহত হয়েছে। প্রসঙ্গত, আমরা উলেস্নখ করতে চাই, এর আগে মে ও জুন মাসে বজ্রপাতে সারাদেশে ১২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে বলেও জানা গিয়েছিল। এ ছাড়া তখন কিশোরগঞ্জ, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নওগাঁ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও টাঙ্গাইল জেলায় বজ্রপাতে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এমন বিষয় সামনে আসে। আমরা বলতে চাই, যখন বজ্রপাতে প্রাণহাণি ঘটেই চলেছে তখন এর ভয়াবহতা আমলে নেয়ার বিকল্প থাকতে পারে না। বলা দরকার, বিভিন্ন ধরনের কাজে বাইরে থাকায় বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল যে, ধানকাটার সময় ও বৃষ্টিতে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটেছে। মাঠে গরু আনতে গিয়ে এবং টিন ও খড়ের ঘরে অবস্থান ও ঘুমানোর সময় বজ্রাঘাতে বেশি মানুষ মারা গেছেন। বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় অজ্ঞতাবশত লম্বা গাছের নিচে আশ্রয় নেয়ার সময় গাছে বজ্রপাত হওয়ায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং যত দ্রম্নত সম্ভব সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তন, লম্বা গাছের সংখ্যা কমে যাওয়া, আকাশে কালো মেঘের পরিমাণ ও মেঘে মেঘে ঘর্ষণের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, যত্রতত্র মোবাইল ফোনের টাওয়ার বসানো এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণেই অস্বাভাবিকহারে বজ্রপাত বাড়ছে এমনটি আলোচনায় এসেছে। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার বজ্রপাতের ভয়াবহতাকে আমলে নেয়া এবং জনসাধারণের মধ্যে এর পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় সম্পর্কিত প্রচার-প্রচারণা চালানো। যারা ঘরের বাইরে ক্ষেতখামারে কাজ করেন তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। যে স্থান বা বস্ত যত উঁচু সে জায়গা মেঘের তত কাছাকাছি থাকায় সেখানে বজ্রপাতের আশঙ্কা তত বেশি থাকে, এ ছাড়া মৌসুমে ঘনকালো মেঘ দেখলেই সাবধান হতে হবে এবং বৃষ্টি শুরুর আগে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। মাঠের মধ্যে ফাঁকা জায়গায় থাকলে যদি বজ্রপাত হওয়ার অবস্থা তৈরি হয় তাহলে কানে আঙুল দিয়ে নিচু হয়ে বসে থাকতে হবে। গাড়িতে থাকা অবস্থায় বজ্রপাতের পরিস্থিতি তৈরি হলে গাড়ির মধ্যে থাকা নিরাপদ। এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে মানুষকে সচেতন করতে হবে। কেননা, যেভাবে বজ্রপাতের ভয়াবহতা বাড়ছে তাতে করে দ্রম্নত এই বিষয়ে উদ্যোগী না হলে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে থাকবে, যা কাম্য নয়। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা জরুরি। এর অংশ হিসেবে তালগাছের চারা রোপণে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য। মনে রাখা দরকার, দুযোর্গকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই- কিন্তু যথাযথ উদ্যোগ নিলে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা দ্রম্নত বজ্রপাতের ভয়াবহাকে সামনে রেখে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বজ্রপাতে মৃত্যু

আপলোড টাইম : ১০:০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০১৯

যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে
বজ্রপাতে যেভাবে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, তাতে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এটি এক ধরনের দুর্যোগ হিসেবেই আবির্ভূত হয়েছে। যখন বজ্রপাতের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে, তখন এই বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, দেশে আট জেলায় বজ্রপাতে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে পাবনা বেড়া উপজেলায় একই পরিবারের তিনজনসহ মোট চারজন, ময়মনসিংহের তিন উপজেলায় চারজন, সুনামগঞ্জের তাহেরপুরে বাবা ও ছেলে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় তিনজন এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে, নেত্রকোনার কলমাকান্দায়, কিশোরগঞ্জের নিকলী ও শরীয়তপুরের নড়িয়ায় একজন করে নিহত হয়েছে। প্রসঙ্গত, আমরা উলেস্নখ করতে চাই, এর আগে মে ও জুন মাসে বজ্রপাতে সারাদেশে ১২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে বলেও জানা গিয়েছিল। এ ছাড়া তখন কিশোরগঞ্জ, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নওগাঁ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও টাঙ্গাইল জেলায় বজ্রপাতে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এমন বিষয় সামনে আসে। আমরা বলতে চাই, যখন বজ্রপাতে প্রাণহাণি ঘটেই চলেছে তখন এর ভয়াবহতা আমলে নেয়ার বিকল্প থাকতে পারে না। বলা দরকার, বিভিন্ন ধরনের কাজে বাইরে থাকায় বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল যে, ধানকাটার সময় ও বৃষ্টিতে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটেছে। মাঠে গরু আনতে গিয়ে এবং টিন ও খড়ের ঘরে অবস্থান ও ঘুমানোর সময় বজ্রাঘাতে বেশি মানুষ মারা গেছেন। বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় অজ্ঞতাবশত লম্বা গাছের নিচে আশ্রয় নেয়ার সময় গাছে বজ্রপাত হওয়ায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং যত দ্রম্নত সম্ভব সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তন, লম্বা গাছের সংখ্যা কমে যাওয়া, আকাশে কালো মেঘের পরিমাণ ও মেঘে মেঘে ঘর্ষণের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, যত্রতত্র মোবাইল ফোনের টাওয়ার বসানো এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণেই অস্বাভাবিকহারে বজ্রপাত বাড়ছে এমনটি আলোচনায় এসেছে। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার বজ্রপাতের ভয়াবহতাকে আমলে নেয়া এবং জনসাধারণের মধ্যে এর পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় সম্পর্কিত প্রচার-প্রচারণা চালানো। যারা ঘরের বাইরে ক্ষেতখামারে কাজ করেন তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। যে স্থান বা বস্ত যত উঁচু সে জায়গা মেঘের তত কাছাকাছি থাকায় সেখানে বজ্রপাতের আশঙ্কা তত বেশি থাকে, এ ছাড়া মৌসুমে ঘনকালো মেঘ দেখলেই সাবধান হতে হবে এবং বৃষ্টি শুরুর আগে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। মাঠের মধ্যে ফাঁকা জায়গায় থাকলে যদি বজ্রপাত হওয়ার অবস্থা তৈরি হয় তাহলে কানে আঙুল দিয়ে নিচু হয়ে বসে থাকতে হবে। গাড়িতে থাকা অবস্থায় বজ্রপাতের পরিস্থিতি তৈরি হলে গাড়ির মধ্যে থাকা নিরাপদ। এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে মানুষকে সচেতন করতে হবে। কেননা, যেভাবে বজ্রপাতের ভয়াবহতা বাড়ছে তাতে করে দ্রম্নত এই বিষয়ে উদ্যোগী না হলে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে থাকবে, যা কাম্য নয়। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা জরুরি। এর অংশ হিসেবে তালগাছের চারা রোপণে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য। মনে রাখা দরকার, দুযোর্গকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই- কিন্তু যথাযথ উদ্যোগ নিলে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা দ্রম্নত বজ্রপাতের ভয়াবহাকে সামনে রেখে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।