ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী মুহিতুল ইসলাম আর নেই

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:৪০:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০১৬
  • / ৩৯২ বার পড়া হয়েছে

muhitul-islam+bangladesh_23233_1472119914সমীকরণ ডেস্ক: বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী এএফএম মুহিতুল ইসলাম আর নেই। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কেবিন ব্লকের আইসিইউতে  চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় বেলা পৌনে তিনটায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। বেশ কিছুদিন হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে ছিলেন মুহিতুল ইসলাম। চিকিৎসকরা জানান তিনি কিডনি, ফুসফুসের সংক্রামক  (নিউমোনিয়া) সহ মস্তিষ্কের রোগে ভুগছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর মুহিতুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবাণীতে প্রেসিডেন্ট বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারে মুহিতুল ইসলামের সাহসী ভূমিকা বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করবে। শোকবাণীতে প্রেসিডেন্ট মুহিতুল ইসলামের রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। মুহিতুল ইসলামের মৃত্যুতে শোকবাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার মৃত্যুতে আমরা আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ একজনকে হারালাম। তিনি বলেন, ১৫ই আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ছিলেন। ঘাতকদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য শিশু শেখ রাসেলকে তিনি লুকিয়ে রেখেছিলেন। তার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ঘাতকরা শেখ রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এদিকে মুহিতুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রমুখ। পারিবারিক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মুহিতুল ইসলাম কিডনির সমস্যা নিয়ে কিছুদিন আগে বিএসএমএমইউর নেফ্রোলজি বিভাগে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালের কেবিন ব্লকের আইসিইউতে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার উন্নতি হলে কেবিনে নেয়া হয়। এরপর আবারও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আবার তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানে ১০ই আগস্ট থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকার সময় তার রিসিপসনিস্ট কাম রেসিডেন্ট পিএ ছিলেন মুহিতুল। পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু হতাকাণ্ডের সময় তিনি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের ওই বাড়িতেই ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ওই বছরের ২রা অক্টোবর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা দায়ের করেন মুহিতুল ইসলাম। ১৯৯৮ সালের ৮ই নভেম্বর বিচারিক আদালত ওই মামলার রায়ে ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে হাইকোর্ট প্রথমে বিভক্ত রায় দিলে পরে তৃতীয় বেঞ্চে ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামি ২০০৭ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করে। বিচার প্রক্রিয়া শেষে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ইতিমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। তবে দণ্ডিত বেশ কয়েকজন এখনও বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী মুহিতুল ইসলাম আর নেই

আপলোড টাইম : ০১:৪০:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০১৬

muhitul-islam+bangladesh_23233_1472119914সমীকরণ ডেস্ক: বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী এএফএম মুহিতুল ইসলাম আর নেই। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কেবিন ব্লকের আইসিইউতে  চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় বেলা পৌনে তিনটায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। বেশ কিছুদিন হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে ছিলেন মুহিতুল ইসলাম। চিকিৎসকরা জানান তিনি কিডনি, ফুসফুসের সংক্রামক  (নিউমোনিয়া) সহ মস্তিষ্কের রোগে ভুগছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর মুহিতুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবাণীতে প্রেসিডেন্ট বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারে মুহিতুল ইসলামের সাহসী ভূমিকা বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করবে। শোকবাণীতে প্রেসিডেন্ট মুহিতুল ইসলামের রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। মুহিতুল ইসলামের মৃত্যুতে শোকবাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার মৃত্যুতে আমরা আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ একজনকে হারালাম। তিনি বলেন, ১৫ই আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ছিলেন। ঘাতকদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য শিশু শেখ রাসেলকে তিনি লুকিয়ে রেখেছিলেন। তার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ঘাতকরা শেখ রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এদিকে মুহিতুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রমুখ। পারিবারিক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মুহিতুল ইসলাম কিডনির সমস্যা নিয়ে কিছুদিন আগে বিএসএমএমইউর নেফ্রোলজি বিভাগে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালের কেবিন ব্লকের আইসিইউতে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার উন্নতি হলে কেবিনে নেয়া হয়। এরপর আবারও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আবার তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানে ১০ই আগস্ট থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকার সময় তার রিসিপসনিস্ট কাম রেসিডেন্ট পিএ ছিলেন মুহিতুল। পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু হতাকাণ্ডের সময় তিনি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের ওই বাড়িতেই ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ওই বছরের ২রা অক্টোবর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা দায়ের করেন মুহিতুল ইসলাম। ১৯৯৮ সালের ৮ই নভেম্বর বিচারিক আদালত ওই মামলার রায়ে ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে হাইকোর্ট প্রথমে বিভক্ত রায় দিলে পরে তৃতীয় বেঞ্চে ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামি ২০০৭ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করে। বিচার প্রক্রিয়া শেষে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ইতিমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। তবে দণ্ডিত বেশ কয়েকজন এখনও বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছে।