ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রাণ গেল ৫ জনের, অ্যাম্বুলেন্স কেটে লাশ উদ্ধার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:৫৩:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০২০
  • / ১১৫ বার পড়া হয়েছে

কুষ্টিয়ায় বীজ পরিবহনকারী ট্রাক ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষ
সমীকরণ প্রতিবেদন:
কুষ্টিয়ায় গতকাল সরকারি বীজ পরিবহনকারী ট্রাক ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষে অ্যাম্বুলেন্সের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাটি এতই গুরুতর ছিল যে, অ্যাম্বুলেন্স কেটে লাশ বের করতে হয়। কুষ্টিয়ায় ট্রাক ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষে ড্রাইভারসহ অ্যাম্বুলেন্সের পাঁচজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল বেলা ৩টার দিকে কুষ্টিয়ার ইবি থানাধীন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের লক্ষ্মীপুর এলাকায় এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় লাশগুলো উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে লাশ বের করতে ফায়ার সার্ভিসকে ভীষণ বেগ পেতে হয়। অ্যা¤ু^লেন্সের বিভিন্ন অংশ কেটে কেটে লাশগুলো বের করে আনা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অ্যাম্বুলেন্সটি মানসিক প্রতিবন্ধী এক নারী রোগীকে পাবনা মানসিক হাসপাতাল থেকে নিয়ে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লক্ষ্মীপাশা এলাকায় নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। সকালে ওই রোগীর স্বজনরা তাকে হাসপাতাল থেকে আনতে নড়াইল থেকে পাবনায় যায়। সেখান থেকে ফেরার পথেই এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতের সবাই নড়াইলের লোহাগড়ার লক্ষ্মীপাশার বাসিন্দা। নড়াইলের লোহাগড়ার লক্ষ্মীবাজারের বাসিন্দা মফিজের ছেলে বছরখানেক আগে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় পা হারান। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় মফিজের স্ত্রী মানসিক রোগীতে পরিণত হন এবং দুই মাস আগে তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার উন্নতি হলে তাকে ফিরিয়ে আনতে মফিজ উদ্দিন তার ছেলে ও দুই সম্বন্ধীকে সাথে নিয়ে পাবনায় যান। পরে রোগীকে নিয়ে ওই অ্যাম্বুলেন্সে তারা বাড়ি ফিরছিলেন। অ্যাম্বুলেন্সে ড্রাইভার, রোগীসহ মোট ছয়জন ছিলেন। এদের মধ্যে দুর্ঘটনায় পাঁচজনই মারা যান। বাকি একজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। পুলিশ লাশগুলো উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখে। নিহত একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি লোহাগড়া উপজেলার শফির উদ্দিনের ছেলে টিপু সুলতান (৪৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, অ্যাম্বুলেন্সটি বেপরোয়া গতিতে চলা অবস্থায় কুষ্টিয়া অভিমুখে আসা বিএডিসির সরকারি বীজ পরিবহনকারী ট্রাকের মুখোমুখি আঘাত করে। এতে অ্যাম্বুলেন্সটি একেবারে ট্রাকের সামনের অংশে গেঁথে যায়। এ সময় স্থানীয়রা ছুটে এসে ট্রাক থেকে অ্যাম্বুলেন্স বের করে আনলেও দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া অ্য্যাম্বুলেন্সের ভেতরে থাকা ড্রাইভারসহ যাত্রীদের বের করতে সক্ষম হয়নি। খবর পেয়ে কুষ্টিয়া থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে অ্যাম্বুলেন্সের বিভিন্ন অংশ কেটে যাত্রীদের লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পুলিশ ট্রাকটি আটক করে ইবি থানায় নিয়ে যায়। আহত একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় দীর্ঘ সময় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সেখানে সড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক গাড়ি আটকা পড়ে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

প্রাণ গেল ৫ জনের, অ্যাম্বুলেন্স কেটে লাশ উদ্ধার

আপলোড টাইম : ১২:৫৩:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০২০

কুষ্টিয়ায় বীজ পরিবহনকারী ট্রাক ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষ
সমীকরণ প্রতিবেদন:
কুষ্টিয়ায় গতকাল সরকারি বীজ পরিবহনকারী ট্রাক ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষে অ্যাম্বুলেন্সের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাটি এতই গুরুতর ছিল যে, অ্যাম্বুলেন্স কেটে লাশ বের করতে হয়। কুষ্টিয়ায় ট্রাক ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষে ড্রাইভারসহ অ্যাম্বুলেন্সের পাঁচজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল বেলা ৩টার দিকে কুষ্টিয়ার ইবি থানাধীন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের লক্ষ্মীপুর এলাকায় এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় লাশগুলো উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে লাশ বের করতে ফায়ার সার্ভিসকে ভীষণ বেগ পেতে হয়। অ্যা¤ু^লেন্সের বিভিন্ন অংশ কেটে কেটে লাশগুলো বের করে আনা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অ্যাম্বুলেন্সটি মানসিক প্রতিবন্ধী এক নারী রোগীকে পাবনা মানসিক হাসপাতাল থেকে নিয়ে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লক্ষ্মীপাশা এলাকায় নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। সকালে ওই রোগীর স্বজনরা তাকে হাসপাতাল থেকে আনতে নড়াইল থেকে পাবনায় যায়। সেখান থেকে ফেরার পথেই এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতের সবাই নড়াইলের লোহাগড়ার লক্ষ্মীপাশার বাসিন্দা। নড়াইলের লোহাগড়ার লক্ষ্মীবাজারের বাসিন্দা মফিজের ছেলে বছরখানেক আগে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় পা হারান। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় মফিজের স্ত্রী মানসিক রোগীতে পরিণত হন এবং দুই মাস আগে তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার উন্নতি হলে তাকে ফিরিয়ে আনতে মফিজ উদ্দিন তার ছেলে ও দুই সম্বন্ধীকে সাথে নিয়ে পাবনায় যান। পরে রোগীকে নিয়ে ওই অ্যাম্বুলেন্সে তারা বাড়ি ফিরছিলেন। অ্যাম্বুলেন্সে ড্রাইভার, রোগীসহ মোট ছয়জন ছিলেন। এদের মধ্যে দুর্ঘটনায় পাঁচজনই মারা যান। বাকি একজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। পুলিশ লাশগুলো উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখে। নিহত একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি লোহাগড়া উপজেলার শফির উদ্দিনের ছেলে টিপু সুলতান (৪৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, অ্যাম্বুলেন্সটি বেপরোয়া গতিতে চলা অবস্থায় কুষ্টিয়া অভিমুখে আসা বিএডিসির সরকারি বীজ পরিবহনকারী ট্রাকের মুখোমুখি আঘাত করে। এতে অ্যাম্বুলেন্সটি একেবারে ট্রাকের সামনের অংশে গেঁথে যায়। এ সময় স্থানীয়রা ছুটে এসে ট্রাক থেকে অ্যাম্বুলেন্স বের করে আনলেও দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া অ্য্যাম্বুলেন্সের ভেতরে থাকা ড্রাইভারসহ যাত্রীদের বের করতে সক্ষম হয়নি। খবর পেয়ে কুষ্টিয়া থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে অ্যাম্বুলেন্সের বিভিন্ন অংশ কেটে যাত্রীদের লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পুলিশ ট্রাকটি আটক করে ইবি থানায় নিয়ে যায়। আহত একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় দীর্ঘ সময় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সেখানে সড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক গাড়ি আটকা পড়ে।