ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা, ক্লিনিক সিলগালা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৩:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ মার্চ ২০২০
  • / ৩১৬ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গার ইউনাইটেড ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায়
আলমডাঙ্গা অফিস:
আলমডাঙ্গার ইউনাইটেড ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি ক্লিনিক সিলগালা করে দিয়েছে। গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাক্তার এহসানুল হক তন্ময়, আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হাদী জিয়াউদ্দিন আহম্মদের নেতৃত্বে আলমডাঙ্গা ইউনাইটেড ক্লিনিকে এই তদন্ত সম্পন্ন হয় এবং ক্লিনিক গিলগালা করে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়নের রায়পাড়া গ্রামের রহিদুল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা খাতুনের প্রসব বেদনা দেখা দিলে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গার ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। ক্লিনিক মালিক ডাক্তার নাজমুলের পরামর্শে রোগীকে ওই দিন বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সিজার অপারেশন করানো হয়। ডা. ইমরান হোসেন ও ক্লিনিকের নার্সরা এ সিজার অপারেশনে অংশ নেন। এ সময় ফাতেমা খাতুনের একটি পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু প্রসূতি মায়ের প্রেশার বেড়ে গেলে তিনি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর প্রেশার কমানোর জন্য ইনজেকশন পুশ করা হলে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কুষ্টিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কুষ্টিয়াতে নিয়ে গেলে ডাক্তার রোগীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে, রোগীর স্বজনদের দাবি, ওই ক্লিনিকেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত রোগীকে তারা তড়িঘড়ি করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়েছে। এ ঘটনায় রোগীর লাশ ফিরিয়ে এনে রাতে রোগীর স্বজনেরা ক্লিনিকের সামনে জড়ো হয়ে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর জন্য ডাক্তার ও ক্লিনিক কর্তৃক্ষের বিচার দাবি করেন। রাতে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এদিকে, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের দাবি কার্ডিয়াক সমস্যার কারণে রোগীর অবস্থার অবনতি দেখা দিলে তাঁকে কুষ্টিয়ায় রেফার্ড করা হয়। এ ঘটনায় লাশ নিয়ে রোগীর স্বজনদের বিক্ষোভের একপর্যায়ে ডাক্তার নাজমুল রাতে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় বিষয়টি আপস-রফা করেন। এ নিয়ে এলাকায় লোকজন ফুঁসে ওঠেন এবং তদন্তপূর্বক ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিচারের দাবি জানান।
তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদককে জানানো হয়, ‘তদন্তকালে আমরা দেখলাম অপারেশন থিয়েটার সন্তোষজনক নয়। এর পরিবেশ খুব খারাপ। অপারেশন করার সময় অ্যানাস্থেসিয়া ডাক্তার থাকে না, ফলে রোগীর যেকোনো সময় মৃত্যু হওয়ার সম্ভবনা থাকে। এসব কারণে ক্লিনিকের অবস্থা যতদিন ভালো না হয়, তত দিনের জন্য ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হলো।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গার ইউনাইটেড ক্লিনিকে বিরুদ্ধে সিজারিয়ানের পর প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় দৈনিক সময়ের সমীকরণ-এ গত শুক্রবার ‘সিজারিয়ানের পর প্রসূতির মৃত্যু, ক্লিনিক ঘেরাও’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা, ক্লিনিক সিলগালা

আপলোড টাইম : ১০:৫৩:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ মার্চ ২০২০

আলমডাঙ্গার ইউনাইটেড ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায়
আলমডাঙ্গা অফিস:
আলমডাঙ্গার ইউনাইটেড ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি ক্লিনিক সিলগালা করে দিয়েছে। গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাক্তার এহসানুল হক তন্ময়, আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হাদী জিয়াউদ্দিন আহম্মদের নেতৃত্বে আলমডাঙ্গা ইউনাইটেড ক্লিনিকে এই তদন্ত সম্পন্ন হয় এবং ক্লিনিক গিলগালা করে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়নের রায়পাড়া গ্রামের রহিদুল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা খাতুনের প্রসব বেদনা দেখা দিলে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গার ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। ক্লিনিক মালিক ডাক্তার নাজমুলের পরামর্শে রোগীকে ওই দিন বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সিজার অপারেশন করানো হয়। ডা. ইমরান হোসেন ও ক্লিনিকের নার্সরা এ সিজার অপারেশনে অংশ নেন। এ সময় ফাতেমা খাতুনের একটি পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু প্রসূতি মায়ের প্রেশার বেড়ে গেলে তিনি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর প্রেশার কমানোর জন্য ইনজেকশন পুশ করা হলে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কুষ্টিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কুষ্টিয়াতে নিয়ে গেলে ডাক্তার রোগীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে, রোগীর স্বজনদের দাবি, ওই ক্লিনিকেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত রোগীকে তারা তড়িঘড়ি করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়েছে। এ ঘটনায় রোগীর লাশ ফিরিয়ে এনে রাতে রোগীর স্বজনেরা ক্লিনিকের সামনে জড়ো হয়ে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর জন্য ডাক্তার ও ক্লিনিক কর্তৃক্ষের বিচার দাবি করেন। রাতে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এদিকে, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের দাবি কার্ডিয়াক সমস্যার কারণে রোগীর অবস্থার অবনতি দেখা দিলে তাঁকে কুষ্টিয়ায় রেফার্ড করা হয়। এ ঘটনায় লাশ নিয়ে রোগীর স্বজনদের বিক্ষোভের একপর্যায়ে ডাক্তার নাজমুল রাতে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় বিষয়টি আপস-রফা করেন। এ নিয়ে এলাকায় লোকজন ফুঁসে ওঠেন এবং তদন্তপূর্বক ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিচারের দাবি জানান।
তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদককে জানানো হয়, ‘তদন্তকালে আমরা দেখলাম অপারেশন থিয়েটার সন্তোষজনক নয়। এর পরিবেশ খুব খারাপ। অপারেশন করার সময় অ্যানাস্থেসিয়া ডাক্তার থাকে না, ফলে রোগীর যেকোনো সময় মৃত্যু হওয়ার সম্ভবনা থাকে। এসব কারণে ক্লিনিকের অবস্থা যতদিন ভালো না হয়, তত দিনের জন্য ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হলো।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গার ইউনাইটেড ক্লিনিকে বিরুদ্ধে সিজারিয়ানের পর প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় দৈনিক সময়ের সমীকরণ-এ গত শুক্রবার ‘সিজারিয়ানের পর প্রসূতির মৃত্যু, ক্লিনিক ঘেরাও’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়।