ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রধান আসামী মিন্টুসহ তিনজন কারাগারে : বাকীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:২৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ এপ্রিল ২০১৮
  • / ২৯৯ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ায় যুবদল নেতা লালনের জানাযায় হাজারো মানুষের ঢল
নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হাতে নিহত যুবদল নেতা লালন হোসেনের জানাযা শেষে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে। গত শনিবার (১৪ এপ্রিল) বাদ আছর ফার্মপাড়া খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত নামাযে জানাযায় দলমত নির্বিশেষে হাজারো মানুষের ঢল নামে। এতে অংশ নেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক এ্যাড. ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, খন্দকার আব্দুর জব্বার সোনা, মজিবুল হক মজু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য শরিফুজ্জামান শরিফ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌর কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মনি। আরও উপস্থিত ছিলেন এ্যাড. শামিম রেজা ডালিম, শহিদুল ইসলাম রতন, রাফাতউল্লাহ মহলদার, শফিকুল ইসলাম পিটু, আবুল কালাম আজাদ, মনিরুজ্জামান লিপ্টন, চুয়াডাঙ্গা জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, আবু রায়হান উদ্দীন, শরিফুল ইসলাম বিলাশ, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শরিফুজ্জামান সিজার, জেলা ছাত্র দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক এম এ তালহা, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আহ্বায়ক শাহজাহান খান, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মোমিনুর রহমান মোমিন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মঞ্জিরুল জাহিদ, আরিফ আহমেদ শিপলব প্রমূখ। পরে বেদনাবিধূর পরিবেশে রেলবাজার জান্নাতুল মওলা কবরস্থানে দাফন করা হয়। এরআগে শনিবার দুপুরের দিকে তার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে হত্যাকান্ডের মাত্র দুই ঘন্টার মাথায় প্রধান আসামী মিন্টু (২৫)সহ তার সহযোগি সাঈদ (২২) ও নাজমাকে (৪০) আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরদিন সকালে আসামীদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হলে বিজ্ঞ বিচারক তাদের তিনজনকে কারাগারে পাঠান। তবে বাকী আসামীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বলে জানিয়েছে নিহতের পরিবার ও স্বজনেরা। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত পোনে ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ায় একটি তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ওই এলাকার আনারুল ইসলামের ছেলে যুবদল নেতা লালন হোসেনকে হত্যা করা হয়। ঘটনা সূত্রে জানাযায়, নিহত লালনের জমিতে থাকা একটি নারিকেল গাছ কাটা নিয়ে একই এলাকার হাশেম আলীর ছেলে মিন্টু, পিন্টু ও টিপুদের সাথে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। লালনের জমিতে থাকা নারিকেল গাছটি মিন্টুদের টিনশেড ঘরের উপরে থাকায় নানা ধরণের সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। গাছটি কেটে নিতে অনেক দিন ধরেই তাগিদ দিয়ে আসছিল মিন্টুরা। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে পূর্বে কয়েক দফা গোলযোগও হয়। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য ঘটনার দিনগত রাতে পৌর কাউন্সিলর ও বিশিষ্ট জনদের আলোচনায় বসার কথা ছিল। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আগেই রাত পোনে ৮টার দিকে লালনকে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় আলামিন নামের একজন। তার কথা মত লালন বাড়ির সামনে বেরুতেই পূর্ব থেকে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে দাড়িয়ে থাকা মিন্টু, পিন্টু, টিপুসহ অন্তত ১০-১২ জন তার উপর হামলা চালায়। এ সময় প্রধান অভিযুক্ত মিন্টুর হাতে থাকা ধারালো বটির পাট (বটনে) দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। হামলাকারীদের হাত থেকে লালনকে বাঁচাতে স্থানীয় কয়েকজন এগিয়ে এলে তাদের কেও মারধর করা হয়। পরে রক্তাত্ত্ব অবস্থায় লালনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। চিকিৎসক জানান, মাথায় জোরালো আঘাতের কারণে ও প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া তার দেহের বিভিন্ন স্থানে ছোট খাটো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

প্রধান আসামী মিন্টুসহ তিনজন কারাগারে : বাকীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে

আপলোড টাইম : ০৭:২৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ এপ্রিল ২০১৮

চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ায় যুবদল নেতা লালনের জানাযায় হাজারো মানুষের ঢল
নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হাতে নিহত যুবদল নেতা লালন হোসেনের জানাযা শেষে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে। গত শনিবার (১৪ এপ্রিল) বাদ আছর ফার্মপাড়া খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত নামাযে জানাযায় দলমত নির্বিশেষে হাজারো মানুষের ঢল নামে। এতে অংশ নেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক এ্যাড. ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, খন্দকার আব্দুর জব্বার সোনা, মজিবুল হক মজু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য শরিফুজ্জামান শরিফ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌর কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মনি। আরও উপস্থিত ছিলেন এ্যাড. শামিম রেজা ডালিম, শহিদুল ইসলাম রতন, রাফাতউল্লাহ মহলদার, শফিকুল ইসলাম পিটু, আবুল কালাম আজাদ, মনিরুজ্জামান লিপ্টন, চুয়াডাঙ্গা জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, আবু রায়হান উদ্দীন, শরিফুল ইসলাম বিলাশ, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শরিফুজ্জামান সিজার, জেলা ছাত্র দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক এম এ তালহা, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আহ্বায়ক শাহজাহান খান, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মোমিনুর রহমান মোমিন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মঞ্জিরুল জাহিদ, আরিফ আহমেদ শিপলব প্রমূখ। পরে বেদনাবিধূর পরিবেশে রেলবাজার জান্নাতুল মওলা কবরস্থানে দাফন করা হয়। এরআগে শনিবার দুপুরের দিকে তার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে হত্যাকান্ডের মাত্র দুই ঘন্টার মাথায় প্রধান আসামী মিন্টু (২৫)সহ তার সহযোগি সাঈদ (২২) ও নাজমাকে (৪০) আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরদিন সকালে আসামীদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হলে বিজ্ঞ বিচারক তাদের তিনজনকে কারাগারে পাঠান। তবে বাকী আসামীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বলে জানিয়েছে নিহতের পরিবার ও স্বজনেরা। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত পোনে ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ায় একটি তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ওই এলাকার আনারুল ইসলামের ছেলে যুবদল নেতা লালন হোসেনকে হত্যা করা হয়। ঘটনা সূত্রে জানাযায়, নিহত লালনের জমিতে থাকা একটি নারিকেল গাছ কাটা নিয়ে একই এলাকার হাশেম আলীর ছেলে মিন্টু, পিন্টু ও টিপুদের সাথে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। লালনের জমিতে থাকা নারিকেল গাছটি মিন্টুদের টিনশেড ঘরের উপরে থাকায় নানা ধরণের সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। গাছটি কেটে নিতে অনেক দিন ধরেই তাগিদ দিয়ে আসছিল মিন্টুরা। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে পূর্বে কয়েক দফা গোলযোগও হয়। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য ঘটনার দিনগত রাতে পৌর কাউন্সিলর ও বিশিষ্ট জনদের আলোচনায় বসার কথা ছিল। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আগেই রাত পোনে ৮টার দিকে লালনকে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় আলামিন নামের একজন। তার কথা মত লালন বাড়ির সামনে বেরুতেই পূর্ব থেকে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে দাড়িয়ে থাকা মিন্টু, পিন্টু, টিপুসহ অন্তত ১০-১২ জন তার উপর হামলা চালায়। এ সময় প্রধান অভিযুক্ত মিন্টুর হাতে থাকা ধারালো বটির পাট (বটনে) দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। হামলাকারীদের হাত থেকে লালনকে বাঁচাতে স্থানীয় কয়েকজন এগিয়ে এলে তাদের কেও মারধর করা হয়। পরে রক্তাত্ত্ব অবস্থায় লালনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। চিকিৎসক জানান, মাথায় জোরালো আঘাতের কারণে ও প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া তার দেহের বিভিন্ন স্থানে ছোট খাটো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।