ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রথম দিন শেষে সমানে সমান দুই দল

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৪৪:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • / ৪০৫ বার পড়া হয়েছে

খেলাধুলা ডেস্ক: প্রথম দিনটা পুরোপুরি নিজেদের করে নেওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া দুই দলের সামনেই। কিন্তু দিন শেষে কোন দল এগিয়ে, সেটি সোজাসাপটা বলে দেওয়া যাচ্ছে না। নাথান লায়নের আরও একটি ৫ উইকেট-কীর্তিতে অস্ট্রেলিয়া তুলে নিয়েছে বাংলাদেশের ৬ উইকেট। বাংলাদেশও মুশফিকুর রহিম আর সাব্বির রহমানের ব্যাটে তুলেছে ২৫৩ রান। অস্ট্রেলিয়া যদি আর একটি উইকেট নিত অথবা সাব্বিরের উইকেটটি যদি অক্ষত থাকত, তাহলে অন্য কিছু হলেও হতে পারত। আপাতত বলা যেতে পারে চট্টগ্রাম টেস্টে দুই দলের অবস্থানই সমান। কাল দ্বিতীয় দিনের সকাল তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই জায়গা থেকে ঘটে যেতে পারে অনেক কিছু। বাংলাদেশ নিজেদের সংগ্রহটাকে আরও বাড়িয়ে নিতে পারে, অস্ট্রেলিয়াও বাংলাদেশকে গুটিয়ে দিতে পারে দ্রুতই। আপাতত মুশফিক-সাব্বিরের ওই জুটিটাকে ধন্যবাদ দিয়ে দেওয়া যাক। ১১৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সামনে যখন দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা, ঠিক তখনই দাঁড়িয়ে যান মুশফিক-সাব্বির। এ জুটি স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ১০৫ রান। সাব্বির তাঁর স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু সেটা হিসাব কষে। মুশফিক তো ছিলেন বরাবরই ধীর-স্থির। সাব্বির ৬৬ রান করে লায়নের বলে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার না হলে বাংলাদেশের সংগ্রহটা আরও বাড়তে পারত। মুশফিক অবশ্য ১৪৯ বল খেলে ৬২ রান করে দিনটা পার করেই এসেছেন। সাব্বিরের বিদায়ের পর নাসির হোসেনের অপরাজিত ১৯ রানে (৩৩ বলে) বাংলাদেশ দেখছে মোটামুটি বড় সংগ্রহের স্বপ্ন। অথচ সকালটা অন্য রকম ছিল বাংলাদেশের জন্য। লায়নের ঘূর্ণিতে দলীয় ১৩ রানের মাথায় তামিম ইকবাল আর ২১ রানে ইমরুল কায়েস এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়লে শুরুটা ছিল বিপর্যয়কর। ওই লায়ন পরে তুলে নেন সৌম্য সরকার (৩৩) আর মুমিনুল হকের (৩১) দুটি উইকেট। তাঁরাও এলবিডব্লু। এ দিয়েই একটি রেকর্ডই গড়ে ফেললেন এই অফস্পিনার। টেস্ট ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে প্রতিপক্ষের প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লু  করলেন লায়ন। এমন একটা পরিস্থিতিতে সাকিব আল হাসানের ওপর ভরসা ছিল। তিনি বেশ খেলছিলেনও। ২৪ রান করে অ্যাশটন অ্যাগারের বলে উইকেটের পেছনে ম্যাথু ওয়েডকে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন তিনি। ১১৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন ধুঁকছে। আউট হওয়ার আগে অধিনায়ক মুশফিকের সঙ্গে ৪৯ রানের জুটি গড়েছিলেন। সাকিবকে হারিয়ে চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে যখন রাজ্যের আক্ষেপ, মুশফিক সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন ঠিক সেই সময়। সাব্বিরও তাঁকে সঙ্গ দিলেন। রান তোলায় মুশফিকের চেয়ে এগিয়েও ছিলেন। তবে শেষ বিকেলে লায়নের পঞ্চম উইকেট হয়ে হয়েছেন হরিষে-বিষাদ। ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের স্পিনারদের হাতে নাকাল হতে দেখেই অস্ট্রেলিয়া নিজেদের একাদশ সাজিয়েছিল একজন পেসারকে নিয়ে। ১৯৭৮ সালের পর এমনটা এই প্রথমই। ১৯৩৮ সালের পর এই প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসেই স্পিন দিয়ে শুরু করেছিল বোলিং আক্রমণ। দিন শেষে নিজেদের পরিকল্পনাটা কাজে আসায় খুশি হতেই পারেন কোচ ড্যারেন লেম্যান। তবে দিন শেষে চিন্তিত তিনি হবেন। মুশফিক-নাসিরের জুটিটা বিচ্ছিন্ন না করা পর্যন্ত চট্টগ্রাম টেস্টের নিয়ন্ত্রণটা যে অস্ট্রেলিয়ার হাতে উঠছে না কিছুতেই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

প্রথম দিন শেষে সমানে সমান দুই দল

আপলোড টাইম : ০৭:৪৪:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

খেলাধুলা ডেস্ক: প্রথম দিনটা পুরোপুরি নিজেদের করে নেওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া দুই দলের সামনেই। কিন্তু দিন শেষে কোন দল এগিয়ে, সেটি সোজাসাপটা বলে দেওয়া যাচ্ছে না। নাথান লায়নের আরও একটি ৫ উইকেট-কীর্তিতে অস্ট্রেলিয়া তুলে নিয়েছে বাংলাদেশের ৬ উইকেট। বাংলাদেশও মুশফিকুর রহিম আর সাব্বির রহমানের ব্যাটে তুলেছে ২৫৩ রান। অস্ট্রেলিয়া যদি আর একটি উইকেট নিত অথবা সাব্বিরের উইকেটটি যদি অক্ষত থাকত, তাহলে অন্য কিছু হলেও হতে পারত। আপাতত বলা যেতে পারে চট্টগ্রাম টেস্টে দুই দলের অবস্থানই সমান। কাল দ্বিতীয় দিনের সকাল তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই জায়গা থেকে ঘটে যেতে পারে অনেক কিছু। বাংলাদেশ নিজেদের সংগ্রহটাকে আরও বাড়িয়ে নিতে পারে, অস্ট্রেলিয়াও বাংলাদেশকে গুটিয়ে দিতে পারে দ্রুতই। আপাতত মুশফিক-সাব্বিরের ওই জুটিটাকে ধন্যবাদ দিয়ে দেওয়া যাক। ১১৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সামনে যখন দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা, ঠিক তখনই দাঁড়িয়ে যান মুশফিক-সাব্বির। এ জুটি স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ১০৫ রান। সাব্বির তাঁর স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু সেটা হিসাব কষে। মুশফিক তো ছিলেন বরাবরই ধীর-স্থির। সাব্বির ৬৬ রান করে লায়নের বলে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার না হলে বাংলাদেশের সংগ্রহটা আরও বাড়তে পারত। মুশফিক অবশ্য ১৪৯ বল খেলে ৬২ রান করে দিনটা পার করেই এসেছেন। সাব্বিরের বিদায়ের পর নাসির হোসেনের অপরাজিত ১৯ রানে (৩৩ বলে) বাংলাদেশ দেখছে মোটামুটি বড় সংগ্রহের স্বপ্ন। অথচ সকালটা অন্য রকম ছিল বাংলাদেশের জন্য। লায়নের ঘূর্ণিতে দলীয় ১৩ রানের মাথায় তামিম ইকবাল আর ২১ রানে ইমরুল কায়েস এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়লে শুরুটা ছিল বিপর্যয়কর। ওই লায়ন পরে তুলে নেন সৌম্য সরকার (৩৩) আর মুমিনুল হকের (৩১) দুটি উইকেট। তাঁরাও এলবিডব্লু। এ দিয়েই একটি রেকর্ডই গড়ে ফেললেন এই অফস্পিনার। টেস্ট ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে প্রতিপক্ষের প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লু  করলেন লায়ন। এমন একটা পরিস্থিতিতে সাকিব আল হাসানের ওপর ভরসা ছিল। তিনি বেশ খেলছিলেনও। ২৪ রান করে অ্যাশটন অ্যাগারের বলে উইকেটের পেছনে ম্যাথু ওয়েডকে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন তিনি। ১১৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন ধুঁকছে। আউট হওয়ার আগে অধিনায়ক মুশফিকের সঙ্গে ৪৯ রানের জুটি গড়েছিলেন। সাকিবকে হারিয়ে চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে যখন রাজ্যের আক্ষেপ, মুশফিক সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন ঠিক সেই সময়। সাব্বিরও তাঁকে সঙ্গ দিলেন। রান তোলায় মুশফিকের চেয়ে এগিয়েও ছিলেন। তবে শেষ বিকেলে লায়নের পঞ্চম উইকেট হয়ে হয়েছেন হরিষে-বিষাদ। ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের স্পিনারদের হাতে নাকাল হতে দেখেই অস্ট্রেলিয়া নিজেদের একাদশ সাজিয়েছিল একজন পেসারকে নিয়ে। ১৯৭৮ সালের পর এমনটা এই প্রথমই। ১৯৩৮ সালের পর এই প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসেই স্পিন দিয়ে শুরু করেছিল বোলিং আক্রমণ। দিন শেষে নিজেদের পরিকল্পনাটা কাজে আসায় খুশি হতেই পারেন কোচ ড্যারেন লেম্যান। তবে দিন শেষে চিন্তিত তিনি হবেন। মুশফিক-নাসিরের জুটিটা বিচ্ছিন্ন না করা পর্যন্ত চট্টগ্রাম টেস্টের নিয়ন্ত্রণটা যে অস্ট্রেলিয়ার হাতে উঠছে না কিছুতেই।