ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্যারালাইসিসের আশঙ্কায় খালেদা জিয়া, হতে পারেন অন্ধ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৬:১১:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৮
  • / ৪২৮ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ ডেস্ক: এখনই যথাযথ সুচিকিৎসা না পেলে প্যারালাইজড হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারেন কারাগারে বন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এমনকি তিনি অন্ধও হয়ে যেতে পারেন। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তারা হলেন- নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াহিদুর রহমান, অর্থপেডিকস বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. সিরাজ উদ্দিন আহমেদ ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. আবদুল কুদ্দুস। গতকাল শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা প্রত্যেকেই দাবি করেন, কারাগারে খালেদা জিয়াকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। তার বয়স এবং রোগের ভয়ংকর অবনতির ফলে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হলে বিশেষায়িত হাসপাতালে নিতে হবে।
নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াহিদুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, খালেদা জিয়ার এখন বেশি সমস্যা হচ্ছে ঘাড়ের হাড় ক্ষয়। এটি ক্ষয় হয়ে নার্ভটা চাপা পড়ে গেছে। ব্রেন থেকে যে নার্ভগুলো ঘাড় দিয়ে হাড়ের দিকে যায়, সেই নার্ভগুলো চাপা পড়ে গেছে। এতে তার বাম হাতের শক্তি কমে যাচ্ছে। তিনি বাম হাতে কিছুই ধরে রাখতে পারছেন না। প্রচ- ব্যথা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার হাতের আঙুলগুলো ফুলে গেছে। আগে থেকে তার এ সমস্যা। তাছাড়া তার কোমরের হাড়ও ক্ষয় হয়ে সেখানে যে স্পাইনাল কড আছে সেটাও চাপা পড়ে গেছে। এই হাড় অনেক শীর্ণ হয়ে গেছে। এ কারণে তিনি এখান থেকে ওখানে হেঁটে যেতে পারেন না। এসব সমস্যার কারণে যদি ঠিকমতো চিকিৎসা না হয় তাহলে তার প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে। প্র¯্রাব-পায়খানার কন্ট্রোল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তার হাত-পা অবশ হয়ে যেতে পারে। এসব কারণে আমাদের মনে হয়েছে, তার যে চিকিৎসা দরকার তা কোনভাবেই কারাগারে সম্ভব নয়।
অর্থোপেডিকস বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. সিরাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি বহুদিন থেকে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করি। তার স্বজনরা যারা দেখা করতে গেছেন, তাদের কাছে শুনেছি, তিনি হাঁটতে পারেন না। এর কারণ, তার পায়ের হাড় ক্ষয় হয়ে গেছে। তাকে দুইজন ধরিয়ে হাঁটা-চলা করান। তার দুই হাঁটুর অবস্থা করুণ। এগুলোর চিকিৎসা করতে হলে ফিজিওথেরাপি এবং ভালো পরিবেশে দরকার-যা কারাগারে সম্ভব নয়। যদি এ অবস্থা তাকে রেখে দেওয়া হয় তাহলে তিনি কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলবেন।
চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. আবদুল কুদ্দুস বলেন, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে তার চোখে অপারেশন করা হয়। তার চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়ার রোগ আছে। আমরা জেনেছি খালেদা জিয়ার চোখ লাল হয়ে গেছে এবং প্রচ- ব্যথা হচ্ছে। ঠিকমত তাকাতে পারছেন না। তার সুচিকিৎসা করানো না হলে চোখের কর্নিয়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তিনি অন্ধ হয়ে যেতে পারেন।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদ-ের পর খালেদা জিয়াকে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে একটি কক্ষে নেয়া হয়। গত ২৯ মার্চ তার অসুস্থতার কারণে ঢাকার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি দল তাকে কারাগারে পরীক্ষা করে। ১ এপ্রিল চিকিৎসায় গঠন হয় মেডিকেল বোর্ড। আর ৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে এনে বেগম জিয়ার বেশ কিছু এক্সরে করানো হয়। বিএনপি তাকে ঢাকার বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেডে ভর্তি করার দাবি করছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

প্যারালাইসিসের আশঙ্কায় খালেদা জিয়া, হতে পারেন অন্ধ!

আপলোড টাইম : ০৬:১১:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৮

সমীকরণ ডেস্ক: এখনই যথাযথ সুচিকিৎসা না পেলে প্যারালাইজড হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারেন কারাগারে বন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এমনকি তিনি অন্ধও হয়ে যেতে পারেন। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তারা হলেন- নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াহিদুর রহমান, অর্থপেডিকস বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. সিরাজ উদ্দিন আহমেদ ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. আবদুল কুদ্দুস। গতকাল শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা প্রত্যেকেই দাবি করেন, কারাগারে খালেদা জিয়াকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। তার বয়স এবং রোগের ভয়ংকর অবনতির ফলে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হলে বিশেষায়িত হাসপাতালে নিতে হবে।
নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াহিদুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, খালেদা জিয়ার এখন বেশি সমস্যা হচ্ছে ঘাড়ের হাড় ক্ষয়। এটি ক্ষয় হয়ে নার্ভটা চাপা পড়ে গেছে। ব্রেন থেকে যে নার্ভগুলো ঘাড় দিয়ে হাড়ের দিকে যায়, সেই নার্ভগুলো চাপা পড়ে গেছে। এতে তার বাম হাতের শক্তি কমে যাচ্ছে। তিনি বাম হাতে কিছুই ধরে রাখতে পারছেন না। প্রচ- ব্যথা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার হাতের আঙুলগুলো ফুলে গেছে। আগে থেকে তার এ সমস্যা। তাছাড়া তার কোমরের হাড়ও ক্ষয় হয়ে সেখানে যে স্পাইনাল কড আছে সেটাও চাপা পড়ে গেছে। এই হাড় অনেক শীর্ণ হয়ে গেছে। এ কারণে তিনি এখান থেকে ওখানে হেঁটে যেতে পারেন না। এসব সমস্যার কারণে যদি ঠিকমতো চিকিৎসা না হয় তাহলে তার প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে। প্র¯্রাব-পায়খানার কন্ট্রোল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তার হাত-পা অবশ হয়ে যেতে পারে। এসব কারণে আমাদের মনে হয়েছে, তার যে চিকিৎসা দরকার তা কোনভাবেই কারাগারে সম্ভব নয়।
অর্থোপেডিকস বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. সিরাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি বহুদিন থেকে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করি। তার স্বজনরা যারা দেখা করতে গেছেন, তাদের কাছে শুনেছি, তিনি হাঁটতে পারেন না। এর কারণ, তার পায়ের হাড় ক্ষয় হয়ে গেছে। তাকে দুইজন ধরিয়ে হাঁটা-চলা করান। তার দুই হাঁটুর অবস্থা করুণ। এগুলোর চিকিৎসা করতে হলে ফিজিওথেরাপি এবং ভালো পরিবেশে দরকার-যা কারাগারে সম্ভব নয়। যদি এ অবস্থা তাকে রেখে দেওয়া হয় তাহলে তিনি কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলবেন।
চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. আবদুল কুদ্দুস বলেন, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে তার চোখে অপারেশন করা হয়। তার চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়ার রোগ আছে। আমরা জেনেছি খালেদা জিয়ার চোখ লাল হয়ে গেছে এবং প্রচ- ব্যথা হচ্ছে। ঠিকমত তাকাতে পারছেন না। তার সুচিকিৎসা করানো না হলে চোখের কর্নিয়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তিনি অন্ধ হয়ে যেতে পারেন।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদ-ের পর খালেদা জিয়াকে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে একটি কক্ষে নেয়া হয়। গত ২৯ মার্চ তার অসুস্থতার কারণে ঢাকার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি দল তাকে কারাগারে পরীক্ষা করে। ১ এপ্রিল চিকিৎসায় গঠন হয় মেডিকেল বোর্ড। আর ৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে এনে বেগম জিয়ার বেশ কিছু এক্সরে করানো হয়। বিএনপি তাকে ঢাকার বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেডে ভর্তি করার দাবি করছে।