ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পুলিশ সুপারকে ব্যবসায়ী মহলের সাধুবাদ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩৬:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জুন ২০২০
  • / ১৬৮ বার পড়া হয়েছে

হিজলগাড়ী বাজার কমিটি নিয়ে মৌন দ্বন্দ্বের অবসান
প্রতিবেদক, হিজলগাড়ী:
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জাহিদের হস্তক্ষেপে অবশেষে বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নের হিজলগাড়ী বাজার পরিচালনা কমিটি নিয়ে বেশ কিছু দিন যাবত চলে আসা দুপক্ষের মৌন দ্বন্দ্বের সমাধান হয়েছে। সর্বসম্মতিক্রমে কার্যকর করা হয়েছে আহ্বায়ক কমিটি। পরবর্তীতে এ কমিটির সার্বিক তত্বাবধায়নে ব্যবসায়ীদের নিয়ে নির্বাচনের মাধ্যম নতুন কমিটি গঠিত হবে। বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন নির্বাচনের মাধ্যমে বাজার পরিচালনা কমিটি গঠন দীর্ঘদিন পর হলেও বাস্তবে রূপ পাওয়ায় পুলিশ সুপারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ব্যবসায়ী মহল।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হিজলগাড়ী বাজার দীর্ঘদিন যাবত ব্যবসায়ীদের মতামতের ভিত্তিতে দুই বছর মেয়াদী করে কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছিল। এই বছরের জানুয়ারি মাসে কমিটির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় কমিটি ভেঙে নতুন করে কমিটি গঠনের জন্য বাজারের ব্যবসায়ীরা চাল পট্টিতে একত্রিত হয়। সেখানে পূর্বের কমিটি ভেঙে নতুন করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। আহ্বায়ক কমিটি পুনরায় ব্যবসায়ীদের একত্রিত করলে কমিটিতে আসা নিয়ে দুপক্ষের মধ্য উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আহ্বায়ক কমিটি ও বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের সর্বসম্মতিক্রমে মীর মফিজ উদ্দিনকে পুনরায় সভাপতি ও সাইফুল আজম মিন্টুকে নতুন করে সেক্রেটারি মনোনীত করে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে ৪ মাস যাবত বাজার পরিচালিত হয়ে আসছিল। শুরু থেকেই এই কমিটির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা না গেলেও মনে মনে সাবেক সেক্রেটারি মতিয়ার পক্ষের লোকজনের মধ্যে মৌন দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই অংশ হিসেবে হঠাৎ করেই গত শনিবার সকালে বর্তমান কমিটির ওপর অনাস্থা জানিয়ে বাজারের ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেনকে সভাপতি, ইউসুফ রানাকে সেক্রেটারি করে ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়েছে মর্মে মাইকিং করে ব্যবসায়ীদের জানানো হয়। এর ঘণ্টাখানেক পরেই বাজারের ব্যবসায়ী নুহু নবী সভাপতি, সামসুল সেক্রেটারি ও রাশেদুল ইসলাম ক্যাশিয়ার দাবি করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত করা হয়েছে বলে মাইকিং করতে থাকে। তিন পক্ষের মাইকিং হওয়ার পর বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক শুরু হয়। দীর্ঘদিন যাবত কমিটি নিয়ে চলে আসা মৌন দ্বন্দ্বে সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে এমন শঙ্কায় শঙ্কিত হয়ে পড়ে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী।
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক তিন পক্ষকে ডেকে সুষ্ঠু সমাধানের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নিদের্শ প্রদান করেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জিহাদ ফকরুল আলম খাঁন বাজারের তিন পক্ষকে সদর থানায় ডেকে তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে বাজারের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সকল কমিটি বিলুপ্তি করেন। সকল কমিটি বিলুপ্তি করে বাজার পরিচালনার জন্য কোনো মতামত কিংবা প্রভাব প্রতিপত্তির জোরে কমিটি গঠন করা যাবে না জানিয়ে দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করার জন্য হিজলগাড়ী ক্যাম্প ইনচার্জকে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দেয়। এই কমিটি নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত বাজার পরিচালনার দায়িত্ব পালন ও নির্বাচনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপারের বিচক্ষণতায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলমান মৌন দ্বন্দ্বের অবসান ও দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন নির্বাচনের মাধ্যমে বাজার পরিচালনা কমিটি গঠন দীর্ঘদিন পর হলেও বাস্তবে রুপ পাওয়ায় পুলিশ সুপারকে সাধুবাদ জানিয়েছে ব্যবসায়ী মহল।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পুলিশ সুপারকে ব্যবসায়ী মহলের সাধুবাদ

আপলোড টাইম : ০৯:৩৬:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জুন ২০২০

হিজলগাড়ী বাজার কমিটি নিয়ে মৌন দ্বন্দ্বের অবসান
প্রতিবেদক, হিজলগাড়ী:
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জাহিদের হস্তক্ষেপে অবশেষে বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নের হিজলগাড়ী বাজার পরিচালনা কমিটি নিয়ে বেশ কিছু দিন যাবত চলে আসা দুপক্ষের মৌন দ্বন্দ্বের সমাধান হয়েছে। সর্বসম্মতিক্রমে কার্যকর করা হয়েছে আহ্বায়ক কমিটি। পরবর্তীতে এ কমিটির সার্বিক তত্বাবধায়নে ব্যবসায়ীদের নিয়ে নির্বাচনের মাধ্যম নতুন কমিটি গঠিত হবে। বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন নির্বাচনের মাধ্যমে বাজার পরিচালনা কমিটি গঠন দীর্ঘদিন পর হলেও বাস্তবে রূপ পাওয়ায় পুলিশ সুপারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ব্যবসায়ী মহল।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হিজলগাড়ী বাজার দীর্ঘদিন যাবত ব্যবসায়ীদের মতামতের ভিত্তিতে দুই বছর মেয়াদী করে কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছিল। এই বছরের জানুয়ারি মাসে কমিটির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় কমিটি ভেঙে নতুন করে কমিটি গঠনের জন্য বাজারের ব্যবসায়ীরা চাল পট্টিতে একত্রিত হয়। সেখানে পূর্বের কমিটি ভেঙে নতুন করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। আহ্বায়ক কমিটি পুনরায় ব্যবসায়ীদের একত্রিত করলে কমিটিতে আসা নিয়ে দুপক্ষের মধ্য উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আহ্বায়ক কমিটি ও বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের সর্বসম্মতিক্রমে মীর মফিজ উদ্দিনকে পুনরায় সভাপতি ও সাইফুল আজম মিন্টুকে নতুন করে সেক্রেটারি মনোনীত করে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে ৪ মাস যাবত বাজার পরিচালিত হয়ে আসছিল। শুরু থেকেই এই কমিটির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা না গেলেও মনে মনে সাবেক সেক্রেটারি মতিয়ার পক্ষের লোকজনের মধ্যে মৌন দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই অংশ হিসেবে হঠাৎ করেই গত শনিবার সকালে বর্তমান কমিটির ওপর অনাস্থা জানিয়ে বাজারের ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেনকে সভাপতি, ইউসুফ রানাকে সেক্রেটারি করে ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়েছে মর্মে মাইকিং করে ব্যবসায়ীদের জানানো হয়। এর ঘণ্টাখানেক পরেই বাজারের ব্যবসায়ী নুহু নবী সভাপতি, সামসুল সেক্রেটারি ও রাশেদুল ইসলাম ক্যাশিয়ার দাবি করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত করা হয়েছে বলে মাইকিং করতে থাকে। তিন পক্ষের মাইকিং হওয়ার পর বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক শুরু হয়। দীর্ঘদিন যাবত কমিটি নিয়ে চলে আসা মৌন দ্বন্দ্বে সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে এমন শঙ্কায় শঙ্কিত হয়ে পড়ে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী।
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক তিন পক্ষকে ডেকে সুষ্ঠু সমাধানের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নিদের্শ প্রদান করেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জিহাদ ফকরুল আলম খাঁন বাজারের তিন পক্ষকে সদর থানায় ডেকে তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে বাজারের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সকল কমিটি বিলুপ্তি করেন। সকল কমিটি বিলুপ্তি করে বাজার পরিচালনার জন্য কোনো মতামত কিংবা প্রভাব প্রতিপত্তির জোরে কমিটি গঠন করা যাবে না জানিয়ে দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করার জন্য হিজলগাড়ী ক্যাম্প ইনচার্জকে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দেয়। এই কমিটি নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত বাজার পরিচালনার দায়িত্ব পালন ও নির্বাচনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপারের বিচক্ষণতায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলমান মৌন দ্বন্দ্বের অবসান ও দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন নির্বাচনের মাধ্যমে বাজার পরিচালনা কমিটি গঠন দীর্ঘদিন পর হলেও বাস্তবে রুপ পাওয়ায় পুলিশ সুপারকে সাধুবাদ জানিয়েছে ব্যবসায়ী মহল।