ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পুলিশ বাহিনী আজ দক্ষতায়-বিজ্ঞতায় অনন্য অবস্থানে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৬:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ মার্চ ২০২০
  • / ২২৯ বার পড়া হয়েছে

দর্শনাবাসীর বহু দিনের প্রতীক্ষিত থানার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন

মাদকবিরোধী সমাবেশে ৯০ জন মাদক ব্যবসায়ীর আত্মসর্ম্পন
মেহেরাব্বিন সানভী/ওয়াসিম রয়েল:
নবঘোষিত দর্শনা থানার উদ্বোধন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। গতকাল শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি দর্শনাবাসীর বহু দিনের প্রতিক্ষীত এ থানার উদ্বোধন করেন। এদিন সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তিনি বেলা পৌনে ১১টায় যশোর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। সড়ক পথে দর্শনা কেরু এন্ড কোম্পানীর অতিথি ভবনে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে দর্শনা কেরু কোম্পানির ডিস্টিলারি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি একটি বৃক্ষরোপণ করেন সেখানে। বেলা তিনটায় দর্শনা থানায় পৌঁছান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এমপি। থানার প্রবেশ ফটকে মন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম ও দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান। থানা প্রাঙ্গণে মন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল। রিমোট টিপে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মকমলের লাল কাপড়ে ঢাকা দর্শনা থানার ফলক উন্মোচন করেন মন্ত্রী। ফলক উন্মোচন শেষে নতুন থানার কার্যক্রমে সফলতা, দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। এ সময় শ্বেত কপোত অবমুক্তকরণ ও একগুচ্ছ রঙিন বেলুন ওড়ানো হয়।
পরে থানা উদ্বোধন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের আয়োজনে দর্শনা সরকারি কলেজ মাঠে জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী এক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। এ সময় তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বাংলাদেশকে বদলে দিবেন। বাংলাদেশ কী পর্যায়ে ছিল, সবাই আপনারা যানেন। খাদ্য ঘাটতি, বিদ্যুৎ ঘাটতি, শিক্ষায় ২০০১ সালে যে হার রেখে গিয়েছিলাম, তার থেকে নামতেই থাকছিল হার। সেই জায়গা থেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি বদলে দিবেন। তিনি যথার্থভাবেই বদলে দিয়েছেন বলেই আমরা একটি সম্ভাবনাময় রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি। অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। এ দেশের মানুষ এখন বিশ্বাস করে, বঙ্গবন্ধুর রক্ত ধমনিতে বয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই পারবেন এ দেশের উন্নয়ন করতে। প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলেছিলেন, আজকে বাংলাদেশ রোল মডেল হয়ে গেছে নারীর ক্ষমতায়নে। তিনি শিক্ষার উন্নয়ন করেছেন বলেই আজকে সেই ৪৫ শতাংশের থেকে ৭৩ শতাংশ পাসের হার। ২০১৪ তে একটা অরাজক অবস্থায় পড়েছিলাম, সব কিছু পোড়ানো শুরু করেছিল। প্রধানমন্ত্রী সেই অরাজক পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। এরপর এলো টার্গেট কিলিং। বিদেশি নাগরিক, পুরোহিত, ধর্মযাজক, শিয়া মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জেনকে হত্যা। আমরা দেখলাম হলি আর্টিজান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ দেশের মানুষকে ঘুরে দাঁড়ানোর ডাক দিলেন। মা তাঁর ছেলেকে আমাদের কাছে ধরিয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ডাকে এ দেশের জনগণ সহযোগিতা করেছেন।’
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশের উন্নয়নে কাজ করছি। বর্ডার লাইনকে সংরক্ষণ করার জন্য আমরা বিজিবিকে শক্তিশালী করছি। থার্মোল সেন্সর বসানো হচ্ছে বর্ডার লাইনে। যাতে করে কেউ ক্রস করলেই কন্ট্রোলে বোঝা যাবে যে কেউ যাচ্ছে। বিজিবিকে শক্তিশালী করার জন্য তাদের হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করছি। পুলিশ বাহিনীও আজকে দক্ষতায়-বিজ্ঞতায় অনন্য অবস্থানে গেছে। পুলিশ বাহিনী দেশের জন্য কাজ করছে। শান্তি-শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে তাদের অবদান অনবদ্য। আমি হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, যারাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে যাবে, তাদের হয় কারাগারে যেতে হবে, না হয় তাদের চরম পরিণতি হবে। যারা মাদক সেবন করে, তাদের জন্য সুখবর একটাই, আপনাদের আমরা সহযোগিতা করব। সরকারি চাকরিতে এখন থেকে কিন্তু ডোপ টেস্ট করা হবে। সুতরাং সাবধান। মাদকের বিরুদ্ধে আমরা কঠিন অবস্থানে আছি। সবাইকে বোঝাতে হবে, এটা মরণ নেশা। নির্বাচিত প্রতিনিধির সঙ্গে সঙ্গে কৃষক-শ্রমিক সবাই যদি জঙ্গি এবং সন্ত্রাস দমনে কাজ করে, তাহলে অবশ্যই আমরা মাদককে জিরো টলারেন্সে যেতে পারব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জীবন বাজি নিয়ে আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ করেছিলাম। আমাদের এখন একটাই চাওয়া, আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ রেখে যাব। যাতে করে তারা মাথা উঁচু করে চলতে পারে। ২০৪১ সালে একটি উন্নত বাংলাদেশে তারা যেতে পারে। মুজিববর্ষে আমাদের দেশে সাজ সাজ রব পড়েছে। নানা আয়োজনে মুজিববর্ষ উদ্যাপন করা হবে।’
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দর্শনাকে উপজেলার দাবি প্রসঙ্গে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব দাবি পর্যায়ক্রমে পূরণ করছেন। এমপি ছেলুন সাহেব পুলিশের গাড়ির দাবি করেছেন, আমি দেখব বিষয়টি কীভাবে দাবিটি পূরণ করা যায়। পুলিশ ফাঁড়ির বিষয়ে ডিআইজি সাহেব বলেছেন, তিনি পরিকল্পনা করে কাজটি করবেন। সেই দিন আর নেই, যেখানে ঘরে তালা দিয়ে আপনাদের বসে থাকতে হতো। সন্ত্রাসীর সেই জনপদ আর নেই। এটির পুরোটাই কৃতৃত্ব হলো দূরদর্শী নেতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।’
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দলীয় কর্মীদের ভালোবাসতেন। তিনি বলতেন দলীয় কর্মীরায় দলের প্রাণ। আমাদের দেশে এমন অনেক দল পাওয়া যাবে, যে দলের সভাপতি স্বামী, সেক্রেটারি স্ত্রী। এরকম নামমাত্র দল আছে। আবার দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা অনেক মানুষও আছে। দলের ক্রান্তিলগ্ন থেকে আমরা কাজ করেছি। আমাদের শরীরে এক্স-রে করলে দাগ পাওয়া যাবে। টর্চার কম হয়নি। কিন্তু আমরা কারো কাছে মাথানত করিনি। আমরা কাউকে ভয় করিনি। আমরা দেশের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুর পতাকা নিয়ে এগিয়ে। ২১ বছর আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলাম না। দলকে ধারণ করে আমরা রাজনীতি করেছি। বাঙালির যা কিছু অর্জন, বিনা রক্তপাতে হয়নি। ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১ সালের যুদ্ধের কথা চিন্তা করি, তাহলেই বুঝতে পারব। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তবে ষড়যন্ত্র থেমে নেই। ১৯ বার ওনাকে মারার ষড়যন্ত্র হয়েছে। আল্লাহ ওনাকে বাঁচিয়েছেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ গড়ব। সোনার বাংলাদেশ তৈরিতে কাজ করব।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগর টগর বলেন, ‘আমাদের দর্শনাবাসীর লালিত স্বপ্ন ছিল দর্শনা এক দিন থানা হবে। সেই দর্শনা থানা আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, ধর্মনিরপেক্ষ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার। চুয়াডাঙ্গা ছিল সন্ত্রাসী জনপদ। জামায়াত-বিএনপি ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করেছে। মাদক ব্যবসায়ীকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছে। ২০০৮ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর ডিজিটাল বাংলদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুখী সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হব।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঝিনাইদহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চল বলেন, ‘এক সময় আমরা সকালে উঠে খোঁজ নিতাম আজকে কয়জন মারা গেছে। সন্ত্রাসীরা জবাই করে, গুম করে এই এলাকার মানুষকে হত্যা করত। আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা অনেক ভালো আছি। সেই সন্ত্রাসীদের দিন এখন আর নেই। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত, সুখী সমৃদ্ধ একটি দেশ পাব।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. খ. মহিদ উদ্দীন বিপিএম (বার) বলেন, ‘মুজিববর্ষের অঙ্গিকার পুলিশ হবে জনতার। পুলিশ সেবাই ধর্ম বিশ্বাস করে। আমরা গভীরভাবে ভালোবাসি দেশকে, এ দেশের মাটি-মানচিত্রকে। গত কয়েকবছরে প্রধানমন্ত্রী আমাদের পুলিশের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজারের মতো বাড়িয়েছেন। আপনারা আমাদেরকে তথ্য দিবেন, আমরা কাজ করব। আমাদের অঙ্গিকার আপনাদের একটি নিরাপদ রাষ্ট্র উপহার দেওয়া। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য দেহের জন্য প্রয়োজন অক্সিজেন আর সমাজের জন্য নিরাপত্তা। গত ১০ বছরে জিডিপি প্লাস মাইনাস এইট। যেটা পৃথিবীর পাঁচ রাষ্ট্রের একটি রাষ্ট্র। এই গ্রোথ যদি থাকে, তাহলে আমাদের দেশ ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। পৃথিবীর ১২৬তম ভারি অর্থনীতি হবে আমাদের দেশের। আমাদের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে। আরেকটি বিষয় হলো দুর্নীতি। এটির বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে। একটা সময় আসবে আমাদের দেশে কাজ করতে আসবে মানুষ।’
এ সময় ডিআইজি আরও বলেন, ‘থানা ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। এটি আপনাদের পাবলিক অফিস। কেউ যদি অপেশাদার আচরণ করে, আপনি আমাকে ফোন দেবেন, আমি দেখব। থানা কোনো মানি ট্রানজেকশনের জায়গা নয়। থানা কোনো টাকা, দেশি-বিদেশি কারেন্সি নাড়াচারা করার জায়গা নয়। থানায় কোনো বিষয়ে আপনাদের কোনো টাকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। যদি এ ধরনের আচরণ কেউ করে, সে পুলিশ কিংবা দালাল হোক, আপনারা তাতে সাড়া দেবেন না। পুলিশ এবার যে নিয়োগ দিয়েছে, আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখবেন সেখানে কোনো নিয়োগ বাণিজ্য হয়নি।’
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুল হক খান ও চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা পারভীন। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সী আবু সাঈফ ও শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার উর্মি দেবের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জেলা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি প্রফেসর এস এম ইস্রাফিল, সদস্যসচিব মনিরুজ্জামান, দর্শনা পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান ও দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান আলী মুনসুর বাবু।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু, দর্শনা কেরু এন্ড কোম্পানীর এমডি জাহেদ আলী আনসারী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস, সিনিয়র পুলিশ সুপার আবু রাসেল, দর্শনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শহিদুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খুস্তার জামিল, নজরুল মল্লিক, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, যুগ্ম সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মনজু, বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপনুল হাসান রিপন, চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিক, সহসভাপতি মঞ্জুরুল আলম মালিক লার্জ, জেলা জজ কোর্টের পিপি বেলাল হোসেন, সাবেক পিপি অ্যাড. সামসুজ্জোহা, অ্যাড. নুরুল ইসলাম মালিক, জীবননগর উপজেলার চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ অমল, দর্শনা কেরু শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তৈয়ব আলী ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান।
এদিকে, মাদকবিরোধী সমাবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলার চারটি উপজেলার ৯০ জন মাদক ব্যবসায়ী আত্মসর্ম্পণ করেছেন। তাঁদেরকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ অতিথিরা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এ সময় সংক্ষিপ্ত অনুভূতি জানান মাদক ব্যবসায়ী শিপরা ও মসিউর রহমান। পরে সন্ধ্যায় দর্শনা কেরু এন্ড কোম্পানীর অতিথি ভবন প্রাঙ্গণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। আজ রোববার সকাল ১০টায় দর্শনা কেরু এন্ড কোম্পানীর অতিথি ভবন থেকে তিনি মেহেরপুরের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সকাল সাড়ে ১০টায় মেহেরপুর সার্কিট ইাউজে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সাড়ে ১১টায় মুজিবনগরের উদ্দেশে সড়ক পথে যাত্রা করে দুপুর ১২টায় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন তিনি। বেলা একটায় মেহেরপুর সার্কিট হাউজের উদ্দেশে যাত্রা করে সার্কিট হাউজে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বেলা তিনটায় মেহেরপুর ড. শহীদ শামসুজ্জোহা পার্কে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিকেল পাঁচটায় মেহেরপুর থেকে যাত্রা করবেন যশোর বিমানবন্দরের উদ্দেশে এবং সাড়ে সাতটায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে আকাশপথে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে রাত নয়টায় তিনি নিজ বাসভবনে পৌঁছাবেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পুলিশ বাহিনী আজ দক্ষতায়-বিজ্ঞতায় অনন্য অবস্থানে

আপলোড টাইম : ১০:৫৬:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ মার্চ ২০২০

দর্শনাবাসীর বহু দিনের প্রতীক্ষিত থানার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন

মাদকবিরোধী সমাবেশে ৯০ জন মাদক ব্যবসায়ীর আত্মসর্ম্পন
মেহেরাব্বিন সানভী/ওয়াসিম রয়েল:
নবঘোষিত দর্শনা থানার উদ্বোধন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। গতকাল শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি দর্শনাবাসীর বহু দিনের প্রতিক্ষীত এ থানার উদ্বোধন করেন। এদিন সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তিনি বেলা পৌনে ১১টায় যশোর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। সড়ক পথে দর্শনা কেরু এন্ড কোম্পানীর অতিথি ভবনে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে দর্শনা কেরু কোম্পানির ডিস্টিলারি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি একটি বৃক্ষরোপণ করেন সেখানে। বেলা তিনটায় দর্শনা থানায় পৌঁছান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এমপি। থানার প্রবেশ ফটকে মন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম ও দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান। থানা প্রাঙ্গণে মন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল। রিমোট টিপে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মকমলের লাল কাপড়ে ঢাকা দর্শনা থানার ফলক উন্মোচন করেন মন্ত্রী। ফলক উন্মোচন শেষে নতুন থানার কার্যক্রমে সফলতা, দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। এ সময় শ্বেত কপোত অবমুক্তকরণ ও একগুচ্ছ রঙিন বেলুন ওড়ানো হয়।
পরে থানা উদ্বোধন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের আয়োজনে দর্শনা সরকারি কলেজ মাঠে জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী এক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। এ সময় তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বাংলাদেশকে বদলে দিবেন। বাংলাদেশ কী পর্যায়ে ছিল, সবাই আপনারা যানেন। খাদ্য ঘাটতি, বিদ্যুৎ ঘাটতি, শিক্ষায় ২০০১ সালে যে হার রেখে গিয়েছিলাম, তার থেকে নামতেই থাকছিল হার। সেই জায়গা থেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি বদলে দিবেন। তিনি যথার্থভাবেই বদলে দিয়েছেন বলেই আমরা একটি সম্ভাবনাময় রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি। অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। এ দেশের মানুষ এখন বিশ্বাস করে, বঙ্গবন্ধুর রক্ত ধমনিতে বয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই পারবেন এ দেশের উন্নয়ন করতে। প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলেছিলেন, আজকে বাংলাদেশ রোল মডেল হয়ে গেছে নারীর ক্ষমতায়নে। তিনি শিক্ষার উন্নয়ন করেছেন বলেই আজকে সেই ৪৫ শতাংশের থেকে ৭৩ শতাংশ পাসের হার। ২০১৪ তে একটা অরাজক অবস্থায় পড়েছিলাম, সব কিছু পোড়ানো শুরু করেছিল। প্রধানমন্ত্রী সেই অরাজক পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। এরপর এলো টার্গেট কিলিং। বিদেশি নাগরিক, পুরোহিত, ধর্মযাজক, শিয়া মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জেনকে হত্যা। আমরা দেখলাম হলি আর্টিজান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ দেশের মানুষকে ঘুরে দাঁড়ানোর ডাক দিলেন। মা তাঁর ছেলেকে আমাদের কাছে ধরিয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ডাকে এ দেশের জনগণ সহযোগিতা করেছেন।’
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশের উন্নয়নে কাজ করছি। বর্ডার লাইনকে সংরক্ষণ করার জন্য আমরা বিজিবিকে শক্তিশালী করছি। থার্মোল সেন্সর বসানো হচ্ছে বর্ডার লাইনে। যাতে করে কেউ ক্রস করলেই কন্ট্রোলে বোঝা যাবে যে কেউ যাচ্ছে। বিজিবিকে শক্তিশালী করার জন্য তাদের হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করছি। পুলিশ বাহিনীও আজকে দক্ষতায়-বিজ্ঞতায় অনন্য অবস্থানে গেছে। পুলিশ বাহিনী দেশের জন্য কাজ করছে। শান্তি-শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে তাদের অবদান অনবদ্য। আমি হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, যারাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে যাবে, তাদের হয় কারাগারে যেতে হবে, না হয় তাদের চরম পরিণতি হবে। যারা মাদক সেবন করে, তাদের জন্য সুখবর একটাই, আপনাদের আমরা সহযোগিতা করব। সরকারি চাকরিতে এখন থেকে কিন্তু ডোপ টেস্ট করা হবে। সুতরাং সাবধান। মাদকের বিরুদ্ধে আমরা কঠিন অবস্থানে আছি। সবাইকে বোঝাতে হবে, এটা মরণ নেশা। নির্বাচিত প্রতিনিধির সঙ্গে সঙ্গে কৃষক-শ্রমিক সবাই যদি জঙ্গি এবং সন্ত্রাস দমনে কাজ করে, তাহলে অবশ্যই আমরা মাদককে জিরো টলারেন্সে যেতে পারব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জীবন বাজি নিয়ে আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ করেছিলাম। আমাদের এখন একটাই চাওয়া, আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ রেখে যাব। যাতে করে তারা মাথা উঁচু করে চলতে পারে। ২০৪১ সালে একটি উন্নত বাংলাদেশে তারা যেতে পারে। মুজিববর্ষে আমাদের দেশে সাজ সাজ রব পড়েছে। নানা আয়োজনে মুজিববর্ষ উদ্যাপন করা হবে।’
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দর্শনাকে উপজেলার দাবি প্রসঙ্গে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব দাবি পর্যায়ক্রমে পূরণ করছেন। এমপি ছেলুন সাহেব পুলিশের গাড়ির দাবি করেছেন, আমি দেখব বিষয়টি কীভাবে দাবিটি পূরণ করা যায়। পুলিশ ফাঁড়ির বিষয়ে ডিআইজি সাহেব বলেছেন, তিনি পরিকল্পনা করে কাজটি করবেন। সেই দিন আর নেই, যেখানে ঘরে তালা দিয়ে আপনাদের বসে থাকতে হতো। সন্ত্রাসীর সেই জনপদ আর নেই। এটির পুরোটাই কৃতৃত্ব হলো দূরদর্শী নেতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।’
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দলীয় কর্মীদের ভালোবাসতেন। তিনি বলতেন দলীয় কর্মীরায় দলের প্রাণ। আমাদের দেশে এমন অনেক দল পাওয়া যাবে, যে দলের সভাপতি স্বামী, সেক্রেটারি স্ত্রী। এরকম নামমাত্র দল আছে। আবার দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা অনেক মানুষও আছে। দলের ক্রান্তিলগ্ন থেকে আমরা কাজ করেছি। আমাদের শরীরে এক্স-রে করলে দাগ পাওয়া যাবে। টর্চার কম হয়নি। কিন্তু আমরা কারো কাছে মাথানত করিনি। আমরা কাউকে ভয় করিনি। আমরা দেশের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুর পতাকা নিয়ে এগিয়ে। ২১ বছর আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলাম না। দলকে ধারণ করে আমরা রাজনীতি করেছি। বাঙালির যা কিছু অর্জন, বিনা রক্তপাতে হয়নি। ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১ সালের যুদ্ধের কথা চিন্তা করি, তাহলেই বুঝতে পারব। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তবে ষড়যন্ত্র থেমে নেই। ১৯ বার ওনাকে মারার ষড়যন্ত্র হয়েছে। আল্লাহ ওনাকে বাঁচিয়েছেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ গড়ব। সোনার বাংলাদেশ তৈরিতে কাজ করব।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগর টগর বলেন, ‘আমাদের দর্শনাবাসীর লালিত স্বপ্ন ছিল দর্শনা এক দিন থানা হবে। সেই দর্শনা থানা আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, ধর্মনিরপেক্ষ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার। চুয়াডাঙ্গা ছিল সন্ত্রাসী জনপদ। জামায়াত-বিএনপি ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করেছে। মাদক ব্যবসায়ীকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছে। ২০০৮ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর ডিজিটাল বাংলদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুখী সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হব।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঝিনাইদহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চল বলেন, ‘এক সময় আমরা সকালে উঠে খোঁজ নিতাম আজকে কয়জন মারা গেছে। সন্ত্রাসীরা জবাই করে, গুম করে এই এলাকার মানুষকে হত্যা করত। আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা অনেক ভালো আছি। সেই সন্ত্রাসীদের দিন এখন আর নেই। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত, সুখী সমৃদ্ধ একটি দেশ পাব।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. খ. মহিদ উদ্দীন বিপিএম (বার) বলেন, ‘মুজিববর্ষের অঙ্গিকার পুলিশ হবে জনতার। পুলিশ সেবাই ধর্ম বিশ্বাস করে। আমরা গভীরভাবে ভালোবাসি দেশকে, এ দেশের মাটি-মানচিত্রকে। গত কয়েকবছরে প্রধানমন্ত্রী আমাদের পুলিশের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজারের মতো বাড়িয়েছেন। আপনারা আমাদেরকে তথ্য দিবেন, আমরা কাজ করব। আমাদের অঙ্গিকার আপনাদের একটি নিরাপদ রাষ্ট্র উপহার দেওয়া। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য দেহের জন্য প্রয়োজন অক্সিজেন আর সমাজের জন্য নিরাপত্তা। গত ১০ বছরে জিডিপি প্লাস মাইনাস এইট। যেটা পৃথিবীর পাঁচ রাষ্ট্রের একটি রাষ্ট্র। এই গ্রোথ যদি থাকে, তাহলে আমাদের দেশ ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। পৃথিবীর ১২৬তম ভারি অর্থনীতি হবে আমাদের দেশের। আমাদের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে। আরেকটি বিষয় হলো দুর্নীতি। এটির বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে। একটা সময় আসবে আমাদের দেশে কাজ করতে আসবে মানুষ।’
এ সময় ডিআইজি আরও বলেন, ‘থানা ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। এটি আপনাদের পাবলিক অফিস। কেউ যদি অপেশাদার আচরণ করে, আপনি আমাকে ফোন দেবেন, আমি দেখব। থানা কোনো মানি ট্রানজেকশনের জায়গা নয়। থানা কোনো টাকা, দেশি-বিদেশি কারেন্সি নাড়াচারা করার জায়গা নয়। থানায় কোনো বিষয়ে আপনাদের কোনো টাকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। যদি এ ধরনের আচরণ কেউ করে, সে পুলিশ কিংবা দালাল হোক, আপনারা তাতে সাড়া দেবেন না। পুলিশ এবার যে নিয়োগ দিয়েছে, আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখবেন সেখানে কোনো নিয়োগ বাণিজ্য হয়নি।’
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুল হক খান ও চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা পারভীন। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সী আবু সাঈফ ও শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার উর্মি দেবের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জেলা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি প্রফেসর এস এম ইস্রাফিল, সদস্যসচিব মনিরুজ্জামান, দর্শনা পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান ও দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান আলী মুনসুর বাবু।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু, দর্শনা কেরু এন্ড কোম্পানীর এমডি জাহেদ আলী আনসারী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস, সিনিয়র পুলিশ সুপার আবু রাসেল, দর্শনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শহিদুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খুস্তার জামিল, নজরুল মল্লিক, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, যুগ্ম সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মনজু, বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপনুল হাসান রিপন, চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিক, সহসভাপতি মঞ্জুরুল আলম মালিক লার্জ, জেলা জজ কোর্টের পিপি বেলাল হোসেন, সাবেক পিপি অ্যাড. সামসুজ্জোহা, অ্যাড. নুরুল ইসলাম মালিক, জীবননগর উপজেলার চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ অমল, দর্শনা কেরু শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তৈয়ব আলী ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান।
এদিকে, মাদকবিরোধী সমাবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলার চারটি উপজেলার ৯০ জন মাদক ব্যবসায়ী আত্মসর্ম্পণ করেছেন। তাঁদেরকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ অতিথিরা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এ সময় সংক্ষিপ্ত অনুভূতি জানান মাদক ব্যবসায়ী শিপরা ও মসিউর রহমান। পরে সন্ধ্যায় দর্শনা কেরু এন্ড কোম্পানীর অতিথি ভবন প্রাঙ্গণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। আজ রোববার সকাল ১০টায় দর্শনা কেরু এন্ড কোম্পানীর অতিথি ভবন থেকে তিনি মেহেরপুরের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সকাল সাড়ে ১০টায় মেহেরপুর সার্কিট ইাউজে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সাড়ে ১১টায় মুজিবনগরের উদ্দেশে সড়ক পথে যাত্রা করে দুপুর ১২টায় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন তিনি। বেলা একটায় মেহেরপুর সার্কিট হাউজের উদ্দেশে যাত্রা করে সার্কিট হাউজে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বেলা তিনটায় মেহেরপুর ড. শহীদ শামসুজ্জোহা পার্কে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিকেল পাঁচটায় মেহেরপুর থেকে যাত্রা করবেন যশোর বিমানবন্দরের উদ্দেশে এবং সাড়ে সাতটায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে আকাশপথে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে রাত নয়টায় তিনি নিজ বাসভবনে পৌঁছাবেন।