ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পাপ-পুণ্যের উৎস চোখ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৪:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন:
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষকে অতি মূল্যবান চোখ দিয়েছেন, সঙ্গে দিয়েছেন চোখ সংযত রাখার নির্দেশনা। চোখ পবিত্র কোরানের কালো অক্ষরগুলো পড়ে যাবে, তার আমলনামায় লেখা হবে সওয়াবের পর সওয়াব। চোখ মায়ের চেহারায় সন্তানের দয়ার দৃষ্টি বুলাবে, লেখা হবে হজের পুণ্য। আবার এই চোখে যখন হারামে আরাম খুঁজবে, তৈরি হতে থাকবে উত্তপ্ত গলিত সিসা। এই চোখের সঙ্গে রয়েছে অন্তরের আশ্চর্য বন্ধন। চোখের সামান্য দৃষ্টিতে হৃদয়পটে অঙ্কিত হয়ে যায় ছবি, আর তা জেগে থাকে দীর্ঘকাল। আর মাঝে মাঝে সেই ছবি জেগে উঠে মন করে অস্থির। চোখ ভালো থাকবে তো দিল ভালো থাকবে। চোখের দৃষ্টি নষ্ট হবে, দিল হয়ে পড়বে পংকিল, অপবিত্র। এজন্য আল্লাহ তায়ালা চোখ অবনত ও নিচু রাখার আদেশ করেছেন। এই আদেশ নারী-পুরুষ উভয় শ্রেণীর জন্য প্রযোজ্য। আল্লাহ তায়ালা ভিন্ন ভিন্ন সম্বোধনে এই আদেশনামা জারি করেছেন। কারণ এই চোখ একবার অবৈধ পথে অভ্যস্ত হয়ে গেলে ভেতরের পুরো পৃথিবী বরবাদ করে ছাড়বে। আল্লাহ তায়ালার হুকুম এমন নয় যে চোখ খুলে রাখো, দৃষ্টি পড়লে না হয় সরিয়ে নিয়ো। বরং একদম নিচু করে রাখো, অপাত্রে পড়তেই দিয়ো না। কারণ আল্লাহ তায়ালা ভালো করেই জানেন, দৃষ্টি একবার পড়ে গেলে তা সংযত করতে পারে- এমন বীরপুরুষ খুবই সামান্য। প্রথম বারের দৃষ্টি নিমেষেই অন্তর ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলে। এই ক্ষতের মলমের খোঁজে নফস দাবি করে আবার তাকানোর। দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষতকে আরো গভীর করে, প্রশস্ত করে। এবার নফস চড়াও হয় আগের চেয়ে বেশি শক্তি নিয়ে। অসুস্থ অন্তর তার মোকাবিলা করতে পারে না। শায়খুল হাদিস হজরত জাকারিয়া (রহ.) তার ‘আপবীতি’ বা আত্মজীবনীতে বলেছেন, যৌবনের শুরুতেই বদনজর রোগের উৎপত্তি হয়। যথাসময়ে চিকিৎসা না হলে এ রোগ চক্রবৃদ্ধিহারে বাড়তে থাকবে। বুড়ো বয়সেও তা থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব হয় না। কত সম্ভাবনাময় মানুষ, কত মেধাবীজন কেবল এই এক রোগে বঞ্চিত হয়ে গেছে। তার যোগ্যতা কোনো কাজেই আসেনি। দৃষ্টি সংযত রাখার পাশাপাশি ইবাদতে অল্প পরিশ্রম তাকে অনেক দূর এগিয়ে নেবে। দৃষ্টির অসংযত আচরণের সঙ্গে হাজার পরিশ্রম শুধুই হতাশা। তাই দৃষ্টি সংযত রাখার ব্যাপারে আমাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পাপ-পুণ্যের উৎস চোখ

আপলোড টাইম : ১০:০৪:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

ধর্ম প্রতিবেদন:
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষকে অতি মূল্যবান চোখ দিয়েছেন, সঙ্গে দিয়েছেন চোখ সংযত রাখার নির্দেশনা। চোখ পবিত্র কোরানের কালো অক্ষরগুলো পড়ে যাবে, তার আমলনামায় লেখা হবে সওয়াবের পর সওয়াব। চোখ মায়ের চেহারায় সন্তানের দয়ার দৃষ্টি বুলাবে, লেখা হবে হজের পুণ্য। আবার এই চোখে যখন হারামে আরাম খুঁজবে, তৈরি হতে থাকবে উত্তপ্ত গলিত সিসা। এই চোখের সঙ্গে রয়েছে অন্তরের আশ্চর্য বন্ধন। চোখের সামান্য দৃষ্টিতে হৃদয়পটে অঙ্কিত হয়ে যায় ছবি, আর তা জেগে থাকে দীর্ঘকাল। আর মাঝে মাঝে সেই ছবি জেগে উঠে মন করে অস্থির। চোখ ভালো থাকবে তো দিল ভালো থাকবে। চোখের দৃষ্টি নষ্ট হবে, দিল হয়ে পড়বে পংকিল, অপবিত্র। এজন্য আল্লাহ তায়ালা চোখ অবনত ও নিচু রাখার আদেশ করেছেন। এই আদেশ নারী-পুরুষ উভয় শ্রেণীর জন্য প্রযোজ্য। আল্লাহ তায়ালা ভিন্ন ভিন্ন সম্বোধনে এই আদেশনামা জারি করেছেন। কারণ এই চোখ একবার অবৈধ পথে অভ্যস্ত হয়ে গেলে ভেতরের পুরো পৃথিবী বরবাদ করে ছাড়বে। আল্লাহ তায়ালার হুকুম এমন নয় যে চোখ খুলে রাখো, দৃষ্টি পড়লে না হয় সরিয়ে নিয়ো। বরং একদম নিচু করে রাখো, অপাত্রে পড়তেই দিয়ো না। কারণ আল্লাহ তায়ালা ভালো করেই জানেন, দৃষ্টি একবার পড়ে গেলে তা সংযত করতে পারে- এমন বীরপুরুষ খুবই সামান্য। প্রথম বারের দৃষ্টি নিমেষেই অন্তর ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলে। এই ক্ষতের মলমের খোঁজে নফস দাবি করে আবার তাকানোর। দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষতকে আরো গভীর করে, প্রশস্ত করে। এবার নফস চড়াও হয় আগের চেয়ে বেশি শক্তি নিয়ে। অসুস্থ অন্তর তার মোকাবিলা করতে পারে না। শায়খুল হাদিস হজরত জাকারিয়া (রহ.) তার ‘আপবীতি’ বা আত্মজীবনীতে বলেছেন, যৌবনের শুরুতেই বদনজর রোগের উৎপত্তি হয়। যথাসময়ে চিকিৎসা না হলে এ রোগ চক্রবৃদ্ধিহারে বাড়তে থাকবে। বুড়ো বয়সেও তা থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব হয় না। কত সম্ভাবনাময় মানুষ, কত মেধাবীজন কেবল এই এক রোগে বঞ্চিত হয়ে গেছে। তার যোগ্যতা কোনো কাজেই আসেনি। দৃষ্টি সংযত রাখার পাশাপাশি ইবাদতে অল্প পরিশ্রম তাকে অনেক দূর এগিয়ে নেবে। দৃষ্টির অসংযত আচরণের সঙ্গে হাজার পরিশ্রম শুধুই হতাশা। তাই দৃষ্টি সংযত রাখার ব্যাপারে আমাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে।