ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পরিকল্পনায় ব্যস্ত বড় দুই দল

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:১০:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০
  • / ২০৯ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের আর মাত্র দুই দিন বাকি। রাজধানীর অলিগলি প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন ভোট প্রার্থনায়। নিজ নিজ মার্কার পক্ষে শোডাউন করছেন। কিন্তু নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিতরা ব্যস্ত রয়েছেন ভোটের দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নীতিনির্ধারকরা ভোটের দিন কেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে নেতাকর্মীদের ভূমিকা কী হবে, এসব নিয়ে শেষ মুহূর্তের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগ বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা তাদের পক্ষে প্রতিটি ওয়ার্ডের দল মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থীদের দ্বারাই নির্বাচনের প্রচারণার কাজ করতে চান। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় দায়িত্ব ইতোমধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। এর বাইরে আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের থানা ও ওয়ার্ড কমিটির নেতারা নৌকার পক্ষে মাঠে থাকতে কর্মপরিকল্পনা গুছিয়ে এনেছেন। এ ক্ষেত্রে অঙ্গ ও সহযোগী দলগুলোর ভূমিকা কী হবে, তারও সমন্বয় শেষ করে আনা হয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে দলের সিনিয়র নেতাদের আহ্বায়ক করে কেন্দ্র কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা স্থানীয় নেতাদের নিয়ে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করে এনেছেন। এসব কমিটি ভোটের দিন ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবেন। এ ছাড়া দল মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাধ্যমে প্রতিটি কেন্দ্রের নির্বাচন ওঠানোর সব ভার দেওয়া হয়েছে। ভোটের দিন মাঠে ভোটারের উপস্থিতি বাড়াতে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের সকাল সকাল লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার নির্দেশনাও রয়েছে। নেতাকর্মীরা সকাল ৯টার মধ্যে ভোট দিয়ে কেন্দ্র পাহারায় থাকার কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যারাই গাফিলতি করবেন পরবর্তীতে দল থেকে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থারও হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ভোটের দিনের পরিকল্পনায় আ.লীগ থেকে অনেক এগিয়ে বিএনপি। প্রতি কেন্দ্রে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে একাধিক কমিটি করা হয়েছে। তবে ভোটের দিনের পরিকল্পনায় সরকার দলের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীরা ঝামেলায় জড়াতে পারেন বলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে উঠে এসেছে। দলের সিনিয়র নেতারা মনে করেন, বিদ্রোহী প্রার্থীরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও নৌকার ভোটে প্রভাব পড়তে পারে। তাই ভোটকেন্দ্রে যাতে কোনো রকম উসকানিমূলক কর্মকান্ড না হয়, তা যথেষ্ট সতর্ক থাকবেন দায়িত্ব নিয়োজিত নেতারা।
সিটি নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বিদ্রোহীদের কারণে দলে সমস্যা হচ্ছে না। তারা দলের জন্য কোনো সমস্যার কারণ নয়। তাই তাদের বিষয়ে কথা না বলাই ভালো। গতকাল মঙ্গলবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি বহিরাগতদের ঢাকায় জড়ো করছে অভিযোগ করে কাদের বলেন, তারা বিভিন্ন স্থানে মহড়া দিচ্ছে। নির্বাচন নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয়ও ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানান কাদের।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির এক সূত্র জানায়, এবারের ভোট যেহেতু ইভিএম-এ অনুষ্ঠিত হবে, তাই আমাদের দলীয় প্রার্থীদের অধিক সতর্ক থাকতে হচ্ছে। কোনোভাবেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে অহেতুক ঝামেলা এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এজেন্ট থেকে নিজেদের এজেন্ট দিয়ে (বিদ্রোহীসহ) ভোটের বুথের পরিবেশ নিজেদের করে নিতে হবে। এ ছাড়া মানুষকে কেন্দ্রে আনার জন্য বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। মোট ভোটের অর্ধেক ভোটার কেন্দ্রে না এলে এবারের ফলে বিপর্যয় ঘটতে পারে। তাই বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে নির্বাচনের শুরুতেই নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে।
অন্যদিকে এবারের নির্বাচনে বিএনপির সাহসী কর্মীদের এজেন্ট হিসেবে বাছাই করতে নির্দেশনা আছে। একটু হুমকি ধমকিতে এজেন্ট যাতে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে না যায়, তার জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে। নেতারা মনে করছেন, ইভিএমের ভোটে আগের বারের মতো জোর জবরদস্তি করে ব্যালট ছিনতাইয়ের সুযোগ নেই। তবে বুথে একজন এজেন্ট শক্তিশালী ভূমিকা রাখলে দলের পক্ষে ভালো রেজাল্ট আসতে পারে ধারণা তাদের।
এ ছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে শক্তিশালী বিদেশি রাষ্ট্রের পর্যবেক্ষকদের বেশি সক্রিয় রাখার ব্যাপারে কেন্দ্র থেকে বিশেষ নজর রয়েছে। এমন অবস্থায় কোন কেন্দ্রে কী অবস্থা, তা তড়িৎ জানাতে বিশেষ সেল খোলা হয়েছে। এ বিষয়ে দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা কেন্দ্রে উপস্থিত নিশ্চিত করতে চাই। ভোটকেন্দ্রে থাকতে পারা না পারার ব্যাপারটা দেখবে নির্বাচন কমিশন। তারা যদি সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে, তাহলে এনিয়ে আমরা মিডিয়া কমিশনসহ দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টিতে আনব। তবে সরকারি দল যেভাবে নীলনকশার আয়োজন করছে, তাতে নির্বাচনে আদৌ মানুষ ভোট দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় বাড়ছে।
সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে যারা নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ বিনষ্ট করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ যাতে কোনোভাবে নষ্ট না হয়। কোনো সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে কেউ যাতে পরিবেশকে বিঘ্নিত করতে না পারে। নির্বাচন কমিশনসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে আমি অনুরোধ করব, কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যবস্থা নিন।
অপরদিকে বিএনপির পক্ষে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, সিইসির নেতৃত্বে কতিপয় কমিশনার ও ইসির কর্মকর্তারা আগামী ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিজয়ী করতে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে রেখেছে। আর সেজন্যই সিটি নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা কমিশন সভায় স্থান পায় না।
রিজভী বলেন, আজ পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে যত অভিযোগ কমিশনে করা হয়েছে, সবগুলোই অপ্রয়োজনীয় কাগজের ঝুড়িতে নিক্ষেপ করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া নিয়ে জনগণের মধ্যে গভীর সংশয় রয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দুজন ভিন্ন ব্যক্তি হলেও তাদের কণ্ঠস্বর একটাই। তারা নির্বাচন নিয়ে একই গীত গাইছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পরিকল্পনায় ব্যস্ত বড় দুই দল

আপলোড টাইম : ১১:১০:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০

সমীকরণ প্রতিবেদন:
ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের আর মাত্র দুই দিন বাকি। রাজধানীর অলিগলি প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন ভোট প্রার্থনায়। নিজ নিজ মার্কার পক্ষে শোডাউন করছেন। কিন্তু নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিতরা ব্যস্ত রয়েছেন ভোটের দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নীতিনির্ধারকরা ভোটের দিন কেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে নেতাকর্মীদের ভূমিকা কী হবে, এসব নিয়ে শেষ মুহূর্তের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগ বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা তাদের পক্ষে প্রতিটি ওয়ার্ডের দল মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থীদের দ্বারাই নির্বাচনের প্রচারণার কাজ করতে চান। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় দায়িত্ব ইতোমধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। এর বাইরে আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের থানা ও ওয়ার্ড কমিটির নেতারা নৌকার পক্ষে মাঠে থাকতে কর্মপরিকল্পনা গুছিয়ে এনেছেন। এ ক্ষেত্রে অঙ্গ ও সহযোগী দলগুলোর ভূমিকা কী হবে, তারও সমন্বয় শেষ করে আনা হয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে দলের সিনিয়র নেতাদের আহ্বায়ক করে কেন্দ্র কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা স্থানীয় নেতাদের নিয়ে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করে এনেছেন। এসব কমিটি ভোটের দিন ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবেন। এ ছাড়া দল মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাধ্যমে প্রতিটি কেন্দ্রের নির্বাচন ওঠানোর সব ভার দেওয়া হয়েছে। ভোটের দিন মাঠে ভোটারের উপস্থিতি বাড়াতে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের সকাল সকাল লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার নির্দেশনাও রয়েছে। নেতাকর্মীরা সকাল ৯টার মধ্যে ভোট দিয়ে কেন্দ্র পাহারায় থাকার কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যারাই গাফিলতি করবেন পরবর্তীতে দল থেকে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থারও হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ভোটের দিনের পরিকল্পনায় আ.লীগ থেকে অনেক এগিয়ে বিএনপি। প্রতি কেন্দ্রে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে একাধিক কমিটি করা হয়েছে। তবে ভোটের দিনের পরিকল্পনায় সরকার দলের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীরা ঝামেলায় জড়াতে পারেন বলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে উঠে এসেছে। দলের সিনিয়র নেতারা মনে করেন, বিদ্রোহী প্রার্থীরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও নৌকার ভোটে প্রভাব পড়তে পারে। তাই ভোটকেন্দ্রে যাতে কোনো রকম উসকানিমূলক কর্মকান্ড না হয়, তা যথেষ্ট সতর্ক থাকবেন দায়িত্ব নিয়োজিত নেতারা।
সিটি নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বিদ্রোহীদের কারণে দলে সমস্যা হচ্ছে না। তারা দলের জন্য কোনো সমস্যার কারণ নয়। তাই তাদের বিষয়ে কথা না বলাই ভালো। গতকাল মঙ্গলবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি বহিরাগতদের ঢাকায় জড়ো করছে অভিযোগ করে কাদের বলেন, তারা বিভিন্ন স্থানে মহড়া দিচ্ছে। নির্বাচন নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয়ও ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানান কাদের।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির এক সূত্র জানায়, এবারের ভোট যেহেতু ইভিএম-এ অনুষ্ঠিত হবে, তাই আমাদের দলীয় প্রার্থীদের অধিক সতর্ক থাকতে হচ্ছে। কোনোভাবেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে অহেতুক ঝামেলা এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এজেন্ট থেকে নিজেদের এজেন্ট দিয়ে (বিদ্রোহীসহ) ভোটের বুথের পরিবেশ নিজেদের করে নিতে হবে। এ ছাড়া মানুষকে কেন্দ্রে আনার জন্য বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। মোট ভোটের অর্ধেক ভোটার কেন্দ্রে না এলে এবারের ফলে বিপর্যয় ঘটতে পারে। তাই বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে নির্বাচনের শুরুতেই নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে।
অন্যদিকে এবারের নির্বাচনে বিএনপির সাহসী কর্মীদের এজেন্ট হিসেবে বাছাই করতে নির্দেশনা আছে। একটু হুমকি ধমকিতে এজেন্ট যাতে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে না যায়, তার জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে। নেতারা মনে করছেন, ইভিএমের ভোটে আগের বারের মতো জোর জবরদস্তি করে ব্যালট ছিনতাইয়ের সুযোগ নেই। তবে বুথে একজন এজেন্ট শক্তিশালী ভূমিকা রাখলে দলের পক্ষে ভালো রেজাল্ট আসতে পারে ধারণা তাদের।
এ ছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে শক্তিশালী বিদেশি রাষ্ট্রের পর্যবেক্ষকদের বেশি সক্রিয় রাখার ব্যাপারে কেন্দ্র থেকে বিশেষ নজর রয়েছে। এমন অবস্থায় কোন কেন্দ্রে কী অবস্থা, তা তড়িৎ জানাতে বিশেষ সেল খোলা হয়েছে। এ বিষয়ে দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা কেন্দ্রে উপস্থিত নিশ্চিত করতে চাই। ভোটকেন্দ্রে থাকতে পারা না পারার ব্যাপারটা দেখবে নির্বাচন কমিশন। তারা যদি সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে, তাহলে এনিয়ে আমরা মিডিয়া কমিশনসহ দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টিতে আনব। তবে সরকারি দল যেভাবে নীলনকশার আয়োজন করছে, তাতে নির্বাচনে আদৌ মানুষ ভোট দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় বাড়ছে।
সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে যারা নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ বিনষ্ট করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ যাতে কোনোভাবে নষ্ট না হয়। কোনো সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে কেউ যাতে পরিবেশকে বিঘ্নিত করতে না পারে। নির্বাচন কমিশনসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে আমি অনুরোধ করব, কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যবস্থা নিন।
অপরদিকে বিএনপির পক্ষে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, সিইসির নেতৃত্বে কতিপয় কমিশনার ও ইসির কর্মকর্তারা আগামী ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিজয়ী করতে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে রেখেছে। আর সেজন্যই সিটি নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা কমিশন সভায় স্থান পায় না।
রিজভী বলেন, আজ পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে যত অভিযোগ কমিশনে করা হয়েছে, সবগুলোই অপ্রয়োজনীয় কাগজের ঝুড়িতে নিক্ষেপ করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া নিয়ে জনগণের মধ্যে গভীর সংশয় রয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দুজন ভিন্ন ব্যক্তি হলেও তাদের কণ্ঠস্বর একটাই। তারা নির্বাচন নিয়ে একই গীত গাইছেন।