ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পরকাল সবার আসল ঠিকানা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৮:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২০
  • / ২৪৬ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন
পরকাল আমাদের সবার আসল ঠিকানা। পৃথিবীতে যে যা-ই করি, একদিন সবাইকে বিদায় নিতে হবে। মাটির ওপরের চাকচিক্যপূর্ণ জীবন ফেলে মাটির বুকের নীরব-নিরীহ জীবনে প্রবেশ করতে হবে। প্রিয়-আপনজন ফেলে একাকী জীবনযাপন করতে হবে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরকালের ভয়াবহতা ও আখেরাতের আজাব সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করতেন। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, ‘যখন এ আয়াত নাজিল হয় “(হে নবী!) আপনি আপনার নিকটাত্মীয়দের সাবধান করে দিন” তখন রসুলুল্লাহ সাফা পাহাড়ে আরোহণ করে কুরাইশের বিভিন্ন গোত্রকে উচ্চৈঃস্বরে ডাক দিলেন। ফলে তারা সবাই একত্রিত হয়ে গেল। তখন রসুলুল্লাহ বললেন, তোমরা বল তো যদি এখন আমি তোমাদের বলি, এ পাহাড়ের উপত্যকায় এক অশ্বারোহী সৈন্যবাহিনী অতর্কিত তোমাদের প্রতি আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে তবে কি তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে? লোকেরা একযোগে বলে উঠল, হ্যাঁ। কারণ আমরা আপনাকে সর্বদা সত্যবাদী-রূপেই পেয়েছি। তখন তিনি বললেন, আমি তোমাদের সামনের একটি কঠিন আজাব সম্পর্কে সতর্ক করছি। তাঁর এ কথাটি শুনে আবু লাহাব বলল, তোমার সারা জীবন ধ্বংস হোক। তুমি কি এজন্যই আমাদের এভাবে ডেকেছ? তখন নাজিল হলো, “তাব্বাত ইয়াদা আবি লাহাবিও ওয়া তাব্বা” (আবু লাহাবের দুই হাত ধ্বংস হোক এবং সে ধ্বংস হোক)।’ বুখারি, মুসলিম। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘তারা সমবেত হলে তিনি ব্যাপকভাবে এবং বিশেষভাবে কতিপয় গোত্রকে ডাক দিয়ে সতর্কবাণী শোনালেন। তিনি বললেন, হে কাব ইবনে লুয়াইর বংশধর! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে আগুন থেকে বাঁচাও। হে আবদে মান্নাফের গোত্র! তোমরা নিজেদের দোজখের আগুন থেকে রক্ষা কর। হে আবদুল মুত্তালিবের বংশধর! তোমরা তোমাদের দোজখের আগুন থেকে বাঁচাও। হে ফাতিমা! তুমি তোমার দেহকে দোজখের আগুন থেকে রক্ষা কর। কেননা আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচাবার ক্ষমতা আমার নেই। তবে তোমাদের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে সেইসূত্রে আমি তোমাদের সঙ্গে দুনিয়ায় সদ্ব্যবহার করব।’ মুসলিম। বুখারি ও মুসলিমের যৌথ বর্ণনায় রয়েছে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘হে কুরাইশ সম্প্রদায়! (আমার ওপর ইমান এনে) তোমরা তোমাদের জান্নাত কিনে নাও। (অর্থাৎ তোমরা দোজখের আগুন থেকে নিজেদের রক্ষা কর। আমি তোমাদের ওপর থেকে আল্লাহর আজাব এতটুকু দূর করতে পারব না।) হে আবদে মান্নাফের বংশধর! আমি তোমাদের ওপর থেকে আল্লাহর আজাব এতটুকু দূর করতে পারব না। হে আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব। আমি তোমার ওপর থেকে আল্লাহর আজাব এতটুকু দূর করতে পারব না। হে ফুফি সাফিয়া! আমি তোমাকে আল্লাহর আজাব থেকে রক্ষা করতে পারব না। হে কন্যা ফাতিমা! আমার কাছে পার্থিব মালসামান থেকে যা ইচ্ছা তা চাইতে পার; কিন্তু আমি তোমাকে আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচাতে পারব না।’ প্রিয় পাঠক! পরকাল সম্পর্কে রসুলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুভূতি যদি এমন হয় তাহলে আমাদের অনুভূতি কেমন হওয়া উচিত তা সহজেই অনুমেয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

পরকাল সবার আসল ঠিকানা

আপলোড টাইম : ০৯:১৮:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২০

ধর্ম প্রতিবেদন
পরকাল আমাদের সবার আসল ঠিকানা। পৃথিবীতে যে যা-ই করি, একদিন সবাইকে বিদায় নিতে হবে। মাটির ওপরের চাকচিক্যপূর্ণ জীবন ফেলে মাটির বুকের নীরব-নিরীহ জীবনে প্রবেশ করতে হবে। প্রিয়-আপনজন ফেলে একাকী জীবনযাপন করতে হবে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরকালের ভয়াবহতা ও আখেরাতের আজাব সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করতেন। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, ‘যখন এ আয়াত নাজিল হয় “(হে নবী!) আপনি আপনার নিকটাত্মীয়দের সাবধান করে দিন” তখন রসুলুল্লাহ সাফা পাহাড়ে আরোহণ করে কুরাইশের বিভিন্ন গোত্রকে উচ্চৈঃস্বরে ডাক দিলেন। ফলে তারা সবাই একত্রিত হয়ে গেল। তখন রসুলুল্লাহ বললেন, তোমরা বল তো যদি এখন আমি তোমাদের বলি, এ পাহাড়ের উপত্যকায় এক অশ্বারোহী সৈন্যবাহিনী অতর্কিত তোমাদের প্রতি আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে তবে কি তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে? লোকেরা একযোগে বলে উঠল, হ্যাঁ। কারণ আমরা আপনাকে সর্বদা সত্যবাদী-রূপেই পেয়েছি। তখন তিনি বললেন, আমি তোমাদের সামনের একটি কঠিন আজাব সম্পর্কে সতর্ক করছি। তাঁর এ কথাটি শুনে আবু লাহাব বলল, তোমার সারা জীবন ধ্বংস হোক। তুমি কি এজন্যই আমাদের এভাবে ডেকেছ? তখন নাজিল হলো, “তাব্বাত ইয়াদা আবি লাহাবিও ওয়া তাব্বা” (আবু লাহাবের দুই হাত ধ্বংস হোক এবং সে ধ্বংস হোক)।’ বুখারি, মুসলিম। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘তারা সমবেত হলে তিনি ব্যাপকভাবে এবং বিশেষভাবে কতিপয় গোত্রকে ডাক দিয়ে সতর্কবাণী শোনালেন। তিনি বললেন, হে কাব ইবনে লুয়াইর বংশধর! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে আগুন থেকে বাঁচাও। হে আবদে মান্নাফের গোত্র! তোমরা নিজেদের দোজখের আগুন থেকে রক্ষা কর। হে আবদুল মুত্তালিবের বংশধর! তোমরা তোমাদের দোজখের আগুন থেকে বাঁচাও। হে ফাতিমা! তুমি তোমার দেহকে দোজখের আগুন থেকে রক্ষা কর। কেননা আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচাবার ক্ষমতা আমার নেই। তবে তোমাদের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে সেইসূত্রে আমি তোমাদের সঙ্গে দুনিয়ায় সদ্ব্যবহার করব।’ মুসলিম। বুখারি ও মুসলিমের যৌথ বর্ণনায় রয়েছে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘হে কুরাইশ সম্প্রদায়! (আমার ওপর ইমান এনে) তোমরা তোমাদের জান্নাত কিনে নাও। (অর্থাৎ তোমরা দোজখের আগুন থেকে নিজেদের রক্ষা কর। আমি তোমাদের ওপর থেকে আল্লাহর আজাব এতটুকু দূর করতে পারব না।) হে আবদে মান্নাফের বংশধর! আমি তোমাদের ওপর থেকে আল্লাহর আজাব এতটুকু দূর করতে পারব না। হে আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব। আমি তোমার ওপর থেকে আল্লাহর আজাব এতটুকু দূর করতে পারব না। হে ফুফি সাফিয়া! আমি তোমাকে আল্লাহর আজাব থেকে রক্ষা করতে পারব না। হে কন্যা ফাতিমা! আমার কাছে পার্থিব মালসামান থেকে যা ইচ্ছা তা চাইতে পার; কিন্তু আমি তোমাকে আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচাতে পারব না।’ প্রিয় পাঠক! পরকাল সম্পর্কে রসুলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুভূতি যদি এমন হয় তাহলে আমাদের অনুভূতি কেমন হওয়া উচিত তা সহজেই অনুমেয়।